আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

নৈতিকতার ভিত্তিতেই হতে হবে আদর্শ মানুষ: মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেছেন, শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড। পড়াশোনার কোনো বিকল্প নেই। তবে সেই শিক্ষা তখনই প্রকৃত অর্থে সার্থক হবে, যখন তা আমাদের নৈতিক মূল্যবোধ ও দায়িত্ববোধকে জাগ্রত করবে। বুধবার জামালখান কুসুম কুমারী সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণ ও কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) নিষ্পেষণ, নির্যাতন ও কুসংস্কারের অন্ধকার যুগে মানবতার আলোকবর্তিকা হয়ে এসেছিলেন। তিনি জ্ঞান ও নৈতিকতার মাধ্যমে সমাজ পরিবর্তনের শিক্ষা দিয়েছেন। আল-কোরআনের প্রথম নির্দেশই ছিল—‘পড়’। তাই শিক্ষার্থীদের শুধু বিদ্যাগত জ্ঞান অর্জন নয়, আদর্শ মানুষ হওয়ার জন্য নৈতিক শিক্ষা অর্জনও জরুরি।

তিনি বলেন, আমরা চাই সিটি কর্পোরেশনের শিক্ষার্থীরা শুধু ভালো ফলাফল করুক তা নয়, তারা যাতে নৈতিক মূল্যবোধসম্পন্ন ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবেও গড়ে ওঠে। তোমরা দেশের ভবিষ্যৎ। তোমাদের নৈতিক শিক্ষা, মানবিকতা আর দেশপ্রেমই আগামী দিনের চট্টগ্রাম ও বাংলাদেশকে এগিয়ে নেবে।

তিনি আরও জানান, শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করে চসিক স্কুলগুলোতে হেলথ প্রোগ্রাম ও পরিবেশ সচেতনতা কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। প্রতিটি স্কুলে ‘পরিবেশ ক্লাব’ গড়ে তোলা হবে। শিক্ষার্থীদের নিয়ে রাস্তাঘাট পরিষ্কার, নালা-নর্দমা পরিস্কারসহ নানামুখী জনসচেতনতা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হবে। কিশোরগ্যাং, মাদকাসক্তি ও ইভটিজিংয়ের মতো সামাজিক ব্যাধি থেকে শিক্ষার্থীদের দূরে রাখতে স্কুল কর্তৃপক্ষ, অভিভাবক ও স্থানীয় সমাজসেবকদের সমন্বয়ে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

মেয়র আরও বলেন, শুধুমাত্র পাঠ্যবইয়ের শিক্ষা নয়, নৈতিক শিক্ষার দিকেও মনোযোগ দিতে হবে। যদি একজন ডাক্তার উচ্চ শিক্ষিত হয়েও দরিদ্রদের চিকিৎসা না করতে পারে, তবে সে শিক্ষার কোনো মূল্য নেই। একইভাবে, যদি একজন শিক্ষক মেধাবী দরিদ্র শিক্ষার্থীদের পড়ানোর সুযোগ না পান, তাহলে তার অর্জিত শিক্ষা সমাজের জন্য তেমন কোনো উপকার বয়ে আনবে না।
শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধুলার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, সুস্থ দেহ ও মন গঠনে ক্রীড়া অপরিহার্য। ক্রীড়া শিক্ষার্থীদের একাগ্রতা, শৃঙ্খলা, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও দায়িত্ববোধ গড়ে তোলে। পুরস্কারপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানিয়ে মেয়র বলেন, “আজ যারা জিততে পারোনি, তোমরা নিরাশ না হয়ে আরও মনোযোগী হয়ে আগামী দিনে ভালো করবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান শিক্ষা কর্মকর্তা ড. কিসিঞ্জার চাকমা, শিক্ষা কর্মকর্তা মোছাম্মৎ রাশেদা আক্তার, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, সমাজসেবক মনজুর রহমান চৌধুরী, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লোকমান উদ্দিন, সাবেক প্রধান শিক্ষিকা লিলি বড়ুয়া, সৌমনাথ দাশ রাজু, রতন চৌধুরী, স্কুলের গভর্নিং বডির সদস্যসহ শিক্ষক-শিক্ষিকা ও শিক্ষার্থীরা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ