আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ভোলা জেলা: দ্বীপের রাণী

মোঃ মহিউদ্দিন

মেঘনা আর তেতুলিয়ার কোলে শুয়ে আছে ভোলা, যেন প্রকৃতির আঁচলে বাঁধা এক অনিন্দ্যসুন্দর রাণী। সবুজ শ্যামলে ভরা এ দ্বীপ যেন স্বপ্নের দোলা। সোনার মাটি, নদীর গীতিময় স্রোত আর ফসলি জমিতে দুলে ওঠা সোনালী ধান মিলে ভোলাকে বানিয়েছে প্রকৃতির এক মহিমান্বিত চিত্রপট।
ভোলার সকাল জাগে পাখির ডাকে। শিশিরভেজা হাওয়া যখন মাঠের বুক ছুঁয়ে যায়, তখন কৃষকের ঘামে ভিজে ওঠে শস্যশ্যামলা জমি। ধানের শীষে ঝরে পড়া সোনালি রোদ আর কৃষকের হাসি যেন একে অপরের পরিপূরক। মেঘনার ঢেউয়ে ইলিশের নৃত্য আর জেলেদের জালে স্বপ্ন ধরা—এই ভোলার নিজস্ব ঐশ্বর্য।

এ দ্বীপের আকাশে-বাতাসে মিশে আছে বক, মাছরাঙা, শালিক ও টিয়ার কিচিরমিচির। প্রকৃতির এমন সুরেলা কলতানে মন ভরে ওঠে মুগ্ধতায়। কাশবনের নরম দোলা, নদীর বুকে ভাটিয়ালি গানের সুর, আর নৌকার পাল মেলে বাতাসে ভেসে চলা—সবই ভোলার সৌন্দর্যের অনন্য উপাখ্যান।
ভোলা শুধু প্রাকৃতিক রূপে নয়, প্রাণের টানে রাণী। এখানে সমুদ্রের নোনা হাওয়া মাটির গন্ধে মিশে এক অদ্ভুত আবেশ ছড়ায়। কাঁকড়ার হাঁসি, ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, আর জেলেদের উচ্ছ্বসিত গান মিলে ভোলার সুরের মূর্ছনা তৈরি করে। জোছনার আলোয় নদীর বুকে ভেসে থাকা স্বপ্ন যেন হৃদয় জুড়ে এক অমলিন কবিতা হয়ে বাজে।

ভোলা জেলার প্রতিটি বাঁকে বাঁকে রঙিন মায়া, নদীর আঁকাবাঁকা পথ ধরে ছুটে চলে জীবনের স্রোত। তাই তো একে দ্বীপের রাণী বলা হয়। এ রাণীর সৌন্দর্য শুধু চোখে ধরা পড়ে না, হৃদয়ের গভীরে চিরকাল বেজে চলে।যেথায় যাই, মন পড়ে থাকে এই নদী-নদীর দেশে, কাশবনের বাতাসে, ইলিশের নৃত্যে, কৃষকের সোনালি হাসিতে। ভোলা শুধু একটি জেলা নয়, সে এক স্বপ্ন, এক ভালোবাসা—এ যে আমাদের প্রিয় দ্বীপের রাণী।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

লালমোহনে জনতার উপচেপড়া ঢলে সংবর্ধিত হয়েছেন মেজর হাফিজ ।

 

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ১১৭ ভোলা ৩ আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার পর  লালমোহন সরকারি শাহবাজপুর কলেজ মাঠে ১৫ নভেম্বর ২০২৫ শনিবার দুপুরে জনতার উপচে পড়া ঢলে সংবর্ধিত হয়েছেন ছয়বারের সাবেক এমপি ও সাবেক মন্ত্রী মেজর ( অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম।

লালমোহন উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি আয়োজিত গণসংবর্ধনায় সভাপতিত্ব করেন- উপজেলা বিএনপির সভাপতি মোঃ জাফর ইকবাল। দলের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত প্রধান অতিথিকে ফুল দিয়ে বরণ করেন- উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম বাদল পাঞ্চায়েত ।

সংবর্ধনা মঞ্চে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- লালমোহন পৌরসভা বিএনপির সভাপতি সাদেক মিয়া জান্টু ,লালমোহন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহবায়ক অধ্যক্ষ মোঃ ফরিদ উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক ও লালমোহন প্রেসক্লাব সভাপতি সোহেল আজীজ শাহীন, সফিউল্লাহ হাওলাদার, আ ন ম ফয়সাল তালুকদার , লালমোহন ফাউন্ডেশনের সিনিয়র সহ-সভাপতি হেদায়েত আলী অরুণ সহ উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।

জনগনের ব্যাপক উপস্থিতি দেখে- সংবর্ধিত প্রধান অতিথি, বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীরবিক্রম বলেন- আমার দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের দেখায় এতোবড়ো জনসমাবেশ লালমোহনের মাটিতে আর হয়নি।

আপনারা আমাকে ভালোবাসেন বলেই আমি আপনাদের মাঝে বারবার ফিরে আসি । যে স্বপ্ন ও আশা বুকে নিয়ে আপনারা আজ এখানে হাজির হয়েছেন- আপনাদের সেই স্বপ্নপূরণে আমি সর্বাত্মক
চেষ্টা করবো।

গত সতেরটি বছর যে দুঃশাসনের যাঁতাকলে আপনারা পিষ্ট হয়েছেন, সেই অবস্থার অবসান ঘটিয়ে মুক্ত বাতাস আপনাদের জন্য নিশ্চিত করতে হবে। আপনারা কথা বলতে পারেন নি ; আপনারা ভোট দিতে পারেন নি , আপনাদের নাগরিক অধিকার হরণ করা হয়েছে, সন্ত্রাসী লেলিয়ে দিয়ে আপনাদের জীবন দুর্বিষহ করা হয়েছে : আপনাদের জীবন নিয়ে আর কোনো সন্ত্রাসীকে ছিনিমিনি খেলতে দেয়া হবে না।

জনগণকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন- শুধু দল আমাকে মনোনয়ন দিলে হবে না । আপনারা আমাকে মনোনয়ন দিতে হবে । তবেই আমি নির্বাচনের মাঠে নামবো ।এসময় বিশাল জনসমাবেশে হাত উঁচিয়ে তাঁকে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ