আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে ভূমিকা রাখতে হবে: স্থানীয় সরকার মন্ত্রী

ডেস্ক নিউজ:

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশের গড়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন সেই লক্ষ অর্জনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।
শনিবার (৯ মার্চ) দুপুরে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র ও ষষ্ঠ নির্বাচিত পরিষদেও কাউন্সিলরদের তৃতীয় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত সুধী সমাবেশে মন্ত্রী এ কথা বলেন। নগরীর পাঁচলাইশে কিং অব চিটাগং ক্লাবে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম বলেন, বন্দর নগরী চট্টগ্রাম সবসময় সারা বাংলাদেশের উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে। চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক রাজধানী উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে চট্টগ্রামের অবদান অন¯^ীকার্য তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশের গড়ার যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন সেই লক্ষ্য অর্জনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন অতি গুরুত্বপূর্ণ।
মশার প্রকোপ কমাতে জনসচেতনতা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, হাজার প্রকারের মশা আছে পৃথিবীতে, বাংলাদেশে আছে তিন প্রকারের-এনাকিউলিস, কিউলিস এবং এডিস। আমাদের দেশে আগে এডিসের প্রকোপ তেমন ছিল না। এখন প্রচুর এডিসের প্রকোপ দেখতে পাচ্ছি।
‘এক্ষেত্রে সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব আছে। ৯৮ পারসেন্ট এডিস মশা পরিস্কার পানিতে হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের দায়িত্ব আছে। সিটি করপোরেশন ফগিং করে, স্প্রে করে। এত কিছু করেও সেটা মোকাবেলা করা যবে না। অন্য মশা আপনি স্প্রে করে মারতে পারবেন, এডিস নয়। তিনদিনের জমা পানি যদি ফেলে দেন, তাহলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। সিটি করপোরেশন এ বিষয়ে জনগণকে সচেতন করবে বলে আশা রাখি।’
বন্দর নগরীর আবর্জনা অপসারণে নতুন প্রকল্প দেয়া হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, “মাথাপিছু আয় বাড়লে আবর্জনার পরিমাণ বাড়বে। ল্যান্ডফিল, এটা সেটা করে হবে না। ময়লা থেকে এনার্জি জেনারেশন করতে হবে।
“মেয়র আমাকে নিউমার্কেট, ইপিজেড ও বহদ্দারহাটে আন্ডারপাসের কথা বলেছেন। প্রিলিমিনারি স্টাডি করে দেন। ফিজিবিলিটি করে উপযোগী হলে প্রকল্প পাস করার ব্যবস্থা করব।”
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে চসিক মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘ চট্টগ্রামের সাথে মন্ত্রী মহোদয়ের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আমরা পেয়েছি, এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে আপনি (মন্ত্রী) বোঝাতে সক্ষম হয়েছেন বলেই পেয়েছি। চট্টগ্রামের কোনো সমস্যা নিয়ে আমরা গেলে আপনি নিরাশ করেন না। চট্টগ্রামের সব সমস্যা আপনি অবগত আছেন।
“চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নিজের অর্থায়নে ৮২টা স্কুল পরিচালনা করছে। ৫৬টা হেলথ কমপ্লে· পরিচালনা করছে। ৪টা মাতৃসদন হাসপাতাল পরিচালনা করছে। চিকিৎসা কেন্দ্র, কম্পিউটার ট্রেনিং ইন্সটিটিউট, নার্সিং ইনস্টিটিউট আছে। আপনার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এগিয়ে যাবে। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, আপনি আমাদের পাশে থাকবেন। চট্টলবাসী আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।’
চসিকের আর্থিক সক্ষমতা বাড়াতে নানামুখি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে জানিয়ে মেয়র বলেন, হোল্ডিং ট্যা· নিয়ে জনগণের আপত্তি ছিল। আপত্তি নিষ্পত্তির জন্য ৬টি রিভিউ বোর্ড গঠন করে উক্ত রিভিউ বোর্ডে আমি নিজে উপস্থিত থেকে ৮টি স্থানে গণশুনানির মাধ্যমে করদাতাদের চাহিদা মতে সহনীয় পর্যায়ে কর মূল্যায়ন করি। এতে নগরবাসীর গৃহকর নিয়ে যে অসন্তোষ ছিল তা প্রশমিত হয়েছে। আমার এ উদ্যোগের ফলে ২০২১-২২ অর্থবছরের তুলনায় ২০২২-২৩ অর্থবছরে ২৫ কোটি টাকা রাজ¯^ আয় বেড়েছে।

সমাবেশে চসিকের সাবেক মেয়র মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী অফিশিয়াল কাউন্সিলর ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘ঢাকার সব মার্কেট চালায় সিটি করপোরেশন। আর চট্টগ্রামে চালায় সিডিএ। আমি অবিলম্বে দাবি জানাই, সব মার্কেট সিটি করপোরেশনকে হস্তান্তর করা হোক।’

সমাবেশে চট্টগ্রাম-১১ আসনের সংসদ সদস্য এম এ লতিফ বলেন, “সিটি করপোরেশনের তিন বছরের উন্নয়নে আমি সন্তুষ্ট। বঙ্গবন্ধু কন্যার চট্টগ্রামের প্রতি যে বিশেষ দায়িত্ব তা তিনি নিজে ঘোষণা করেছেন। এর জন্য সিটি করপোরেশনকে আড়াই হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন ম্যাচিং ফান্ড ছাড়াই।

“এত কাজ প্রতিটি ওয়ার্ডে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের অনেক অবজারভেশন থাকে, সেগুলো শেয়ার করুন। মেয়র মহোদয় ক্লোজলি মনিটর করুন। অনেক ত্রæটির কারণে সুবিধার চেয়ে অসুবিধা বেশি হচ্ছে। ভুক্তভোগীরাই সেটা আপনাকে বলতে পারবে।”

কোনো বাড়ি বা দোকানের সামনে ময়লা পেলে মালিককে জরিমানা করতে হবে মন্তব্য করে এম এ লতিফ বলেন, “কর্ণফুলীতে প্রতিদিন ৩৫০-৪০০ টন পলিথিন গিয়ে পড়ে। নাব্যতা নষ্ট হচ্ছে। এজন্য কোনো বাড়ি বা দোকানের সামনে ময়লা পেলে মালিককে জরিমানা করতে হবে। “কিছুদিন আগে ফুটপাতগুলো চাঁদাবাজরা দখলে নিয়েছিল। সারাজীবন যারা চাঁদার উপর নির্ভর করেছে তাদের থেকে শহরকে রক্ষা করতে হলে মেয়রকে আরো শক্ত হতে হবে “

চট্টগ্রাম-৮ আসনের সংসদ সদস্য আবদুচ ছালাম বলেন, “চট্টগ্রামের মানুষের আকাঙ্খা মন্ত্রী মহোদয় ভালো করে জানেন। চট্টগ্রামের মানুষ যানজটমুক্ত, জলাবদ্ধতা মুক্ত, বাণিজ্যিক রাজধানী হিসেবে চট্টগ্রাম চায়। মেয়র মহোদয় আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। আগামী ২ বছর বাকি আছে। আমরা যারা সাংসদ উনার পাশে থেকে সার্বিক সহযোগিতা করব।চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চু বলেন, “নগরবাসীর জন্য বসবাসের যোগ্য নগরী গড়তে মেয়র উদ্যোগ নিয়েছে। নগরীকে যানজট মুক্ত করতে এবং ফুটপাতের যত্রতত্র হকার বসা বন্ধ করতে মেয়রের উদ্যোগ নগরবাসীর প্রশংসা পেয়েছে ইতিমধ্যে।
“মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য সব দায়িত্ব নিয়েছেন। তাই চট্টগ্রামের উন্নয়নে অন্যদেরও মানসিকতার পরিবর্তন এখন প্রয়োজন। পদ্ধতিগত পরিবর্তন আনতে হবে শহরকে আধুনিক ও বাসযোগ্য করতে হলে।”
সভায় রাউজান উপজেলা চেয়ারম্যান এ.কে. এম এহেছানুল হায়দর চৌধুরী চট্টগ্রামে সিটি গভার্নমেন্ট চালুর দাবি জানান। চসিকের প্যানেল মেয়র আবদুস সবুর লিটন, গিয়াস উদ্দিন, আফরোজা কালাম জনপ্রতিনিধিদের ¶মতায়নে জোরারোপ করেন এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের গৃহিত বিভিন্ন কার্যক্রম সম্পর্কে আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত সচিব জনাব ড. শের আলী, ভারতীয় সহকারী হাই কমিশনার ডা. রাজীব রঞ্জন, চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলরবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, চসিকের ভারপ্রাপ্ত সচিব নজরুল ইসলাম, মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, চসিকের বিভাগীয় ও শাখা প্রধানবৃন্দ ও বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও সুধীবৃন্দ। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি এবং নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ক্রেস্ট দিয়ে অভিনন্দন জানান মেয়র৷ বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক আয়োজনের মাধ্যমে সুধী সমাবেশ শেষ হয়৷

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ