আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চমেক ইন্টার্ন চিকিৎসকদের মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক

দালালরা ডাক্তারদের থেকে বেশি ইনকাম করে

বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনের অংশ হিসেবে সেবা কার্যক্রম বন্ধ রেখে রাজপথে নেমেছেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রশিক্ষণরত ও শিক্ষানবীশ চিকিৎসকেরা। সেবা বন্ধ করে দেওয়ায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ভোগান্তিতে পড়েছেন। গতকাল রোববার সকালে পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ যৌথভাবে চমেক হাসপাতালের মূল ফটকে মানববন্ধন করে। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি ও ইন্টার্ন চিকিৎসকদের যৌথ ৪ দাবি হলো- ইন্টার্ন চিকিৎসকদের বেতন ৩০ হাজার টাকা এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসকদের বেতন বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা। পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ট্রেইনি চিকিৎসকদের (এফসিপিএস, রেসিডেন্ট ও নন রেসিডেন্ট) বকেয়া ভাতা প্রদান করা। ১২টি প্রাইভেট ইন্সটিটিউটের নন-রেসিডেন্ট ও রেসিডেন্টদের আকস্মিক ভাতা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে ভাতা পুনর্বহাল করা ও অবিলম্বে চিকিৎসক সুরক্ষা আইন প্রনয়ন করা।
মানববন্ধনে পোস্টগ্রাজুয়েট প্রাইভেট ট্রেইনি চিকিৎসক আল আমিন ইসলাম বলেন, এক সপ্তাহ ধরে আমরা সারাদেশে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করে আসছি। সর্বশেষ আমরা কর্মবিরতি ঘোষণা করতে বাধ্য হয়েছি। আমাদের থাকার কথা ছিল হাসপাতালের ওয়ার্ডে, অথচ আমাদের থাকতে হচ্ছে রাজপথে। আমরা সপ্তাহে সাতদিন, মাসে ৩০দিন, বছরে ৩৬৫ দিন ডিউটি করি। আমাদের নির্দিষ্ট কোনো কর্মঘণ্টা নেই। অথচ আমাদের যে ভাতা দেওয়া হয়, সেটা অমানবিক।
পোস্টগ্রাজুয়েট ট্রেইনি ডাক্তাররা মানবেতর জীবনযাপন করছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ (চমেক) হাসপাতালের আনাচে-কানাচে বিভিন্ন ধরনের দালাল আপনারা পাবেন, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের দালাল, হাসপাতাল-ক্লিনিকের দালাল। এ দালালরা পর্যন্ত ডাক্তারদের থেকে বেশি ইনকাম করে মাস শেষে। ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে আপনারা যেসব মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভ দেখেন, তাদের মাসিক বেতন ডাক্তারদের মাসিক বেতনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি।
কর্মবিরতির সিদ্ধান্তে অনড় থাকার কথা জানিয়ে আল আমিন বলেন, মাননীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন। দুই দিনের মধ্যে আমাদের দাবি পূরণ না হলে পোস্ট গ্রাজুয়েট ও ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা কেউ হাসপাতালে এবং ওয়ার্ডে ফেরত যাবেন না। আমরা আমাদের দাবিতে অনড় থাকব।
চমেক ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. মোহাম্মদ ফয়েজউল্লাহ বলেন, একজন পোস্ট গ্রাজুয়েট ট্রেইনি ডাক্তারের ভাতা ২৫ হাজার টাকা। একজন ইন্টার্ন চিকিৎসকের ভাতা মাত্র ১৫ হাজার টাকা। এ টাকায় কি বর্তমান বাজারে চলা সম্ভব? আবার বলে দিয়েছে, প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা যাবে না। তাহলে ২৫ হাজার টাকায় একজন মানুষ কিভাবে নিজে চলবে আর সংসার চালাবে? আবার তাদের ছয় মাসের বেতনও বকেয়া আছে।
‘হাসপাতালে রোগী বেড়েছে, চাপ বেড়েছে, কাজ বেড়েছে, বাজারে দ্রব্যমূল্য বেড়েছে। শুধু বাড়েনি আমাদের বেতন-ভাতা। এজন্য আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি। আট ঘণ্টা থেকে চৌদ্দ ঘণ্টা পর্যন্ত ডিউটি দিয়ে, শুক্রবারও ছুটি নেই, তাহলে কেন ন্যায্য সম্মানি দেওয়া হবে না? আমাদের দাবি হচ্ছে, পোস্ট গ্রাজুয়েটদের ভাতা ৫০ হাজার টাকা এবং ইন্টার্নদের ৩০ হাজার টাকা করতে হবে। এ দাবিতে আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

‎শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বদলি জনিত বিদায় সংবর্ধনা

‎সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলা হল রুমে এ সময়ে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ মুশফিকুর রহমান,উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ মাসুদ রানা,থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ আসলাম আলী,উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ – আল মামুন, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ এস এম শাহাদাত হোসেন, উপজেলা প্রার্থমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মুরাদ হোসেন সহ উপজেলার সকল কর্মকর্তা কর্মচারীগণ। অন্যান্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানগণ,

উপজেলার বিভিন্ন সাংস্কৃতি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব ও এলাকার সূধী মহল। প্রায় দুই বছর যাবৎ ধরে মোঃ কামরুজ্জামান এই উপজেলায় কর্মরত ছিলেন। এই দুই বছরে তিনি উপজেলায় প্রায় সকল মানুষের মন জয় করেছিলেন। বিশেষ করে দুস্থ অসহায় মানুষের পাশে থেকে বিভিন্ন সাহায্য সহযোগিতা করেছেন তিনি। উপজেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাজও করেছেন তিনি। উপজেলার ঐতিহ্যবাহী হযরত মখদুম শাহদৌলা শহীদ ইয়েমেনী (রহ.) এর মাজারের কাজ দীর্ঘদিন যাবৎ বন্ধ ছিলো সে কাজ এখন সম্পন্ন হওয়ার পথে এই কাজটা নির্বাহী মোঃ কামরুজ্জামানের অবদান, উপজেলার পৌর শহরটাকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনতে উপজেলার প্রধান প্রধান পয়েন্ট তিনি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের কাজ শুরু করেছিলেন। উপজেলা পরিষদের পুকুরটি দীর্ঘ দিন যাবৎ অবহেলিত হয়ে পরেছিলো তিনি পুকুর সংস্কারের কাজ করে সেখানে মানুষের বিশ্রামের উপযোগী করে তুলেছেন। উপজেলার পৌর পার্কের উদ্ধোধন ও করেছেন তিনি। শুধু তাই নয় তিনি অসহায় দুস্থ গরীবের সন্তানদের লেখা পড়ার সুযোগসহ তাদের পাশে দ্বাড়িয়েছিলেন কন কনে শীতের মধ্যে রাতে পৌর শহরে নিজে ঘুরে ঘুরে শীতার্ত মানুষকে খুজে বের করে সরকারি অনুদানের কম্বল বিতরণ করেছিলেন। এক কথায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান ছিলেন একজন মানবিক নির্বাহী কর্মকর্তা। তার আচারনে শাহজাদপুরবাসী মুগ্ধ। তার বিদায় বেলায় শাহজাদপুরের বেশির ভাগ সাধারন মানুষ অশ্রু সিক্ত।

‎শাহজাদপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে দলিল পুড়িয়ে ধ্বংস।


‎সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে মালিক শনাক্ত না হওয়া বিপুল সংখ্যক নিবন্ধিত দলিল আনুষ্ঠানিকভাবে আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে।
জানা যায় ২০১৭ ও ২০১৮ সালে নিবন্ধিত এসব দলিল ডেলিভারি না নেওয়ায় দীর্ঘদিন ধরে অফিসে জমিয়ে রাখা ছিলো। মালিকানা যাচাইয়ের জন্য একাধিকবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হলেও নির্ধারিত সময়ে কেউ উপস্থিত না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ দলিলগুলো ধ্বংসের সিদ্ধান্ত নেয়।

উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ রবিউল ইসলাম বলেছেন, মালিকবিহীন দলিল সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা নেই এবং নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি এড়াতেই এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী নোটিশ প্রকাশ, সময়সীমা প্রদান ও যাচাই-বাছাই সম্পন্ন করার পর দলিলগুলো ধ্বংস করা হয়েছে।স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা বলেছেন, মালিকহীন দলিল অনেক সময় দালালচক্রের অপব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ