আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

জামিন শুনানি হবে।। চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে আসামি না করায় নাখোশ আইনজীবীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে চিন্ময়কাণ্ডে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ হত্যায় পরিবারের দায়ের করা মামলায় অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন সহকর্মীরা। মামলায় বহিস্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে আসামি না করায় ক্ষোভও ঝেড়েছেন তারা। এদিকে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদনের শুনানি হবে মঙ্গলবার।
চট্টগ্রাম মহানহর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মফিজুর রহমান জানান, মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে ৩ ডিসেম্বর এই জামিন শুনানি হবে। আদালত সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা জানান, শুনানির এই দিন আগেই ধার্য হয়েছিল। বুধ ও বৃহস্পতিবার আইনজীবীদের আদালত বর্জন ও কর্মবিরতি কর্মসূচি পালিত হয়। সপ্তাহ শেষে রোববার আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে শুনানির তারিখ জানা যায়।এর আগে ২৬ নভেম্বর রাষ্ট্রদ্রোহের এ মামলায় জামিন নাকচ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের ষষ্ঠ মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক কাজী শরীফুল ইসলাম। ওই আদেশের পর আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যান ঘিরে বিক্ষোভ করে সনাতনী সম্প্রদায়ের লোকজন। আড়াই ঘণ্টা পর পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে চিন্ময় দাশকে কারাগারে নিয়ে যায়।
অন্যদিকে রোববার দুপুরে আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবীরা শোকর‌্যালি বের করেন। র‌্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত সভায় জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে আসামী না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
আইনজীবী নেতা নাজিম বলেন, ইসকনের সন্ত্রাসী চিন্ময় দাসকে গ্রেফতার করা নিয়ে গত ২৬ নভেম্বর এই কোর্ট বিল্ডিংয়ে পর্যায়ক্রমে যে ঘটনাগুলো হয়েছে এবং এড. সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার পর যে মামলাগুলো করা হয়েছে প্রতিটি মামলায় চিন্ময় দাসকে আসামি করতে হবে। গতকাল যে মামলা হয়েছে আমরা মনে করি সমস্ত মামলায় চিন্ময় দাসকে এক নম্বর আসামি করতে হবে। আমরা আইনজীবীরা মানবো না যদি চিন্ময় দাসকে এক নম্বর আসামি করা না হয়।
‘চিন্ময়কাণ্ডে’ পুলিশকে ফের দোষারোপ করে আইনজীবী সমিতির শীর্ষ এ নেতা বলেন, আমি সবসময় বলে এসেছি, ঘটনার জন্য পুলিশকে দায়ী করি। আমরা চট্টগ্রামে অনেক রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেফতার করে আনতে দেখেছি। পুলিশ তাদের রাজনৈতিক সমর্থক কাউকে কাছে ভিড়তে দেয়নি। কিন্তু চিন্ময় দাসকে যখন প্রিজন ভ্যানে তোলা হল তখন এই চিন্ময়ের সন্ত্রাসী সমর্থকরা গাড়ি আটকে রেখেছিল। আমরা দেখেছি, চিন্ময় দাস পুলিশের মাইক ব্যবহার করেছে। সেই মাইক ব্যবহার করে উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। চিন্ময় দাসের ওই বক্তব্যের পরে, তার নির্দেশনার মধ্য দিয়ে পর্যায়ক্রমে সমস্ত ত্রাস, ভাঙচুর, মসজিদে হামলা, তাণ্ডব—সর্বোপরি আমার ভাই আলিফকে হত্যা করেছে।
আইনজীবী আলিফ হত্যা মামলার চার্জশিট দ্রুত দেওয়ার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, যে হত্যা মামলা হয়েছে সেই ঘটনার ভিডিও ফুটেজ রয়েছে। এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শী-সাক্ষী রয়েছে। আমি পুলিশকে অনুরোধ করবো—এই মামলার চার্জশিট দিতে দেরি হওয়ার কথা নয়। যারা গ্রেফতার হয়নি; তাদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনুন। আমরা আমাদের প্রিয় ভাই আলিফের হত্যার বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না।
এর আগে, আইনজীবী আলিফ হত্যার প্রতিবাদে বুকে কালোব্যাচ ধারণ করে তাঁর সহকর্মীরা একটি শোকর‌্যালি করেন। এটি আদালত চত্বরের সোনালি ব্যাংক কার্যালয়ের সামনে থেকে লালদিঘী, হকার্স মার্কেট ঘুরে আদালত চত্বরের দোয়েল ভবনের সামনে এসে শেষ হয়। এ সময় তাঁরা ‘চিন্ময় জঙ্গি, দিল্লির সঙ্গী’, ‘আমার সোনার বাংলায়, ইসকনের ঠাঁই নাই’ এসব স্লোগান দিতে থাকেন।
তবে গত ২৬ নভেম্বর আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় ২৭ এবং ২৮ নভেম্বর জেলা আইনজীবী সমিতির কর্মসূচি অনুযায়ী কর্মবিরতি পালন করেছেন চট্টগ্রাম আদালতের আইনজীবীরা। পরবর্তীতে ২৯ এবং ৩০ নভেম্বরও ছিল সরকারি ছুটি। কর্মবিরতি পালনকালীন আদালতের সব কার্যক্রম বন্ধ থাকায় কোনো মামলার শুনানি হয়নি। মামলাগুলোর আদেশ শুনানি রাখা হয়েছিল পরবর্তী তারিখে। সেসময় আগেভাগে জানা বিচারপ্রার্থীরা সেবা নিতে না গেলেও অনেকেই গিয়ে ফিরে গেছেন।
চারদিন কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও রোববার সকালে থেকে আবারও কাজে যোগ দিয়েছেন আইনজীবীরা। সরেজমিনে সকাল ১০টার দিকে আদালত ভবনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি এজলাসের সামনে ছিলেন বিচারপ্রার্থী এবং বিভিন্ন আসামির স্বজনদের ভিড়। সময়মতো হয়েছে বিভিন্ন মামলার শুনানিও।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকায় ১৬টি থানার বিপরীতে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত আছে ৮টি। সকাল সোয়া ১০টার দিকে দ্বিতীয় তলায় এসব আদালতে গিয়ে দেখা গেছে, আইনজীবীরা তাদের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিটি এজলাসের বাইরেই ছিল বিচারপ্রার্থীদের জটলা। কেউ এসেছেন জামিন নিতে আবার কেউ এসেছেন সাক্ষী দিতে।
বিবি কুলসুম নামে এক বিচারপ্রার্থী বলেন, আমার ছেলে পাঁচলাইশ থানার একটি মাদক মামলায় কারাগারে আছে। আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন আবেদন করা হয়েছে। গত ২৮ তারিখ জামিন শুনানির দিন ধার্য্য ছিল। কিন্তু আইনজীবীদের কর্মবিরতি ছিল ওইদিন। আইনজীবী আজ আসতে বলায় এসেছি।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন বলেন, কর্মবিরতি এবং সরকারি ছুটি মিলিয়ে চারদিন কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বিচারপ্রার্থীদের আনাগোনা বেড়েছে। আর আজ আইনজীবীরা কাজে যোগ দেয় আদালত ভবনের কর্মচাঞ্চল্যতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। বিভিন্ন মামলার শুনানিও সময়মতো হচ্ছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, যেহেতু চারদিন কার্যক্রম বন্ধ ছিল তাই আজ একটু চাপ বেশিই ছিল। তবে আটকে থাকা শুনানি কার্যক্রম প্রায়ই শেষ হয়েছে। আর সামনে অবকাশকালীন ছুটিতে আদালত বন্ধ থাকবে। তাই বাকিগুলোও দ্রুত শেষ করা হবে।
এর আগে গত মঙ্গলবার কোতোয়ালী থানায় বিএনপির সাবেক এক নেতার দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেফতার চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর করা হয়। পরে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজন ভ্যান আটকে দেন। তাঁরা এ সময় প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) লাঠিপেটা করে ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হল গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
এর প্রতিবাদে ওইদিন রাতেই কর্মবিরতির ঘোষণা দেন জেলা আইনজীবী সমতির নেতৃবৃন্দ। পরে কর্মবিরতি আরও একদিন বাড়িয়ে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত করা হয়। রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর জামিন আবেদনের শুনানি মঙ্গলবার মহানগর দায়রা জজ মো. সাইফুল ইসলামের আদালতে হওয়ার কথা রয়েছে।
চিন্ময়কাণ্ডে আদালত এলাকায় সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও পুলিশের কাজে বাধাদানের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে তিনটি মামলা করেছে। এছাড়া গত শনিবার আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের বাবা বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা এবং পাশাপাশি আলিফের ভাই খানে আলম বাদী হয়ে যানবাহন ভাঙচুর ও জনসাধারণের উপর হামলার ঘটনায় ১১৬ জনকে আসামি করে বিস্ফোরক আইনে আরেকটি মামলা করেছেন নগরের কোতোয়ালী থানায়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

অংশ নিয়েছে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী চট্টগ্রামে এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতায়

বিজ্ঞানমনষ্ক শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা ও দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগের লক্ষ্যে চট্টগ্রামের মুরাদপুরস্থ’ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এনআইটি)’র উদ্যোগে ১১তম বারের মতো “এনআইটি উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা-২০২৫” এনআইটি’র অডিটোরিয়ামে শনিবার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল সাড়ে ৯টায় উদ্বোধন করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বাংলাদেশ কারীগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন। বিশেষ অতিথি ছিলেন পার্কভিউ হসপিটাল ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. এটি. এম. রেজাউল করিম, চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন। সভাপতিত্ব করেন এনআইটি’র চেয়ারম্যান আহসান হাবিব।

প্রতিযোগিতায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২৬৪টি বিভিন্ন ধরনের উদ্ভাবনীমূলক প্রকল্প প্রর্দশিত হয়। এতে প্রায় ৬০০ প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন বলেন, আজকের এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র একটি বিজয়ীর খোঁজ নয়, বরং এটি আমাদের সবার জন্য একটি শিক্ষণীয় অভিজ্ঞতা। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সকলেই নতুন কিছু শিখেছে এবং ভবিষ্যতে আরও বড় উদ্ভাবন নিয়ে আসার অনুপ্রাণিত হয়েছে। প্রতিযোগীতায় শিক্ষার্থীরা প্রমাণ করেছে, আমাদের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে অসীম সম্ভাবনা রয়েছে। প্রত্যেকটি প্রকল্পই আলাদা এবং একেকটি নতুন চিন্তার প্রতিফলন। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শুধু একটি ইভেন্ট নয়; এটি হলো কারিগরি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টির সবচাইতে কার্যকর মঞ্চ।

ড. এটি. এম. রেজাউল করিম বলেন,দক্ষতা একজন মানুষকে কর্মবাজারে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে এবং তাকে স্বনির্ভর করতে সাহায্য করবে। উদ্ভাবনী প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের সেই দক্ষতা বাড়াতে সাহায্য করে এবং কার্যকরী সমস্যা সমাধানের রুপরেখা তৈরী করে। অধ্যক্ষ মো কামাল হোসেন বলেন, এই প্রতিযোগিতায় উত্থাপিত সাশ্রয়ী ও টেকসই সমাধানগুলো কৃষি, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে আমূল পরিবর্তন আনতে সক্ষম। আমাদের তরুণরা প্রমাণ করেছেন যে তাদের মেধা ও সৃজনশীলতাই দেশকে ‘আধুনিক বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের মূল চালিকাশক্তি।


ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির চেয়ারম্যান আহসান হাবিব বলেন, উদ্ভাবন শুধু প্রযুক্তির খেলনা নয়, উদ্ভাবন হল মানুষের জীবনকে সহজ ও অর্থপূর্ণ করার হাতিয়ার। আজকের এই ছোট ছোট ধারণাগুলোই আগামী দিনের বড় বড় শিল্প ও সামাজিক পরিবর্তনের বীজ বপন করছে।প্রতিযোগীতায় মোট ২৬৪ টি প্রজেক্ট অংশ নেয়। প্রজেক্ট সমুহকে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে বিভিন্ন মানদন্ডে বিচার বিশ্লেষণ করার জন্য মূল্যায়ন দলে ছিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগের প্রফেসর ড. এ. কে. এম. মাঈনুল হক মিয়াজী, চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) এর পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান প্রফেসর ড. এইচ.এম

. এ আর মারুফ,চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজের পদার্থবিদ্যা বিভাগের এসোসিয়েট প্রফেসর ও বিভাগীয় প্রধান মো. দিদারুল আলম মজুমদার। চট্টগ্রাম পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট এর সিভিল ডিপার্টমেন্ট প্রাক্তন বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী মো জাহাঙ্গীর আলম, কম্পিউটার বিভাগের চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী মেহেদী, ইলেকট্রিক্যাল বিভাগ চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী সুজিত কুমার বিশ্বাস, মেকানিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর চীফ ইন্সট্রাক্টর প্রকৌশলী নুরুননবী।

বিচারক প্যানেল প্রজেক্ট সমুহ মূল্যায়ন সম্পন্ন করেন। মূল্যায়নে প্রাপ্ত নাম্বারের ভিত্তিতে টপ টেন নির্ধারণ করে পুরস্কার হিসেবে ১ম,২য় ও ৩য় স্থান অর্জন কারীর মধ্যে যথাক্রমে ৫০ হাজার, ৩০ হাজার ও ২০ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়া ইমার্জিং প্রজেক্ট হিসেবে চতুর্থ থেকে ১০ম স্থান অর্জনকারীদেরও ৫ হাজার নগদ অর্থ ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। সমাপনী পর্বে সকল অংশগ্রহণকারীকে সনদ বিতরণ করা হয়।

চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমানবন্দরে লাগেজে মিলল ৯০ লাখ টাকার সিগারেট

চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের মালিকানাহীন ছয়টি লাগেজ থেকে ৮০০ কার্টন মন্ড ব্র্যান্ডের সিগারেট জব্দ করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। শনিবার সকাল ১১টার দিকে বিমানবন্দরের এরাইভাল হলের লস্ট অ্যান্ড ফাউন্ড কর্নারের পাশ থেকে এসব লাগেজ উদ্ধার করা হয়। জব্দ হওয়া সিগারেট প্রতি কার্টন ১১ হাজার ২৫০ টাকা মূল্য ধরে মোট ৯০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়েছে।

কাস্টমস সূত্র জানায়, লাগেজগুলোর সঙ্গে কোনো যাত্রীর নাম, ট্যাগ বা মালিকানার কাগজপত্র ছিল না। দীর্ঘ সময় অপেক্ষার পরও কেউ লাগেজের দাবি না করায় সেগুলোকে কাস্টমস আইন অনুযায়ী পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। পরে লাগেজ খুলে ৮০০ কার্টন সিগারেট পাওয়া যায় এবং তা জব্দ করা হয়।

শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল বলেন, লাগেজগুলো দীর্ঘ সময় ধরে মালিকবিহীন অবস্থায় ছিল। কেউ দায়িত্ব না নেওয়ায় সেগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করে জব্দ করা হয়েছে। বিমানবন্দরে চোরাচালান ঠেকাতে নজরদারি আরও জোরদার করা হয়েছে এবং অভিযান চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ