আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

হাসানুল করিম মানিকের স্মরণসভায় মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী

শহীদ ছাত্রলীগ নেতাদের আত্মত্যাগেই মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের শক্তি আজ রাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিত

নিজস্ব প্রতিবেদক

শহীদ ছাত্রনেতা হাসানুল করিম মানিকের স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছেন সিটি মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে যে সকল ছাত্রলীগ নেতা নিজের জীবনকে বাঁজি রেখে রাজপথের আন্দোলন সংগ্রামে শরিক হয়ে দেশ, দল, জাতিকে পুনরুদ্ধারে অবদান রেখে গেছেন তাঁরাই আমাদের আদর্শিক চেতনার ভিত্তির সোপান।
ওমরগণি এমইএস কলেজে ছাত্র সংসদের ভারপ্রাপ্ত ভিপি হাসানুল করিম মানিকের ৩৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত স্মরণসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু হত্যার প্রতিশোধ স্পৃহায় প্রতিরোধ যুদ্ধে পুরোভাগে ছিলেন তরুণ ও যুবকরা। ছাত্রলীগ ও যুবলীগের অনেক নিবেদিত প্রাণকর্মী যাঁরা শহীদ হয়েছেন তাঁদের নামগুলো বিস্মৃত প্রায় হলেও তাঁরাই আমাদের অস্তিত্বের অহংকার। স্বৈরাচার বিরোধী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে এঁদের অবদানের কথা এখনো স্মৃতির পাতায় জ্বলজ্বল করে।
মেয়র বলেন, ছাত্রলীগ নেতা হাসানুল করিম মানিকের মত আরো অনেক শহীদ ছাত্রনেতার মুখগুলো এখনো চোখের সামনে ভেসে ওঠলে আঁতকে ওঠি। আমরা কোথায় ছিলাম আর এখন কোথায় আছি। এখন যেখানে আছি সেই অবস্থানটা তৈরি হয়েছে শহীদ ছাত্রলীগ নেতাদের আত্মত্যাগ ও আত্ম বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। তাঁদের এই আত্ম বিসর্জনের কথা ইতহিাসের পাতায় অবশ্যই স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
তিনি আরো বলেন, স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে এমইএস কলেজ ছিল ছাত্রলীগের একটি প্রতিবাদী দুর্গ। এই দুর্গের উপর বার বার হামলা এসেছে। বর্বরোচিত হামলায় শহীদ হয়েছেন রবিউল হাসান বেলাল, চন্দন ভোমিক, মইনুল করিম, মহিম উদ্দিন, কাসেম, কায়সার, এনাম, মনসুর, শহীদ, পুলক, রাসেল, বাপ্পিদের মত প্রথম সারির সাহসী ছাত্রলীগ নেতাগণ। ঐ সময়ের হামলা ও মামলায় নির্যাতিত, নিপীড়িত অনেক ছাত্রনেতা এখনো বেঁচে আছেন। তাঁদের যথার্থ মূল্যায়ন অবশ্যই হওয়া উচিত। যদি না হয় তাহলে আমরা বিবেকের কাছে দায় থাকব।
শহীদ ছাত্রনেতা হাসানুল করিম মানিক স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরী বাবরের সভাপতিত্বে ও সাবেক ছাত্রনেতা অ্যাড. এ.এম কুতুব উদ্দিন চৌধুরী ও পংকজ রায়ের যৌথ সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন-চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাড. মো. ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইব্রাহিম হোসনে চৌধুরী বাবুল বলেন, আমি খুব কাছ থেকে শহীদ ছাত্রলীগ নেতা হাসানুল করিম মানিককে দেখেছি। এই দুঃসাহসী ছাত্রলীগ নেতা আমার প্রতিবেশী ছিল। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে কোনো কঠিন চ্যালেঞ্জকে মোকাবেলার হিম্মত রাখতো। মৃত্যু তাঁর কাছে ছিল অতি তুচ্ছ। মানিক আমাদের কাছে ত্যাগ ও আত্ম বিসর্জনের একজন ধ্রুবতারা।
মফিজুর রহমান বলেন, প্রয়াত জননেতা এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী’র নির্দেশনায় আমরা রাজপথ কাঁপানো কর্মী ছিলাম। এই সাহসী কর্মীদের মধ্যে অন্যতম হাসানুল করিম মানিক। মানিকের মত যাঁরা রাজপথে সক্রিয় ছিল তাঁরা কখনো কিছু পাওয়ার জন্য রাজনীতি করেনি। আমাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল বঙ্গবন্ধু হত্যার পর যে বাংলাদেশ পাকিস্তানী ভাবধারায় পরিচালিত হচ্ছিল সেই কালো অধ্যায় থেকে মুক্তি পেয়ে আলোকোজ্জ্বলে ফিরে আসুক। আজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের মানুষ আলোর পথের অভিযাত্রী। এই অভিযাত্রায় হাসানুল করিম মানিকসহ আরো সে সকল ছাত্রলীগ নেতা শহীদ হয়েছেন তাঁরা আমাদের অবশ্যই ভয় ও কঠিনকে জয় করার শক্তি যোগাবে।
স্মরণসভায় আরো বক্তব্য রাখেন এমইএস কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক ভিপি মো. ইউনুছ, সাবেক জিএস কেবিএম শাহজাহান, এমইএস কলেজ ছাত্রলীগ নেতা জসিম উদ্দিন খন্দকার, কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মশিউর রহমান রোকন, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এম আর আজিম, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি দেবাশীষ নাথ দেবু, মহানগর যুবলীগের সহ-সভাপতি নুরুল আনোয়ার, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মনোয়ার জাহান মনি, মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য শিবু প্রসাদ চৌধুরী, মহানগর ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম সামদানি জনি, ছাত্রলীগ নেতা মনিরুল ইসলাম, সৌরভ রায়, জুবাইদুল আলম আশিক, জাহিদ হাসান সাইমুন, আবদুল্লাহ আল সাইমুন, অর্ণব দে, হাবিবুর রহমান সুজন, এইচ.এম জাহিদ, মোছাঃ তুস্মি।
উপস্থিত ছিলেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মুহিব উল্লাহ, আবু হানিফ, নাজমুল আহসান, পিংকু দেব রায়, ইকবাল করিম সোহান, খায়নাত মোরশেদ কনক, মো. জসিম উদ্দিন, হাজী সেলিম, বিপ্লব মিত্র, রাজীব দত্ত রিংকু, আসিবুর রহমান মুন্না, খোকন চন্দ্র তাঁতী, নুরুল আলম মিয়া, জসিম উদ্দিন, নুর উদ্দিন বাহার বাবু, ফজলুল কবির সোহেল, ইকবাল আহমদ ইমু, সৌরভ বিকাশ বড়ুয়া বিতান, মোরশেদ আলম, তসলিম আলম, কাজী দেলোয়ার হোসেন, যুব মহিলা লীগ নেত্রী সোনিয়া আজাদ, মো. ইফতু, মো. মাসুদ, মো. জাহেদ, আলী রেজা পিন্টু, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মো. দেলোয়ার, মো. জহির উদ্দিন, জয় শংকর, মো. হাবিব, শ্রমিক নেতা তোফাজ্জল হোসেন জিকু, সামির সাকিব চৌধুরী, কামরুল হুদা পাবেল, সাব্বির সাকিব, শুভ দত্ত প্রমুখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন নবাগত পুলিশ সুপার মো:আবু তারেক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর জেলার সদ্য যোগদান করা পুলিশ সুপার জেলার বিভিন্ন থানা পরিদর্শন ও থানায় কর্মরত অফিসারদের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আকস্মিক পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ আবু তারেক। এসময় চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও কর্মরত সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

থানা পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার ফোর্সদের থাকার ব্যারাক ও বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সকল পুলিশ সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও সকল পুলিশ সদস্যদের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম চলতি মাসের ৬ তারিখে এ থানায় যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ