
রাজশাহীর দুর্গাপুরে বিদ্যালয়ের নিজস্ব শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে প্রস্তুত উপজেলার ৮৩ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর ১৫ হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থী। নিজ বিদ্যালয়ে নিজস্ব শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পেরে অনেক খুশি ও আনন্দিত বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
উপজেলা শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, দুর্গাপুর উপজেলায় মোট ৮৩ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। স¤প্রতি সকল বিদ্যালয়ে নিজস্বভাবে শহীদ মিনার নির্মিত হয়েছে। নিজস্ব শহীদ মিনারে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে অন্য প্রস্তুত সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ।
উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার শহিদুল ইসলাম বলেন, সকল বিদ্যালয়ে আগে শহিদ মিনার ছিল না। ফলে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস সহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারত না বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। তবে উপজেলার শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে ৮৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ নির্মাণ সম্পূর্ণ হওয়ায় সকল বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজস্ব শহিদ মিনারে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করবে।

জানা যায়, উপজেলায় ৮৩টি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ সব বিদ্যালয়ে আগে কোন শহিদ মিনার ছিল না। ফলে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা, জাতীয় শহীদ দিবস সহ বিভিন্ন দিবসে এসব শিক্ষার্থীকে যেতে হতো অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের শহিদ মিনারে। কোন কোন প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ী ভাবে শহিদ মিনার তৈরি করে দিবসটি পালন করা হতো। ২০২১ সালে উপজেলায় শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে যোগ দেন মো. মোখলেছুর রহমান। তিনি এরপর পরিকল্পনা করেন সব স্কুলে শহিদ মিনার তৈরির। সরকারী কোন বরাদ্দ নয়, স্কুলের নিজস্ব ফান্ডের নিজস্ব তহবিল থেকে ৮৩টি স্কুলে নান্দনিক শহিদ মিনার তৈরি উদ্দ্যেগ নেন তিনি। এরপর গত তিন বছরে ক্রমাš^য়ে গড়ে তোলা হয়েছে সব বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার। প্রতিটি স্কুলের শহিদ তৈরিতে খরচ হয়েছে ৫০ থেকে ৭০ হাজারের মধ্যে। উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি ও সিংগা মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রাক্তিবুল ইসলাম জানান, আগে বিদ্যালয়ে কোন শহিদ মিনার ছিল না। ফলে অনেক বিদ্যালয়ে আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস সহ বিভিন্ন জাতীয় দিবসে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে পারত না বিদ্যালয়ের শি¶ার্থীরা। বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার হওয়ায়, শি¶ক শি¶ার্থী ও অভিভাবকরা খুশি। তিনি বলেন, তৎকালীণ শি¶া কর্মকর্তা মোকলেছুর রহমান প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার তৈরির উদ্দ্যেগ নেন। তারপর থেকে একে একে প্রতিটি বিদ্যালয়ে কাজ শুরু হতে থাকে। প্রতিটি বিদ্যালয়ের নিজ¯^ ফান্ড হতে এসব শহিদ মিনার তৈরি করা হয়েছে। পৌর এলাকার দেবীপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেনির শি¶ার্থী আফসানা হক বলেন, আগে স্কুলে শহিদ মিনার ছিল না। বিভিন্ন দিবসে শ্রদ্ধ্যা জানাতে বাহিরের প্রতিষ্ঠানে যেত হতো অথবা অনেক সময় আবার আমরা নিজেরাই অস্থায়ী শহিদ মিনার তৈরি করে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাতাম। এখন থেকে আমরা বিদ্যালয়ের শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে পারবো। দুর্গাপুর উপজেলা শি¶া কর্মকর্তা ভারপ্রাপ্ত লায়লা আনজুমান্দ বলেন, এটা খুবই ভাল উদ্দ্যোগ। উপজেলার সব বিদ্যালয়ে এখন শহিদ মিনার। এতে ক্ষুদে শি¶ার্থীরা মুক্তিযুদ্ধ ও ভাষা আন্দোলনের চেতনায় উজ্জীবিত হবে। তৎকালীণ শি¶া কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহিদ মিনার তৈরির উদ্দ্যেগ নিয়ে ছিলেন। সেটা এখন সফল ভাবে বাস্তবায়ন হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ের নিজ¯^ ফান্ড (তহবিল) থেকে শহিদ মিনার তৈরি হয়েছে।