আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম নগরীতে গ্যাস সংকট।।দুর্ভোগে নগরবাসী

ডেস্ক নিউজ:

চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারেও গ্যাস সংকটে বন্দীদের দুর্ভোগ

চট্টগ্রামে বাসা-বাড়ী ও শিল্প কলকারখাানায় গ্যাস সংকট সমাধানে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি-ক্যাব চট্টগ্রাম
চট্টগ্রাম শুধুমাত্র বন্দর নগরী নয়, বানিজ্যিক রাজধানী খ্যাত ও জাতীয় অর্থনীতি কেন্দ্র বিন্দুও বটে। চট্টগ্রাম নগরে এখন গ্যাসের হাহাকার চলছে। গৃহিণীর চুলা থেকে শুরু করে সিএনজি ফিলিং স্টেশন, শিল্প- কারখানা কোথাও গ্যাস নেই। এ সংকট চলছে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে কিন্তু দেখার যেন কেউ নেই। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরীর লাখো গ্রাহক। এলএনজি টার্মিনাল থেকে গ্যাস সরবরাহ কম থাকায় এ সংকট সৃষ্টি হয়েছে। সংকটের কারণে নগরীর আন্দরকিল্লা, জামালখান, লাভলেইন, নন্দনকানন, আগ্রাবাদ, চকবাজার, বহদ্দারহাট, চকবাজার, দেওয়ানবাজার জুড়ে কোথাও চুলা জ্বলছে না সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। এতে বাসাবাড়ীর সকল বয়সের শ্রেণী পেশার মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অনেকে বাধ্য হয়ে হোটেল রেস্টুরেন্ট থেকে খাবার কিনে খেলেও সবার পক্ষে তা কিন্তু সম্ভব হচ্ছে না, ফলে অবস্থা আরো ভয়াবহতায় রূপ নেয়ার আগেই সরবরাহ দ্রুত বাড়ানো দরকার। শুধু রান্নাঘর নয়, এ সংকট সিএনজি চালিত গাড়ি ও শিল্প কলকারখানাতেও পড়ছে। নগরীর ফিলিং স্টেশনগুলোতে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।এদিকে
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে দীর্ঘদিন ধরে সকালবেলা গ্যাসের চাপ কম থাকায় বন্দীদের জন্য খাবার তৈরীতে
অসুবিধার কথা জানা গেছে। কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন
কতৃপক্ষ বিষয়টি জেনেও কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন
বলে মনে করছেননা,এমনটাই অনেকে মনে করেন।

চট্টগ্রামে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা গড়ে ৪০-৪৫ কোটি ঘনফুট। এর বিপরীতে সরবরাহ হয় ২৮ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ১০ কোটি ঘনফুটের বেশি ব্যবহার হয় চট্টগ্রামের দুটি সার কারখানা ও একটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে। বাকি গ্যাস পায় শিল্প ও আবাসিক খাত। এ সংকটের মধ্যেই আবার সম্প্রতি চট্টগ্রাম থেকে দুই-তিন কোটি ঘনফুট গ্যাসের সরবরাহ নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে গ্যাসচালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সরবরাহের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একদিকে সরবরাহও কম আবার সরবরাহকৃত গ্যাসের চাপও (প্রেসার) কম। এতে বিপাকে পড়েছেন আবাসিক খাতের লক্ষ লক্ষ গ্রাহক, শিল্পকারখানা, সিএনজি স্টেশন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাইপ লাইনে গ্যাসের চাপ না থাকায় ঘরে চুলা জ্বলে না অনেক এলাকায়। কিন্তু গ্যাস সংকটের কারনে শুধুমাত্র শিল্প কলকারখানা নয়, বাসাবাড়ী ও জীবনযাত্রাও মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। গ্যাস সংকট অতি জনগুরুত্বপুর্ন বিবেচনায় সমস্যাটি শুধুমাত্র গৃহিণীদের নয়, বস্তুত সামগ্রিক জাতীয় অর্থনীতিই পড়েছে সংকটের মুখে। জাতীয় অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র চট্টগ্রাম যে কোনো বিবেচনায় গ্যাস সরবরাহে অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। তাই বর্তমানে জাতীয় গ্রিড থেকে সরবরাহকৃত গ্যাসের পরিমান বৃদ্দির পাশপাশি গ্যাসের চাপও (প্রেসার) বাড়ানো, উৎপাদন, সংযোগ, সুষম বন্টন ও বিতরণ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা আনার মাধ্যমে চট্টগ্রামে গ্যাসের সংকট দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের স্বার্থ সংরক্ষনকারী জাতীয় প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) নেতৃবৃন্দ। গ্যাস সংকট সমাধানে যৌক্তিক পদক্ষেপ গ্রহন করে দ্রুত চট্টগ্রামে গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে দ্রুত জনজীবনে স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা, চট্টগ্রামে জাতীয় গ্রিড থেকে পর্যাপ্ত পরিমান গ্যাস সরবরাহ, এলপিজিকে আরো স্বল্পমূল্য, বিতরণ ব্যবস্থা সহজলভ্য ও জনবান্ধব করার দাবি জানিয়েছেন। একই সাথে সংকটকালীন সময়ে বিকল্প ব্যবস্থপনায় গ্যাস সরবরাহের সক্ষমতা না থাকায় চট্টগ্রামে ইতিপূর্বে বেশ কয়েকবার এধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে, যা কোনভাবেই কাম্য নয়।

০৪ জানুয়ারি ২০২৪ চট্টগ্রামে তীব্র সংকটের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহনের দাবিতে গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী, সহ-সভাপতি সাংবাদিক এম নাসিরুল হক, ক্যাব মহানগরের সভাপতি জেসমিন সুলতানা পারু, সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু, ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি আলহাজ্ব আবদুল মান্নান প্রমুখ।

বিবৃতিতে ক্যাব নেতৃবৃন্দ বলেন চট্টগ্রামে গ্যাস বেশ কয়েক বছর ধরে গ্যাস সংকটের কারণে নগরীর বেশ কিছু আবাসিক এলাকায় বেশির ভাগ সময় চুলা জ্বলছে না। গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত তিন-চারঘণ্টা গ্যাস থাকছে। তবে সূর্য ওঠার আগেই তা চলে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নগরজীবনে কেবলই গ্যাসের চুলার ওপর যারা নিভর্রশীল, তারা পড়েছেন তীব্র সংকটে। তবে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (কেজিডিসিএল) বেশ কয়েকবার চট্টগ্রামে বিরাজমান গ্যাস সংকট নিরসন করার আশ্বাস দিলেও এর দৃশ্যমান অগ্রগতি হয় নি। অধিকন্তু জাতীয় সংসদ নির্বাচনের উৎসবে সাধারণ মানুষের প্রাণের দাবি টুকু সেভাবে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিতেও আসেনি। যদিও সব প্রার্থীই মানুষের সমস্যা সমাধানে ও সংকটে পাশে থাকার কথা বলছেন?

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, পেট্রোবাংলার তথ্য অনুযায়ী, দেশে গ্যাসের দৈনিক চাহিদা ৪১০ কোটি ঘনফুট। যদিও স্বাভাবিক সময়ে সরবরাহ থাকে প্রায় ৩০০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে দুটি এলএনজি টার্মিনাল থেকে দিনে গ্যাস সরবরাহ হয় ৮৫ কোটি ঘনফুট। এ দুই টার্মিনালের একটি বন্ধ রয়েছে। ফলে সারা দেশে দৈনিক গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে ২৫৫ কোটি ঘনফুট। সব মিলিয়ে দেশে এখন গ্যাসের সরবরাহ হচ্ছে মোট চাহিদার ৬২ শতাংশ। গ্যাসের সংকটের কারণে বেড়ে গেছে গ্যাস সিলিন্ডারের দামও। এ অবস্থায় চট্টগ্রামে বেশকিছু এলাকায় পরিবেশ বিনাশী লাকড়িই, স্টোভ, বিদ্যুত চালিত ইন্ডাকশন কুকার এখন রান্নাবান্নার প্রধান ভরসা হয়ে উঠেছে। শিল্প-কারখানায়ও গ্যাসের চাহিদার এক-চতুর্থাংশও পাওয়া যাচ্ছে না।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মশা নিধনে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহার শুরু চসিকের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথমবারের মতো মশা নিয়ন্ত্রণে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশক্রমে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর ১৭ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আজ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে বিটিআই প্রয়োগ শুরু করল চসিক।

চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

অধস্তন আদালতও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করনের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন।

অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের অধীনে অন্তর্ভুক্ত করণের দাবি জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রাম বিভাগ। ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রাম ই ফ্যামিলি কোর্ট উদ্বোধন করতে এলে আইন সচিব লিয়াকত আলী মোল্লাএর সাথে বিচার বিভাগীয় কর্মচারী এসোসিয়েশন,

চট্টগ্রাম বিভাগ ও চট্টগ্রাম জজশীপ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ এর নেতৃবৃন্দ সাক্ষাৎকালে তাদের দীর্ঘদিনের ন্যায্য দাবি বাস্তবায়নের দাবি জানান।তারা বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট ও আইন মন্ত্রণালয় এর ন্যায় পদ -পদবী পরিবর্তন ও বেতন স্কেল নির্ধারণের ও দাবি জানান।নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ বিচার বিভাগ আইনের ধারক ও বাহক।
Pp

কিন্তু অধস্তন আদালতের কর্মকর্তাও কর্মচারীগন বিভিন্ন সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তাই বৈষম্য দূরীকরণের জোর দাবি জানান।আইন সচিব অবিলম্বে দাবি বাস্তবায়নের আশ্বাস প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রামের সিনিয়র জেলা জজ মোহাম্মদ হেমায়েত উদ্দিন, মহানগর দায়রা জজমোঃ হাসানুুল ইসলামও চট্টগ্রামের সকল স্তরের বিচারক মন্ডলী।উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম জেলা জজ আদালতের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এনামুল হক আকন্দ ।বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন পারভেজ, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাং শামসুল হক, , চট্টগ্রাম জজশীপ কর্মচারী কল্যাণ পরিষদ এর সভাপতি বিপ্লব কান্তি দাশ ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ