আজঃ রবিবার ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫

পূর্বাচল উপশহর এখন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য ॥ আট বছরে ২১ লাশ উদ্ধার

মাহাবুবুর রহমান রনি, রূপগঞ্জ(নারায়ণগঞ্জ)প্রতিনিধিঃ

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

রাজউকের পূর্বাচল উপশহর এখন অপরাধীদের স্বর্গরাজ্য। এলাকাটি লাশের ডাম্পিং স্পটে পরিণত হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও নিরাপদ স্থান হিসেবে অন্যত্র হত্যা করে পূর্বাচলে লাশ ফেলে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। গত আট বছরে এখানে ২১টি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এছাড়া পূর্বাচলে হত্যা, ছিনতাই, ডাকাতি, ধর্ষণ ও মারামারিসহ নানা অপরাধ বেড়েই চলছে। পূর্বাচলে এখনো সময়উপযোগী জনবসতি গড়ে না ওঠায় অপরাধীরা নির্বিঘেœ অপরাধ কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা আশানুরূপ না হওয়ায় অপরাধীরা অপরাধ কর্মকান্ড পরিচালনা করে নিরাপদে চলে যাচ্ছে। সন্ধ্যার পরেই অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা এখানে বাড়তে থাকে। পূর্বাচলের প্রত্যেকটি এলাকাই দুর্গম। পূর্বাচল উপশহরে ঘটে চলছে একের পর এক অপরাধ। পূর্বাচল উপশহর যেন এখন অপরাধীদের ‘স্বর্গরাজ্য’।
পূর্বাচলের পলখান, গোবিন্দপুর, বাগলা, চাপড়ি, ধামছি, মাঝিপাড়া, রঘুরামপুর, গুতিয়াবো, পশি, হাড়ারবাড়ী, আলমপুরা, খাইলসা, পিংনাল, কালনি, সুলপিনাসহ আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা ডাকাত আতঙ্কে থাকেন। চোরের উপদ্রব বৃদ্ধি পাওয়ায় গবাদী পশুর মালিকরা থাকেন আতঙ্কে।
রাজধানী ঢাকার উপকণ্ঠে গড়ে উঠা পূর্বাচল উপশহর এখন নাগরিকদের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে । শহরের ব্যস্ততা থেকে একটুখানি অবসরে ভ্রমণপিপাসুরা ছুটে আসে পূর্বাচলে। দৃষ্টিনন্দন ৩০০ ফুট সড়ক এখন পর্যটন কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে। পূর্বাচলকে ঘিরে গড়ে উঠেছে হরেক রকমের কয়েক হাজার দোকানপাট। গড়ে ওঠেছে শতাধিক নার্সারী। স্থান পেয়েছে দেশী-বিদেশী নানা রকমের খাবারের দোকান। নৌ-ভ্রমন আর সামুদ্রিক মাছ খেতে ছুটেচ আসেন রসনাবিলাসিরা। সূর্যাস্তের সঙ্গে সঙ্গেই পূর্বাচলে নেমে আসে ঘুটঘুটে অন্ধকার। সন্ধার পর সময় ভাড়ার সাথে সাথে বাড়তে থাকে নীরবতা। রীতিমতো গা ছমছমে পরিবেশ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৩ নভেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের শিল্পপতি জসিম উদ্দিনের সাত টুকরো লাশ পূর্বাচলের ৫নং সেক্টরের একটি লেক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরকীয়ার জের ধরে তাকে ঢাকার কোনো এক স্থানে হত্যা করা হয়। তারপর নিরাপদ স্থান হিসাবে পূর্বাচলে লাশ ফেলে রাখে। একই বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর পূর্বাচলের ১০ নম্বর সেক্টরের ৪ নম্বর সেতুর নিচ থেকে কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় মানুষের বেশ কিছু কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়।
২০২৩ সালের ৭ জুলাই পূর্বাচলের ১৯নম্বর সেক্টর থেকে অজ্ঞাতনামা যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। একই বছরের ২৪ আগস্ট পূর্বাচলের ২০নম্বর সেক্টর এলাকার একটি সবজি ক্ষেত থেকে আব্দুল্লাহ আল মামুন নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০২২ সালের ১৯মে পূর্বাচলের ২৫ নম্বর সেক্টর এলাকা থেকে মজিবুর রহমানের নামের এক ব্যাক্তির লাশ ও একই বছরের ২৭ ডিসেম্বর অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০২১ সালের ৩ জানুয়ারি পূর্বাচলের ১০ নম্বর সেক্টর থেকে মিলন মিয়ার লাশ, একই বছরের ২৩ আগস্ট ৪ নম্বর সেক্টর থেকে ৭ মাসের নবজাতকের লাশ, ৮ অক্টোবর পূর্বাচলের ৭ নম্বর সেক্টর থেকে হৃদয় হাসানের লাশ উদ্ধার করা হয়। ২০২১ সালের ১৬ অক্টোবর পূর্বাচলের ২৬ নম্বর সেক্টর থেকে সাইফুল ইসলাম নামের এক ইজিবাইক চালকের লাশ ও অজ্ঞাত এক যুবকের লাশ পূর্বাচলের ৪ নম্বর সেক্টর থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
২০২০ সালের ১২ জানুয়ারি পূর্বাচলের ৮ নম্বর সেক্টর থেকে মজুর উদ্দিন নামের এক বৃদ্ধের লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০১৯ সালে পূর্বাচলের ভোলানাথপুর এলাকার কাশফুলের ঝোপ থেকে এক ধর্ষিতা তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়। একই বছরের ১৬ নভেম্বর নিখোঁজের ৪ দিন পর মাওলা নামের অটোচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০১৮ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পূর্বাচলের ১১ নম্বর সেতুর নিচ থেকে গুলিবিদ্ধ সোহাগ, শিমুল ও আজাদ নামের তিন যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ৭ নভেম্বর পূর্বাচলের ১০ নম্বর সেক্টর থেকে অজ্ঞাত এক নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০১৭ সালের ২জুন পূর্বাচলের গুতিয়াবো এলাকা থেকে অস্ত্র, গোলাবারুদ ও মারাত্মক ধরণের বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করা হয়। ২০১৭ সালের ২৪ এপ্রিল পূর্বাচলের ১৩ নম্বর সেক্টরে ব্রিফকেসের ভেতর থেকে অজ্ঞাত এক তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর হযরত শহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে সাজ্জাদ হোসেন নামের এক সৌদী প্রবাসীকে গাড়ি করে পূর্বাচলে নিয়ে আসা হয়। পরে তাকে জিম্মি করের তার সঙ্গে থেকে ৭ ভরি স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকাসহ ১৫লক্ষাধিক টাকা লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা।
পূর্বাচলে ছিনতাইয়ে সক্রিয় রয়েছে ৮টি সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটে ৪৫ জন সদস্য রয়েছে। ২০১৯ সালের ১০মে পূর্বাচলের ৩০০ ফিট রোডের ছমু মার্কেট এলাকায় অভিযান চালিয়ে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সাইফুল ইসলাম, মাহাবুর রহমান, ওবায়দুর রহমান এবং বেলায়েত হোসেনকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। এছাড়া ২০১৭ সালের ৩ জুন পূর্বাচল উপ-শহরের ৫নং সেক্টরের একটি খাল থেকে ৬১টি চায়না মেশিনগান, সেভেন পয়েন্ট সিক্স টু বোরের ৫টি পিস্তল, ২টি রকেট লঞ্চার, ৪২টি হ্যান্ড গ্রেনেড, ৪৯টি মর্টারশেল, ২টি ওয়্যারলেস সেট, ১৫২৭ রাউন্ড গুলি, ৪৪টি ম্যাগাজিন ও ৪৯টি রকেট লঞ্চার প্রজেক্টর উদ্ধার করা হয়। পূর্বাচল সুনসান হওয়ায় এখানে ডাকাতির ঘটনাও ঘটছে প্রতিনিয়ত।
মানুষ হত্যার পর নিরাপদ স্থান হিসেবে পূর্বাচলের বিভিন্ন স্থানে নির্বিঘেœ লাশ ফেলে রেখে যাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। পূর্বাচল দুপুরের পর থেকে রাত ৯/১০টা পর্যন্ত পর্যটকে মুখোরিত থাকে। এর পর সময় ভাড়ার সাথে সাথে নিরব হতে থাকে পুরো এলাকা। ৩০০ ফুট সড়কে সড়কবাতি থাকলেও পূর্বাচলের ভেতরে শাখা-উপশাখা রাস্তাগুলোতে কোনো সড়কবাতির ব্যবস্থা নেই। এ কারণে পূর্বাচলের ভেতরের রাস্তাগুলো থাকে অন্ধকার, নির্জন, নীরব ও সুনসান। সুযোগ পেয়ে অপরাধীরাও অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে। কেউ চুরি, ছিনতাই কিংবা ডাকাতি করে। কেউবা সঙ্গীয় পুরুষ পর্যটককে জিম্মি করে নারীদের উপর নির্যাতন চালায়। কেউবা অন্যত্র হত্যা করে এখানে লাশ ফেলে দেয়।
পূর্বাচলের বাঘবের গ্রামের মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাজউকের অধীনে পূর্বাচলের জমি অধিগ্রহণ করার পর আদিবাসিন্দাদের অনেকেই অন্যত্র বাড়িঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন। পূর্বাচলের কোন কোন স্থানে প্লট প্রাপ্তরা ভবন নির্মাণ করলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফাঁকা জমি পড়ে আছে। সুযোগ পেয়ে রাতে এখানে বেশিরভাগ সময় ছিনতাই ও ডাকাতির ঘটনা ঘটছে।
পূর্বাচলের মধুখালী গ্রামের জিন্নাত আলী বলেন, সন্ধ্যার পরেই অপরিচিত লোকজনের আনাগোনা বাড়তে থাকে। পূর্বাচলের প্রত্যেকটি এলাকাই দুর্গম। পূর্বাচল উপশহরে ঘটে চলছে একের পর এক অপরাধ। পূর্বাচল উপশহর যেন এখন অপরাধীদের ‘স্বর্গরাজ্য’।
পূর্বাচলের কাদিরাটেক গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ভুঁইয়া বলেন, পূর্বাচলে পুলিশের নিয়মিত টহল থাকলে অপরাধ প্রবণতা কমে যাবে। অবিলম্বে পুলিশের টহল এখানে বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।
রূপগঞ্জ থানা ওসি লিয়াকত আলী বলেন, জনবল সংকট থাকায় আমাদের টহল কার্যক্রমে কিছুটা বিঘœ ঘটছে।
নারায়ণগঞ্জ জেলা সহকারী পুলিশ সুপার মেহেদী ইসলাম বলেন, পূর্বাচলের পুলিশ ক্যাম্প পুণরায় চালু করা হবে। পুর্বাচলে শিগগিরি পুলিশের টহল বাড়ানো হবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের বর্ণাঢ্য আয়োজন।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

যথাযথ মর্যাদা ও উৎসবমূখর পরিবেশে আগামী ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস-২০২৫ উদযাপন উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানের কর্মসূচীতে রয়েছে-১৬ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সূর্যোদয়ের সাথে সাথে কাট্টলীস্থ’ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে (ডিসি পার্কের দক্ষিণ পার্শ্বে) ৩১ বার তোপধ্বনি ও পুস্পস্তবক অর্পণ, সকল সরকারী-বেসরকারী, আধা-সরকারী ও বেসরকারী ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, সকাল ৮টায় চট্টগ্রাম জেলা স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে মহান বিজয় দিবসের শুভ উদ্বোধন, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদেও সমাবেশ, কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লে প্রদর্শন।

ঐদিন সকাল সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গনে বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহিদ পরিবার ও যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা প্রদান অনুষ্ঠান। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য মহান বিজয় দিবস ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন।

বিশেষ অতিথি থাকবেন চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনার হাসিব আজিজ, পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ আহসান হাবীব পলাশ ও জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন। বেলা ১২টায় সিনেমা হলসমূহে বিনা টিকেটে ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চল”িচত্র প্রদর্শনী, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মিলনায়তনে বা উন্মুক্ত ¯’ানে ব¯‘ুনিষ্ট ও নৈর্ব্যত্তিক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক প্রামাণ্য চল”িচত্র প্রদর্শনী। এছাড়া বিজয় দিবসের দিন সুবিধাজনক সময়ে শহিদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদেও বিদেহী আত্মার মাগফেরাত,

বীর মুক্তিযোদ্ধা ও যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্বা¯’্য, জাতির শান্তি-সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি কামনা করে মসজিদ, মন্দির, গির্জা, প্যাগোড়া ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ মোনাজাত/প্রার্থনা, জেলা পর্যায়ে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসা ও অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণে ক্রীড়া অনুষ্ঠান, টি-২০ ক্রিকেট টুর্ণামেন্ট, প্রদর্শনী ফুটবল ম্যাচ, কাবাডি, হা-ডু-ডু ইত্যাদি খেলার আয়োজন। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে সুবিধাজনক সময়ে শিশুদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক রচনা, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, আবৃত্তি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। দুপুর দেড়টায় হাসপাতাল, জেলখানা, বৃদ্ধাশ্রম, এতিমখানা, ডে-কেয়ার, শিশু বিকাশ কেন্দ্র, শিশু পরিবার, পথশিশু পুনর্বাসন কেন্দ্র, প্রতিবন্ধী কর‌্যাণ কেন্দ্র, শিশু দিবাযত্ন কেন্দ্র ও ভবঘুরে পুনর্বাসন কেন্দ্রসমূহে প্রীতিভোজের আয়োজন।

দিনব্যাপী শিশু পার্ক, ডিসি পার্ক, জাদুঘর ও চিড়িয়াখানা শিশুদের জন্য সকাল-সন্ধ্যা উন্মুক্ত রাখা ও বিনা টিকেটে প্রদর্শনীর ব্যবস্থাকরণ, পর্যটন কেন্দ্রে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং ডিশ ক্যাবল অপারেটর/ মালিকগণ কর্তৃক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচিত্র প্রদর্শন। ১৫-১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেলা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান/ স্থাপনায় আলোকসজ্জাকরণ এবং মহান বিজয় দিবসের পরদিন ১৭ ডিসেম্বর বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় ‘চট্টগ্রাম হানাদার মুক্ত দিবস পালন উপলক্ষে বর্ণাঢ্য র‌্যালি ও সর্কিট হাউজের সম্মেলন কক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

আওয়ামিলীগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর জুলফিকার মিয়ার বিএনপিতে যোগদান।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লালমোহন উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী জুলফিকার মিয়া বিএনপিতে যোগদান করেছেন। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিকেলে তিনি ঢাকায় বিএনপি’র স্থায়ী কমিটির সদস্য ও ভোলা-৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম) এর বাসায় গিয়ে ফুল দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগদান সম্পন্ন করেন।

এ সময় মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ তাকে দলে স্বাগত জানান। দলীয় একটি সূত্র বলছে, আগাম রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে সামনে রেখে জুলফিকার মিয়ার এই যোগদান বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন উদ্দীপনা তৈরি করবে বলে সকলে মনে করছেন।

অন্যদিকে বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে আওয়ামিলীগের এমপি নুরনবী চৌধুরী শাওন কর্তৃক নির্যাতিত, নিষ্পেষিত বিএনপির অনেক ত্যাগি নেতারা এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে। নাম জানাতে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন- বিএনপির এমন দিন আসবে কখনো চিন্তাও করিনি। তবে কী আওয়ামিলীগ দিয়ে বিএনপির ত্যাগীদের আবার নির্যাতনের স্বীকার করতে চায় মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ? কেন আমরা এতদিন নির্যাতিত ছিলাম? এই দিন দেখার জন্য?

এ বিষয়ে জুলফিকার মিয়াকে একাধিকবার ফোন করলে তার মুঠো ফোনটি বন্ধ দেখায়। তবে স্থানীয় রাজনৈতিক অঙ্গনে তার এই সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোচনা সমালোচনার শুরু হয়েছে। কেউ কেউ মনে করছে; এভাবে আওয়ামিলীগ দ্বারা বিএনপি সাজাতে থাকলে ভোটের মাঠে এর প্রভাব বিস্তার করবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ