
এবার চট্টগ্রাম নগরীর টাইগারপাস সড়ক অবরোধ করেছে শিক্ষার্থীরা। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণীর সরকারি চাকরিতে কোটা পুনর্বহালের হাইকোর্টের রায় বাতিল ও কোটা সংস্কারের দাবিতে গতকাল বুধবার দুপুর একটা ২০ মিনিটে নগরীর টাইগারপাস সড়কে অবস্থান নেন শিক্ষার্থীরা। এর আগে, সকাল সাড়ে ১১টায় দেওয়ানহাট রেললাইন অবরোধ করেন তারা। এছাড়া সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করে হাইকোর্টের রায়ের ওপর স্থিতাবস্থা জারির আদেশ এলেও চট্টগ্রামে রেলপথ ও সড়ক ছাড়ছেন না আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। রেলপথ অবরোধের কারণে কয়েকটি ট্রেন আটকা পড়েছে। এছাড়া ট্রেনের সূচিও এলোমেলো হয়ে পড়ে।
এদিকে টাইগারপাস সড়ক অবরোধের কারণে নগরীর

লালখানবাজার, দেওয়ানহাট, আমতল ও নিউমার্কেট সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। কোনো উপায় না পেয়ে অনেক চালককে গাড়ি ঘুরিয়ে ভিন্ন পথ অবলম্বন করতে দেখা গেছে। এছাড়া অনেক যাত্রীকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যের উদ্দেশে যেতে দেখা গেছে। এসময় পুলিশের গাড়িকেও আটকাতে দেখা শিক্ষার্থীদের।
এর আগে গত ১ জুলাই থেকে টানা আন্দোলনে আছেন কোটা বাতিলের দাবি জানানো শিক্ষার্থীরা। শুরু থেকে চার দফা দাবি জানিয়ে এলেও গত ৭ জুলাই থেকে তারা এক দফা দাবির কথা বলছেন। দাবিটি হচ্ছে, সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে সংবিধানে উল্লিখিত অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম মাত্রায় এনে সংসদে আইন পাস করা।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুল হক বলেন, আমরা দুপুর থেকেই টাইগারপাসে অবস্থান করেছিলাম। শিক্ষার্থীদের একটি অংশ রেললাইন অবরোধ করে ছিল। অন্য একটি অংশ টাইগারপাস সড়কে এসে অবস্থান নিয়েছে। যান চলাচল বন্ধ। তারা শান্তিপূর্ণভাবেই আন্দোলন করছে। কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনা যাতে না ঘটে আমরা সার্বক্ষণিক নজর রাখছি।
এছাড়া গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় নগরীর দেওয়ানহাট এলাকায় অবস্থান নিয়ে রেললাইন অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যে উচ্চ আদালত থেকে স্থিতাবস্থা জারির খবর পৌঁছে। এরপর শিক্ষার্থীরা ফিরে যাবেন বলে ধারণা করা হলেও তারা যাননি।

চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন ম্যানেজার মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ঢাকা থেকে পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেন দুপুর সাড়ে ১২টায় চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজার যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অবরোধের কারণে সেটা পাহাড়তলী স্টেশনে আটকা পড়ে আছে। এছাড়া ঢাকার উদ্দেশে মহানগর এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ার কথা। কিন্তু সেটা ডকে আটকা আছে। চালক একবার আসার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সেটা অবরোধ করলে ওই ট্রেন আবার ডকে ফিরে যায়। তিনি বলেন, যাত্রীরা ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। অনেক যাত্রী আমার কাছে এসে কৈফিয়ত চাচ্ছেন।
এদিকে দুপুর ১টা ২০ মিনিটে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ মিছিল নিয়ে টাইগারপাস এলাকায় সড়কে গিয়ে অবস্থান নেন। এতে চট্টগ্রাম নগরীর দেওয়ানহাট, লালখান বাজারসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ মোড় অবরুদ্ধ হয়ে যায়।