আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনার শঙ্কা ঈদযাত্রায়

মোজাম্মেল হক চৌধুরী লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন


ঈদযাত্রায় দুর্ভোগ ও দুর্ঘটনার শস্কা নানা প্রতিকূলতার কারণে এবারের ঈদুল আজহার যাতায়াতে দুর্ভোগ আমাদের সঙ্গী হতে চলেছে। বিদায়ী ঈদুল ফিতরে লম্বা ছুটির কারণে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হওয়ায় আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় সরকারের পক্ষ থেকে ১০ দিন ছুটি দেওয়া হয়েছে। কোনো প্রকার সমীক্ষা ছাড়াই ছুটি ঘোষণা করায় দেশের যাত্রীসাধারণ এবারের আসন্ন ঈদুল আজহায় ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়তে যাচ্ছে বলে অনেকেই মনে করেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে বিষয়টি সরকারের মাননীয় সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ও মাননীয় স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, প্রধান উপদেষ্টার সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোহাম্মদ এহসানুল হক, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব ফাহিম ইসলামসহ সংশ্লিষ্টদের জানানো হলে ও তেমন কোনো সাড়া মেলেনি। গত ১২ মে ২০২৫ সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয় আয়োজিত ঈদের প্রস্তুতি সভায় বিষয়টি দেশের যাত্রী সাধারণের স্বার্থে যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে তুলে ধরেন। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কেউ আমলে নেননি।

যাত্রী কল্যাণ সমিতির এক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বিগত ২৫ বছরের মধ্যে বিদায়ী পবিত্র ঈদুল ফিতরে স্বস্তিদায়ক ঈদযাত্রার পেছনে মূলত তিনটি কারণ ছিল, ১। ঈদের আগে ৪ দিনের লম্বা ছুটি ২। সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি ও শ্রমিক ফেডারেশনের প্রভাবশালী মাফিয়া নেতারা পালিয়ে যাওয়ায় সড়কে মাস্তানিতন্ত্রের অবসান হয়েছে, যা মাঠ পর্যায়ে বড় বড় ব্যান্ডের গাড়িগুলোর কর্মকর্তা ও চালকদের আচরণে প্রকাশ পেয়েছে। ৩। আমাদের সেনাবাহিনী নিরলস মাঠে ছিল, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট সক্রিয় ছিল, বিআরটিএ, ভোক্তা অধিদপ্তরসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার সমন্বিত আন্তরিক প্রচেষ্টার কারণে মানুষ ভোগান্তিমুক্ত যাতায়াত নিশ্চিত করা গেছে। এই কারণে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী ২০২৪ সালের ঈদুল ফিতরের তুলনায় ২০২৫ সালের ঈদুল ফিতরে সড়ক দুর্ঘটনা ২১.০৫ শতাংশ, নিহত ২০.৮৮ শতাংশ, আহত ৪০.৯১ শতাংশ কমেছিল। যা অন্তর্বর্তী সরকারের বড় অর্জন হিসেবে নানা মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। এবারের ঈদের লম্বা ছুটি বিন্যাস করে ঈদের আগে ৩ ও ৪ জুন ২ দিন ছুটি নিশ্চিত করা গেলে সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি, যাতায়াতের ভোগান্তি কমানো সক্ষম হবে। কিন্তু সরকারের কোন সমীক্ষা না থাকায় বিষয়টি আমলে নিলেন না।

সরকারের পক্ষ থেকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে আগামী ৫ জুন থেকে ১৪ জুন পর্যন্ত মোট ১০ দিনের ছুটি রয়েছে। লম্বা ছুটির কারণে এবারের ঈদে বেশি মানুষ গ্রামের বাড়ি যাবেন এটাই স্বাভাবিক। তাছাড়া জাতীয় নির্বাচন সামনে থাকায় রাজনীতিবিদেরও মাঠে আনাগোনা বাড়বে। ফলে বেশি মানুষের যাতায়াত হবে এটাই নিশ্চিত। কেবল মুসলমানেরা নয় অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরাও এই ছুটিতে গ্রামের বাড়ি যাবেন। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি প্রতিবছর কি পরিমাণ মানুষের ঈদে যাতায়াত হয় তার একটি সম্ভাব্য সমীক্ষা রিপোর্ট গণমাধ্যমে দিয়ে থাকেন। তাদের এবারের সমীক্ষা বলছে, ঢাকা থেকে ১ কোটি ১০ লাখ ও ঢাকার আশেপাশে জেলা থেকে আরো ৩০ লাখসহ ১ কোটি ৪০ লাখ থেকে দেড়কোটি মানুষ দেশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করতে পারে। এছাড়াও এক জেলা থেকে অন্য জেলায় আরো ৩ কোটি মানুষের যাতায়াত হতে পারে। সরকারি ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ৭ জুন ২০২৫ পবিত্র ঈদুল আজহা উদ্যাপিত হবে। ঈদের আগে ৫ ও ৬ জুন বৃহস্পতি এবং শুক্রবার মাত্র ২ দিনের সরকারি ছুটি রয়েছে। এই দুইদিনের ঈদের ছুটিতে একদিনে ৭৫ লাখ করে দুই দিনে দেড় কোটি মানুষ গ্রামের বাড়ি পাঠাতে গেলে ভরা বর্ষা মৌসুমের এই সময়ে এবারের ঈদযাত্রায় ভয়াবহ ভোগান্তি আমাদের সামনে উপস্থিত। দুইদিনের ছুটিতে দেড়কোটি মানুষ ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি পাঠানোর মত সড়ক, রেল, নৌ কোন পথের যানবাহনের সক্ষমতা আমাদের দেশে নেই। ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতরের পার্থক্য আছে। ঈদুল আজহায় সড়কের পাশে পশুরহাট বসে, ঐ হাটকে কেন্দ্র করে মূল সড়কে ট্রাক থেকে পশু নামানো হয়। এতে যানজট-জনজট একাকার হয়ে যায়। যানবাহনের গতি কমে আসে। এছাড়াও পশুবাহী ট্রাক চলাচলের কারণে বাসের গতি কমে আসে। বাজার সংলগ্ন এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। ফলে যানবাহনের গতিও কমে যায়। তাহলে সমাধান কি? দীর্ঘদিন যাবত সড়কে নিরাপদ যাতায়াত ও যাত্রী স্বার্থ নিয়ে কর্মরত যাত্রী কল্যাণ সমিতি পক্ষ থেকে এমন পরিস্থিতিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাহী আদেশে দেওয়া ১১ ও ১২ জুন ২ দিনের ছুটি বিন্যাস করে ঈদের আগে ৩ ও ৪ জুন মঙ্গল ও বুধবার এগিয়ে নিয়ে আসার দাবি তুলেছিলেন, কিন্তু হয়নি।

এখন দায়িত্ব নিতে হবে দেশের জনগণকে। জনসাধারণ নিজ দায়িত্বে পরিবার পরিজনকে আগে-ভাগে বাড়ি পাঠানোর উদ্যোগ নিতে হবে এখনি। মোটরসাইকেলে ঈদযাত্রা করতে হলে বেস্ট পরিধান করতে হবে। পরিবার পরিজনকে সহযাত্রী বানানো যাবে না। লাগেজ-ব্যাগেজ পার্সেল বা কুরিয়ারে আগে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। ফিটনেস বিহীন যানবাহন ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। প্রয়োজনে বিআরটিএ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটদের নাম্বার সংগ্রহ করে সংরক্ষণ করতে হবে প্রয়োজনে যাতে সহযোগিতা নেওয়া যায়।

এবারের ঈদুল আজহায় ঈদের পরে ৮ জুন থেকে ১৪ জুন ৭ দিনের ছুটি অনেকটা অপ্রয়োজনীয়। অথচ সরকারের দায় ও দায়িত্ব থাকলে ঈদের পেছনের ১১ ও ১২ জুনের ছুটি ৩ ও ৪ জুন এগিয়ে আনলে দেশের মানুষজন পবিত্র ঈদুল ফিতরের মত ঈদুল আজহায়ও ধাপে ধাপে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পেত। ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হতো। সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমে আসতো।

এবারের ঈদুল আজহায় যাতায়াতে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নৌ-পথে। একদিকে ভরা বর্ষা মৌসুম হওয়ায় নৌ-পথ উত্তাল রয়েছে। অন্যদিকে, দমকা-হাওয়াসহ ঝড়ো বাতাস। এই কারণে যাতায়াতের পিক আওয়ারে নৌ-সতর্কতা সংকেত চালু থাকলে নৌ-পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। ফলে এই চাপ গিয়ে সড়কের উপরে পড়বে। তাছাড়াও ভরা বর্ষা মৌসুম হওয়ায় ৬০ ফিটের নীচের লঞ্চ চলাচল যেকোনোভাবে বন্ধ রাখতে হবে, যা দারুণ চ্যালেঞ্জের। লঞ্চগুলো লোড লাইন মেনে যাত্রী বহন নিশ্চিত করতে হবে। অধিকাংশ নৌ-পথে ভয়া, বাতি, সিগন্যাল লাইট কিছুই নেই। যদিও ঈদের আগে পরে বালুবাহী বাল্কহেড বন্ধের নির্দেশনা থাকে। কোনো কোনো নৌ-পথে তা শতভাগ মানা হয় না। বৃষ্টির রাতে বাল্কহেড ও ডুবোচর শনাক্ত করা মুশকিল। কালবৈশাখি মৌসুম হওয়ায় এবারের ঈদে নৌ-পথে ফিটনেস বিহীন লঞ্চ চলাচল কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করতে হবে। ফলে লঞ্চে যাত্রীর চাহিদা বাড়বে। এহেন সংকটকে পুঁজি করে নৌ-পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।

পৃথিবীর দেশে দেশে ঈদ পূজা পার্বণে মূল্য ছাড় দেওয়া হয়। আমাদের দেশে অন্যান্য পণ্যের মত সড়ক, রেল, নৌ ও আকাশপথে গণপরিবহন সংকট এবং বিপুল যাত্রী চাহিদা পুঁজি করে কতিপয় অসাধু পরিবহন মালিকেরা অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য মেতে উঠেন। প্রতিবছর ঈদে এমন অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কারণে সামর্থহীন মানুষ বিশেষ করে, কর্মজীবী, শ্রমজীবী, নিন্ম আয়ের লোকজন গণপরিবহনের পরিবর্তে পণ্যবাহী পরিবহনকে তাদের যাতায়াতের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন। কেউ ট্রেনে ছাদে যাতায়াত করেন, কেউ আবার বাসের ছাদে চেপে বসেন। আবার কেউ স্ত্রী পরিজন নিয়ে খোলা ট্রাকে পণ্যের উপর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঈদ আনন্দ উদ্যাপন করতে বাড়ি যান। এসব যানবাহন দুর্ঘটনার কবলে পড়লে একসাথে বহু মানুষের জীবনহানি ঘটে। পত্রিকার পাতায় বড় শিরোনাম হয়। আবার পরের বছর একই কায়দায় তারা বাড়ি যান। অথচ যেহেতু আমরা ঈদে যাত্রী ব্যবস্থাপনায় যানবাহনের সক্ষমতা বাড়াতে পারি না সেহেতু ঈদযাত্রায় ছুটির ব্যবস্থাপনা ঠিক করে প্রতিবছর ঈদের আগে ৩ থেকে ৪ দিনের ছুটি নিশ্চিত করা গেলে যাত্রীসাধারণের এহেন দুর্ভোগ ও প্রাণহানি ৫০ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে আনা সম্ভব। কিন্তু সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কারো এই ব্যাপারে কোনো সমীক্ষা নেই, গবেষণা নেই, প্রচেষ্টা নেই, দায় নেই, দায়িত্বও নেই।

এবারের ঈদুল আজহায় ঈদের পরে ৮ জুন থেকে ১৪ জুন ৭ দিনের ছুটি অনেকটা অপ্রয়োজনীয়। অথচ সরকারের দায় ও দায়িত্ব থাকলে ঈদের পেছনের ১১ ও ১২ জুনের ছুটি ৩ ও ৪ জুন এগিয়ে আনলে দেশের মানুষজন পবিত্র ঈদুল ফিতরের মত ঈদুল আজহায়ও ধাপে ধাপে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পেত। ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হতো। সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি কমে আসতো। মানুষের যাতায়াতের ভোগান্তি কমতো। অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকতো। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে ৪ দিন ছুটি ছিল, মানুষজন ধাপে ধাপে বাড়ি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছে বলেই গত ২৫ বছরের মধ্যে বিগত ঈদুল ফিতরে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হয়েছে।

এখন আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, হাইওয়ে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, বিআরটিএ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সর্বোপরি সরকারের আন্তরিক প্রচেষ্টা ছাড়া এহেন যাতায়াতের দুর্ভোগ থেকে উত্তরণ কোনোভাবেই সম্ভব নয়। কেননা ইতোমধ্যে ঈদযাত্রা শুরু থেকে বিভিন্ন মহাসড়কে যানজট এবং ভারি বৃষ্টির কারণে দুর্ঘটনার সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। রেলের শিডিউল লণ্ডভণ্ড হয়ে পড়েছে। আমাদের রেলপথ বহু পুরোনো, অনেক রেলসেতু ঝুঁকিপূর্ণ। এখানে প্রায়শই লাইনচ্যুতির ঘটনা ঘটে। একটি লাইনচ্যুতির ঘটনায় একাধিক রেলপথের কয়েকজোড়া ট্রেনের যাত্রা বাতিল করতে হয়। ফলে স্টেশনে স্টেশনে আটকে থাকেন যাত্রীরা। এমন নারকীয় দুর্ভোগ এবারের ঈদে ঘটবে বলে আশঙ্কা করছেন রেলপথ বিশেষজ্ঞরা। সরকারের রেলপথ মন্ত্রণালয় বিষয়টি নজরে রাখবেন আশা করি। নৌ-পথে কখনো কখনো রেড সিগন্যালে নৌ-পথ সাময়িক বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে এবারের ঈদুল আজহায় বিভিন্ন পথে ঈদযাত্রায় দুর্ভোগের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন নবাগত পুলিশ সুপার মো:আবু তারেক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর জেলার সদ্য যোগদান করা পুলিশ সুপার জেলার বিভিন্ন থানা পরিদর্শন ও থানায় কর্মরত অফিসারদের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আকস্মিক পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ আবু তারেক। এসময় চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও কর্মরত সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

থানা পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার ফোর্সদের থাকার ব্যারাক ও বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সকল পুলিশ সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও সকল পুলিশ সদস্যদের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম চলতি মাসের ৬ তারিখে এ থানায় যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ