আজঃ মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে জুলাই অভ্যুত্থানবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখতে ‘যৌথ টহল’ কর্মসূচি

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

জুলাই অভ্যুত্থানবিরোধী কর্মকাণ্ড রুখতে বিভিন্ন বাহিনীর সমন্বয়ে চট্টগ্রাম নগরী থেকে সাতকানিয়া পর্যন্ত যৌথ টহলের কর্মসূচি নিয়েছে জেলা প্রশাসন। আগামী সোমবার (২১ জুলাই) এর সম্ভাব্য সময়ও নির্ধারণ করা হয়েছে।মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর সার্কিট হাউজে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম।‘জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠানমালা’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আয়োজিত ড্রোন শোসহ ধারাবাহিক কর্মসূচি সম্পর্কে জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘আগামী সোমবার একটা জয়েন্ট পেট্রোল টিম নিয়ে আমরা মাঠে নামার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছি। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার স্যারের অনুমতি সাপেক্ষে আমরা এটা করব। এই টিমে র‌্যাব, বিজিবি, আর্মি, পুলিশ, আনসার, এয়ারফোর্স, জেলা প্রশাসন থাকবে। আমরা সবাই একসঙ্গে মুভ করব। সার্কিট হাউজ থেকে রওনা দিয়ে ১০০ থেকে ১৫০ মাইল মুভ করে আমরা সাতকানিয়া পর্যন্ত যাবো।’
তিনি বলেন, ‘আমরা সারা বাংলাদেশকে জানাতে চাই যে জুলাই অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে কোনো কার্যক্রম কিংবা নাশকতার চেষ্টা কেউ করলে তারা যেন সতর্ক হয়ে যায়। আমরা সতর্ক অবস্থানে আছি, এটা তাদের জানাতে চাই।’এদিকে বুধবার (১৬ জুলাই) চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে ড্রোন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে লাখো মানুষের সমাগমের আশা করছে জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসক বলেন, ‘সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে ড্রোন শো জেলা স্টেডিয়ামে হবে। সেখানে ১১০০ ড্রোন উড়বে। আমরা আশা করছি সেখানে এক লাখের মতো জনসমাগম হবে। সিএমপি থেকে সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। গোয়েন্দা কার্যক্রম অব্যাহত আছে। আমরা কোনো ধরনের নিরাপত্তাহীনতার আশঙ্কা করছি না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় যা যা করণীয় দরকার, সবকিছুই করা হচ্ছে।’
চট্টগ্রামের ১৫টি স্থানে জুলাই শহিদদের স্মৃতিফলক স্থাপন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যেখানেই শহিদ হয়েছে, সেখানেই স্মৃতিফলক স্থাপন করা হবে। চট্টগ্রামে মোট ১৫টি জায়গায় করা হবে।

মহানগরীতে যারা মারা গেছেন, সেটা করবে সিটি করপোরেশন। মহানগরীর বাইরে উপজেলা পর্যায়ে এলজিইডি করবে।’এ ছাড়া জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে প্রতীকী ম্যারাথন, যতজন শহিদ ততগুলো বৃক্ষরোপণ, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী, শহিদদের মায়েদের নিয়ে সমাবেশ, হেলথ ক্যাম্প, এলাকাভিত্তিক জুলাই যোদ্ধাদের সমাগম ও প্রধান উপদেষ্টার ভিডিও বার্তা প্রচার এবং সম্মাননা প্রদানসহ আরও কর্মসূচির তথ্য জানানো হয়েছে সংবাদ সম্মেলনে।এরপর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্ট সকাল ৯টায় জুলাই স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশ বদলাতে থ্রি জিরো থিওরি আদর্শ মডেল: চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেছেন, দেশ বদলাতে তথা পৃথিবী বদলাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর থ্রি জিরো থিওরি একটি আদর্শ মডেল। এ মডেল অনুসরণ করে আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করলে দেশে যেমন ক্ষুধা এবং বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি মানবজাতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকবে।
কমিশনার রোববার চট্টগ্রামের জেলা তথ্য অফিস

আয়োজনে চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকের বিশ্বে তরুণদের জন্য সম্ভাবনা ও সুযোগের ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুধু চাকরির পিছনে ছুটে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে হবে।

সভপতির বক্তব্যে মোঃ বোরহান উদ্দীন বলেন, যুবক-যুবতীদের নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন উৎসব হবে। এই উৎসবে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করে সরকার। এজন্য নির্বাচনী পরিবেশকে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ বোরহান উদ্দীন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আবুল বাশার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম গিয়াসউদ্দিন বাবর, আব্দুল বারী প্রমূখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণরত প্রায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূল উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এসময় যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার।


এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) খোদাদাদ হোসেন,সহকারী পুলিশ সুপার রাণীশংকৈল সার্কেল স্নেহাশীষ কুমার দাস, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য,গত ২৯ নভেম্বর বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ