আজঃ বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ, ২০২৫

দায়বদ্ধতা থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে -বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কোন ব্যবসায়ী বা পেশিশক্তির কাছে দায়বদ্ধতা নেই। এ সরকারের দায়বদ্ধতা আছে জুলাই অভ্যূত্থানে ১ হাজারের বেশি শহিদ, ৩০ হাজারের বেশি আহত হয়ে যারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে, ও অগণিত ছাত্র-জনতার প্রতি। এ দায়বদ্ধতা থেকেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।

আজ নগরীর সার্কিট হাউস সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত বিভাগীয় ও জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গের সাথে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম’র সভাপতিত্বে সিটি মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার হুমায়ুন কবীর, পুলিশ সুপার রায়হান উদ্দিন খান, ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন চেয়ারম্যান মোঃ আমিন উল আহসান, ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি’’র প্রতিনিধি মেজর মাহমুদ বক্তব্য রাখেন। এছাড়া সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোন নির্বাচিত সরকার নয়। এ সরকার কোন ক্ষমতা গ্রহণ করেনি, শুধুমাত্র ছাত্র-জনতার অনুরোধে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। দয়িত্ব গ্রহণ করলে সে দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সবসময় সর্তক থাকতে হয়। তাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এ দায়িত্বকে আমানত হিসেবে গ্রহণ করেছে এবং তা রক্ষার্থে সবসময় সচেষ্ট রয়েছে। সাধারণ জনগণ আমাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন যাতে আমরা দেশের সম্পদকে তাদের স্বার্থে ব্যবহার করি। কিছুদিন আগে বাড্ডায় এক মহিলা অফিস থেকে বের হয়ে বাসায় যাওয়ার সময় গাড়ির আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। আমরা খবর পেয়ে সড়ক বিভাগের সহকর্মীদের নিয়ে সেখানে যায় এবং বাস চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিই। মানুষের জীবনের কোন ক্ষতিপূরণ হয় না তবুও আমরা দায়বদ্ধতা থেকে কিছু ক্ষতিপূরণ দিই।

তিনি আরো বলেন, কর্ণফুলী টানেল আমাদের জন্য এখন বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে। সেটার পাশ দিয়ে আসার সময় দেখলাম সেখানে কোন গাড়ি নেই। মাতারবাড়িতে গভীর সমুদ্র বন্দর করে তার সাথে সংযোগ সড়ক হয়ে একটা ইকোনমিক জোন তৈরি করে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু এখন দেখেন সেখানে একটা বিদ্যুৎ প্রকল্প হয়েছে আর এখানে একটা টানেল তৈরি করা হয়েছে যা অপরিকল্পিত পরিকল্পনার একটা অংশ। ফলে দেশ এখন টানেলের লোকসান বয়ে বেড়াচ্ছে।

ফাওজুল কবির খান বলেন, বাপেক্সের এক-একটি গাড়ির দাম ৫ কোটি টাকা। কিন্তু বিদ্যুৎ খাতের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। আবার জ্বালানি খাতে সরকারকে ২৫ হাজার কোটি টাকা ভতর্‚কি দিতে হচ্ছে। প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা দিয়ে পদ্মা রেল সংযোগ করা হয়েছে যার বার্ষিক রাজস্ব আয়ের কথা ছিল ১৪শ কোটি টাকা। কিন্তু ৬ মাস পরে গিয়ে জানতে পারলাম মাত্র ৩৭ কোটি টাকার রাজস্ব এসেছে। এগুলো উন্নয়নের নামে অপচয় করা হয়েছে। আমি কর্মকর্তাদের সাথে বসেছি যাতে অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে দেশের টাকা অপচয় করা না হয়। কারণ অপচয় করার মত অবস্থা এখন আমাদের নেই।

এর আগে তিনি ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিডেট এর প্ল্যান্ট পরিদর্শনে যান। পরিদর্শন শেষে তিনি ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড, পদ্মা অয়েল কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেড, যমুনা অয়েল কোম্পানি ও স্ট্যান্ডার্ড এশিয়াটিক অয়েল কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় করেন। সে বিষয়ে তিনি বলেন, ইস্টার্ন রিফাইনারি তেল শোধানাগার ১৯৬৮ সালে নির্মিত হয়। বর্তমানে এটা খুবই নাজুক পরিস্থিতিতে রয়েছে। যেকোন মুহূর্তে এটা ভেঙ্গে যেতে পারে। দ্বিতীয় আরেকটা রিফাইনারি তেল শোধানাগার তৈরির প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে এবং অতিদ্রুত নিমার্ণ কাজ শুরু হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

টেকসই উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিতের দাবি

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে “বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর ক্ষমতায়নঃ টেকসই উন্নয়নে জ্বালানি নিরাপত্তা ও অধিকার নিশ্চিত কর” শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর অংশগ্রহণ, ক্ষমতায়ন, জ্বালানি অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং সিদ্ধান্ত গ্রহন প্রক্রিয়ায় নারীর অংশগ্রহন বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছে। আইএসডিই বাংলাদেশ, ক্লিন (কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভায়রনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক) ও বিডাব্লিউজিইডি (বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট), সিএসডিএফ এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল

সারাদেশে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করে নারীদের জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসারের প্রয়োজনীয়তা ও বিদ্যুৎ খাতে নারীর অন্তর্ভুক্তি বিষয়ে সচেতনতামূলক বার্তা তুলে ধরেন। তারা জোর দিয়ে বলেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে জ্বালানি খাতে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে এবং সকল স্তরে জ্বালানির ন্যায়সঙ্গত ব্যবহার নিশ্চিত করা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রসাারের প্রয়োজনীয়তা ও বিদ্যুৎ খাতে নারীর অন্তর্ভূক্তির বিষয়ে গুরুত্বআরোপ করেন।

ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও আইএসডিই বাংলাদেশ এর নির্বাহী পরিচালক এস এম নাজের হোসাইন বলেন, দেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির ৪৬ শতাংশই ব্যবহার হয় গৃহাস্থলির কাজে অর্থাৎ নারীরাই সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করছেন কিন্তু আমদানিকৃত জীবাশ্ম জ্বালানির ফলে প্রতিনিয়ত বিদ্যুৎ এর মূল্য বৃদ্ধির কারণে তারাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন।
নারী নেত্রী ও চিটাগাং সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফোরামের সাধারণ সম্পাদক জেসমিন সুলতানা পারু বলেন, নারীরা জ্বালানি খাতে পরিকল্পনা থেকে বাস্তবায়ন, উৎপাদন থেকে বিতরণ সব ক্ষেত্রেই বঞ্চিত। সারাদেশে নারীদের

মালিকানায় মাত্র ২-৪ শতাংশ জমি থাকায় বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলি তাদের এড়িয়ে যান এবং পরামর্শ গ্রহণ প্রক্রিয়ায় শুধুমাত্র সুবিধাভোগী হিসেবে তাদেরদের অন্তর্ভুক্ত করেন এবং ‘সংবেদনশীল বিষয়’’ হিসেবে দেখেন, কিন্তু সক্রিয় অংশীদার বা নীতিনির্ধারক হিসেবে নারীদের স্বীকৃতি দেওয়া হয় না।
চিটাগাং সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফোরামের প্রকল্প সমন্বয়কারী শাম্পা কে নাহার বলেন, জ্বীবাশ্ম জ্বালানী ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কারণে নারীরা নানাবিধ মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন, কারণ পুরুষদের মতো তারা সহজে স্থান বদল করতে পারেন না। স্থানীয় এলাকায় বহিরাগতদের ভিড়ের কারণে নারীদের চলাচল, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন এবং মৌলিক প্রয়োজন পূরণে অসুবিধার সম্মুখীন হন। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠান গুলোকে এসব সমস্যা সমাধানে খুব বেশি তৎপর হতে দেখা যায় না। সাধারণত পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ঊওঅ) প্রক্রিয়ার বাধ্যতামূলক শর্ত পূরণের জন্যই নারীদের নামমাত্র পরামর্শ প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

সভায় চট্টগ্রাম ফোরাম অন ইকোলজি এন্ড ডেভেলপমেন্টের সদস্যা ও ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের সাংগঠনিক সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদ্যৗস বলেন, প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সবসময় নারীদের বিশেষ প্রয়োজন, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলোকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেন।জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো, মাত্রাতিরিক্ত পারদ, সীসা, ক্যাডমিয়াম, সালফার ও ক্রোমিয়াম নির্গত করে। এই বিষাক্ত

ধাতুগুলো নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। নারীরা এই দূষণের সরাসরি ও নিরীহ শিকার হলেও তাদের কোনো ক্ষতিপূরণের অধিকার নেই, কারণ তাদের নামে জমির মালিকানা থাকে না। প্রচারাভিযান কর্মীরা নারীদের জন্য সহজে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে আহ্বান জানান।

আলোচনা ও প্রচারাভিযানে অন্যান্যদের মধ্যে আলোচনা অংশনেন সিাংবাদিক ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি এম নাসিরুল হক, মহানগর মহিলা দলের সহ-সভাপতি সায়মা হক, উত্তর জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক লায়লা ইয়াছমিন, বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফ্রুটস এক্সপোর্টাস অ্যাসোসিয়েশন এর কেন্দ্রিয় কমিটির সদস্য মোহাম্মদ সেলিম জাহ্ঙ্গাীর, ক্যাব চকবাজার থানা কমিটির সভাপতি আবদুল আলীম, অধিকার চট্টগ্রামের সমন্বয়ক ওসমান জাহাঙ্গীর, নারী উদ্যোক্তা ফারজানা মুক্তাদির, ছাত্র প্রতিনিধি পার্থ সরকার, হারিসা খানম সুখী প্রমুখ।

শোক সংবাদ

বীর চট্টলার কৃতি সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা,, বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক সফল মন্ত্রী জননেতা জনাব আবদুল্লাহ আল নোমান ভাই আজ ভোর ৬টায় ইন্তেকাল করেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ