আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

মার্শাল আর্ট আত্নরক্ষা ও স্বাস্থ্য রক্ষা দুটোই কাজ করে : ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম

কে এম রাজীব

আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি প্রাপ্ত আত্মরক্ষার কৌশল মার্শাল আর্ট খালি হাতে শত্রুর হাত থেকে যেমন নিজেকে রক্ষা করা যায়, তেমনি মার্শাল আর্ট অনুশীলনে নিজের শরীরকে সুস্থ রাখা যায় বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের মার্শাল আর্টের জনক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম। বৃহস্পতিবার সকালে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মার্শাল আর্ট শুধু শত্রু মোকাবেলায় নিজেকে রক্ষা করা যায় তা নয়, এ আর্ট চর্চার মাধ্যমে নিজের শরীরকে সুস্থও রাখা যায়। তাই পাঁচ বছর বয়সী ছেলে মেয়েদের স্কুল ভর্তির পাশাপাশি মার্শাল আর্ট চর্চা খুবই প্রয়োজন।

প্রথম জাতীয় প্রশিক্ষক প্রযোজক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বর্তমানে আমাদের দেশে খেলাধুলার তেমন কোনো স্থান না থাকায় প্রতিযোগিতা মূলক কোনো খেলা চোখে পড়ে না। যার ফলে অনেক ছেলে মেয়েদের ক্রীড়ার তেমন বিকাশ ঘটে না। নিদিষ্ট ভাবে কোনো খেলাধুলায় অনেক ছেলে মেয়েদের অংশগ্রহণ না থাকায় তারা বিপথে চালিত হবার পাশাপাশি বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত হচ্ছে। এসব ছেলে মেয়েদের যদি খেলাধুলা বা বিনোদনের দিকে ধাবিত করা হয়, তাহলে তারা অন্যায় কোনো কাজে জড়িত হওয়ার সুযোগ থাকবে না। বিশ্বে ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস, ব্যাডমিন্টন খেলা যেমন আন্তর্জাতিক ভাবে প্রতিযোগিতামূলক এবং শরীর চর্চার একটি অংশ, তেমনি মার্শাল আর্টও

আত্নরক্ষা কৌশল অনুশীলনের পাশাপাশি শরীর চর্চা, প্রতিযোগিতা মূলক খেলা ও বিনোদনের একটি অংশ। তাই ছেলে মেয়েদের এবং যুব সমাজকে রক্ষা করতে হলে তাদের খেলাধুলা ও শরীর চর্চার মাধ্যম মার্শাল আর্টের প্রতি মনোযোগি করতে হবে।
চলচ্চিত্রের পরিচালক ও নায়ক ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম আরও বলেন, বাংলাদেশে আমার প্রায় দুইশ’র মতো কারাতে ক্লাব রয়েছে, যেখানে হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রী। আর প্রতি বছর ক্লাবগুলোর ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে জাতীয়ভাবে কারাতে প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে এবং প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে ড্যান ও সনদ প্রদান করা হয়। এতে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে একটি বড় ধরনের উৎসাহ কাজ করে এবং মার্শাল আর্টের প্রতি তারা আরও

মনোযোগী হয়ে বুকে ধারণ করে রাখে। তাই আমি সকলের প্রতি আহবান জানাবো আত্নরক্ষা, সু-স্বাস্থ্য রক্ষায় মার্শাল আর্টে প্রতি মনোযোগী হওয়া।
প্রসঙ্গত, চীন,জাপান,কোরিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে যখন মার্শাল আর্টের বিকাশ ঘটে সত্তর দশকে মিয়ানমার ( বার্মা ) থেকে প্রশিক্ষিত হয়ে বাংলাদেশে মার্শাল আর্টের বিকাশ ঘটায় ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম। পরবর্তীতে মার্শাল আর্টকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে পরিচিত করতে প্রযোজক পরিচালক ও নায়ক মাসুদ পারভেজ সোহেল রানার সহযোগিতায় প্রচারের মাধ্যম হিসেবে বেছে নেয় চলচ্চিত্রকে। এরপর তিনি চলচ্চিত্রের মাধ্যমে মার্শাল আর্ট প্রচার প্রসার ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়।

পরবর্তীতে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। যদিও প্রথমে খল চরিত্রে অভিনয় শুরু করলেও পরবর্তীতে নায়ক চরিত্রে অভিনয়, চলচ্চিত্র পরিচালনা, প্রযোজনা ও চলচ্চিত্র নির্মাণে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন তিনি। চলচ্চিত্রে তাঁর রয়েছে বহু অবদান এবং চলচ্চিত্র শিল্পে রয়েছে তাঁর অসংখ্য শিষ্য। যারা মার্শাল আর্টে জনপ্রিয়তা অর্জন করেছেন। যার মধ্যে মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা, মাসুম পারভেজ রুবেল, ড্যানি সিডাক, খালেদ মাহমুদ, মিশা সওদাগর, রোজিনা, রঞ্জিতা, মাসুকা আলম রাকাসহ আরও

অন্যান্য অভিনেতা অভিনেত্রী। ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমের উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে, যাদু নগর, বিদ্রোহী, শরীফ বদমাশ, সোহেল রানা, মরণ লড়াই, মার্শাল হিরো, মাস্টার সামুরাই, পেশাদার খুনী, লড়াকু, কুংফু কন্যা, কুংফু নায়ক, প্রমিক রংবাজসহ আরও অসংখ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ ও অভিনয় করেন ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ