আজঃ মঙ্গলবার ১১ নভেম্বর, ২০২৫

পূর্বধলায় সাংবাদিককে হুমকির প্রতিবাদে অধ্যক্ষের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান।

পূর্বধলা (নেত্রকোনা) মোঃ নুর উদ্দিন মন্ডল দুলাল।

নেত্রকোনার পূর্বধলা সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আনোয়ারুল হক রতনের বিরুদ্ধে সাংবাদিক হেনস্থা, স্বেচ্ছাচারিতা, দায়িত্ব পালনে অবহেলা, এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলের বিপর্যয়সহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে তার অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। পূর্বধলা উপজেলা পরিষদ গেইটের সামনে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। পূর্বধলায় কর্মরত সকল গণমাধ্যমকর্মীদের আয়োজনে এ কর্মসূচিতে স্থানীয় সংবাদকর্মী, সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও সচেতন নাগরিকরা অংশগ্রহণ করেন।

মানববন্ধন শেষে সাংবাদিকরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আনিছুর রহমান খান-এর মাধ্যমে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি জমা দেন।স্মারকলিপিতে বলা হয়, গত ২ নভেম্বর (রবিবার) সকালে সাংবাদিক নাহিদ আলম পূর্বধলা সরকারি কলেজে ঘটে যাওয়া এক ঘটনার সংবাদ সংগ্রহে গেলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আনোয়ারুল হক রতন তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন এবং সংবাদ প্রচার করলে পরবর্তীতে বিভিন্ন বাধা ও হুমকির ইঙ্গিত দেন।

স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে অধ্যক্ষ আনোয়ারুল হক রতন কলেজে অদক্ষতা, স্বেচ্ছাচারিতা, আর্থিক অনিয়ম, শিক্ষকদের মধ্যে বিভাজন, পক্ষপাতমূলক আচরণ ও শিক্ষার পরিবেশ নষ্টের মাধ্যমে কলেজের সামগ্রিক শৃঙ্খলা ও শিক্ষার মান ভয়াবহভাবে নিম্নগামী করেছেন।

সংবাদকর্মীরা দাবি করেন, সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পথে অধ্যক্ষের এমন আচরণ গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ এবং একজন সাংবাদিকের মর্যাদার অবমাননা। এর আগে অনুরূপ ঘটনায় তিনি পূর্বধলা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন বলেও স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়।

স্মারকলিপিতে বস্তুনিষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে অধ্যক্ষ আনোয়ারুল হক রতনের অসদাচরণের প্রতিকার ও কলেজে একজন যোগ্য ও দক্ষ অধ্যক্ষ নিয়োগের দাবি জানানো হয়।

মানববন্ধনে পূর্বধলা প্রেসক্লাবের সভাপতি জুলফিকার আলী শাহীনের সভাপতিত্বে এবং মানবকণ্ঠ এর উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ সাকিব এর সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, পূর্বধলা প্রেসক্নাবের সাধারণ সম্পাদক মো. জায়েজুল ইসলামের দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার উপজেলা প্রতিনিধি শফিকুল আলম শাহীন, পূর্বধলার দর্পণ সম্পাদক ও প্রেসক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কেবিএম নোমান শাহরিয়ার, দৈনিক সংবাদ এর উপজেলা প্রতিনিধি এমদাদুল ইসলাম, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য নূর উদ্দিন মণ্ডল দুলাল, দৈনিক সংগলাপ জেলা প্রতিনিধি।কালবেলার উপজেলা প্রতিনিধি মো. হাবিবুর রহমান, প্রেসক্লাবের সিনিয়র সদস্য জাকির আহমেদ খান কামাল প্রমুখ।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- যুগান্তরের উপজেলা প্রতিনিধি তৌহিদ কবির রাসেল, এনটিভি অনলাইন নেত্রকোনা জেলা প্রতিনিধি এসএস ওয়াদুদ, পূর্বধলা দর্পণ এর স্টাফ রিপোর্টার আমিনুল হক, দৈনিক সকালের সময় এর উপজেলা প্রতিনিধি আব্দুল্লাহ আল আমিন, আজকের আরবান এর বিশেষ প্রতিনিধি ইমতিয়াজ আহমেদ সজিব, রূপালী বাংলাদেশ এর উপজেলা প্রতিনিধি মো. মিঠু সরকার, দৈনিক জবাদিহি এর উপজেলা প্রতিনিধি সাগর আহমেদ জজ, ইকরা স্টাফ রিপোর্টার আল আমিন শেখ, আজকের আরবান এর বিশেষ প্রতিনিধি জিয়াউর রহমান, ভোরের সময় স্টাফ রিপোর্টার শাহীন খন্দকার, সাংবাদিক মজিবুর রহমান তালুকদারসহ পূর্বধলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকরা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পাবনা-৩ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবীতে চাটমোহরে জন সমুদ্রে..

পাবনা প্রতিনিধিঃ আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কে ঘিরে ৭০,পাবনা-০৩ (চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুর) আসনে বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে স্থানীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। প্রার্থী পরিবর্তন এবং স্থানীয় নেতৃত্ব থেকে যোগ্য প্রার্থী মনোনয়নের দাবিতে সোমবার (১০ নভেম্বর) বিকেলে চাটমোহর পৌর সদরের বালুচর মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এক বিশাল জনসমাবেশ। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই কর্মসূচিতে উপজেলা ও পৌর বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মী অংশ নেন। মাঠজুড়ে সৃষ্টি হয় জনসমুদ্রের মতো এক অভূতপূর্ব দৃশ্য।


সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিএনপির কঠিন সময়েও চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া ও ফরিদপুরের নেতাকর্মীরাই দলকে টিকিয়ে রেখেছেন। মামলা, জেল, নির্যাতন সবকিছু মোকাবিলা করে তাঁরা বিএনপির পতাকা উড়িয়েছেন। অথচ এখন যদি বহিরাগত কাউকে ধানের শীষের প্রার্থী করা হয়, তা স্থানীয় নেতাকর্মীরা মেনে নেবেন না। তারা বলেন, এই এলাকার রাজনীতি এই এলাকার মানুষই ভালো জানে। বাইরে থেকে কাউকে এনে জনগণের ভোট চাওয়া সম্ভব নয়।

বক্তারা আরো সতর্ক করে বলেন, যদি স্থানীয়তার ভিত্তিতে যোগ্য, গ্রহণযোগ্য ও ত্যাগী নেতাকে প্রার্থী করা না হয়, তবে নির্বাচনের ফলাফল দলের জন্য শুভ হবে না। মাঠ পর্যায়ে যারা বছরের পর বছর লড়াই করেছেন, তাদের উপেক্ষা করলে আন্দোলন-সংগ্রামের মনোবল দুর্বল হয়ে পড়বে। তাই দলের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। এ আসনে যেন স্থানীয় এবং ত্যাগী নেতারই মনোনয়ন দেওয়া হয়।

চাটমোহর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তায়জুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন,
চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য কে.এম আনোয়ারুল ইসলাম,চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা, ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অ্যাড. মজিবুর রহমান, ভাঙ্গুড়া উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল মতিন রাজু, চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. আব্দুল আজিজ, ফরিদপুর পৌর যুবদলের সদস্য সচিব কাকন হোসেন, ভাঙ্গুড়া উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু সায়েম, চাটমোহর পৌর বিএনপি নেতা আবু তালেব, উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম হৃদয় সহ আরও অনেকে।

সমাবেশে বক্তারা এক কণ্ঠে বলেন, যারা দুঃসময়ে বিএনপির পতাকা ধরে রেখেছেন, যারা ত্যাগ স্বীকার করেছেন, তাদেরই প্রার্থী করা হোক। বহিরাগত চাপিয়ে দিলে মাঠে কোনো সাড়া মিলবে না। তবুও যদি বহিরাগত প্রার্থী কি রাখা হয় তবে এ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থীর পরাজয়ের দায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের নয়, দলের উচ্চ পর্যায়কে নিতে হবে।অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন চাটমোহর উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান হোসেন।

সমাবেশ শেষে স্থানীয় নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে মিছিল বের করে চাটমোহর শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। মিছিল শেষে তারা আবারও ঘোষণা দেন “চাটমোহর-ভাঙ্গুড়া- ফরিদপুরের জনগণ স্থানীয় প্রার্থীই চায়; এই দাবির প্রতিফলন না ঘটলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।

নির্বাচনকে কেন্দ্র করে: চট্টগ্রাম এখন আতংকের নগরী

অন্তভর্তিকালীন সরকারের ঘোষণা ২০২৬ সালের ফ্রেরুয়ারিতে জাতীয় সাংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে আতংকিত হয়ে উঠছে চট্টগ্রাম সম্প্রতি রাউজান,রাঙ্গুনিয়া, ফটিকছড়ি, হাটহাজারী সহ চট্টগ্রাম জুড়ে খুনের মহোৎসব চলছে। ২০২৪ সালের ৩১ আগস্ট সন্ধ্যা। পাঁচলাইশ এলাকার কুয়াইশ রোডের নাহার গার্ডেন নামে একটি রেস্তোরাঁর সামনে হঠাৎ একটি অটোরিকশা ঘিরে গুলির ঘটনা ঘটে। রিকশায় থাকা আনিস ঘটনাস্থলে মারা গেলেও মাসুদ নামে অন্যজন আহত অবস্থায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

এর কিছুক্ষণ বাদেই দেড় কিলোমিটার দূরে মাসুদকে তার বাড়ির সামনেই গুলি করে হত্যা করে মোটরসাইকেল আরোহী কয়েকজন। এই ধরনের টার্গেট কিলিং একসময় চট্টগ্রামে প্রায়ই ঘটত। আবারও পুরনো স্ট্যাইলের হত্যা শুরু হয়েছে। জানা গেছে, সরোয়ার হোসেন বাবলার বাড়ি থেকে মিটিং করে ফেরার পথে ওই দুজনকে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় দুই থানায় পৃথক দুটি মামলায় সাজ্জাদ হোসেনসহ চারজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা তিন-চারজনকে আসামি করা হয়েছে।

সেদিনই প্রথম সাজ্জাদ হোসেনের সঙ্গে সরোয়ার হোসেন বাবলার দ্বন্দ্ব সামনে আসে। সরোয়ার হোসেন ছিলেন চট্টগ্রামের আলোচিত এইট মার্ডারের প্রধান আসামি ‘শিবিরের ক্যাডার’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া সাজ্জাদ হোসেন খান ও হাবীব খানের অনুসারী। পরে সাজ্জাদ হোসেন খানের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়ান সরোয়ার হোসেন। সরোয়ারকে শায়েস্তা করতে আরেক সাজ্জাদ হোসেনকে দলে ভেড়ান সাজ্জাদ হোসেন খান। এই সাজ্জাত পরিচিতি পায় ছোট সাজ্জাদ হিসেবে। গত ১৬ মাসে চট্টগ্রাম শহরেই শুধু ৬টি টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা ঘটে। যার প্রতিটি ঘটনায় ভিক্টিমরা সরোয়ার হোসেনের অনুসারী। ৫ নভেম্বার বুধবার সন্ধ্যায় নিজের ঘরের সামনেই টার্গেট কিলিংয়ের শিকার হন সরোয়ার হোসেন বাবলা।

এর আগে গত বছরের ২১ অক্টোবর চান্দগাঁওয়ে মাইক্রো বাসে এসে আফতাব উদ্দিন তাহসিন নামে একজনকে গুলি করে হত্যা করা হয়। চলতি বছরের ৩০ মার্চ বাকলিয়া এক্সেস রোডে প্রাইভেটকার ঘিরে গুলি করে সরোয়ারকে হত্যার চেষ্টা করা হয়। সেদিন গাড়িতে থাকা সরোয়ারের দুই সহযোগী মারা গেলেও ভাগ্যচক্রে বেঁচে যায় সরোয়ার। ২৫ মে সরোয়ারের আরেক অনুসারী ঢাকাইয়া আকবরকে গুলি করে হত্যা করা হয় পতেঙ্গা এলাকায়। প্রতিটি ঘটনায় সাজ্জাত হোসেন ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগী রায়হানের নাম এসেছে বারবার। চট্টগ্রাম মহানগরের বাইরেও গত দেড় বছরে আরও অন্তত ১০টি টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা ঘটে। প্রতিটি ঘটনায় ঘুরে-ফিরে এই চক্রের নাম এলেও আসামিরা থেকে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, একটি অঘোষিত গ্যাংওয়ারের শুরু হয়েছে চট্টগ্রামে। যার জের ধরে একের পর এক টার্গেট কিলিংয়ের ঘটনা ঘটছে। আর এর নেপথ্যে ভারতের পাঞ্জাবে থাকা একসময়কার শিবির ক্যাডার সাজ্জাত হোসেন খানই মূল চরিত্র।

সাজ্জাত হোসেন খানের দুই শিষ্য ছিলেন সরোয়ার আর ম্যাক্সন। দুজনেরই পরিচিতি ছিল ছাত্রশিবির ‘ক্যাডার’ হিসেবে। চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা ছিল। বিদেশ বসে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকার শিল্প-কারখানা, মোটর পার্টসের দোকান, ভবন নির্মাণে চাঁদা আদায় করত এই চক্র। ২০২০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ফেরার পথে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সারোয়ার আটক করেছিল ইমিগ্রেশন পুলিশ। পরে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ তাকে নিয়ে বায়েজিদ থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে একটি একে-২২ রাইফেল এবং গুলি উদ্ধার করেছিল। ২০২২ সালে রহস্যজনকভাবে কলকাতায় মৃত্যু হয় ম্যাক্সনের। কারাগারে থাকাকালে বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর সঙ্গে বাবলার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মুক্তির পর আসলাম চৌধুরী ছাড়াও চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক আবু সুফিয়ানের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়। মাত্র এক মাস আগে বাবলা বিয়ে করেন। সেই বিয়েতে এরশাদ উল্লাহ ও আবু সুফিয়ানসহ বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এরপর থেকে বাবলাকে এই বিএনপি নেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন সভা-সমাবেশেও দেখা গেছে। এ সময় নিজেকে জুলাই যোদ্ধা পরিচয় দিতেন সরোয়ার হোসেন বাবলা।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গেও তার ছবি দেখা গেছে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সরোয়ার হোসেন বলেছিলেন, বড় সাজ্জাদ ভারতে বসে চট্টগ্রামে চাঁদাবাজি করছে। টোকাই পোলা নিয়োগ দিয়ে যখন তখন যে কাউকে গুলি করাচ্ছে। পুলিশ বড় সাজ্জাদের টোকাই বাহিনীকে ধরে না। আবার ছোট সাজ্জাদেরও একই অবস্থা। বড় সাজ্জাদের হয়ে সব কাজ করে। পুরো চট্টগ্রামে দুই সাজ্জাদ সন্ত্রাস করছে। আমি এসবের প্রতিবাদ করি। তাই আমাকে তারা শত্রু মনে করছে। পুরো বিষয়টা যে পুলিশ বিভাগ জানে, সেটি অবশ্য গোপন করেনি। বুধবার রাতে এভারকেয়ার হাসপাতালে এরশাদ উল্লাহকে দেখে বের হয়ে সাংবাদিকদের সিএমপি কমিশনার হাসিব আজিজ বলেন ‘এরশাদ উল্লাহ নয়, টার্গেট ছিলেন সরোয়ার। সরোয়ারের অপরাধের ইতিহাস আছে।

ধারণা করা হচ্ছে, হামলার মূল টার্গেট ছিলেন সরোয়ার। ঘটনার মূল যারা, তাদের অনেকেই জেলে আছেন এবং দেশের বাইরে থেকে এর ইন্ধন আছে।’চট্টগ্রাম এখন আতঙ্কের নগরী। গত এক বছরে চট্টগ্রামে ৪৯টি খুন, রহস্যজনক মৃত্যু বা ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনা ঘটেছে। সবশেষ নির্বাচনী প্রচারণায় গত বুধবারের হামলা নতুন করে অস্থিরতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। নির্বাচনের আগে এমন প্রতিহিংসা আর খুনের ঘটনা রাজনৈতিক মহলেও তৈরি করেছে শঙ্কা। নির্বাচনী প্রচারণায় এই হামলাকে শুধুই আন্ডারওয়ার্ল্ডের দ্বন্দ্ব হিসেবে দেখতে রাজি নন রাজনৈতিক কর্মীরা। তাদের মতে, এই ঘটনার মধ্য দিয়ে বিএনপিকে মাঠের শক্তির একটি বার্তাও দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

সরোয়ার হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত মামলা হয়নি। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (উত্তর) উপপুলিশ কমিশনার আমিরুল ইসলাম বলেন, নির্বাচনী গণসংযোগের সময় গুলির ঘটনায় পরিবার অভিযোগ দিলে আমরা মামলা হিসেবে রেকর্ড করব। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তদের ধরতে মাঠে পুলিশ কাজ করছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ