আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

শিবগঞ্জে খুনের আসামীদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন।

বদিউজ্জামান রাজাবাবু  চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি 

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে প্রকাশ্য দিবালোকে গোলাম আজম হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শিবগঞ্জ সরকারি মডেল হাই স্কুলের সামনে ৬নং ওয়ার্ডবাসীর ব্যানারে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

গোলাম আজমকে হত্যার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও আসামিদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা হয়নি বলে অভিযোগ করেন বক্তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ১৮ রমজান (১৯ মার্চ) বিকেলে কুখ্যাত সন্ত্রাসী মো. আলমগীর ও তার সহযোগীরা ধারালো অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে হামলা চালায় গোলাম আজমের ওপর। পরিবারের সামনেই তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়। তাকে উদ্বার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে ২২ মার্চ রাতে রামেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় জামায়াত কর্মী গোলাম আজম। পরদিন তার বাবা আব্দুল খালেক শিবগঞ্জ থানায় ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ১০-১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু ঘটনার এক মাস ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও একজন আসামিও আটক করেনি পুলিশ।

বক্তারা আরোও জানান, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না। উল্টো আসামিরা এখনও নিহতের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে নানারকম ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছে। এনিয়ে মামলা করে উল্টো নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে পরিবারটি। মানববন্ধনে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে আসামি আটক না হলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়ক অবরোধের হুঁশিয়ারি দেন বক্তারা।

গোলাম আযমের বোন খালেদা বেগম জানান, এপর্যন্ত একজন আসামিও গ্রেফতার হলো না, কি করছে পুলিশ? এখনও আমাদের পরিবারকে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা শুধুমাত্র ভাইয়ের হত্যার বিচার চাই। খুনিদের ফাঁসি ছাড়া আমরা আর কিছুই চাইনা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্কার জেলা শাখা সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মোয়াজ্জেম হোসেন মেহেদী, শিবগঞ্জ পৌর শাখার সভাপতি এসএম মহিউদ্দিন, রাজশাহী প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আসলাম-উদ-দৌলা, নিহত জামায়াত কর্মী গোলাম আজমের বাবা আব্দুল খালেক, মা রহিসা বেগম, বোন খালেদা বেগম, স্ত্রী হালেমা খাতুন, স্থানীয় বাসিন্দা ওয়াহেদ আলীসহ এলাকাবাসী।

এ বিষয়ে শিবগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম কিবরিয়া বলেন, গোলাম আজম হত্যা মামলার আসামিদের ধরতে আমরা নিরলস চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। শিগগিরই সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।

নিহতের পরিবার ও এলাকাবাসী দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কর্মস্থলে চুরি করা টাকা ফেরত না দেওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলোচিত চোর মেরাজ শ্রীঘরে।

নিজ কর্মস্থলে চুরি করা ৬০ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে আপস করে ১৫ লক্ষ টাকার চেক ও ১ বছরের মদ্ধে ৪৫ লক্ষ টাকা ফেরত দিবে মর্মে স্ট্যাম্প করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের মেসার্স শাওন ট্রেডার্স এর ম্যানেজার জহির রায়হান মেরাজ (৩৪) নামে এক যুবক।

জানা গেছে, মের্সাস শাওন ট্রেডার্স এর দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ অত্র প্রতিষ্ঠানে যাবতীয় মালামাল বিক্রয়ের নগদ টাকার হিসাব নিকাশ সহ অত্র প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ন কাজ কর্মে কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করিয়া আসছিলেন মোঃ জহির রায়হান মেরাজ। প্রতিদিন মের্সাস শাওন ট্রেডাস এর কাজ কর্ম শেষে বিভিন্ন কায়দা কৌশলে প্রায় ৫,০০০/-টাকা থেকে ১০,০০০/- টাকা পর্যন্ত চুরি করত, যা সি সি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে ধরা পাড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়।

উক্ত ঘটনায় মেরাজকে জিজ্ঞেসাবাদ করলে উপস্থিত উভয় পক্ষের শালিশদারগনের সামনে মেরাজ চুরির কথা স্বীকার করেন। গত ৩ বছর যাবত সে বিভিন্ন কায়দা কৌশলের মাধ্যমে আনুমানিক ৬০,০০,০০০/- (ষাট লক্ষ) টাকা চুরি করেছে। ৩০/০৯/২০২৩ তারিখে চুরির ঘটনা সত্যতা স্বীকার করিয়া অত্র অঙ্গীকার নামা দলিলে স্বীকার ও অঙ্গীকার করে যে, উক্ত ৬০,০০,০০০/- (ষাট লক্ষ) টাকার মধ্যে আগামী ০৪/১০/২০২৩ ইং তারিখের নগদে ১৫,০০,০০০/- (পনের লক্ষ) টাকা মের্সাস শাওন ট্রেডাস এর নামে ফেরত দেবে এই মর্মে জহির রায়হান মেরাজ এর স্বাক্ষরিত ঢাকা ব্যাংক চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখা যাহার চলতি এ্যাকাউন্ট নং ৩০৫২০০০০০৬৬৫৩, চেক নং ১০৩২৩৭১ একখানা চেক প্রদান করেন এবং অবশিষ্ট ৪৫,০০,০০০/- (পঁয়চল্লিশ লক্ষ) টাকা পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে মের্সাস শাওন ট্রেডাস কে পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিব।

যদি উক্ত ১৫,০০,০০০/- (পনের লক্ষ) টাকা ০৪/১০/২০২৩ ইং তারিখের মধ্যে পরিশোধ করিতে না পারি ও ৪৫,০০,০০০/- (পঁয়চল্লিশ লক্ষ) টাকা আগমী ১ বছরের মধ্যে মের্সাস শাওন ট্রেডাস কে পরিশোধ করিতে না পারে বা পরিশোধে কোন প্রকারে টালবাহানা করে তবে অত্র চেকের বলে ও অঙ্গীকার নামা দলিল বলে মের্সাস শাওন ট্রেডাস এর স্বত্বাধীকারী মেরাজের উপর যে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা লইতে পারিবেন। পরবর্তীতে মেরাজ কোন প্রকার টাকা ফেরত না দেওয়ায় মেসার্স শাওন ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সামিরুল আলম (শাওন) বাদী হয়ে আদালতে ২টি মামলা দায়ের করেন উক্ত ৪৫ লক্ষ টাকার স্ট্যাম্পের মামলায় (মামলা নাম্বার সিআর ১১২৪/২০২৪) আদালত গত ৩ নভেম্বর মেরাজের নামে ওয়ারেন্ট জারি করলে সদর মডেল থানার এএসআই মোতালের মেরাজকে গ্রেফতার করেন।

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার মোঃ রাজু আহমেদ বলেন, ৪৫ লক্ষ টাকার একটি স্ট্যাম্পের মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় আসামি জহির রায়হান মিরাজকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিপুল পরিমাণ নেশা জাতীয় ট্যাবলেট জব্দ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিপুল পরিমাণ নেশা জাতীয় ট্যাবলেট জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৫৯ বিজিবি)র সদস্যরা।রবিবার (২৩ নভেম্বর) মধ্যরাত ১.২০মিনিটে মহানন্দা ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি) এর অধীনস্থ চাঁনশিকারী বিওপি’র ০১টি বিশেষ টহল দল সীমান্ত পিলার ১৯৬/৫-এস হতে আনুমানিক ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার ভোলাহাট ইউনিয়নের চামুচা গ্রামস্থ গড়ের মাঠ নামক স্থানে অবস্থিত একটি আখ ক্ষেতে অভিযান পরিচালনা করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা গিয়েছিল, অভিযানস্থলে বিপুল পরিমাণ নেশাজাতীয় ট্যাবলেট মজুদ রয়েছে এবং চোরাকারবারীরা সুযোগ বুঝে দেশের অভ্যন্তরে পাচার করবে।

সে সুনির্দিষ্ট তথ্যের প্রেক্ষিতেই তাৎক্ষণিকভাবে অভিযানটি পরিচালিত হয় এবং টহলদল আখক্ষেত তল্লাশী করে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় অভিনব কায়দায় মোড়ানো অবস্থায় থাকা ৩,১৯০ পিস ভারতীয় নেশাজাতীয় ট্যাবলেট (TENSIWIN) উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে উদ্ধারকৃত ট্যাবলেটগুলো সাধারণ ডায়েরীর মাধ্যমে ভোলাহাট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান।

এ ব্যাপারে মহানন্দা ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল গোলাম কিবরিয়া, বিজিবিএম, বিজিওএম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মাদকসহ সকল ধরনের চোরাচালানের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিজিবি’র আভিযানিক কার্যক্রম বেগবান রয়েছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ