আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ময়মনসিংহ:

মাদ্রাসার মোহতামিমের বিরুদ্ধে মাদ্রাসাছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ

তৌহিদুল ইসলাম সরকার স্টাফ রিপোর্টার :

নান্দাইল:

ময়মনসিংহের নান্দাইলে মাদ্রাসারছাত্রকে বলাৎকারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় মাদ্রাসার মুহতামিম মাওলানা খলিলুল্লাহ্ (২৭) কে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশের হাতে সোর্পদ করেছে উত্তেজিত জনতা।

বৃহস্পতিবার (৪জুন) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের বেলালাবাদ দত্তপুর গ্রামে মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত শিক্ষক একই ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের মো. লাল মিয়ার পুত্র। ছাত্রকে বলাৎকারের ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে উত্তেজিত জনতা মাদ্রাসার সাইটবোর্ডসহ কাঠের বেড়া ভেঙ্গে ফেলে। পরে পুলিশ গিয়ে নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে গত দুই বছর আগে কামালপুর গ্রামের লাল মিয়ার বড় ছেলে মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ্ ময়মনসিংহ -কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের পাশে বেলালাবাদ দত্তপুর গ্রামে মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসা স্থাপন করেন। সেখানে তার ছোট ভাই মাওলানা খলিলুল্লাহ্ মাদ্রাসার নায়েবে মুহতামিম হিসাবে দায়িত্ব পালন করে।

ঐ শিক্ষক মাদ্রাসার নূরানী শাখার এক ছাত্রকে কৌশলে তিনবার বলাৎকার করে। বৃহস্পতিবার বিষয়টি ছাত্রের বাবা জানতে পেরে মাদ্রাসায় উপস্থিত ছাত্রদের কাছে জিজ্ঞেস করে সত্যতা পান। পরে মুহতামিম মাওলানা খলিলুল্লাহ্ কে জিজ্ঞেস করলে প্রথমে বিষয়টি এড়িয়ে গেলেও তোপের মুখে স্বীকার করে।

এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা মাওলানা খলিলুল্লাহ্ কে গণপিটুনি দিয়ে একটি দোকানে আটকে রাখেন।

নান্দাইল মডেল থানার পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ গিয়ে মাওলানা খলিলুল্লাহ্ কে থানা নিয়ে যায়। এর পর পরেই মাদ্রাসার ছাত্ররা মাদ্রাসা থেকে যার যার বাড়িতে চলে যায়।

নূরানী শাখার এক ছাত্রের অভিভাবক মো.আসাদুল্লাহ্ বলেন মাদ্রাসার হুজুরে এমন ঘটনা করবে তা কখনও চিন্তা করি নাই। খুবই নেক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছি এ ছাড়া তো কিছু করার নেই।

মাদ্রাসায় পড়ুয়া ছাত্রের বাবা বলেন ছেলেটিকে হাফেজ বানাবো বলে মাদ্রাসায় দিছি। ছেলে কান্নাকাটি করে বলছে হুজুর আমার সাথে তিনদিন খারাপ কাজ করছে। আমি মাদ্রাসায় গিয়ে ছাত্রদের জিজ্ঞেস করলে সবাই বলছে হুজুর খারাপ কাজ করে। এর সঠিক বিচার চাই।

মাদরাসাতুল মাদীনা ক্যাডেট মাদ্রাসা পরিচালক মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ্ মুঠোফোনে বলেন-আমি তো মাদ্রাসায় থাকি না। আজকে মাদ্রাসায় আসলে ছাত্রের বাবা এসে ঘটনা বলতেছে। উত্তেজিত লোকজন ভাইকে মারধর করছে। এখন তো ঘটনা সত্য না হলেও তো সত্য।

নান্দাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুল মজিদ বলেন, মাদ্রাসাছাত্রকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকে আটক করা হয়েছে। এঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও অভিযোগ পাইনি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ