আজঃ রবিবার ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫

কালিয়াকৈরে পৌর বজ্রের দখলে আঞ্চলিক সড়ক শালবন মানুষের দুর্ভোগ।

কালিয়াকৈর সংবাদদাতা

গাজীপুরের কালিয়াকৈর পৌরসভা দেশের উন্নত পৌরসভার তালিকায় থাকলেও বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় রয়েছে চরম অব্যবস্থা।

সোমবার (২১এপ্রিল) সরেজমিনে পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, কিছু এলাকায় ডাম্পিং ব্যবস্থাপনা থাকলেও তা সঠিকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে না। নজরদারির অভাবে শহরের সড়ক, ফুটপাত ও শালবন আবাসিক এলাকা ক্রমশই পরিণত হচ্ছে ময়লার ভাগাড়ে।

পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মাটিকাটা এলাকার সফিপুর-বড়ইবাড়ী আঞ্চলিক সড়কে দেখা গেছে, দিন-রাত সেখানে ফেলা হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের বর্জ্য। নির্দিষ্ট ডাম্পিং জোন থাকা সত্ত্বেও তা এড়িয়ে ঠিকাদাররা সড়কের ওপরেই ময়লা ফেলছেন, ফলে যান চলাচলে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত ময়লার কারণে এ সড়ক দিয়ে পায়ে হেঁটে চলাও কঠিন হয়ে পড়েছে। যানবাহন চলাচলেও সৃষ্টি হচ্ছে ভয়াবহ ভোগান্তি। দুর্গন্ধে আশেপাশের বাড়িঘরেও অবস্থান করা দায় হয়ে পড়েছে। কখনো কখনো রাস্তা এতটাই ময়লায় ভরে যায় যে, পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় চলাচল।

একই ধরনের চিত্র দেখা গেছে পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কালামপুর পূর্বপাড়া এলাকায়। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের পাশে মহল্লার প্রবেশপথে সরকারি শালবনের জমিতে দীর্ঘদিন ধরে অবাধে আবর্জনা ফেলা হচ্ছে। এতে একদিকে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে চলাচলেও তৈরি হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা।

এছাড়াও কালিয়াকৈর হাইটেক সিটির পাশে বাংলাদেশ ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির প্রস্তাবিত ভবনের জমিও দীর্ঘদিন ধরে আবর্জনায় সয়লাব হয়ে রয়েছে।

নয়টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত কালিয়াকৈর পৌরসভায় কয়েক লাখ মানুষ বসবাস করে। আবাসিক এলাকার বর্জ্য অপসারণে পৌর কর্তৃপক্ষের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব দীর্ঘদিন ধরেই স্থানীয়দের ক্ষোভ ও হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে কালিয়াকৈর পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল আলম তালুকদার বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্ব সহকারে দেখছি। আজ থেকেই অতিরিক্ত পরিবহন সংযুক্ত করে ময়লা অপসারণ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে কালিয়াকৈর পৌরসভার প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহমেদ বলেন, নাগরিক ভোগান্তির বিষয়টি আমরা অবগত। পৌর এলাকায় অব্যবস্থাপনার ইঙ্গিত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। শহরের পরিবেশ রক্ষায় প্রয়োজন হলে দায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের লক্ষ্য পরিচ্ছন্ন, বাসযোগ্য ও পরিবেশবান্ধব কালিয়াকৈর গড়ে তোলা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে বিষাক্ত অ্যালকোহল পানে হাকিম আহমেদ (২১) নামের এক কলেজ শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর ) রাতে তাকে অসুস্থ অবস্থায় ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতেই তার মৃত্যু হয়।চিকিৎসকরা নিশ্চিত করে জানান, অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানে পয়জনিংয়ের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে।

এ ঘটনায় তার বন্ধু হযরত উদ্দিন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছে।
নিহত হাকিম আহমেদ খলিসাকুন্ডি ডিগ্রী কলেজের এইচএসসির শিক্ষার্থী।সে দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের চকঘোগা পূর্বপাড়ার মোঃ হাসিবুল ইসলামের ছেলে। অসুস্থ অপরজন হলেন মোঃ হয়রত (২০)। সে একই গ্রামের বিচার উদ্দিনের ছেলে।

নিহত শিক্ষার্থীর চাচাতো ভাই মাসুম জানান, হাকিম তার এক বন্ধুকে সাথে নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় গ্রামের একটি লিচু বাগানে বসে বিষাক্ত অ্যালকোহল পান করলে অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদের দৌলতপুর হাসপাতালে নিলে অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় হাকিমের মৃত্যু হয়। এবং তার বন্ধু হযরত উদ্দিন গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।

বিচার ব্যবস্থায় মৌলিক রূপান্তর ইতিহাসে মাইলফলক : চট্টগ্রামে প্রধান বিচারপতি।

প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছেন, ব্যবসায়িক সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে দ্রুত ও আধুনিক বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য একটি ডেডিকেটেড বা বিশেষায়িত বাণিজ্যিক আদালত প্রতিষ্ঠার আহ্বান করে এসেছিল, যা শিগগিরই বাস্তবে রূপ নিতে চলেছে। তিনি বলেন, গত দেড় বছরে সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সাংবিধানিক স্বচ্ছতার ভিত্তিতে বিচার ব্যবস্থায় যে মৌলিক রূপান্তর সাধিত হয়েছে, তা দেশের বিচারিক ইতিহাসে এক মাইলফলক। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এক নতুন প্রাতিষ্ঠানিক যুগে প্রবেশ করেছে।

শনিবার সকালে রেডিসন ব্লু চট্টগ্রাম বে-ভিউ হোটেলের কনফারেন্স কক্ষে বাণিজ্যিক আদালত নিয়ে এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও ইউএনডিপির যৌথ উদ্যোগে ‘অপারেশনালাইজিং কমার্শিয়াল কোর্ট’ শীর্ষক এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি আরও বলেন, সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় অধ্যাদেশ, ২০২৫ প্রণয়নের মাধ্যমে বহুদিনের দ্বৈত প্রশাসনিক সীমাবদ্ধতা দূর হয়েছে এবং সুপ্রিম কোর্ট প্রথমবারের মতো পূর্ণ প্রশাসনিক ও আর্থিক স্বায়ত্তশাসন লাভ করেছে। এর ফলে বিচার বিভাগ এখন নিজস্বভাবে পদসৃজন, বাজেট বরাদ্দ, প্রশিক্ষণ উন্নয়ন, নীতিমালা প্রণয়নসহ বিচার সংস্কারকে দীর্ঘমেয়াদি ও টেকসই ধারা হিসেবে এগিয়ে নেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করেছে।
প্রধান বিচারপতি অন্তবর্তী সরকারের প্রশংসা করে বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রস্তাবসমূহ সরকার দ্রুততার সঙ্গে অনুমোদন করেছে, যা শক্তিশালী ও স্বাধীন বিচারব্যবস্থা নির্মাণে জাতীয় ঐকমত্যকে প্রতিফলিত করে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ