আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

রূপগঞ্জের সড়ক মহাসড়কে কোনক্রমেই থামছে না নিষিদ্ধ যানবাহন

মাহাবুবুর রহমান রনি, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ

রূপগঞ্জের হাইওয়ে সড়কে হাইওয়ে পুলিশেকে মাসোহারা দিয়েই চলছে নসিমন,করিমন, ভ্যানগাড়ি, অটোরিক্সা ও সিএনজি। আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও একমাত্র পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে হাইওয়ে সড়কে চলছে এ নিষিদ্ধ যানবাহন। এমন অভিযোগ উঠেছে হাইওয়ে পুলিশের উপর।
দেশে সড়ক দুর্ঘটনা এড়াতে মহামান্য আদালত হাইওয়ে সড়কে থ্রী-হুইলার যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। একমাত্র হাইওয়ে পুলিশের মাসোহারার কারণেই হাইকোটের রায় অমান্য করে নিষিদ্ধ যানবাহনের চালকরা ব্যস্ততম সড়ক কিংবা মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন। অনুমোদন না থাকার পরেও কিভাবে এসব থ্রী-হুইলার যানবাহন মহাসড়কে চলে এমন প্রশ্ন সচেতন মহলের। জানাযায়, হাইওয়ে পুলিশ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সড়কে চালাচ্ছে নিষিদ্ধ যানবাহনের চালকরা। সরেজমিনে ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়, রূপগঞ্জের প্রতিটি সড়ক, মহাসড়ক ও হাইওয়ে সড়কে। উপজেলা ভূলতা, কাঞ্চন, রূপসী,বরপা, বরাবর, যাত্রামুড়া, গোলাকান্দাইল, নতুন বাজার, এলাকায় মহাসড়কের উপর গড়ে তোলা হয়েছে অবৈধ থ্রী-হুইলার (তিন চাকার) স্ট্যান। এ সব অবৈধ গাড়ী চলাচলের কারনে সড়ক, মহাসড়ক ও হাইওয়ে সড়কসহ উপজেলায় প্রতিদিন ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, ঢাকা, গাজীপুর, ভূলতা বাইপাস সড়কের কাঞ্চন টোলপ্লাজা, কালাদী এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের মায়ার বাড়ি ও কাঞ্চনের চাঁন টেক্সটাইল এলাকায় কয়েকশ নিষিদ্ধ থ্রী-হুইলার যানবাহন চলাচল করে হাইওয়ে পুলিশের মাসোহারার বৃত্তিতে। হাইওয়ে পুলিশের দেওয়া বিভিন্ন ফল,ফুল ও পশুপাখির ছবির স্টিকার দিয়েই অবৈধ গাড়ি সড়কে চলাচলের অনুমোদন নেওয়া হয়। সেগুলোর খবর নিয়ে জানা যায়। নসিমন, ভটভটি, অটোরিক্সা, ভ্যান গাড়ি এই সমস্ত নিষিদ্ধ যানবাহন মাসোহারায় অনুমোদন দেওয়া হয় । নসিমন ও টমটম চালকরা বলেন, এশিয়ান হাইওয়ে সড়কের কালাদীতে অটো রিক্সা টমটম, নসিমন গাড়ি থেকে প্রতিমাসে এক হাজার টাকা করে দিতে হয় হাইওয়ে পুলিশের নিয়োজিত মঞ্জু ও শাওনকে টাকা দিলেই স্টিকার লাগিয়ে দেয় তারা। প্রতি মাসে বিভিন্ন ধরনের স্টিকার যেমন ফুল, বাঘ, সিংহ ও বাণিজ্য মেলার ভবনের ছবি দিয়ে স্টিকার লাগিয়ে চলে এসব অনুমোদনহীন গাড়ি। টাকা না দিয়ে কোন থ্রী-হুইলার (তিন চাকার) গাড়ী সড়কে চলাচল করতে পারেনা। মঞ্জু এবং শাওনের মাধ্যমে স্টিকার বিক্রি করে পুলিশ টাকা নেয় বলে জানান ভুক্তভোগী চালকরা।
অটো রিক্সা চালক কবির বলেন, আমাদের কী দোষ আমার প্রতি মাসে এক হাজার টাকা করে দিয়ে সড়কে গাড়ি চালাই। পুলিশ আমাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে সড়ক, মহাসড়ক ও হাইওয়ে সড়কে গাড়ি চালাতে দেয়। এরকমই অভিযোগ উঠেছে হাইওয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে।
এমনই তথ্য বেরিয়ে এসেছে চালক ও ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে।
অভিযোগ অস্বীকার করে ভূলতা হাইওয়ে পুলিশে ইনচার্জ আলী আশরাফ মোল্লা বলেন, হাইওয়ে পুলিশ কোন যানবাহনে স্টিকার দেয়না। আমরা কোন মাসোহারা নেই না। যেসকল গাড়ি আইন অমান্য করে মহাসড়কে চলাচল করে তাদেরকে আটক করি এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ