আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

অনিয়ম, দূর্নীতি আর হয়রানিতে অতিষ্ঠ জকিগঞ্জের পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা

সাইফুর রহমান জকিগঞ্জ (সিলেট) প্রতিনিধি

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

জকিগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের অনিয়ম, দূর্নীতি আর হয়রানিতে অতিষ্ঠ গ্রাহকরা। প্রায় ৮ মাস যাবৎ জামানত নেওয়ার পরও নতুন বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ রয়েছে। কিন্তু টাকা দিলে দালালরা পুরাতন সার্ভিস ড্রপ লাইন সংগ্রহ করে সংযোগ দিচ্ছেন। এ নিয়ে গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন মনগড়া মত তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকসেবা দুরের কথা নানাভাবে গ্রাহকরা হয়রানীর শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। সেবা দিতে না পারলেও রীতিমতো রাজনীতি ও অধিকার আদায়ের নামে বিভিন্ন আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন এই অফিসের কর্মকর্তারা।

সম্প্রতি সারাদেশে বিদ্যুত সার্টডাউনের মাধ্যমে জনগনকে জিম্মি করে দাবী আদায়ের আন্দোলনে সিলেট জেলার নেতৃত্ব দেন জকিগঞ্জ জোনাল অফিসের ইঞ্জিনিয়ার জামাল আহমদ। পরবর্তিতে ছাত্র-জনতার রোষানল থেকে বাচার জন্য তিনি কর্মস্থলে পলাতক থাকার কারনে জকিগঞ্জে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুত সেবা ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া ঐ আন্দোলনে মহিলা কর্মীদের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিলিং শাখার সহকারি তাহমিনা আক্তার। তিনিও বহুদিন কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওযার পর যোগদান করেন। অভিযোগ রয়েছে তাহমিনা আক্তার তার বিলিং টেবিলের সামনে নিদন বিশ্বাস নামের স্থানীয় এক দালাল নিয়োগ দিয়ে রেখেছেন, যার মাধ্যমে তিনি টাকার বিনিময়ে গ্রাহকদের মিটার স্থানান্তর, ওয়ান পয়েন্ট ফরমে তথ্য দানে টাকার পরিমান কমিয়ে দেন।

জকিগঞ্জ জোনাল অফিসে এখন টাকা ছাড়া ফাইল নড়ছে না। ফলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, আবাসিক, বাণিজ্যিক সহ নতুন সংযোগ ও মিটার স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ভোগান্তি দিন দিন বেড়েই চলছে। সুলতানপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা এক গ্রাহক বলেন, মিটার স্থানান্তরের আবেদন নিয়ে অফিসে গেলে দালাল এসে জানায় ১৫০০ টাকা দিলে মিটার স্থানান্তর করা যাবে। এই চুক্তিতে রাজী না হওয়ায় ঐ গ্রাহক মিটার স্থানান্তর আবেদন ফরম পর্যন্ত পাননি।

পল্লী বিদ্যুতের ওয়ারিং কাজ পরিদর্শনের দায়িত্বে থাকা পিউসী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন কাজের বুয়াকে ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার পর থেকেই পলাতক রয়েছেন। তার অবর্তমানে জকিগঞ্জের গ্রাহকদের এই সেবা থেকে ব্যাহত হচ্ছে। জকিগঞ্জ পৌরসভার ৭নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবুল কাশেম জানান, প্রায় ৪ মাস পূর্বে মিটার স্থানান্তরের আবেদন করেছিলাম, কিন্তু ওয়ারিং পরিদর্শক না থাকার কারনে আমার আবেদন অনুমোদন হয়নি। যার কারনে আজোও আমার মিটার স্থানান্তর করা সম্ভব হয়নি।

কাজলসার ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের গ্রাহক মামুন বলেন, ৮ বছর পূর্বে সকল নিয়ম মেনে জামানতের টাকা জমা দেওয়ার পরও আমার মিটার পাচ্ছি না। অতচ, পাশ্ববর্তী বাড়িতে টাকার বিনিময়ে বিদ্যুত সংযোগ দেয়া হয়েছে। অফিসে যোগাযোগ করলে বলা হয়, সিরিয়াল আসলে মিটার সংযোগ দেয়া হবে। এই সিরিয়াল কবে আসবে আল্লাহ মালুম। একই অভিযোগ বিরশ্রী ইউনিয়নের আব্দুর রহমান, আটগ্রামের হাসান আহমদের।

পল্লীবিদ্যুত অফিস সুত্রে জানা যায়, ওয়ারিং পরিদর্শক রজব আলী ১০ মাস থেকে যোগদান করে অফিসিয়াল খাতায় স্বাক্ষর করলেও কার্যত কোনো কাজ করছেন না। ফলে ভোগান্তির শেষ নেই।

এ ব্যাপারে জকিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, পিউসী কর্মকর্তা আব্দুল মতিন অসুস্থতা জনিত কারনে ৫ দিনের ছুটি নিয়েছিলেন, কিন্তু আর যোগদান করেন নি। তার কাজ হচ্ছে ওয়ারিং কাজের সুপারভিশন করা। তিনি না থাকলেও অন্য কর্মকর্তারা সেবা দিয়ে যাচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ার জামাল আহমদও ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ছুটিতে আছেন। জকিগঞ্জে কোনো গ্রাহক হয়রানির শিকার হচ্ছে না।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

ইরান ওমান উপসাগরে একটি তেলবাহী জাহাজ জব্দ করেছে । তেলবাহী জাহাজটিতে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কার ১৮ নাবিক রয়েছে। ইরানি গণমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে। ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা ফার্স জানায়- ছয় মিলিয়ন লিটার চোরাচালানকৃত ডিজেল বহনকারী একটি তেলবাহী জাহাজ ওমান উপকূলে আটক করা হয়েছে।

চন্দ্রগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন নবাগত পুলিশ সুপার মো:আবু তারেক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর জেলার সদ্য যোগদান করা পুলিশ সুপার জেলার বিভিন্ন থানা পরিদর্শন ও থানায় কর্মরত অফিসারদের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আকস্মিক পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ আবু তারেক। এসময় চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও কর্মরত সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

থানা পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার ফোর্সদের থাকার ব্যারাক ও বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সকল পুলিশ সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও সকল পুলিশ সদস্যদের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম চলতি মাসের ৬ তারিখে এ থানায় যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ