
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে আগামী ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবস এবং ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস-২০২৪ উদযাপন উপলক্ষে এক প্রস্তুতিমূলক সভা গতকাল ৪ মার্চ সোমবার সকাল ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রস্তুতিমূলক সভার সভাপতির অনুমতিক্রমে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাকিব হাসান আসন্ন ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে পুস্পস্তববক অর্পণের বিষয়ে আলোচনা করেন। এসময় উপস্থিত চট্টগ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাহাড়তলীস্থ উত্তর কাট্টলীতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকৃত ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় বাস্তবায়নাধীন নতুন চট্টগ্রাম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ তৈরী করে সেখানে আসন্ন ২৬ মার্চে পুষ্পস্তবক অর্পণের দাবী জানান।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম মহানগর ইউনিট কমান্ড ইউনিটের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুর উদ্দিন বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সূতিঁকাগার চট্টগ্রাম। কিন্তু ¯^াধীনতা পরবর্তী দীর্ঘ সময় পার হলেও চট্টগ্রামে কোন স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়নি। বর্তমান জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের দূরদর্শীতা ও আন্তরিকতায় চট্টগ্রামে এখন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ নির্মাণ হচ্ছে যা চট্টগ্রামবাসীর জন্য গর্বের। বাস্তবায়নাধীন স্মৃতিসৌধে আগামী ২৬ মার্চ প্রথমবারের মতো বীর শহিদদের স্মরণে পুস্পস্তবক অর্পণ করা গেলে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাধীনতা পরবর্তী দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি পূরণ হবে।
তিনি আরোও উল্লেখ করেন, শহীদ মিনার বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনের স্মৃতি ও মর্যাদা বহন করে। তাই মহান ¯^াধীনতা যুদ্ধ ও একাত্তরের শহীদদের প্রকৃত শ্রদ্ধা ও মর্যাদা প্রদান করতে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধে পুষ্পস্তবক অর্পণের কোন বিকল্প নেই।
উক্ত প্রস্তাবে একমত পোষন করে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম জেলা ইউনিটের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা এ কে এম সরোয়ার কামাল বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাণের দাবি নতুন স্মৃতিসৌধ আমার জীবদ্দশায় দেখে যেতে পারবো তা কখনও কল্পনা করি নাই। জেলা প্রশাসকের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় চট্টগ্রামে নতুন মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ এখন বাস্তবায়নাধীন। এই স্মৃতিসৌধ আমাদের অস্তিত্ব আর বাঙালি জাতীয়তাবাদের প্রতীক ও আমাদের ইতিহাসের স্মারক। এবারের ২৬ মার্চ-এর পুস্পস্তবক অর্পণের জন্য বাস্তবায়নাধীন স্মৃতিসৌধের স্থানে অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে পুস্পস্তবক অর্পণের জোর দাবি জানিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দীর্ঘদিনের মনের আশা পূরণ হবে বলে তিনি মনে করেন।
মুক্তিযোদ্ধা সংসদ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ইউনিট কমান্ডের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রদ্যুৎ কুমার পাল বলেন, আগামী ২৬ মার্চ প্রস্তাবিত স্মৃতিসৌধে অস্থায়ীভাবে স্মৃতিসৌধ তৈরি করে পুস্পস্তবক অর্পণ করা হলে এই স্মৃতিসৌধ আপামর জনসাধারণের বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ের স্মরণে নিবেদিত এবং শহিদদের প্রতি জাতির শ্রদ্ধার উজ্জ্বল নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। উক্ত সভায় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজ¯^) মোঃ আব্দুল মালেক, সর্বস্তরের বীর মুক্তিযোদ্ধা, মেট্টোপলিটন ও জেলা পুলিশের কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তর, বেসরকারি এনজিও সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিক্রমে এবারের ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে প্রস্তাবিত চট্টগ্রাম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ নির্মাণের জায়গায় অস্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করে সেখানে পুস্পস্তবক অর্পণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, বিগত ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ইংরেজি তারিখে বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনকালে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উল্লিখিত স্থানে চট্টগ্রাম মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন উদ্বোধন করেন।