আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

সাম্প্রতিক সম্প্রীতির সব চাইতে বড় বাঁধা হলো অন্য ধর্মের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতার অভাব।

নিজস্ব প্রতিবেদক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সাম্প্রতিক সম্প্রীতির সব চাইতে বড় বাঁধা হলো অন্য ধর্মের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধাবোধ ও সহনশীলতার অভাব। ইতিহাসে মানুষ একত্র হয়েছে কিন্তু একে অন্যকে যখন সমান ভাবে নাই, সমমর্যাদার মনে করে নাই তখনই সমাজ ব্যর্থ হয়েছে। সত্যিকারের একজন ধর্মপ্রাণ ব্যক্তি, কখনোই অন্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারে না।

দুঃখজনকভাবে ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়কালেও সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায় বিভিন্নভাবে নিগৃহীত হচ্ছে। মব সৃষ্টি করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষদেরকে নিগৃহীত করার সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়াতেও তাদের অংশগ্রহন নিশ্চিত করা হয় নাই। সংখ্যা লঘুদের দীর্ঘদিনের দাবি সমুহ যেমন, অর্পিত সম্পত্তি, সংসদের সংরক্ষিত আসন ইত্যাদি বিষয়ে নতুন-পুরাতন রাজনৈতিক দলগুলোর কোনো সুস্পষ্ট অবস্থান দেখা যাচ্ছে না।

ঢাকার পর্যটন ভবনে কমিটি ফর অল্টারনেটিভ ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন (সিএডিএফ) এর উদ্যোগে আয়োজিত কর্মশালায় মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান ও বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ জুলাই পরবর্তী শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সকল ধর্ম ও শ্রেনী পেশার ঐক্যবদ্ধ হওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করেন।

আকিজ পাইপসের পৃষ্টপোষকতায় আয়োজিত এই সংহতি সভায় ধর্মীয় প্রধান, রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজ, গণমাধ্যম, জুলাই যোদ্ধা, ছাত্র ও তরুণ প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার প্রায় ২০০ জন দেশি-বিদেশি অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা ফিলিস্তিনে চলমান নির্বিচার হত্যাযজ্ঞের নিন্দাজ্ঞাপন করেন। যেকোনো ধর্মীয় সম্প্রদায়ের প্রতি নিপীড়ন অন্যধর্মের সমাজকেও আক্রান্ত করে। বিচ্ছিন্নভাবে কোনো সমাজ শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারে না। অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজের জন্য অন্য ধর্মের আচার, উৎসব ও প্রথার প্রতি উদারতা প্রদর্শন করা জরুরি। নিজেদের ভেতরে ঐক্য না থাকলে দেশে-বিদেশের কুচক্রী মহল আমাদের দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে ফেলতে পারে।

জাতীয় মুক্তি আর ত্যাগের অর্জনকে ধরে রাখতে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখা এবং সামাজিক সংহতিকে সুদৃঢ়করণের কোনো বিকল্প নেই। এটি বর্তমানের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ, এখানে ধর্মীয় ঐক্য বিনষ্ট করা আর বিভেদ হানাহানি সৃষ্টির সকল প্রচেষ্টা অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি প্রতীয়মান হচ্ছে। ৩৬ জুলাইয়ের বিপ্লব আমাদের জাতীয় জীবনের সামাজিক সংহতির এক অনন্য উদাহরণ। নতুন করে বাংলাদেশকে পৃথিবীর সামনে উপস্থাপন করেছে। দেশের তরুণ প্রজন্ম এর নেতৃত্ব দিলেও সব ধর্মের মানুষ ঐদিনগুলোতে একত্রিত হয়ে তাদের অকুন্ঠ সমর্থন ও সংহতি প্রদর্শন করেছিল। আজও তারা একটি নতুন বাংলাদেশ গঠনের জন্য সোচ্চার রয়েছে।

কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাক্তন উপদেষ্টা তপন চৌধুরী। আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান, হেফাযতে ইসলামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আল্লামা মামুনুল হক, আর্চ বিশপ ক্যাথলিক বিজয় এন ডি’ক্রুজ, হিন্দু মহাজোটের গোবিন্দ চন্দ্র প্রামানিক, বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের সাধারন সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ প্রিয় মহাথেরো, বুদ্ধানন্দ মহাথেরো, ক্যাথলিক চার্চ ইন্টারফেইথের কনভেনার সিস্টার রেবা ভেরোনিকা ডি’কস্তা প্রমুখ।

আকিজ পাইপসের সিইও ও তরুণ ব্যবসায়ী সেখ আজরাফ উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সকল ধর্মের একটি বৈচিত্র্যময় দেশ যেখানে বিভিন্ন ধর্ম, সংস্কৃতি এবং জাতিগত গোষ্ঠীর সহাবস্থান রয়েছে। আমরা আশাবাদী যে, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দের এই যৌথ সম্মেলন ও অঙ্গীকারের অনুপ্রেরণায় ও নির্দেশনায় গোটা জাতি দেশ গঠনে ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন নবাগত পুলিশ সুপার মো:আবু তারেক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর জেলার সদ্য যোগদান করা পুলিশ সুপার জেলার বিভিন্ন থানা পরিদর্শন ও থানায় কর্মরত অফিসারদের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আকস্মিক পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ আবু তারেক। এসময় চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও কর্মরত সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

থানা পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার ফোর্সদের থাকার ব্যারাক ও বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সকল পুলিশ সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও সকল পুলিশ সদস্যদের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম চলতি মাসের ৬ তারিখে এ থানায় যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ