আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

সহনশীল সমাজ গঠনে বুদ্ধের বাণী চর্চা প্রয়োজন — চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শুভ বুদ্ধ পূর্ণিমা যথাযোগ্য মর্যাদায় ও ধর্মীয় ভাবগম্ভীর পরিবেশে উদযাপিত হয়েছে। বুদ্ধ জয়ন্তী উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে নগরীর সাফা আর্কেড কনভেনশন সেন্টারে আয়োজিত হয় এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। সভাপতিত্ব করেন ডা. কিসিঞ্জার চাকমা এবং সঞ্চালনায় ছিলেন রোমেলা বড়ুয়া।

এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন ডাঃ প্রীতি বড়ুয়া, জয়সেন বড়ুয়া, দীপন কান্তি বড়ুয়া,বাবু লিটন বড়ুয়া, বাবু দেবজিৎ বড়ুয়া,বাবু রিপন কুমার বড়ুয়া, সুজন বড়ুয়া, কাজল বড়ুয়া,পরিতোষ বড়ুয়া,পীযুস বড়ুয়া সহ আরো অনেকে।

অনুষ্ঠানে মেয়র বলেন, গৌতম বুদ্ধ আমাদের অহিংসা, সহনশীলতা ও মৈত্রীর পথ দেখিয়েছেন। আজকের সমাজে এই মূল্যবোধগুলোকে ধারণ করাই সবচেয়ে জরুরি। আমি যখন চসিকের দায়িত্ব নিই, তখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম—চট্টগ্রামকে ক্লিন সিটি, গ্রিন সিটি, হেলদি সিটি ও সেফ সিটিতে রূপান্তর করবো। শুধু অবকাঠামো নয়, নাগরিকদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও সহনশীলতা গড়ে তুলেই একটি নিরাপদ নগরী গঠন সম্ভব।”

মেয়র বলেন, আজকের বুদ্ধ পূর্ণিমা আমাদের কাছে কেবল একটি ধর্মীয় উৎসব নয়, এটি একটি মানবিক উপলক্ষ। এই শহর সকল ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপদ হবে—এটাই আমাদের অঙ্গীকার।”

তিনি আরও বলেন, আমরা একটি এমন সমাজ চাই যেখানে থাকবে না কোনো বিভেদ, বিদ্বেষ কিংবা হিংসা। যেখানে সবাই শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করবে—এটাই প্রকৃত উন্নত নগরীর চিত্র।”

জাতীয়তাবাদের প্রসঙ্গে মেয়র বলেন, এক সময় জাতীয়তাবাদ কেবল বাঙালিকেন্দ্রিক ছিল। শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এই কাঠামো ভেঙে সব জাতিগোষ্ঠীকে অন্তর্ভুক্ত করে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ধারা প্রতিষ্ঠা করেন। আজ আমরা সেই ঐক্যের পথেই এগিয়ে যাচ্ছি। সকল সম্প্রদায়ের অংশগ্রহণেই গড়ে উঠবে একটি শক্তিশালী, মানবিক বাংলাদেশ।”

মেয়র তার বক্তব্যে স্বাস্থ্যখাতের প্রতি গুরুত্ব দিয়ে বলেন,আমরা কোভিড মোকাবেলায় সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, মা ও শিশু হাসপাতাল, ভেটেরিনারি ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে এন্টিজেন ও আরটিপিসিআর টেস্টের ব্যবস্থা রয়েছে। যারা এখনও টিকা নেননি, তারা দ্রুত বুস্টার ডোজ নিয়ে নিন। তিনি বর্ষা মৌসুমে ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার মতো রোগ প্রতিরোধে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যত্রতত্র ডাবের খোসা বা প্লাস্টিক-পরিত্যক্ত সামগ্রী ফেলে পানি জমতে দেওয়া যাবে না। জমে থাকা পানিই ডেঙ্গুর উৎস। নাগরিকদের সতর্ক থাকতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমি আশ্বাস দিতে আসিনি—আমি কাজ করতে এসেছি। চাই না, এই শহরের একজন নাগরিকও যেন নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি শান্তিপূর্ণ, মানবিক ও উন্নত নগর গড়ে তুলি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ