আজঃ মঙ্গলবার ৯ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বিভিস্থানে সংঘর্ষ, আহত-২০

নিজস্ব প্রতিবেদক

চট্টগ্রাম মহানগরীর কয়েকটিস্থানে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। দেশব্যাপী কমপ্লিট শাটডাউন বা সর্বাত্মক অবরোধ চলাকালে এ সংঘর্ষে এতে প্রায় ২০ জন শিক্ষার্থী, সাধারণ জনগন ও সাংবাদিক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। পুলিশের পক্ষ থেকেও তাদের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন বলে দাবি করা হয়েছে। সতর্ক অবস্থানে ছিল আইন শৃংখলাবাহিনী। সকাল থেকে নগরের দুই নম্বর গেইট, মুরাদপুর ও লালদীঘির পাড়, নতুন ব্রীজ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরের কয়েকটিস্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। তবে চট্টগ্রামের তৃতীয় শাহ আমানত সেতু (নতুনব্রিজ) এলাকায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনায় এক কলেজছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ছাত্রশিবির সন্দেহে তাকে আটক করা হয়েছে। আটক ওই ছাত্রের নাম নাজমুল হাসান (২৫)। তিনি সরকারি সিটি কলেজের অনার্স চতুর্থ বর্ষের ছাত্র

বলে জানা গেছে। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশ টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে আন্দোলনকারীদের। জানা গেছে, সকাল ১০টা থেকে নতুন ব্রিজ এলাকায় অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করে। এতেই পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়।
নতুন ব্রিজ এলাকায় ঘটনাস্থলে থাকা এডিসি আশরাফুল করিম জানান, এখানে (নতুন ব্রিজ) ছাত্র শিবিরের ছেলেদের সংঘবদ্ধ হওয়ার তথ্য পেয়েছি। তাদের প্রতিহত করার জন্য আমরা মাঠে নেমেছি। একজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ দাবি করেছে, যারা আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন, তাদের কেউ অবরোধে ছিলেন না। বহিরাগতরা এসে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অচলের চেষ্টা করেছিল। এদের মধ্যে ‘কয়েকজনকে’ গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে নগরীর বাকলিয়ায় শাহ আমানত সেতুর প্রবেশমুখ অবরোধ করে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক অচলের চেষ্টা করেন আন্দোলনকারীরা। পুলিশ তাদের সরিয়ে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।এ সময় প্রায় ২০ মিনিট ধরে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে। এতে আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। পরে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে আবারও জড়ো হয়ে মিছিল নিয়ে বহদ্দারহাটের দিকে চলে যায়।
এদিকে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে আহত ২ জনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ (চমেক)

হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০ জন আহত হলেও চমেক হাসপাতালে ২ জন ভর্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া দুইজন হলেন- আরেফিন শুভ ও মো. মোরশেদ। এদের মধ্যে আরেফিন সিটি কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের ছাত্র। মোরশেদ রিকশাচালক।
চমেক হাসপাতালে দায়িত্বরত এক পুলিশ সদস্য বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত দুইজন হাসপাতালে এসেছেন। এদের মধ্যে আরেফিন নামে একজন ছাত্র রয়েছেন। তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। অন্যজন রিকশাচালক, টিয়ারশেলে অসুস্থ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।
অবরোধে অংশ নেওয়া বিজিসি ট্রাস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সাইফুর রহমান বলেন, আমরা শাটডাউন কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাস্তায় অবস্থান নিয়েছিলাম। পুলিশ আমাদের ওপর অতর্কিতে হামলা চালিয়েছে। কয়েকজন শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে গেছে। আমাদের ওপর তারা টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড মেরেছে। পাঁচজনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে আমরা হাসপাতালে পাঠিয়েছি।
নগর পুলিশ উপ কমিশনার (দক্ষিণ) আশরাফুল আলম বলেন, আন্দোলনকারীদের যে আক্রমণাত্মক আচরণ সেটা দেখে মনে হচ্ছে না তারা সাধারণ শিক্ষার্থী। তারা একটি বাস ভাঙচুর করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সেটা করতে বারণ করে। এরপর তারা পুলিশের ওপর চড়াও হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় বেশকিছু পুলিশ আহত হয়েছে। কয়জন আটক হয়েছে সেটা এখনো নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, যারা আন্দোলন ডেকেছে, তাদের কাউকে আমরা নতুন ব্রিজ এলাকায় দেখিনি। এখানে বহিরাগত একটা গ্রুপ রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে গাড়ি ভাংচুরের চেষ্টা করেছে, মানুষজনকে আঘাত করার চেষ্টা করেছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে, মানুষের জানমাল রক্ষার স্বার্থে, জনজীবন স্বাভাবিক রাখার স্বার্থে আমরা তাদের এখান থেকে সরিয়ে দিয়েছি। তারা পুলিশের ওপর পাল্টা আক্রমণ করেছে। প্রকাশ্যে তাদের আক্রমণাত্মক ভঙ্গি আপনারা দেখেছেন। এটি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কোনো বিক্ষোভ হতে পারে না।
মোস্তাফিজুর জানিয়েছেন, অবরোধকারীদের হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হয়েছেন। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে জানালেও সংখ্যা উল্লেখ করেননি তিনি।
এদিকে নগরীর চান্দগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. মোমিনুর রহমান জানান, নতুন ব্রিজ থেকে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে বহাদ্দারহাট মোড়ে এসে সড়কের একপাশ আটকে বিক্ষোভ করছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন আছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটে অবস্থান নেওয়া আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। চান্দগাঁও আবাসিক এবং বহদ্দারহাট বাড়ি এলাকা থেকে বের হয়ে দফায় দফায় হামলা চালানো হয়। ছোড়া হয় গুলিও। সংঘর্ষে দুজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। গুলিবিদ্ধ দুজন হলেন ইসমাইল হোসেন (৩১) এবং মোহাম্মদ ইলিয়াছ (২০)। এর মধ্যে ইসমাইল শিক্ষার্থী এবং ইলিয়াছ শ্রমিক। তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, হামলাকারীদের মধ্যে ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মীরা রয়েছেন। এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ সদস্যদের সরে যেতে দেখা যায়। প্রায় আধ ঘণ্টা পর পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সাউন্ড গ্রেনেড, রাবার বুলেট, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সর্বশেষ পাওয়া খবরে, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে। আন্দোলনকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছেন। দুপুর ১টা ৫০ মিনিটের দিকে বহদ্দারহাট মোড়ে কোটাবিরোধী আন্দোলনে ত্রিমুখী এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সরেজমিনে আরো দেখা গেছে, দুপুর ১২টার পর থেকেই বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এবং ট্রাফিক পুলিশবক্স সংলগ্ন রাস্তায় একে একে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলকারী শিক্ষার্থীরা। সেখানে আগে থেকে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর অবস্থান থাকলেও শিক্ষার্থীরা জড়ো হওয়ার খবরে সেখানে আরো অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। শিক্ষার্থীদের আশপাশেই অবস্থান নিয়েছেন তারা। শিক্ষার্থীরা ‘কোটা না মেধা’, ‘ছাত্রলীগের গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে’ এবং পুলিশকে উদ্দেশ করে ‘ভুয়া, ভুয়া’ স্লোগান দিচ্ছেন।
দুপুর ১টা ৫০ মিনিট নাগাদ হঠাৎ করেই স্থানীয় ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালায়। প্রথমে একদল নেতাকর্মী আসেন বহদ্দারহাটের মেয়র গলি থেকে। পরে আরেক দল আসে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার সড়ক হয়ে। এ সময় তাদের হাতে কিরিচ, রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র দেখা গেছে।
আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থী বলেন, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে অতর্কিত হামলা করেছে। আমাদের এক ভাই গুলিবিদ্ধ হয়েছে। পুলিশ আমাদের সামনেই ছিল। অথচ তারা আমাদের প্রটেক্ট করেনি। অধিকার আদায়ের দাবি নিয়ে রাজপথে নেমে আমাদের এভাবেই কি মার খেতে হবে?
এদিকে কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলা ও শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার প্রতিবাদে এবং হামলাকারীদের শাস্তি, নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত করা, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে গতকাল বৃহস্পতিবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন শৃংখলাবাহিনী। সকাল থেকে নগরের দুই নম্বর গেইট, মুরাদপুর ও লালদীঘির পাড়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ নগরের ও জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বিপুল সংখ্যক পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবি সদস্যদের দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায়।
বিজিবি চট্টগ্রাম-৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী বলেন, চট্টগ্রামে ৩ প্লাটুন বিজিবি ও ৩টি রায়ট কন্ট্রোল গাড়ি সহযোগে একটি বড় বিজিবি দল মাঠে রয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা থেকে নগরী, হাটহাজারী ও চন্দনাইশ উপজেলাসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক ও চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে টহলে রয়েছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (এডিসি) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। সিএমপির ১৬ থানার ৫শ পুলিশ সদস্য ও পুলিশ লাইন থেকে ১১শ সহ নগরীতে মোট ১৭শ পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছে। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে পুলিশ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। র‌্যাব -৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (গণমাধ্যম) সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো.শরীফ-উল-আলম বলেন, নগরে র‌্যাব-৭ এর ১৫টি টহল টিম মাঠে রয়েছে। এছাড়াও উপজেলাতেও আমাদের টহল টিম রয়েছে।
এদিকে সবশেষ পাওয়া খবরে নগরের জিইসি মোড় এলাকায় আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। অমি নামে ওই শিক্ষার্থীকে দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। বিকেল সাড়ে তিনটা পর্যন্ত আহতরা হলেন আরেফিন শুভ, মোহাম্মদ মোরশেদ, সাইদ, শুভ, হিমাদ্রী, মোহাম্মদ মাহিন, মিনহাজুর রহমান, ইসমাইল হোসেন, মোহাম্মদ ইলিয়াছ, মোহাম্মদ বোরহান উদ্দিন, মোহাম্মদ মামুন, আদনান শরীফ, রাকিব শাহরিয়ার এবং হোসেন সোহরাওয়ার্দী। তাদের মধ্যে হোসেন সোহরাওয়ার্দী ব্যবসায়ী, মোরশেদ রিকশাচালক, হিমাদ্রী ও মোহাম্মদ ইলিয়াছ পথচারী, আদনান শরীফ ডেলিভারি ম্যান বলে জানা গেছে। বাকিরা সবাই শিক্ষার্থী।
বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রুপন মজুমদার, আসাদ বিন ইশকাত এবং শোভন নামে আরও তিনজনকে আনা হয়েছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। কালবেলার চট্টগ্রাম ব্যুরোর ফটো সাংবাদিক মোহাম্মদ সুমন টিঁয়ারসেলের আঘাত পেয়ে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটের দিকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন চিকিৎসা নিতে। এছাড়া বহদ্দারহাটে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে কালবেলার ব্যুরোচিফ সাইদুল ইসলাম আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। বিকেল ৫টা ১০ মিনিটের দিকে সাগর হাওলাদার নামে এক পুলিশ কনস্টেবল আহত হয়ে চিকিৎসার জন্য আসেন চমেক হাসপাতালে।
এর আগে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে গত মঙ্গলবার বিকেলে নগরীর দুই নম্বর গেইট থেকে মুরাদপুর পর্যন্ত এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়। এরা হলেন- দোকানকর্মী মো. ফারুক (৩২), ছাত্রদল নেতা ওয়াসিম আকরাম (২২) ও কলেজ ছাত্র ফয়সাল আহমেদ শান্ত (২১)। একইদিন সারাদেশে আরও তিন শিক্ষার্থী নিহত হন।সারাদেশে শিক্ষার্থী হতাহতের প্রতিবাদে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা কমপ্লিট শাটডাউন বা সর্বাত্মক অবরোধের ডাক দিয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

উপজেলা নির্বাহী অফিসার বোয়ালখালীর বিভিন্ন স্কুল ও মাদ্রাসা পরিদর্শন।

বোয়ালখালী গোমদণ্ডী পাইলট উচ্চ মডেল বিদ্যালয় ও শাকপুরা দারুচ্ছন্নাত কামিল মাদ্রাসা পরিদর্শন বোয়ালখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান ফারুক এ সময় সাথে ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার সালমা ইসলাম।

পরিদর্শনকালে একাডেমিক কার্যক্রম, চলমান বার্ষিক পরীক্ষা কেন্দ্রের পরিবেশ এবং সার্বিক শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি।

শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক কার্যক্রম ও সৃজনশীলতার প্রতি আরও মনোযোগী হওয়ার পরামর্শ দেন । বিদ্যালয় ও মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষকে ক্যাম্পাস আর ও পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব করে গড়ে তোলার নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনী কেন্দ্র সমূহ সরেজমিনে ঘুরে দেখে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেছি, যাতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা যায়।

শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং স্থানীয় সবার আন্তরিক সহযোগিতায় উন্নত, সুন্দর ও সমৃদ্ধ বোয়ালখালী গড়ে উঠবে এই প্রত্যাশা ও প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

বোয়ালখালীতে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের উদ্যোগে ৩২ টি চেক বিতরণ

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের উদ্যোগে বোয়ালখালীতে ৩২ টি বৌদ্ধ প্রতিষ্ঠানে চেক বিতরণ করা হয়েছে। ৮ ডিসেম্বর বিকাল ৪টায় শাকপুরা প্রজ্ঞাবংশ বিদর্শন ভাবনা কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ উপলক্ষে এক সভা বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাষ্টি রূবেল বড়ুয়া হৃদয় এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

এতে প্রধান অতিথি ছিলেন- চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক ও চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি পল্টু কান্তি বড়ুয়া ও সমাজকর্মী রাজীব বড়ুয়ার উপস্থাপনায় এতে আশির্বাদক ছিলেন- শাকপুরা সার্বজনীন তপোবন বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত বসুমিত্র মহাস্থবির, ভদন্ত বিপস্সী মহাথের, ভদন্ত পরমানন্দ মহাস্থবির, ভদন্ত দীপানন্দ থেরো। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন -চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপি যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব আজিজুল হক চেয়ারম্যান,

জেলার সদস্য মোঃ শওকত আলম, বোয়ালখালী উপজেলা বিএনপির সাবেক আহবায়ক হাজী ইছহাক চৌধুরী, সাবেক সদস্য সচিব হামিদুল হক মান্নান চেয়ারম্যান, পৌরসভা বিএনপি সাবেক আহবায়ক শহীদুল্লাহ চৌধুরী, সাবেক প্রচার সম্পাদক সরোয়ার আলমগীর, বিএনপি নেতা জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, শওকত আলী চেয়ারম্যান, আবদুল আওয়াল মঞ্জু, শাকপুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আজম খান, পৌরসভা বিএনপি নেতা হাজী আবু আকতার, বোয়ালখালী উপজেলা যুবদলের আহবায়ক মোঃ ইকবাল হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান হাসান চৌধুরী, শ্রমিক দল নেতা মোঃ মোঃ ইলিয়াসসহ অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ,

বোয়ালখালী সম্মিলিত বৌদ্ধ পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জয়সেন বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ ঐক্য ফাউন্ডেশন বোয়ালখালী উপজেলা শাখার সভাপতি বিকাশ বড়ুয়া, বৈদ্যপাড়া পঞ্চরত্ন স্মৃতি পরিষদের সভাপতি দেশপ্রিয় বড়ুয়া, প্রদীপ বড়ুয়া, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী বৌদ্ধ ঐক্য ফ্রন্ট মহানগর-জেলা ও উপজেলা শাখার নেতা কমল জ্যোতি বড়ুয়া,তাপস বড়ুয়া , সুমন বড়ুয়া, রনি বড়ুয়া চৌধুরী, বিপ্লব বড়ুয়া, প্রকৌশলী দিক্ষিত বড়ুয়া, অর্ণব বড়ুয়া,সুমন বড়ুয়া ছোটন বড়ুয়া,পিপলু বড়ুয়া সহ বিভিন্ন বৌদ্ধ বিহার/ মন্দির কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বলেছেন- বাংলাদেশ সম্প্রতির মেলবন্ধ, এদেশে সকল ধর্মের সহবস্থান ছিল -আছে- থাকবে। তাই ধর্মীয় সৌহার্দ্য বজায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এরিই ধারাবাহিকতায় আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকে ভোট আমাকে নির্বাচিত করুন আমি আপনাদের সকলের আশির্বাদ প্রার্থী। তিনি এসময় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্টের ট্রাস্টি রূবেল বড়ুয়ার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন এখন সরকারী টাকা দপ্তরে গিয়ে আনতে হয়না, রূবেল বড়ুয়াই সরকারী টাকা নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির। তার এ কর্মযজ্ঞকে আপনাদের আশির্বাদে রাখতে হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ