আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামের ডায়াবেটিক হাসপাতালে তোপের মুখে পদ ছাড়লেন চার কর্মকর্তা

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালে বিখ্ষোভ করেছেন কর্মরত চিকিৎসক, কর্মকর্তা কর্মচারীরা। শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীর পদত্যাগ, প্রভিডেন্ট ফান্ডের হিসাব ও নানা দুর্নীতির বিরুদ্ধে হাসপাতালের সামনে এ বিক্ষোভে যোগ দেন বিভিন্ন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। এসময় তারা ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেন এবং এসব দাবি পূরণ না হলে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। এদিকে, আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন হাসপাতালের প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা, এক পরিচালকসহ চার জন।
বিক্ষোভরত আবদুস সালাম শাওন নামে এক কর্মচারী বলেন, অবৈধভাবে সভাপদি পদে বসে জাহাঙ্গীর চৌধুরী তার আত্মীয়স্বজনদের ভালো ভালো পদে বসিয়েছেন। তার ভাতিজাদের কাউকে এডমিন অফিসার কাউকে অ্যাকাউন্ট অফিসারের দায়িত্ব দিয়েছেন বৈষম্য করে। যতক্ষণ পর্যন্ত জাহাঙ্গীর চৌধুরী প্রভিডেন্ট ফান্ডের ৩১ কোটি টাকার হিসাব দিবে না ততক্ষণ রোগীদের কষ্ট না দিয়েই আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ চালিয়ে যাব।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, আন্দোলনের মুখে এইদিন হাসপাতালের এক পরিচালকসহ চারজন কর্মকর্তা পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। তারা হলেন—প্রধান প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমান উল্লাহ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল, প্রধান নীরিক্ষা কর্মকর্তা ইয়াছিন চৌধুরী এবং পরিচালক নওশাদ আজগর চৌধুরী।
জানা গেছে, জাহাঙ্গীর চৌধুরী ও তার আত্মীয়করণ থেকে ডায়াবেটিক হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মুক্তি, স্বাধীনভাবে কাজ করা এবং ২৪ বছরের প্রভিডেন্ট ফান্ডের হিসাব, প্রত্যেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রভিডেন্ট ফান্ডের আলাদা আলাদা পাশ বই,
চিকিৎসক কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের থেকে প্রগতি ইন্সুরেন্সের নামে কেটে নেয়া টাকার হিসাব এবং লভ্যাংশসহ আমাদের টাকা ফেরত, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির কারণে জীবিকা নির্বাহ করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে। তারপরও জাহাঙ্গীর চৌধুরী গত ১০ বছর যাবত কর্মকর্তা কর্মচারীদের কোন বেতন ভাতা বৃদ্ধি করেননি। অবিলম্বে বেতন ভাতা বৃদ্ধি করাসহ ১৪ দফা দাবি তুলে ধরেন।
এর আগে গত বছরের ২৫ জানুয়ারি দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতালের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি জাহাঙ্গীর চৌধুরীসহ কমিটির সব সদস্যদের সাময়িক বরখাস্ত করে সমাজসেবা অধিদপ্তর। এর পর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয় বিভাগীয় সমাজসেবা কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক মোস্তফা মোস্তাকুর রহিম খানকে। তবে তিনি দায়িত্ব নিয়েও সাত দিনের মাথায় অব্যাহতি নেন। ২০২২ সালের ২৪ আগস্ট এম এ জাফর জাহাঙ্গীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ, স্বজনদের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিয়োগ ও দুর্নীতির অভিযোগ আসে স্বাস্থ্য বিভাগে। ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে ২০২৩ সালের পয়লা জানুয়ারি চট্টগ্রামের বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। ওই কমিটিতে তৎকালীন বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. সমুন বড়ুয়াকে সভাপতি রাখা হয়েছিল। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, সমাজসেবা অধিদপ্তরের একজন প্রতিনিধি ও সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. মো. নুরুল হায়দারকে সদস্য করা হয়েছিল।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ