আজঃ বুধবার ১০ ডিসেম্বর, ২০২৫

অবহেলিত মানুষের পাশে থাকতে চাই—টিপু মন্ডলের আবেগঘন বক্তব্য

সুলতান আহম্মেদ, সাঘাটা (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি:

গাইবান্ধার সাঘাটা ও ফুলছরি উপজেলার মানুষের কল্যাণকে জীবনের মূল লক্ষ্য হিসেবে দেখেন স্থানীয় সমাজসেবক সফিকুল ইসলাম টিপু মন্ডল। মানুষের প্রতি তাঁর দায়বদ্ধতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন,
“সাঘাটা–ফুলছরির মানুষ ভালো থাকলে আমি ভালো থাকব। মানুষের মুখের হাসি আমার শক্তি, মানুষের সমস্যার সমাধানই আমার কাজ।

স্থানীয় মানুষের অভিযোগ–আক্ষেপ, জীবনসংগ্রাম ও নাগরিক সুবিধার ঘাটতির বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। চরাঞ্চলের বিশেষ সমস্যাগুলোকে সামনে রেখে বক্তব্যে তিনি বলেন,চর অঞ্চলের মানুষ সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। হাসপাতাল নেই, চিকিৎসা সুবিধা সীমিত, যোগাযোগব্যবস্থা দুর্বল—এক কথায় তারা বঞ্চনার মধ্যেই জীবন কাটাচ্ছে। এখন তাঁদের পাশে দাঁড়ানো শুধু প্রয়োজনই নয়, মানবিক দায়িত্বও।

চরবাসীর মৌলিক অধিকার নিশ্চিতেই গুরুত্ব দেখতে চান টিপু মন্ডল।তিনি আরও বলেন,এই অঞ্চলের মানুষ প্রতিদিন নদীর ভাঙন, বন্যা, অনুন্নত রাস্তা, অসুস্থ হলে চিকিৎসা না পাওয়ার কষ্ট—সবকিছুই সহ্য করে বেঁচে আছে। চরবাসীর মৌলিক চাহিদা নিশ্চিত করতে হলে স্থায়ীভাবে হাসপাতাল, চিকিৎসাসেবা, জরুরি ফায়ার সার্ভিস, স্কুল–কলেজ এবং নিরাপদ আশ্রয়সহ সমন্বিত উন্নয়ন দরকার।”

টিপু মন্ডল মনে করেন, যথাযথ উদ্যোগ ও সঠিক নেতৃত্ব থাকলে এ অঞ্চলে বড় ধরনের পরিবর্তন আনা সম্ভব।
“মানুষ আমাকে ভালোবাসে, বিশ্বাস করে। তাই তাদের প্রত্যাশা পূরণে আমি যতটুকু পারি সবটুকুই করতে চাই।”
জাতীয় রাজনীতি ও জনগণের ভবিষ্যৎ প্রসঙ্গে বক্তব্য
জাতীয় প্রেক্ষাপটে জনগণের দুর্দশা ও উন্নয়নের বিষয়ে মত প্রকাশ করতে গিয়ে তিনি বলেন,দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ছাড়া এই দেশে প্রকৃত শান্তি–শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। তিনি মানুষের অধিকার রক্ষায় আজীবন লড়াই করেছেন। সাধারণ মানুষের দুঃখ–কষ্ট দূর করতে তাঁর নেতৃত্ব প্রয়োজন।”
তিনি আরও বলেন,

আমি মনে করি, আমাদের দরকার মোদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার সরকার। দেশের উন্নয়ন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তার জন্য তাঁর মত সাহসী নেতৃত্বই প্রয়োজন।”অঞ্চলের উন্নয়নেই আজীবনের অঙ্গীকারসাঘাটা ও ফুলছরির মানুষের প্রতি নিজের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে টিপু মন্ডল বলেন,

“একজন মানুষ হিসেবে আমার দায়িত্ব মানুষের পাশে দাঁড়ানো। কেউ কষ্টে থাকলে আমি কখনো শান্তিতে থাকতে পারি না। এলাকার উন্নয়ন, মানুষের সমস্যা দূর করা—এসব কাজই আমার জীবনের লক্ষ্য।”
তিনি জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান উন্নয়ন, যুবসমাজের কর্মসংস্থান, মহিলাদের নিরাপত্তা, কৃষকের সমস্যার সমাধান এবং চরাঞ্চলের অবকাঠামো উন্নয়নে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে তিনি কাজ করছেন।
“মানুষকে ভালো রাখতে চাই, মানুষের জীবনকে সহজ করতে চাই—এই লক্ষ্য নিয়েই ভবিষ্যৎ পথচলা।”—এ কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বক্তব্য শেষ করেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

অদম্য নারীকে সম্মাননা—সাঘাটায় বেগম রোকেয়া দিবস পালিত

গাইবান্ধার সাঘাটায় যথাযোগ্য মর্যাদা, উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশে বেগম রোকেয়া দিবস এবং আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ-২০২৫ উদযাপিত হয়েছে। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) উপজেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের যৌথ আয়োজনে দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি পালন করা হয়।

অদম্য নারী সম্মাননা প্রদান উপজেলা পরিষদ হলরুমে সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আশরাফুল কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় পাঁচজন অদম্য নারীকে ‘অদম্য নারী পুরস্কার’-এ ভূষিত করা হয়।নারীর ক্ষমতায়ন, অধিকার রক্ষা এবং সমাজ উন্নয়নে তাঁদের অবদানকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয় অনুষ্ঠানে।আলোচনা সভায় বিশিষ্টজনদের বক্তব্য

অনুষ্ঠানে প্রধান ও বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন—
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শ্রী রতন কুমার দত্ত
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আশরাফুল আলম
উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা পবন কুমার সরকার
উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব মোহাম্মদ আলী
জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আব্দুল গফুর
মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার গৌতম চন্দ্র মোদক

সহকারী প্রোগ্রামার কামরুজ্জামানএছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মিতু আক্তার নিতা, আছমা আক্তার, লাকী বেগমসহ বিভিন্ন পেশার নারী-পুরুষ।বক্তারা বেগম রোকেয়ার সংগ্রামী জীবন, নারীর মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর অগ্রণী ভূমিকা এবং বর্তমান সমাজে নারী নির্যাতন প্রতিরোধে সম্মিলিত উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন—“নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া একটি আধুনিক মানবিক সমাজ গঠন সম্ভব নয়।”

আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবসে র‍্যালি
একই দিনে সকালে আন্তর্জাতিক দুর্নীতি বিরোধী দিবস-২০২৫ উপলক্ষে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে একটি বর্ণাঢ্য র‍্যালি বের করা হয়, যা উপজেলা পরিষদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‍্যালিতে সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।র‍্যালিতে দুর্নীতি প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়।

উৎসবমুখর দিন কাটাল সাঘাটা
দিবসটি ঘিরে উপজেলার সর্বত্র ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। নারী নির্যাতন প্রতিরোধ, নারীর অধিকার রক্ষা, দুর্নীতি প্রতিরোধ ও সমাজ উন্নয়নে সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন বক্তারা ও অংশগ্রহণকারীরা।সাঘাটায় দিনব্যাপী এসব আয়োজন নারীর ক্ষমতায়ন, সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনের প্রত্যয়কে আরও সুদৃঢ় করে তোলে।

কুষ্টিয়ায় নিজ বাড়িতে বৃদ্ধাকে গলা কেটে হত্য

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় দিনদুপুরে জাহানারা বেগম (৬৫) নামের এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে পৌর ১২ নম্বর ওয়ার্ডের হরিশংকরপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

নিহত বৃদ্ধার গলায় ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। নিহত জাহানারা বেগম ওই এলাকার আবুল মোল্লার স্ত্রী। তবে ঠিক কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, জাহানারা বেগম বাড়িতে একাই ছিলেন। তাঁকে দেখভালের দায়িত্বে থাকা দুজনই বাড়ির বাইরে ছিলেন। বিকেল ৪টার দিকে এক প্রতিবেশী কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা খুলে বিছানার ওপর জাহানারা বেগমের গলাকাটা লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশে খবর দেন।

কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) ফয়সাল মাহমুদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) প্রণব কুমার সরকার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
নিহত জাহানারা বেগমের দেখভাল করা মেঘলা নামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘বেলা ১১টা পর্যন্ত বাড়িতেই ছিলাম। এরপর আমি আমার বাবার বাড়িতে গিয়েছিলাম। আমার স্বামীও কাজে বাড়ির বাইরে বের হয়ে যায়। যাওয়ার সময় বাড়ির পাশে থাকা আমার বোনকে বিকেল ৪টার দিকে এসে গবাদিপশুগুলোকে পানি খাইয়ে যেতে বলেছিলাম। তখন আমার বোন এসে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা খুলে দেখে গলাকাটা অবস্থায় তিনি পড়ে আছেন।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, জাহানারা বেগমের ছেলে রাজধানী ঢাকায় সরকারি চাকরি করেন। তিনি পরিবারসহ ঢাকায় থাকেন। বাড়ির ভাড়াটে লিটন নামের এক ভ্যানচালক ও তাঁর স্ত্রী নিহত জাহানারা বেগমের দেখভাল করতেন।কুষ্টিয়া মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল আলীম বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, কোনো নেশাগ্রস্ত লোক চুরি করতে এসে দেখে ফেলায় এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ নিয়ে অধিকতর তদন্ত চলছে।’

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ