আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

নিহত ইমরানের মায়ের সংবাদ সন্মেলন ৩১ মাসেও গ্রেফতার হয়নি আসামীরা

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়ার চাঞ্চল্যকর ইমরান হত্য মামলার আসামীদের গ্রেফতারের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে বক্তব্য রাখেন মা আছিয়া বেগম

চট্টগ্রাম মহানগরীর বাকলিয়ার এল ব্লকের খালপাড় রসুলবাগের এল ব্লকের চাঞ্চল্যকর ইমরান হত্য মামলার আসামীরা প্রকাশ্য ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছেনা বলে অভিযোগ এনেছেন নিহতের পরিবার। রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম মহানগরীর চেরাগী পাহাড়স্থ বঙ্গবন্ধু ভবনের বৈঠক খানায় আয়োজিত সংবাদ সন্মেলনে এসব অভিযোগ আনেন নিহত ইমরানের মা আছিয়া বেগম।
কান্না বিজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, আমার কলিজার ধন ইমরানকে হত্যার ৩১ মাস পেরিয়ে গেলেও চিহ্নিত আসামীদের পুলিশ গ্রেফতার না করায় আমরা নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছি। পুত্র হত্যার বিচার চেয়ে থানা পুলিশসহ বিভিন্ন আইন শৃংখলা বাহিনীর সেক্টরে ধর্ণা দিয়ে আমি আজ হাফিয়ে উঠেছি। মামলার এজাহার নামীয় আসামীরা এলাকায় প্রকাশ্য ঘুরাফেরা, তাদের হুমকি ধমকিতে আমরা প্রতিটি মুহুর্ত আতংকে কাটাচ্ছি।
ছেলে হত্যার বর্ননা দিয়ে আছিয়া বেগম বলেন, ২০২২ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি হত্যাকারী মো. নাজিম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর, খোকন দুপুরের দিকে আমার ছেলের মোবাইলে ১৬ বার কল দেয়। পরে তাদের বারবার ফোনে বিরক্ত হয়ে আমার ছেলে বাসা থেকে বের হয়। এরপর ফিরেছে লাশ হয়ে। এ ঘটনার ৩১ মাস পেরিয়ে গেলেও আমার ছেলে হত্যার বিচার পাইনি। সে আমাকে প্রায় সময় বলতো, আম্মু ছেলেগুলো আমাকে সবসময় বিরক্ত করে। আমার কাছে টাকা চায়।
তিনি বলেন, আমার ছেলেকে হত্যার পর বাকলিয়া থানার সাবেক ওসি সেদিন আমার মামলা নেয়নি। ঘটনার দিন আসামিরা থানায় উপস্থিত ছিলো। কিন্তু অজানা কারণে আসামিদের গ্রেফতার না করে ছেড়ে দেয়। পরে আদালতের নির্দেশে বাকরিয়া থানায় মামলা (নং-৩৬/২৭৬) গ্রহন করে। তবে বাকলিয়া থানার পরে আসা ওসি আমাকে অভয় দিয়ে বলেছেন, তিনি আমার ছেলের হত্যাকারীদের দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করবেন। কিন্তু গ্রেফতারতো দূরে থাক আসামীরা প্রকাশ্য ঘুরাফেরা করছে। আমরা সবাই আতংকে আছি।
আছিয়া বেগম আরো বলেন, বাকলিয়ার এল ব্লকের খালপাড় রসুল বাগের একটি বাসাতে আমার এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে সুখের সংসার ছিল। সে সুখ কেড়ে নিয়েছে চিহ্নিত তিনজন হত্যাকারী। ছেলে হত্যর এতদিন পেরিয়ে গেলেও হত্যাকারী মূল আসামী াকারী মো. নাজিম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর, খোকন দুপুরের মো. নাজিম উদ্দিন, জাহাঙ্গীর ও খোকন এলাকায় প্রকাশ্য ঘুরাফেরা করলেও পুলিশ গ্রেফতার করছেনা। বরং আসামীদের হুমকি ধমকিতে প্রতিনিয়ত আতংকে দিন যাপন করতেছি। আমি আমার ছেলে হত্যার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচার চাই। সংবাদ সন্মেলনে নিহত ইমরানের বোন জেসমিন আক্তারসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ