আজঃ সোমবার ১০ নভেম্বর, ২০২৫

ভোলা জেলা: দ্বীপের রাণী

মোঃ মহিউদ্দিন

মেঘনা আর তেতুলিয়ার কোলে শুয়ে আছে ভোলা, যেন প্রকৃতির আঁচলে বাঁধা এক অনিন্দ্যসুন্দর রাণী। সবুজ শ্যামলে ভরা এ দ্বীপ যেন স্বপ্নের দোলা। সোনার মাটি, নদীর গীতিময় স্রোত আর ফসলি জমিতে দুলে ওঠা সোনালী ধান মিলে ভোলাকে বানিয়েছে প্রকৃতির এক মহিমান্বিত চিত্রপট।
ভোলার সকাল জাগে পাখির ডাকে। শিশিরভেজা হাওয়া যখন মাঠের বুক ছুঁয়ে যায়, তখন কৃষকের ঘামে ভিজে ওঠে শস্যশ্যামলা জমি। ধানের শীষে ঝরে পড়া সোনালি রোদ আর কৃষকের হাসি যেন একে অপরের পরিপূরক। মেঘনার ঢেউয়ে ইলিশের নৃত্য আর জেলেদের জালে স্বপ্ন ধরা—এই ভোলার নিজস্ব ঐশ্বর্য।

এ দ্বীপের আকাশে-বাতাসে মিশে আছে বক, মাছরাঙা, শালিক ও টিয়ার কিচিরমিচির। প্রকৃতির এমন সুরেলা কলতানে মন ভরে ওঠে মুগ্ধতায়। কাশবনের নরম দোলা, নদীর বুকে ভাটিয়ালি গানের সুর, আর নৌকার পাল মেলে বাতাসে ভেসে চলা—সবই ভোলার সৌন্দর্যের অনন্য উপাখ্যান।
ভোলা শুধু প্রাকৃতিক রূপে নয়, প্রাণের টানে রাণী। এখানে সমুদ্রের নোনা হাওয়া মাটির গন্ধে মিশে এক অদ্ভুত আবেশ ছড়ায়। কাঁকড়ার হাঁসি, ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, আর জেলেদের উচ্ছ্বসিত গান মিলে ভোলার সুরের মূর্ছনা তৈরি করে। জোছনার আলোয় নদীর বুকে ভেসে থাকা স্বপ্ন যেন হৃদয় জুড়ে এক অমলিন কবিতা হয়ে বাজে।

ভোলা জেলার প্রতিটি বাঁকে বাঁকে রঙিন মায়া, নদীর আঁকাবাঁকা পথ ধরে ছুটে চলে জীবনের স্রোত। তাই তো একে দ্বীপের রাণী বলা হয়। এ রাণীর সৌন্দর্য শুধু চোখে ধরা পড়ে না, হৃদয়ের গভীরে চিরকাল বেজে চলে।যেথায় যাই, মন পড়ে থাকে এই নদী-নদীর দেশে, কাশবনের বাতাসে, ইলিশের নৃত্যে, কৃষকের সোনালি হাসিতে। ভোলা শুধু একটি জেলা নয়, সে এক স্বপ্ন, এক ভালোবাসা—এ যে আমাদের প্রিয় দ্বীপের রাণী।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কবি রিপন শানকে নিয়ে শব্দকুঠি সাহিত্য অঙ্গনের ৭৭ তম আসর আগামি ৩১ অক্টোবর ।


“জীবনের জন্য কবিতা” শ্লোগানের ধারক-বাহক সংগঠন শব্দকুঠি সাহিত্য অঙ্গনের ৭৭ তম আড্ডার মধ্যমণি (সভাকবি) নির্বাচিত হয়েছেন- নদীর বুকে জীবন জ্বলে, ফিনিক্স পাখির উড়াল, রত্নখচিত কুয়াশা গ্রন্থের লেখক কবি রিপন শান । সমকালীন শিল্প-সাহিত্যের বহুমাত্রিক প্রতিভাবান বীরমুক্তিযোদ্ধার সন্তান, প্রভাষক, সাংবাদিক, নদীমাতৃক এই কবিকে নিয়ে আগামি ৩১ অক্টোবর ২০২৫, সন্ধ্যায় রাজধানীর পরিবাগে অবস্থিত সংস্কৃতি বিকাশ কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে শব্দকুঠির নিয়মিত সাপ্তাহিক সাহিত্য সভা ।

শব্দকুঠি সাহিত্য অঙ্গনের প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক কবি রোকসানা রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সাহিত্য সভায় সভাপতিত্ব করবেন- শব্দকুঠির সভাপতি ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক তারুণ্যের কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন । গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করবেন- সাংবাদিক কবি আশফাকুজ্জামান । অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত থাকবেন – কবি রোকেয়া ইসলাম, কবি তাহমিনা কোরাইশী, কথাসাহিত্যিক কালাম ফয়েজী, ডক্টর মিজান রহমান , মাকসুদ তালুকদার, কবি ব্যারিস্টার সাদিয়া আরমান, কলামিস্ট মোমিন মেহেদী, সাংবাদিক সোনিয়া দেওয়ান প্রীতি প্রমুখ। কবিতা ও গল্পপাঠে অংশ নেবেন শব্দকুঠি সাহিত্য আড্ডার নিয়মিত লেখকগণ ।

কবি রিপন শান ঢাকা ও ভোলা থেকে একযোগে প্রকাশিত স্বতন্ত্রধারার সংবাদপত্র দৈনিক অমৃতালোক এর ফিচার এডিটর । জাতীয় দৈনিক মাতৃজগতের সহব্যবস্হাপনা সম্পাদক । জনপ্রিয় ম্যাগাজিন মুক্তবুলির প্রধান সম্পাদক । ১৯৯৮ সালে বরেণ্য অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী সম্পাদিত পাক্ষিক নটনন্দন দিয়ে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করা বহুমাত্রিক লেখক সংগঠক রিপন শান বিভিন্ন সময়ে যুক্ত ছিলেন- সাপ্তাহিক বর্তমান সংলাপ, সাপ্তাহিক খবরের কাগজ (আজকের কাগজ), সাপ্তাহিক শীর্ষকাগজ, দৈনিক খবরপত্র, বাংলারিপোর্ট২৪, বজ্রকণ্ঠ, দৈনিক দেশজনপদ, দৈনিক বাংলাদেশ বাণী, ইউরোসমাচার, ইউরোবাংলাটাইমস, সহ দেশী-বিদেশী বিভিন্ন গণমাধ্যমে।

অস্ট্রিয়ার রাজধানী ভিয়েনা থেকে প্রকাশিত বাংলা গণমাধ্যম ইউরোবাংলাটাইমসে ম্যানেজিং এডিটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন টানা তিন বছর । অস্ট্রিয়া বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের বাংলাদেশ কো- অর্ডিনেটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন টানা পাঁচ বছর।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির অবিস্মরণীয় “কবিকণ্ঠে আবৃত্তি সন্ধ্যা ২০০৭” অনুষ্ঠানের গ্রন্থিক ও উপস্থাপক, লালমোহন উপজেলা শিল্পকলা একাডমির নির্বাচিত সাবেক সাধারণ সম্পাদক কবি রিপন শান, টানা তিন টার্ম লালমোহন উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন । ব্র্যাক সিইপি প্রযোজিত গণনাটক ‘নতুন সকাল’ এর কেন্দ্রীয় মাস্টার চরিত্রে ৫৪ টি প্রদর্শনীতে অভিনয় করে তিনি সাউন্ডবাঙলা কর্তৃক জাতীয় পর্যায়ে সংবর্ধিত হয়েছেন ।

তাঁর সনদীয় নাম মোঃ শাহাবুদ্দিন রিপন । লেখালেখি, সমাজকর্ম ও সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে রিপন শান নামেই সমধিক পরিচিত। মূলত কবি হিসেবে সমাদৃত হলেও তুখোড় বক্তা, আবৃত্তিশিল্পী, উপস্থাপক, অভিনেতা, মঞ্চ নাট্যকার, নির্দেশক, লিটলম্যাগ সম্পাদক, সাংবাদিক, কলেজ শিক্ষক এবং কণ্ঠশিল্পী হিসেবেও বহুমাত্রিক পরিচয় রয়েছে তাঁর। ১৯৭৫ সালের ৩ মার্চ দ্বীপজেলা ভোলার লালমোহন উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ধলীগৌরনগর ইউনিয়নের চতলা গ্রামে এক বনেদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি । পিতা একাত্তরের রণাঙ্গনের বীরমুক্তিযোদ্ধা শিক্ষাবিদ মরহুম সালাউদ্দিন আহমাদ।

মাতা লালমোহনের প্রথম এন্ট্রান্স শিক্ষিতা মরহুমা বেগম রওশান আরা পঞ্চায়েত। পিতামহ মরহুম মাওলানা মনসুর আহমাদ গোল্ডমেডেলিস্ট ছিলেন ভোলা সরকারি কলেজের খ্যাতিমান অধ্যাপক। মাতামহ মরহুম দানবীর মজিবুর রহমান পঞ্চায়েত ছিলেন লালমোহন ইউপির জননন্দিত চেয়ারম্যান । জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সাবেক ছাত্র , ঢাকা কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর বহুমুখী সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও সাংবাদিক রিপন শান বদরপুর মহাবিদ্যালয়ে (সাবেক নুরুন্নবী চৌধুরী মহাবিদ্যালয়) একটানা ১৪ বছর ধরে বাঙলা বিষয়ে অধ্যাপনায় নিয়োজিত আছেন । পাশাপাশি মাতৃজগত আইপিএ টিভির পরিচালক , ভয়েস চট্টগ্রামের উপদেষ্টা সম্পাদক, ভোলার কণ্ঠের বিশেষ প্রতিনিধি ও দ্য রেডটাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার হিসেবে সংযুক্ত আছেন।

লেখক রিপন শান এর প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে : কাব্যগ্রন্থ- নদীর বুকে জীবন জ্বলে, রত্নখচিত কুয়াশা; গল্পগ্রণ্হ- ফিনিক্স পাখির উড়াল। প্রকাশের পথে- শিল্পের আলাপ ( সাক্ষাৎকার সংকলন ), অপার বিস্ময় ( তথ্য সংকলন ), আট বেহেশতের সুবাস ( কাব্যগ্রন্থ ), কবিতা-কলাপ ( নির্বাচিত কবিতা ) । শ্যামল মাটির কমলেরা, বাউন্ডুলে, বেকার অমানিশা- নাট্যকার রিপন শান রচিত ও নির্দেশিত মঞ্চসফল তিনটি নাটক। সম্পাদনা করেছেন দুই বাংলার কবিতা সংকলন- জ্বলে ওঠার কবিতা ; লিটল ম্যাগ- রোদসী, বেতুয়া , প্রমিত বাংলার মুখ। বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান রিপন শান- ভোলা দক্ষিণ প্রেসক্লাব, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলা, বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সন্তান সংসদ ভোলা, লালমোহন মিডিয়া ক্লাব ও নেক্সাস ৯৩ ফ্রেন্ডস প্লাটফর্মের প্রতিষ্ঠাতা ।

সামাজিক সাংস্কৃতিক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন সময়ে অর্জন করেছেন- জাতীয় ছাত্রধারা পুরস্কার, চরফ্যাসন প্রগতি ইউনিটি এওয়ার্ড, আমরা করবো জয় পুরস্কার, মিরপুর এইচ এইচ মাইক্রো ইনস্টিটিউট সম্মাননা, নবকল্লোল পুরস্কার, এম আর মনজু কালচারাল সোসাইটি সম্মাননা, লালমোহন ফাউন্ডেশন ঢাকা পুরস্কার, সাউন্ডবাঙলা বেস্টবুক এওয়ার্ড, নিউন্যাশন মডেল স্কুল সম্মাননা, দৈনিক মাতৃজগত সম্মাননা , ম্যাজিক লণ্ঠন আড্ডার কবি সম্মাননা ইত্যাদি।

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্কে নিবেদন করে জাতীয় কবিতা পরিষদের অনন্য এক আয়োজন ।।

দ্রোহ, প্রেম ও প্রতিবাদের কবি, জাতীয় কবিতা পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র ৬৯তম জন্মদিনকে নিবেদন করে গত ২১ অক্টোবর২০২৫ মঙ্গলবার বিকেলে৫টায়, রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন রোডের ‘কাজল মিলনায়তন’-এ অনুষ্ঠিত হয়েছে জাতীয় কবিতা পরিষদের ৫১তম কবিতাপাঠ ও আলোচনা অনুষ্ঠান।

কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র ঘনিষ্ঠ বন্ধু, জাতীয় কবিতা পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমান সভাপতি কবি মোহন রায়হানের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে কবিকে নিয়ে আলোচনা করেন অ্যাটর্নী জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র ছোট ভাই চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. সাইফুল্লাহ, আসাদুজ্জামানের স্ত্রী শিরিন সুলতানা এবং রুদ্র’র আরেক বন্ধু কবি ও লেখক তুষার দাশ। কন্ঠশিল্পী পারহান উদ্দিনের কন্ঠে রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র লেখা ‘ভালো আছি ভালো থেক, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখ’ এবং শিল্পী মিশু দাসের কন্ঠে প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের ‘আমি বাংলায় গান গাই’ সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি শুরু হয়।

সূচনা বক্তব্যে কবি মোহন রায়হান বলেন, জাতীয় কবিতা পরিষদের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা রুদ্রের অনেক কীর্তি । সে কবিতা লিখেছে, গান লিখেছে, গল্প লিখেছে, নাটক লিখেছে, অভিনয় করেছে, সাড়া জাগানো প্রেম করেছে, লড়াই লড়েছে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে। বাংলাদেশের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যে দুটি ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্লাটফর্ম ‘সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও ‘জাতীয় কবিতা পরিষদ’-এর অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিল রুদ্র। রুদ্র তৎকালীন পাকিস্তানী শাসন-শোষণের বিরুদ্ধে জেগে উঠেছিল তাঁর উপনিবেশ বিরোধী চেতনার জাগরণের মধ্য দিয়ে। রুদ্র ঢাকা কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। রুদ্র ছিল আমার অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধু। তাঁর সঙ্গে অনেক দুঃখ-বেদনা-বিরহ, আনন্দ ও সুখের স্মৃতি রয়েছে। তাঁর জন্মদিনকে স্মরণ করে আজকের অনুষ্ঠানটি আয়োজন করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। আজ রুদ্রকে নিয়ে বলার জন্য ব্যতিক্রমী এক মানুষকে আমরা আমন্ত্রণ জানিয়েছি, বাংলাদেশের সম্মানীয় অ্যাটর্নী জেনারেল ও বিশিষ্ট লেখক আইনজীবী মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে। তাঁর জীবনও বৈচিত্রময়, আন্দোলনমুখর এবং সংগ্রামে উত্তাল। মেধাবী আসাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তুখোড় ছাত্রনেতা ছিল। আমার অত্যন্ত স্নেহভাজন আসাদ একসময় আমার সহযোদ্ধা ছিল। সেই সময় অবৈধ ক্ষমতার দখলদার সামরিক স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আসাদ অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা পালন করেছে।
অনুষ্ঠানে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌কে নিয়ে অ্যাটর্নী জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, আমার জীবনের প্রথম প্রেম রাজনীতি এবং শেষ প্রেমও রাজনীতি। এই রাজনৈতিক জীবনের ভাঙা-গড়া, উত্থান-পতন রয়েছে। এই ক্ষেত্রে যাঁরা অবদান রেখেছেন, উৎসাহ যুগিয়েছেন তাদের মধ্যে কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ ও কবি মোহন রায়হান অন্যতম ভূমিকা রেখেছেন। আমি ক্লাস এইটের যখন ছাত্র তখন কবি রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহর ‘বাতাসে লাশের গন্ধ’ কবিতাটি আমার রক্তে আগুন জ্বেলে দেয়। কবি মোহন রায়হানের রাউফুন বসুনিয়াকে নিয়ে লেখা কবিতাটিও আমাকে ভীষণভাবে আন্দোলিত করে। রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ও মোহন রায়হানকে অনুসরণ করতে পেরে এবং মোহন রায়হানকে নেতা হিসেবে পেয়ে আমার রাজনৈতিক অগ্রযাত্রায় কবিতার প্রতি একটা মোহ জন্ম নেয়। চলছি চলছি হঠাৎ প্রেমে পড়ে গেলাম। নাম তার মাধবী। তাকে প্রথম যখন প্রেমের কথা বলি, তখন কবি রুদ্রের কাছ থেকে ধার করে নিয়ে বলেছিলাম-‘অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই।’ তাকে মুগ্ধ করার অন্য কোনো পন্থা ছিল না আমার, রাজনীতির প্রেমে যখন আমি মগ্ন তখন একজন নারীকে কীভাবে আকৃষ্ট করা যায় তার জন্য আমি রুদ্রের কাছে ফিরে গিয়েছিলাম। আমি নিজেকে রাজনৈতিকভাবে শাণিত করার জন্য রুদ্রের কাছ থেকে সাহস ধার করেছিলাম।

অনুষ্ঠানে কবিতাপাঠ করেন কবি মোহন রায়হান, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, কবি তুষার দাশ, কবি লিলি হক, কবি গোলাম শফিক, কবি মনজুরুর রহমান, কবি কামার ফরিদ, কবি শ্যামল জাকারিয়া, কবি এবিএম সোহেল রশিদ, কবি নূরুন্নবী সোহেল, কবি তপন রায়, কবি আমিনুল ইসলাম, কবি মাহবুব শওকত, কবি ক্যামেলিয়া আহমেদ, কবি আসাদ কাজল, কবি দীরাজ মাহমুদ, কবি ইউসূফ রেজা, কবি জামিল জাহাঙ্গীর, কবি রোকন জহুর, কবি মনিরুজ্জামান রোহান, কবি শিমুল পারভীন, কবি আফিয়া রুবি, কবি শাহীন চৌধুরী, কবি কাব্য রাসেল, কবি মিঠু কবির, কবি সবুজ মনির, কবি জয়নুল আবেদীন জয়, কবি শ্যাম সুন্দর কুণ্ডু, কবি মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান , কবি কাওসার জসিম, কবি আব্দুর রাজ্জাক, কবি এম, এ, করিম, কবি মিলি হক, কবি রানা হামিদ, কবি টিমুনী খান রীনো, কবি মেহেদী হোসেন, কবি মনিরুজ্জামান পলাশ, কবি শরীফ খান দীপ, কবি মোহাম্মদ জহুরুল ইসলাম মনজু, কবি নীপা চৌধুরী, কবি সফিকুর রহমান, কবি শেখ সাদী মারজান, কবি ফরিদুজ্জামান, কবি ইলোরা সোমা, কবি সাইদুর রহিম বিটুল, কবি শিশির বিন্দু বিশ্বাস, কবি শাজু শাহজাহান, কবি উত্তম চক্রবর্তী, কবি ইসরাত ঝিমি, কবি কামরুজ্জামান কায়েম, কবি প্রভাবতী চক্রবর্তী, কবি আবীর বাঙালি, কবি ইমরুল কায়েস, কবি কৌমুদী নার্গিস, কবি সাবিনা ইয়াসমিন, কবি আউয়াল খন্দকার, কবি মো. মাহবুবুর রহমান, কবি আতিকুজ্জামান খান, কবি মোস্তাক মুকুল, কবি জামসেদ ওয়াজেদ, কবি মেসবাউর রহমান, কবি মেজবাহ মুকুল, কবি তাসকিনা ইয়াসমিনসহ সত্তর জন কবি । রুদ্র মুহম্মদ শহীদুল্লাহ’র কবিতা আবৃত্তি করেন- বাচিক শিল্পী মেহেদী হাসান, কবি মনিরুজ্জামান পলাশ, অনন্যা মাহমুদ ও ইশরাত ঝিমি। রুদ্রকে লেখা তসলিমার চিঠি পাঠ করেন কবি শিমুল পারভীন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন কবি মনিরুজ্জামান রোহান ও কবি শিমুল পারভীন। গান, কবিতা, বাঁশি, আবৃত্তি, কথামালা আর ‘অয়েল ফ্রি’ স্বাস্থ্যসম্মত সুস্বাদু খাবারের আপ্যায়ন সবমিলিয়ে জাতীয় কবিতা পরিষদের রুদ্র স্মারক অনুষ্ঠানটি ছিল হৃদয়গ্রাহী ও জমজমাট ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ