আজঃ বুধবার ১২ মার্চ, ২০২৫

চট্টগ্রামে স্কুলে ছাত্রী নিপীড়ন ঃ বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামের সেন্ট স্কলাস্টিকাস্ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন ছাত্রী নিপীড়নের ঘটনায়। ইতোমধ্যে নিপীড়নে অভিযুক্ত দুই শিক্ষকের মধ্যে একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।তাদের স্থায়ী চাকরিচ্যুতি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে নগরীর পাথরঘাটায় বিদ্যালয়টিতে গতকাল বুধবার (১২ জুন) সকাল থেকে বিক্ষোভ হয়েছে। শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সম্মিলিত সইসহ এসব দাবি প্রতিষ্ঠানটির কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিয়েছেন। তাদের অভিযোগ, অভিযুক্ত শিক্ষকদের যৌন নিপীড়নের ঘটনা জেনেও ব্যবস্থা না নিয়ে প্রধান শিক্ষিকা উল্টো তাদের রক্ষার চেষ্টা করেছেন।অভিযুক্ত অন্যজন সুরজিৎ পাল (৩৩)। এছাড়া অভিযুক্ত দুই শিক্ষককে সহযোগিতা করায় ওমর ফারুক নামে আরেক শিক্ষকেরও শাস্তি দাবি করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সেন্ট স্কলাস্টিকাস্ গার্লস স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সুষ্মিতা দে বলেন, আমাদের স্কুলে ২০১৭ সাল থেকে এ ঘটনা ঘটে আসছে। আমরা বারবার স্কুল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। উলটো তারা অভিযুক্ত শিক্ষকদের রক্ষা করেছে, যেখানে আমাদের রক্ষা করার কথা তাদের। স্কুলের মেয়েদের নানা হুমকি দিয়ে বিষয়টি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। এক শিক্ষককে এ বিষয়ে যখন তিনবার সাময়িক বরখাস্ত করা হয় সে শিক্ষক এ কাজ আবার করে। প্রধান শিক্ষিকাও আমাদের এ বিষয়ে কোনো সহযোগিতা করেনি। আমাদের দাবি, যে তিন জন শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে তাদের যাতে স্কুল থেকে একেবারে বহিষ্কার করা হয়।
দীপেন্দ্রী শর্মা নামে আরেক ছাত্রী বলেন, আমি নবম শ্রেণি থেকে এ স্কুলে। এখন কলেজে উঠেছি। উনাদের চোখের দৃষ্টি অনেক খারাপ। মেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক যদি এরকম হয় আমরা কোথায় যাব। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা প্রথম থেকেই তাদের রক্ষা করছে। উনারই দোষ।স্কুল কর্তৃপক্ষই যদি ভালো না থাকে মেয়েরা সেইভ ফিল কীভাবে করবে। আমরা এখানে নিরাপদ না। আমরা এটার সুষ্ঠু তদন্ত চাই। ওই স্যাররা আমাদের সঙ্গে এ কাজ আগেও করেছে। আমরা এর ভুক্তভোগী। দুই জন শিক্ষকের জন্য পুরো স্কলাসটিকাস’র নাম খারাপ করা যাবে না।
জেসমিন পিয়া নামে এক অভিভাবক বলেন, বাচ্চাদের নিরাপত্তাই আমাদের মূল দাবি। স্কুলের শিক্ষকরাই যদি আমাদের কোমলমতি বাচ্চাদের সঙ্গে এরকম আচরণ করে তাহলে বাচ্চারা কী শিখবে। এটা আমরা কীভাবে সহ্য করব। আর অধ্যক্ষ সব জানার পরও চুপ ছিলেন। উনি কীভাবে বিষয়টিকে ধামাচাপা দিয়ে গেল। ওই তিন শিক্ষককে তিনি কীভাবে রক্ষা করে গেলেন। রকিব উদ্দিন, সুরজিৎ পাল ও তাদের সহায়তাকারী ওমর ফারুক নামে তিন শিক্ষককে আমরা চাই না। আমরা চাই তাদের তিন জনকে পুরো বাংলাদেশে শিক্ষকতা থেকে বহিষ্কার করা হোক। তারা যাতে আর শিক্ষকতা করতে না পারে।
এ বিষয়ে জানতে সেন্ট স্কলাসটিকাস্ গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী সেলিন কস্তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তিনি কল ধরেননি।
এর আগে, মঙ্গলবার (১১ জুন) সকালে কোতোয়ালি থানায় যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এনে দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভিকটিম ছাত্রীর মা। পরে অভিযান চালিয়ে মামলায় অভিযুক্ত রকিব উদ্দিন (৩৫) নামে এক শিক্ষককে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নগরীর বাকলিয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
বুধবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের সামনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা ভিড় করে আছেন। যৌন নিপীড়নকারী শিক্ষকদের শাস্তির দাবিতে গণস্বাক্ষর সংগ্রহ করছেন তারা। অভিভাবকরা স্কুলের ভেতরে ঢুকে প্রধান শিক্ষিকা শিল্পী সেলিনা কস্তার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে তিনি দেখা করেননি। পরে ৩৪ নম্বর পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর ও এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক গিয়ে প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করেন।
জানতে চাইলে পাথরঘাটা ওয়ার্ডের কাউন্সিলর পুলক খাস্তগীর বলেন, আইনিভাবে যা যা করা দরকার আমরা সব করছি। ভিকটিমকে আমি নিজে নিয়ে গিয়ে মামলা করিয়েছি। ওই দুই শিক্ষককে স্কুল থেকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। মামলা করার পর এক শিক্ষক গ্রেফতার হলেও অন্য একজন এখনও পলাতক। তাকে ধরতেও পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি হয়েছে। আজ (বুধবার) সকালে স্কুলের সামনে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ করেছে। আমি গিয়ে তাদের বলেছি দুই নরপিশাচের জন্য এত বছরের একটি ঐতিহ্যবাহী স্কুলের সুনাম ক্ষুণ্ন হতে পারে না। সবাই যেন স্কুলের আগের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সহযোগিতা করে সেজন্য আহ্বান জানিয়েছি। পুলিশকে বলেছি যাতে ভিকটিম জিজ্ঞাসাবাদে কোনো ভয় না পায়। এ স্কুল তো আমাদের। স্কুলের ছাত্রীই আমার মেয়ের মতো।
এদিকে, মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, অভিযুক্ত শিক্ষক রাকিব চতুর্থ শ্রেণির বিজ্ঞান এবং সুরজিত পঞ্চম শ্রেণির একই বিষয়ের শিক্ষক। ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থীকে প্রায় দেড় বছর ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে ক্রমাগত বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন করে আসছেন এ দুই শিক্ষক।
সর্বশেষ গত ৯ জুন সকাল ১০টার দিকে টিফিন বিরতির সময় অভিযুক্ত দুই শিক্ষক কৌশলে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে ছয় তলার বাথরুমের পাশে নিয়ে যান। সেখানেই অবাঞ্ছিতভাবে ওই ছাত্রীকে স্পর্শ করে শ্লীলতাহানি করেন। তাদের এমন আচরণে ভয় পেয়ে চিৎকার দিলে ওই ঘটনা কাউকে না জানানোর হুমকি দিয়ে কৌশলে ঘটনাস্থল থেকে চলে যান তারা। ভুক্তভোগী ছাত্রী ভয়ে বিষয়টি কাউকে জানায়নি। স্কুল ছুটির পর বাসায় এসে কান্নাকাটি শুরু করে। পরবর্তী সময়ে ছাত্রীর মা কান্নার কারণ জানতে চাইলে ঘটনার বিস্তারিত বলে।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, মঙ্গলবার সকালে ভিকটিমের মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। এরপর অভিযান চালিয়ে আমরা এক শিক্ষককে গ্রেফতার করেছি। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য একজনকে ধরতেও আমাদের অভিযান চলছে। শিক্ষকদের বিরুদ্ধে এর আগেও যৌন নিপীড়নের কোনো অভিযোগ এসেছে কি না? এমন প্রশ্নে ওসি ওবায়দুল হক বলেন, সব তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পর সব বলা যাবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

জীবন সংগ্রামের অবিচল যোদ্ধা: ৮০ বছরের বৃদ্ধ আবুল হাসেম এখনো চালাচ্ছেন রিকশা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার চৌদ্দগ্রাম বাজারের এক চিরপরিচিত দৃশ্য—৮০ বছর বয়সী বৃদ্ধ রিকশাচালক আবুল হাসেম। প্রচণ্ড রোদ, শীত, বৃষ্টি—কোনো কিছুই তাকে থামাতে পারেনি। রমজানের রোজা রেখে, মাথার ওপর প্রখর সূর্য, তারপরও রিকশা চালিয়ে জীবিকার সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।

পৌরসভার গোমারবাড়ির বাসিন্দা আবুল হাসেম ছয় সন্তানের জনক। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, আজ তিনি ও তার স্ত্রী একা। চার মেয়ে বিয়ে করে স্বামীর সংসারে, আর দুই ছেলে—আরচ মিয়া ও আবু তাহের—নিজেদের পরিবার নিয়ে আলাদা থাকেন। অথচ বৃদ্ধ মা-বাবার খোঁজ নেওয়ার সময় তাদের নেই।

কেন এত বৃদ্ধ বয়সেও রিকশা চালাচ্ছেন? জানতে চাইলে আবুল হাসেম বলেন,
“আমার আর আমার স্ত্রীর খাবার, ওষুধসহ সব খরচ আমাকেই চালাতে হয়। প্রতিদিন গড়ে ৪০০-৫০০ টাকা আয় হয়, যা দিয়ে আমাদের সংসার মোটামুটি চলে। সন্তানেরা কেউ খোঁজ নেয় না। তাই বাধ্য হয়েই রিকশা চালাচ্ছি। যতদিন বেঁচে থাকি, চাই না কারও কাছে হাত পাততে বা ভিক্ষা করে খেতে। আল্লাহর কাছে শুধু এই দোয়া করি, যেন নিজের পরিশ্রমেই জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত চলতে পারি।”

একসময় সংসার ও সন্তানদের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করা এই মানুষটিকে আজ তার নিজের রোজগারের জন্য লড়াই করতে হচ্ছে। সমাজের প্রতিটি মানুষেরই উচিত তার মতো প্রবীণদের প্রতি সহানুভূতিশীল হওয়া, তাদের দেখভালের দায়িত্ব নেওয়া। কারণ, আজকের তরুণরাও একদিন বৃদ্ধ হবে, আর তখন সমাজ যেমন ব্যবহার করবে, সেটাই তাদের প্রাপ্য হয়ে উঠবে।

রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে হাজারো সংস্কারে লাভ নেই ।

দেশের গণতন্ত্রের অর্ডার ফিরিয়ে আনতে গণমাধ্যমকে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

গণমাধ্যমের গুরুত্বের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, গণমাধ্যমে যারা কাজ করেন তারা গত ১৬ বছর অনেক কষ্টের মধ্যে থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। একটি মুক্ত বাংলাদেশে ফ্যাসিস্টকে বিতাড়িত করে আমরা গণতান্ত্রিক ঐক্যের পথে চলছি। এ সময় আগামী দিনের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জনগণের নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠায় গণমাধ্যমের ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। গণমাধ্যমকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তাই গণমাধ্যমের সকলকে সাবধানে থাকতে হবে। জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে আনার জণ্য গণমাধ্যমকে শক্তিশালী ভূমিকা পালন করতে হবে।

তিনি মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকেলে নগরীর চট্টগ্রাম ক্লাবে পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে) এর দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের আহবায়ক ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক ব্যারিস্টার মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক কবি আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভুইয়া, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শামীম, বিএফইউজে মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী।

আমীর খসরু মাহমুদ বলেন, চট্টগ্রামের সাংবাদিকরা ৫ আগস্ট পর্যন্ত রাস্তায় থেকে জনগণের সামনে সঠিক চিত্র তুলে ধরেছে। তাই আগামী দিনগুলোতে গণতন্ত্রের যে সংগ্রাম চলছে, সেটিকে সফল করার জন্য, জনগণের মালিকানা, নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাংবাদিকদের সবার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি বলেন, সাংবাদিকদের সাথে নিয়ে আগামীর বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবো, গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনবো, মানুষের রাজনৈতিক সাংবিধানিক অর্ডার ফিরিয়ে আনবো। দেশকে একটি শান্তিপূর্ণ পরষ্পর সম্মানবোধ রেখে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি পরিবর্তনে একযোগে কাজ করতে হবে।

রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন না হলে অন্য সংস্কার করে কোনো লাভ নেই বলে জানিয়ে তিনি আরো বলেন, যদি রাজনৈতিক সংস্কৃতি পরিবর্তন করতে না পারি তাহলে হাজারো সংস্কার করে কোনো লাভ হবে না। তাই রাজনীতিতের সহনশীলতা থাকতে হবে। ভিন্ন মত থাকলেও অপরপক্ষকে সম্মান জানাতে হবে। এটাই হবে বিএনপির রাজনীতি, তারেক রহমানের রাজনীতি। এ রাজনীতি নিয়ে আমরা সামনের দিকে এগিয়ে যাব।

দেশের মানুষ নির্বাচনের অপেক্ষায় রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, মানুষের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য মূল স্তম্ভ হচ্ছে গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে আনা। গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে এনে বাংলাদেশের মানুষের সাংবিধানিক, রাজনৈতিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার একমাত্র পথ। আর তার বাহক হচ্ছে, দেশের মানুষের ভোটে নির্বাচিত প্রতিনিধি, নির্বাচন। এর অপেক্ষায় রয়েছে দেশের মানুষ। একেকটি দিন অতিবাহিত হচ্ছে অগণতান্ত্রিক পরিবেশে। যেখানে জনগণের প্রতিনিধি দেশ পরিচালনা করছেন, যেখানে জনগণের দৈনন্দিন সুখ দুখের কথা শোনা, সেই দায়িত্বপূর্ণ জনগণের কাছে জবাবদিহি এ রকম একটি সরকারের অপেক্ষায় সবাই রয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের যুবক সমাজ যারা গত তিন নির্বাচনে নিজেদের ভোট প্রয়োগ করতে পারে নাই তাদের ভোট প্রয়োগের অপেক্ষা, নির্বাচিত প্রতিনিধির অপেক্ষায়, নির্বাচিত সরকারে অপেক্ষায় এবং দায়বদ্ধ সরকারের প্রতিক্ষায় জনগণ আছে।

নির্বাচনকে পিছিয়ে দিতে নানা ষড়যন্ত্র চলছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ইতোমধ্যে এ নির্বাচনকে পিছিয়ে দেওয়ার জন্য এবং গণতান্ত্রিক অর্ডার ফিরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য বিভিন্ন ষড়যন্ত্র চলছে। যাদের জনসমর্থন নেই, যারা জনগণের ওপর আস্থা রাখতে পারছে না তারা বিভিন্ন ধরনের বক্তব্য দিয়ে জনগণের মনে সংশয় সৃষ্টি করছে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, দেশের জনগণ দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত। জনগণ এখন গণতন্ত্র, সুশাসন ও মৌলিক অধিকার ফিরে পেতে চায়। তাই জাতীয় নির্বাচনই হবে জনগণের প্রতিনিধি নির্ধারণের একমাত্র পথ। রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে দেশনায়ক তারেক রহমানের ৩১ দফা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

ব্যারিস্টার মীর হেলাল বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা না থাকলে সত্য তুলে ধরা যায় না। আর সত্য লিখা না গেলে বিশ্বাসযোগ্যতা থাকে না। বিশ্বাসযোগ্যতা না থাকলে পাঠক বা দর্শক প্রত্যাখ্যান করে।

আবদুল হাই শিকদার বলেন, সাংবাদিকদের বিবেকের মাধ্যমে পরিচালিত হতে হবে। অপসাংবাদিকতা, হলুদ সাংবাদিকতা, তথ্য সন্ত্রাস পরিহার করে সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করতে হবে। সঠিক তথ্য জেনে নিয়ে সংবাদ প্রকাশ না করলে মানুষ বিভ্রান্ত হয়, সংবাদ মাধ্যমের প্রতি মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেল। সাংবাদিকদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর একটি হলো সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করা।

ওবায়দুর রহমান শাহীন বলেন, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থে অনেক সংবাদমাধ্যম পক্ষপাতদুষ্ট সংবাদ প্রকাশ করে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতি আস্থা কমিয়ে দেয়। এমন পরিস্থিতিতে সাংবাদিকরা অনেক সময় নিজেদের কাজের যথার্থতা প্রমাণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। গুজব, মিথ্যা তথ্যে সমাজ তথা রাষ্ট্রে বিশৃঙ্খলা বাড়াচ্ছে। তাই সাংবাদিকদের আরো সচেতন হতে হবে।

কাদের গণি চৌধুরী বলেন, স্বাধীন সাংবাদিকতা গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ হলেও, এটি এখন বহুমাত্রিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। সাংবাদিকদের সুরক্ষায় কোনো আইন নেই। বাংলাদেশে গণমাধ্যমের সামনে যে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ, তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে এ পেশার স্বাধীনতা। রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, আইনি ও ক্ষমতামুখী সাংবাদিকতা সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার ক্ষেত্রে বড্ড অন্তরায় সৃষ্টি করছে। তাই সাংবাদিকদের জন্য একটি নিরাপদ ও স্বাধীন পরিবেশ তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি।

সিএমইউজের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের সদস্য গোলাম মওলা মুরাদ ও মিয়া মোহাম্মদ আরিফের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইফতার মাহফিল আয়োজক কমিটির আহবায়ক শামসুল হক হায়দরী, বক্তব্য রাখেন প্রেস ক্লাব অন্তবর্তীকালীন কমিটির সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচি, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়ন (সিএমইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ শাহ নওয়াজ, প্রেস ক্লাব অন্তবর্তীকালীন কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম।

উপস্থিত ছিলেন-বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার মোহাম্মদ হাসিব আজিজ, সিডিএ চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার নুরুল করিম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ, সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ইদ্রিস মিয়া, সদস্য সচিব লায়ন হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম আহবায়ক মিশকাতুল ইসলাম চৌধুরী পাপ্পা, দক্ষিণ জেলা বিএনপি নেতা অধ্যাপক শেখ মহিউদ্দিন, কামরুল ইসলাম হোসাইনী, জহিরুল ইসলাম চৌধুরী আলমগীর, চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের সাবেক সভাপতি মোশাররফ হোসেন দীপ্তি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, বিএনপি নেতা ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, ইদ্রিস আলী, কামরুল ইসলাম, সাঈদ আল নোমান, বিএফইউজে সহ সভাপতি খাইরুল বশর, বিজিএমইএ প্রথম সহ সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, জেলা আইনজীবী সমিতির এডহক কমিটির আহবায়ক মকবুল কাদের চৌধুরী, জেলা পাবলিক প্রসিকিউটর আশরাফ হোসেন চৌধুরী রাজ্জাক, ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. সরওয়ার আলম, ড্যাব চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক ডা. বেলায়েত হোসেন ঢালী, অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (এ্যাব) চট্টগ্রামের সভাপতি প্রকৌশলী জানে আলম সেলিম, প্রকৌশলী মো. ওসমান, জিয়া পরিষদ চট্টগ্রাম এর সাধারণ সম্পাদক রোটারিয়ান মোহাম্মমদ জসিম প্রমুখ।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ