আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

নির্বাচনী খবর চট্টগ্রাম:

আমার লোকের ওপর হাত দিলে হাত কেটে ফেলবো, বাঁশখালীর ওসিকে এমপি মোস্তাফিজ।

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম:

নানা কারনে-অকারনে বিতর্কিত বহু অপকর্মের হুতা
চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের আ.লীগ দলীয় সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী এবার পুলিশের হাত কেটে ফেলবেন বলে বাঁশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি তোফায়েল কে হুমকি দিলেন।
একটি মুঠোফোন অডিও রেকর্ডে তাঁকে বলতে শোনা যায়, আমার কোনো লোকের ওপর যদি হাত দেয়, তাহলে হাত কেটে ফেলব কিন্তু, বলে দিলাম।

উপজেলার ছনুয়া ইউনিয়নে তাঁর লোককে ধরতে পুলিশ কেন পাঠানো হলো প্রশ্ন করে মুঠোফোনে হাত কেটে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়। বুধবার সংসদ সদস্য ও ওসি তোফায়েল আহমেদের মধ্যে এই কথোপকথন হয় বলে স্থানীয় সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বাঁশখালী থানার ওসি তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে মোস্তাফিজুর রহমানের ৩ মিনিট ৪৩ সেকেন্ডের কথোপকথনের অডিও রেকর্ডটি গতকাল শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ওই কথোপকথনে সরল ইউনিয়নে সংসদ সদস্যের বাড়িতেও কেন পুলিশ গেছে, তার কৈফিয়তও চাওয়া হয় ওসির কাছে। পাশাপাশি নৌকার অনুসারী চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীকেও যেন গ্রেপ্তার করা না হয়, এই হুঁশিয়ারিও ওসিকে দেন সংসদ সদস্য। মুজিবুল হক ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক। গত বছর ইউপি নির্বাচনের প্রচারণার সময় ইভিএমে নিজে টিপ মেরে ভোট নিয়ে ফেলবেন বলে বিতর্কিত হয়েছিলেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে পেটানোর হুমকি দিয়ে আবার সমালোচিত হন।

সবশেষ কয়েক দিন আগে বাঁশখালীতে ভোটকেন্দ্রে ঈগলের কোনো এজেন্ট ঢুকতে দেবেন বলে বক্তব্য দেন প্রচারণার সময়। বাঁশখালী আসনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী হিসেবে নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী। এখানে আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র হিসেবে মুজিবুর রহমান ও আবদুল্লাহ কবির প্রতিদ্বীতা করছেন। নৌকার সঙ্গে মুজিবুর রহমানের ঈগল প্রতীকের প্রতিদ্বীতা হবে বলে মনে করছেন ভোটাররা।

প্রচারণার শুরু থেকে দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় প্রতীদ্বী প্রার্থীর মামলা গ্রহণ করায় ওসি তোফায়েলকে দেখে নেওয়ার হুমকি দিয়েছিলেন মোস্তাফিজ। এই ঘটনায় ওসি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন। এবার ওসিকে ফোনে পুলিশের হাত কেটে ফেলার হুমকি দেন নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজ।ওসির সঙ্গে মোস্তাফিজুরের মুঠোফোন কথোপকথন তুলে ধরা হল-

মোস্তাফিজুর : ছনুয়া ইউনিয়নে এসআই হাফিজ (হাফিজুর রহমান) কেন গেছে?
ওসি : সে তো ২টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত থেকে চলে আসছে।
মোস্তাফিজুর : কী জন্য গেছে?
ওসি : ওটা তো আমাদের নিয়মিত ডিউটি করার জন্য। প্রত্যেক ইউনিয়নে একটা করে টিম যায়।
মোস্তাফিজুর : আমার কোনো লোকের ওপর যদি হাত দেয়, তাহলে হাত কেটে ফেলব কিন্তু। বলে দিলাম।
ওসি : দেবে না স্যার, আমি বলে দিচ্ছি।
মোস্তাফিজুর : ওখানে নাকি আমাদের লোকজন ধরার জন্য হাফিজ গেছে। আমাদের আলমগীর একটা আছে, তাকে খুঁজছে।
ওসি : না না স্যার ও তো নেই, ও অনেক আগে চলে আসছে।
মোস্তাফিজুর : এমনি ঘুরে-ফিরে, থাক অসুবিধা নেই। কিন্তু আমার কোনো লোকের ওপর হাত দিলে অসুবিধা হবে।
ওসি : অবশ্যই স্যার, আপনি যেভাবে বলবেন।
মোস্তাফিজুর : আপনি তো আমার ঘরেও পুলিশ পাঠিয়েছেন।
ওসি : স্যার আপনার সঙ্গে তো আমি কথা বললাম সেদিন। পুলিশ পাঠাইনি। আপনার বাড়িতে তো এমনি পুলিশ নিয়মিত যায়। ওখানে আপনার সঙ্গে ডিটেইল কথা বলছি। আরও আপনার সম্মান বাঁচানোর জন্য চেষ্টা করছি, এমপি সাহেবের বাড়িতে সাদা পোশাকে গেছে।
মোস্তাফিজুর : কী জন্য আসছিল?
ওসি : কোনো কারণে না। কাউকে ধরার জন্য নয়।
মোস্তাফিজুর : চাম্বলের মুজিবের (ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী) ওপরও যাতে কোনো রকমের ইয়ে না হয়। ও ওখানে যেন কাজ করতে পারে, খেয়াল রাখিও।
ওসি : হবে না স্যার। অবশ্যই স্যার।
এই কথোপকথনের ব্যাপারে ওসি তোফায়েল আহমেদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে ও সম্ভব হয়নি। তিনি বারবার ফোন কেটে দেন। জানতে চাইলে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) আবু তৈয়ব মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু শুনিনি। ওসি সাহেবও কিছু বলেননি।
তবে নাম প্রকাশ না করে পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন চাম্বলের ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরী বিভিন্ন উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে প্রতিদ্বদ্বী প্রার্থী ও ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তাঁকে ধরার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালানো হয়।

মঙ্গলবার সংসদ সদস্যের বাড়িতেও পুলিশ যায়। পুলিশের হাত কেটে নেওয়ার বক্তব্যের ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, এগুলো আপনি তাঁকে (ওসি) জিজ্ঞাসা করেন। এতটুক বলে ফোন কেটে দেন। উল্লেখ্য, সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান নানা কারণে বারবার সমালোচিত হয়েছেন।

সংসদ সদস্য হয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারধর করে বিতর্কিত হন। তখন তাঁর বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। এরপর দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করার একটা ভিডিও ভাইরাল হয়। এরপর গত বছর অস্ত্র হাতে প্রকাশ্যে মিছিল করেন। এবার নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘন ও সাংবাদিককে মারধরের ঘটনায় মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

চট্টগ্রাম ও চাঁদপুরে অভিযানে তিনমাসে ২৬২১টি কচ্ছপ উদ্ধার

ছবি-১
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম থেকে একের পর এক পাচার হচ্ছে ‘প্রকৃতির ঝাড়ুদার’ কচ্ছপ। চট্টগ্রাম মহানগরের রিয়াজউদ্দিন বাজার কচ্ছপ পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট। বিশেষ করে পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে কচ্ছপের মাংস ও স্যুপ জনপ্রিয় এবং বিলাসবহুল খাবার হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। কচ্ছপের মাংসের চড়া দাম থাকায় পাচারকারীরা আর্থিক লাভের আশায় বাংলাদেশ থেকে কচ্ছপ সংগ্রহ করে। বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া কচ্ছপের গন্তব্য চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুর। সবচেয়ে বড় বাজার চীনে।

খাবার ছাড়াও চীনে কচ্ছপের মাংস ও খোলস দিয়ে বিভিন্ন ধরনের টনিক বা ওষুধ তৈরি করা হয় বলে সূত্রে জানা গেছে। এদিকে গত তিনমাসে ২৬২১টি বিভিন্ন প্রজাতির কচ্ছপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এরমধ্যে নভেম্বর মাসে ৫৭২, অক্টোবরে ৪০৯ ও সেপ্টেম্বরে ১৬৪০টি।জানা গেছে, ‘বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২’ অনুযায়ী কচ্ছপ শিকার, হত্যা, বিক্রি ও পাচার দণ্ডনীয় অপরাধ। এই অপরাধে জেল ও জরিমানার বিধান রয়েছে। পাচারকারী চক্র বিপন্ন করে তুলছে কচ্ছপের জীবনচক্র।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, গত তিনমাসে চট্টগ্রাম ও চাঁদপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৬২১টি কচ্ছপ উদ্ধার করেছে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। এরমধ্যে গত ২৫ নভেম্বর মিরসরাই বড় তাকিয়া বাজার এলাকা থেকে ১৭ কেজি, মিরসরাই বাজার থেকে ২২টি, বড় তাকিয়া বাজার থেকে ২৯ কেজি, মিরসরাই হাদি ফকিরহাট থেকে ৫২টি, ২৬ নভেম্বর মিরসরাই মিঠাছড়া বাজার থেকে ১৯ কেজি, নয় দুয়ারিয়া বাজার থেকে ২১ কেজি, বাঁশখালীর বাণীগ্রাম থেকে ৩৪টি, ১৯ নভেম্বর চাঁদপুরের দোয়াভাঙ্গা এলাকা থেকে ২৫কেজি, শাহরাস্তি সূচিপাড়া থেকে ৫০ কেজি, ১৮ নভেম্বর মিরসরাই হাদী ফকির হাট থেকে ২ কেজি, বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে ২০ কেজি, চাঁদপুর সদর বড় মসজিদ এলাকা থেকে ৪২টি, চট্টগ্রাম থেকে নেয়ার পথে কুমিল্লা এলাকা বাস থেকে ৪০ কেজি, ২১ অক্টোবর চাঁদপুর সদর বড় মসজিদ এলাকা থেকে ৪২টি, ১৪ অক্টোবর চাঁদপুরের শাহরাস্তির শিতোশী এলাকা থেকে ২০ কেজি, ১৫ অক্টোবর চাঁদপুর রেলস্টেশন এলাকা থেকে ১০০ কেজি, ১৩ অক্টোবর নোয়াখালীর সূবর্ণচর এলাকা থেকে ৩০ কেজি, ৮ অক্টোবর চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা থেকে পাচার করার সময় যাত্রাবাড়ি ও ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় বাস থেকে ১২ কেজি কচ্ছপ উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার করা কচ্ছপের মধ্যে সুন্ধি প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যা বেশি। ধুম ও কড়ি প্রজাতির কচ্ছপের সংখ্যাও রয়েছে। এর আগে পাচারের সময় গত ৩০ সেপ্টেম্বর ঢাকা শাহ জালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক যাত্রীর লাগেজ থেকে ৯২৫টি কচ্ছপ উদ্ধার করে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট। কচ্ছপগুলো মালেয়েশিয়া নেয়া হচ্ছিল।

বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট কর্মকর্তারা জানান, দেশের সীমানা পেরিয়ে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত চীন, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, হংকং এবং সিঙ্গাপুর যাচ্ছে কচ্ছপের চালান। দেশে খাল-বিল ও হাওড়ে প্রচুর পরিমাণ মিঠাপানির কচ্ছপ দেখা যায়। এর মধ্যে ‘সুন্ধি’ কচ্ছপ অন্যতম। অবাধ শিকার ও আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের কারণে প্রাণীটি বিপন্ন হয়ে পড়েছে। কচ্ছপকে বলা হয় ‘প্রকৃতির ঝাড়ুদার’। এরা মরা মাছ ও পচা আবর্জনা খেয়ে পানি পরিষ্কার রাখে। কচ্ছপ হারিয়ে গেলে জলজ বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়বে এবং পানির গুণাগুণ নষ্ট হবে।

জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে কচ্ছপের চালান প্রথমে অবৈধভাবে ভারতে পাচার হয়। বিশেষ করে যাশোর (বেনাপোল), সাতক্ষীরা(ভোমরা) আগরতলা এবং সিলেটের সীমান্ত এলাকা দিয়ে পাচার হয়। ভারতে পৌঁছানোর পর সেখান থেকে আন্তর্জাতিক পাচারকারী চক্রের মাধ্যমে মিয়ানমার বা নেপাল হয়ে কচ্ছপগুলো চীন ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোতে পাঠানো হয়। বাংলাদেশে প্রায় ২৫-৩০ প্রজাতির কচ্ছপ ও কাছিম রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি পাচার হয় সুন্ধি কচ্ছপ। এটি আকারে ছোট এবং সহজলভ্য হওয়ায় এর পাচার হয় সবচেয়ে বেশি। খোলসের চাহিদার কারণে কড়ি কচ্ছপ ও মাংসের জন্য পাচার হয় ধুম কচ্ছপ। চট্টগ্রামে যেসব এলাকা থেকে কচ্ছপ পাচার করা হয় তা হলো, বান্দরবান ও রাঙামাটি সীমান্তবর্তী এলাকা, ফটিকছড়ি, বাঁশখালী এবং মিরসরাই।

নগরীর রিয়াজ উদ্দিনবাজার কচ্ছপ পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট হিসাবে ব্যবহার হয়।বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসীম মল্লিক জানান, অক্টোবর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত কচ্ছপ পাচারের মৌসুম। ডোবা, পুকুর কিংবা নদীতে এ সময় পানি কম থাকায় পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠে। চট্টগ্রামের রিয়াজউদ্দিন বাজার কচ্ছপ পাচারের ট্রানজিট পয়েন্ট। দেশে ২৫ থেকে ৩০ ধরনের কচ্ছপ রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি পাচার হয় সুন্ধি কচ্ছপ। কড়ি ও ধুম কচ্ছপও মাঝে মাঝে পাচার হয়। অসীম মল্লিক আরো জানান, সাম্প্রতিক সময়ে চট্টগ্রামে আমরা বেশ কয়েকটি অভিযান চালিয়েছি। ঢাকা থেকে গিয়ে অভিযান চালানো অনেকটা সময় সাপেক্ষ। তারপরও আমরা চেষ্টা করছি বন্যপ্রাণী রক্ষা করতে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ