আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

যোগান পর্যাপ্ত থাকার পরও চট্টগ্রামে চড়া সবজির বাজার

চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম ব্যুরো চট্টগ্রামে সপ্তাহের ব্যবধানে চড়া হয়ে উঠেছে সবজির বাজার। পাশাপাশি অপরিবর্তিত রয়েছে মাছ ও ডিমের দাম। সেইসঙ্গে পেঁয়াজ, আদা ও রসুনের দামেও কোনো পরিবর্তন আসেনি। তবে মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। গতকাল শুক্রবার নগরীর অন্যতম কাঁচাবাজর রেয়াজউদ্দিন বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়।সব ধরনের সবজির যোগান পর্যাপ্ত থাকার পরও দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে বলে ক্রেতাদের অভিযোগ।
জানা গেছে, গত দুই সপ্তাহ ধরে সবচেয়ে চড়া দরে বিক্রি হয়েছে কাঁচামরিচ ও ধনে পাতা। এগুলোর দামে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। মানভেদে গাজর বিক্রি হয়েছে কেজি প্রতিকেজি ১০০ থেকে ১৪০ টাকায় যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়ছিল ৭০ টাকার চেয়েও কম। তাছাড়া শিম, বরবটি, ঝিঙ্গে, কাকরোল, করলাসহ প্রায়সব সবজির দাম গত সপ্তাহে ৪০ থেকে ৪৫ টাকার মধ্যে পাওয়া গেলেও গতকাল তা বাজারে প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। ৬০ থেকে ৮০ টাকার নিচে কোন সবজিই মিলছে না। এদিকে গ্রীষ্মকালীন সবজির পাশাপাশি বেড়েছ টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপিসহ নানা শীতকালীন সবজির দামও। এসব সবজিও ৭০ টাকার নিচে মিলছে না। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজির দাম আবারও বেড়েছে কেজিতে ২৫ থেকে ৪০ টাকা।
সবজির দামের বিষয়ে সবজি ব্যবসায়ী মো. কামরুল বলেন, উত্তরবঙ্গ থেকে দুয়েকদিন সবজি আসছে না। যেসব সবজি আসছে তা কিনতে হয়েছে বাড়তি দামে। যে কারণে হঠাৎ সবজির দাম বেড়েছে। সবজি সরবরাহ বাড়লে দাম কমে যাবে।
বাজাওে ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৭৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ১৯০ থেকে ২১০ টাকা। সে হিসাবে সপ্তাহের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে কমেছে ২০ থেকে ২৫ টাকা। পাশাপাশি কক বা সোনালি মুরগি দামও কিছুটা কমেছে। বাজারে এ মুরগি কেজিপ্রতি ৪০ টাকা কমে বিক্রি হয়েছে ২৯০ থেকে ৩০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৪০ টাকার ওপরে।তবে দেশি মুরগির দাম অপরিবর্তিত থেকে কেজিপ্রতি ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুরগির দামের বিষয়ে ব্যবসায়ী মো. আবুল কালাম বলেন, বাজারে ব্রয়লার মুরগির সরবরাহ বেড়েছে কিন্তু ক্রেতার আগ্রহ কম, এ কারণে ধীরে ধীরে ব্রয়লার মুরগির দাম কমতে শুরু করেছে, ২৩০ টাকার ব্রয়লার ১৭০ টাকায় নেমে এসেছে। সামনে ব্রয়লার মুরগির দাম আরও কমবে বলে ধারণা করছেন এ ব্যবসায়ী। এদিকে মুরগির দাম কমলেও সপ্তাহের ব্যবধানে ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। গত সপ্তাহের মতো ফার্মের মুরগির ডিমের ডজন ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা আর হাঁসের ডিম ২০০ থেকে ২১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।
পরিবর্তন আসেনি গরু ও খাসির মাংসের বাজারে। প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হয়েছে ৮০০ থেকে ৯৫০ টাকা আর খাসি বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ১০০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে অপরিবর্তিত রয়েছে আদা, রসুন ও পেঁয়াজের বাজার। বাজারে পেঁয়াজ ৮০ টাকা, আদা ২৪০ টাকা ও রসুন ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে দীর্ঘদিন চড়া থাকা মাছের বাজারে দামের কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। বাজার ঘুরে দেখা যায়, রুই-কাতলা মানের কার্প জাতীয় মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৮০ টাকা। শিং, কই, দেশি মাগুর, টার্কি, পাবদা, টেংরা, সরপুঁটি মাছ সাইজভেদে ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা। শোল মাছ ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা। আর চাষের তেলাপিয়া ও পাঙাশ মাছের কেজি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। ইলিশ মাছ কেজি এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। চিংড়ি মাছ ৯০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা।মাছ বিক্রেতারা জানান, সরবরাহ সংকটের কারণে চড়া দরের মধ্যে স্থিতিতে রয়েছে মাছের বাজার।
অপরদিকে গত তিন সপ্তাহ ধরে অপরিবর্তিত রয়েছে প্রায়সব মুদিপণ্যের বাজার। প্যাকেট পোলাওর চাল কেজি ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওর চাল মানভেদে ১১০ থেকে ১৪০ টাকা, ছোট মসুর ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মসুর ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা। প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১ হাজার ৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১ হাজার ২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজির প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, দুই কেজির প্যাকেট আটা ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ