আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

বিপ্লবের সুফল পেতে হলে বৈষম্য বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে

রক্তাক্ত জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে অধ্যক্ষ হেলালী

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

রক্তাক্ত বিপ্লবের সুফল পেতে হলে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতা এবং সাংবাদিকসহ সকল পক্ষকে নিজেদের মধ্যে মতভেদ ভুলে ঐক্য ও সংহতি বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী

গতকাল সোমবার বিকেল ৫টায় চট্টগ্রামের চেরাগী পাহাড় মোড়ে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে আলোচনা ও দোয়া মাহফিলে’ প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, প্রকৃত উদ্দেশ্য এবং শহীদদের স্বপ্ন পূরণ করতে হলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বৈষম্য এবং নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রামকে আরও সুসংগঠিত করতে হবে।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সাবেক সদস্য প্রবীণ সাংবাদিক মঈনুদ্দিন কাদেরী শওকত বলেন, শহীদদের আত্মত্যাগ এবং তাঁদের অবদানকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করে বলেন, ‘শহীদদের রক্তের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি, সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।’

অনুষ্ঠানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ২০২৪ সালের জুলাই মাসে সংঘটিত ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ হওয়া সকলের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো এবং তাঁদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র জনতা ও সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক কামরুল হুদার সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সঞ্চালক ছিলেন পরিষদের সদস্য সচিব এবিএম ইমরান।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুহাম্মদ শাহ নওয়াজ, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সভাপতি জাহিদুল করিম কচি, আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মুহাম্মদ নাছির উদ্দিন, আইএইচআরসি’র প্রেসিডেন্ট ও বিএনপি নেতা এম এ হাশেম রাজু, পটিয়া ছালেহ আহম্মদ হাসান বানু ফাউন্ডেশন’র প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ডা: মুহাম্মদ শখাওয়াত হোসাইন হিরু, নাগরিক ঐক্য চট্টগ্রাম বিভাগ’র প্রধান সমন্বয়কারী নুরুল আবচার মজুমদার স্বপন, দৈনিক ভোরের ডাকের ব্যুরোচীফ কিরন শর্মা, দৈনিক দিনকালের ব্যুরোচীফ হাসান মুকুল, চট্টগ্রাম এডিটরস ক্লাবের সহ সভাপতি এম আলী হোসেন, অধ্যক্ষ মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ, অধ্যাপক খোরশেদ আলম, এনডিএম কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির জনসংযোগ এবং সমাজ কল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি মোহাম্মদ এমরান চৌধুরী, মৎস্যজীবি দলের আহবায়ক হাজী নরুল হক, এডভোকেট আবদুল আজিজ, এলডিপি নেতা নুরুল আজগর চৌধুরী, স্পেশাল মনিটরিং মিশন, ইন্টারন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন, চেকপ্রজাতন্ত্র ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন’র পিচ এম্বাসেডর ও ন্যাশনাল কর্ডিনেটর লায়ন মোহাম্মদ ইলিয়াছ সিরাজী, প্রবীণ সাংবাদিক মোহাম্মদ ছগীর আহমেদ এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা। তাঁরা সকলেই তাঁদের বক্তব্যে শহীদদের অবদানের কথা গভীরভাবে স্মরণ করেন এবং ভবিষ্যতের প্রজন্মের জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার প্রয়োাজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

বৈষম্য বিরোধী সাংবাদিক ঐক্য চট্টগ্রামের সমন্বয়ক আরিয়ান লেনিন, শফিকুল ইসলাম, বিশিষ্ট সমাজ সেবক ও ইসলামী চিন্তক মোহাম্মদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার মাহবুবুল হাসান রুমী, রাজনীতিবিদ নূর মোহাম্মদ, শিক্ষক প্রতিনিধি অপর্ণা চরণ স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যাপক আব্দুল হক, খুলশী থানা মহিলা দলের সভানেত্রী মনি আক্তার, সেলিম, সাংবাদিক খোরশেদ আলম, আবু হেনা খোকন, মো: ইসমাইল (ইমন), বজলুল হক, আমিনুল হক, এডভোকেট এহসানুল হক মিলন, হাফেজ মোহাম্মদ ফরহাদ, ইমতিয়াজ ফারুকী, ফয়জুল আজাদ চৌধূরী, আমান উল্লাহ, এম আর তৌহিদ, আশরাফ উদ্দিন, মো: আমজাদ, ছরওয়ার কামাল, আজম খান, সাইফি আনোয়ার, স¤্রাট, শহীদুল ইসলাম খোকন, সোহাগ ফরহাদ, আরাফাত রনি, প্রফেসর জিয়াউল হক, রাসেল, আলাউদ্দিন সহ আরও অনেকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন এডভোকেট জুনাইদ শিল্পী

অনুষ্ঠানের শেষাংশে দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন নেজাম ইসলামী পার্টি বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রব্বানী। তিনি শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে দেশের মঙ্গল এবং সকলের জন্য ঐক্য ও শান্তি কামনা করেন।

এই স্মরণসভা শহীদদের অবদানকে আবারও স্মরণ করিয়ে দেয় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে তাঁদের আদর্শে উদ্বুদ্ধ করে সমাজে বৈষম্য দূর করতে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানায়। শহীদদের ত্যাগ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে একত্রিত হয়ে কাজ করার গুরুত্বও তুলে ধরা হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মকর্তাদের গাড়িতে হামলার সময় ‘গুলি কর, গুলি কর’ শব্দ

P চট্টগ্রাম মহানগরের কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার উপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ডবলমুরিংয় থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কে চৌধুরী সুপারশপের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা হঠাৎ প্রাইভেটকার থামিয়ে চাপাতি দিয়ে গাড়ির গ্লাস ভাঙে এবং ‘গুলি কর, গুলি কর’ চিৎকার করে প্রাণনাশের ভয় দেখায়।হামলার শিকার হলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) বদরুল আরেফিন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হামলার শিকার রাজস্ব কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, অফিস যাওয়ার পথে হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে আমাদের গাড়ির গতিরোধ করে। তারপর তারা চাপাতি দিয়ে গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলে। এসময় একজন আরেকজনকে বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’। পরে প্রাণ বাঁচাতে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়াতে থাকি। তিনি আরও বলেন, হামলাকারীদের তিনজনের মধ্যে দুজন হেলমেট পরিহিত ছিল, আকেরজন হেলমেট পরেনি। হামলার পর তারা মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

রাজস্ব কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, গত অক্টোবরে তার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে হুমকি দেয়া হয়। পরে বন্দর থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। এর একমাস পরেই এই হামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ফুটেজ পর্যালোচনা করে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। একটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে হামলা চালিয়েছে। প্রাথমিক ধারণা, এটি পূর্ব শত্রুতার জেরে ভয়ভীতি দেখানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। যদিও হামলার সময় ‘গুলি কর, গুলি কর’ চিৎকার করা হয়েছিল, কোনো গুলি করা হয়নি। আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। এই ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি; কাস্টমস কর্মকর্তারা চাইলে মামলা করতে পারেন, নতুবা পুলিশ মামলার প্রক্রিয়া শুরু করবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার এইচ এম কবির বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমাদের দুজন কর্মকর্তা কাস্টমস গোয়েন্দা অফিস থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে যাওয়ার পথে তাদের উপর হামলা হয়েছে। তাদের গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। এ ধরনের হামলা আমাদের জন্য শঙ্কার বিষয়। আমরা আশা করি রাষ্ট্র আমাদের নিরাপত্তা দিবে।

সামুদ্রিক নিরাপত্তা হচ্ছে আরও শক্তিশালী আইওরিস প্ল্যাটফর্মে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে চট্টগ্রাম বন্দর

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের জন্য জাতীয় কেন্দ্রবিন্দুর দায়িত্ব দিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এই স্বীকৃতির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অবস্থান আরও দৃঢ় হয়েছে। সামুদ্রিক তথ্য আদান-প্রদানের আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম আইওরিসে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেবে চট্টগ্রাম বন্দর। এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করবে বলে দাবি বন্দর কর্তৃপক্ষের।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক বলেন, ইইউ’র এই স্বীকৃতি বাংলাদেশের জন্য বড় অর্জন।

জাতীয় ফোকাল পয়েন্ট হিসেবে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ড, কাস্টমস, মৎস্য বিভাগসহ সব সামুদ্রিক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় জোরদার করবে। এতে দেশের সামুদ্রিক নিরাপত্তা আরও শক্তিশালী হবে।তিনি আরও বলেন, বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশের অবস্থান কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতি ও নিরাপত্তা রক্ষায় এই উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
জানা গেছে, ক্রিমারিও ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ সামুদ্রিক নিরাপত্তা কর্মসূচি। এর আওতায় পরিচালিত আইওরিস প্ল্যাটফর্মে বর্তমানে বিশ্বের ৫৭টি দেশের ১৫০টির বেশি সংস্থা যুক্ত রয়েছে।

এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বেসামরিক ও সামরিক সামুদ্রিক সংস্থাগুলো নিরাপদভাবে তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান করতে পারে।আরও জানা যায়, চলতি বছরের মার্চ মাসে সিপিএ দেশের নৌবাহিনী, কোস্ট গার্ডসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক সংস্থাকে নিয়ে একটি আন্তঃসংস্থা প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আইওরিস ব্যবহারের প্রযুক্তিগত সক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পায়। এছাড়া, গত ১৮-২০ নভেম্বর ফিলিপাইনের ম্যানিলায় অনুষ্ঠিত ক্রিমারিও-এর তৃতীয় নীতিনির্ধারণী বৈঠকেও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করে।

প্রসঙ্গত, আইওরিস একটি নিরাপদ ওয়েবভিত্তিক তথ্য বিনিময় ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে জাহাজের অবস্থান নির্ণয়, দুর্ঘটনার তথ্য আদান-প্রদান, মানচিত্রভিত্তিক বিশ্লেষণ এবং সমন্বিত উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়। জলদস্যুতা, অবৈধ মাছ ধরা, চোরাচালান এবং সামুদ্রিক দূষণ প্রতিরোধেও এই প্ল্যাটফর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ