আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ধর্মীয় মূল্যবোধ মানব চরিত্রকে উৎকর্ষের পূর্ণতায় অভিষিক্ত করে-ধর্ম উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, সমাজের প্রতিটি সদস্য যদি ধর্ম চর্চা ও ধর্ম অনুশীলনে মনোযোগী হয় তাহলে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস পাবে। এছাড়া ধর্মীয় মূল্যবোধ মানব চরিত্রকে উৎকর্ষের পূর্ণতায় অভিষিক্ত করে বলে তিনি উল্লেখ করেন। উপদেষ্টা শুক্রবার চট্টগ্রামের হাটহাজারী, রাউজান ও রাঙ্গুনিয়া উপজেলায় ১ টি মডেল মসজিদের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ২ টি মসজিদ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন।

এ তিনটি মসজিদ নির্মাণে প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীনে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অংশ হিসেবে সারা দেশে ৫৬৪ টি মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণ করছে। এ মসজিদগুলো সে প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে।
উপদেষ্টা রাউজানের মডেল মসজিদ উদ্বোধন করেন ও মসজিদে জুমার বয়ান করেন। উদ্বোধনী বয়ানে উপদেষ্টা বলেন, সরকার ১৩ কোটি টাকা ব্যয় করে এ মসজিদ নির্মাণ করে দিয়েছে। এখন মসজিদকে আবাদ রাখার দায়িত্ব এলাকাবাসীর। মসজিদভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করে সমাজের সকলকে নিয়মিত মসজিদমূখী হতে হবে।

মসজিদকে সচল রাখতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে আদায় করতে হবে। কেননা নামাজ সকলকে সকল প্রকার খারাপ কাজ থেকে মুক্ত রেখে মানুষের মধ্যে নৈতিকতাবোধ জাগ্রত করে, মূল্যবোধ সমুন্নত রাখে।
উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সঠিক পদক্ষেপের কারনে চলতি বছর হজ্জ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দেশের বিমানবন্দরে কোন হাজী যেমন হয়রানির সম্মুখিন হননি তেমনি সৌদি আরবে গিয়েও কেউ বিড়ম্বনার শিকার হয়নি। কেউ হারিয়ে যায়নি বা বাংলাদেশী কোন হাজী মারা যাননি। এছাড়া এবার স্বল্পমূলে কাবার কাছাকাছি স্থানে হাজীদের জন্য ঘর ভাড়া নেওয়া হয়েছে। ফলে আমাদের খরচ কিছুটা কম হয়েছে এবং কিছু টাকা জমা রয়েছে। সকল হাজী দেশে আসা শেষ হলে জমাকৃত টাকা ফেরত দেওয়া হবে। তিনি বলেন, টাকা মেরে খাওয়ার জন্য আমরা ক্ষমতায় বসিনি।

পরে উপদেষ্টা এখানে জুমার নামাজ আদায় করেন। প্রথম দিনে মসজিদে খুতবা দেন ও জুমার নামাজে ইমামতি করেন হাটহাজারী বড় মাদ্রাসার প্রধান মুফতি মো. জসীম উদ্দিন। নামাজ শেষে বিপুল সংখ্যক মুসল্লির উপস্থিতিতে দেশ ও জাতির কল্যাণ এবং দৃষ্টিনন্দন এ মসজিদ নির্মাণ করে দেওয়ায় বর্তমান সরকারের জন্য দোয়া করা হয়। অনুষ্ঠানে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু: আ: আউয়াল হাওলাদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ: ছালাম খান ও প্রকল্প পরিচালক মো: শহীদুল আলম বব্কব্য রাখেন।

তিনতলা বিশিষ্ট এ মসজিদ কমপ্লেক্সে একসাথে ১ হাজার ২০০ মানুষের নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া মুর্দা গোসল দেওয়ার জায়গা, কার পার্কিং, ইমাম মুয়াজ্জিন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, এতিমখানা, ইসলামিক বই প্রদর্শণ ও বিক্রয় কেন্দ্র, ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর অফিস, কিচেন ও ডাইনিং সুবিধা, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, গণশিক্ষা ব্যব¯’া, হজ্জ বুকিং এর ব্যবস্থা, ইসলামিক লাইব্রেরি, ইমাম শিক্ষক ও মুয়াজ্জিন এর থাকার কক্ষ, গেস্ট রুম ও কনফারেন্স রুম, অটিজম কর্ণার প্রভৃতি সুবিধা রয়েছে। এছাড়া এখানে মহিলাদের জন্য পৃথক নামাজের সুবিধাও রাখা হয়েছে।

সকালে উপদেষ্টা হাটহাজারী পৌরসভা এলাকার ফটিকা কডিয়ার দীঘির পাড় এলাকায় হাটহাজারী উপজেলার মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন ও মোনাজাতে অংশ নেন। এ অনুষ্ঠানে মুনাজাত পরিচালনা করেন হাটহাজারী মাদ্রাসার শায়খুল হাদীস আল্লামা শেখ আহমদ। উপস্থিত ছিলেন হাটহাজারী মাদ্রাসার প্রধান পরিচালক মাওলানা খলিল আহমদ কাসেমী, মাওলানা মাহমুদুল হাসান ফতেহপুরী, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু: আ: আউয়াল হাওলাদার, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক জনাব আ: ছালাম খান ও প্রকল্প পরিচালক মো: শহীদুল আলম প্রমূখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দোয়া মাহফিল খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায়

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সিনিয়র সাংবাদিক এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, দেশের গণমাধ্যমের উন্নয়ন, সাংবাদিক সমাজের কল্যাণ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ চিরদিন স্মরণ করবে। বক্তারা ঐতিহাসিক অবদান স্মরণ করতে গিয়ে উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উন্নয়নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ২ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।

১৯৮০ সালে বায়েজিদের শেরশাহ এলাকায় সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি-তে ১৬ একর জমি বরাদ্দ দেন, যা ১৯৮১ সালে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সরকারের আমলে তা রেজিস্ট্রি করা হয়। ১৯৯৪ সালে প্রেস ক্লাবের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় তৎকালীন মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছিলেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রেস ক্লাবের জন্য অসামান্য অবদান রেখেছেন। আমি অতীতে তাকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলাম, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আবারও অনুরোধ জানাই—বেগম খালেদা জিয়াকে প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হোক।

দোয়া মাহফিলে দেশ ও জাতির শান্তি, কল্যাণ ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহ আনিস জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের অন্তবর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের সাবেক লাইব্রেরি সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা।মাহফিল শেষে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যেগে বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া রোগমুক্তি কামনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সাইবার ভিত্তিক সংগঠন জিয়া সাইবার ফোর্স (জেডসিএফ) চট্টগ্রাম দক্ষিণ উদ্যোগে বিএনপির চেয়ারপার্সন আপোষহীন নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি ও পরিপূর্ণ সুস্থতা কামনায় জিয়া সাইবার ফোর্স- (জেডসিএফ), চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার উদ্যেগে দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত। গত শনিবার বাদে মাগরিব পটিয়া তৈয়াবিয়া এতিমখানা, হেজখানা, খতমে কোরআন ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত দোয়া মাহফিলে সভাপতিত্ব করেন আহ্বায়ক মোঃ আবুল বশর চৌধুরী। সঞ্চালনায় ছিলেন সদস্য সচিব এডভোকেট আজিজুল হক।

প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী বাহাউদ্দীন ফারুক মুন্না। উপস্থিত ছিলেন যুগ্ম আহ্বায়ক আরাফাত চৌধুরী, কাজী মোঃ বাদশা, নাবিদুর রহমান, মোঃ রবিউল হোসেন আলভী, মোহাম্মদ মাহিম, তানবির জিহান সহ দক্ষিণ জেলার সকল নেত্ববৃন্দ। দোয়া ও মোনাজাতে মহান আল্লাহর দরবারে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দ্রুত আরোগ্য রোগ থেকে পরিপূর্ণ সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। এসময় দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনা করেও দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ