আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জে হাইকোর্টের নির্দেশনা উপেক্ষিত করে অবৈধ ইটভাটা চলছেই

চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধি

পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ ইটভাটাগুলো যাতে কার্যক্রম শুরু না করতে পারে সেজন্য হাইকোর্ট থেকে নির্দেশনা দেওয়া হলেও চাঁপাইনবাবগঞ্জে তা বাস্তবায়ন হয়নি। স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতায় উপেক্ষিত হাইকোর্টের নির্দেশনা। এ জেলায় চলতি মৌসুমে দেড় শতাধিক অবৈধ ইটভাটায় ইট তৈরির কার্যক্রম শুরু হয়েছে। যেখানে ব্যবহার হচ্ছে কৃষিজমি ও নদী তীরের মাটি। অবৈধ ইটভাটাগুলো ধীরে ধীরে ধ্বংস করছে বেঁচে থাকার পরিবেশ। ইটভাটার চিমনি দিয়ে বের হওয়া কালো ধোঁয়ার প্রভাব পড়ছে জনজীবনসহ গাছ ও কৃষিতে। তথ্যমতে, অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ইট উৎপাদন ও ভাটা পরিচালনার মৌসুম। এই সময়ের মধ্যে লাইসেন্সবিহীন অসংখ্য অবৈধ ইটভাটা তাদের কার্যক্রম শুরু করে। ইটভাটা মালিক সমিতির তথ্যমতে, জেলায় ১৫৮টি ইটাভাটায় কার্যাক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩টি জিকজ্যাক ও ৯৫টি চলছে খড়ির ভাটা।

জানা গেছে, চলতি বছরের ২৮ নভেম্বর দেশের বিভিন্ন স্থানে থাকা অবৈধ ইটভাটাগুলো যাতে কার্যক্রম শুরু না করতে পারে, সেজন্য ৭ দিনের মধ্যে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিভাগীয় কমিশনারদের পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ-এইচআরপিবি এর এক রিট আবেদনের নির্দেশনার আলোকে বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর বেঞ্চ এ আদেশ দেয়। বিভাগীয় কমিশনারগণকে নিজ নিজ এলাকার অবৈধ ইটভাটার মালিকরা যাতে তাদের কার্যক্রম শুরু না করতে পারে, সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং ওই কার্যক্রম সম্পর্কে ১৫ ডিসেম্বরের আগে তাদের পদক্ষেপ সম্পর্কে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলেন। কিন্তু স্থানীয় প্রশাসন উচ্চ আদালতের সেই আদেশ বাস্তবায়নে কার্যকর উদ্যোগের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে চলতি মৌসুমেও কার্যক্রম শুরু করেছে পরিবেশ বিধ্বংসী অবৈধ সব ইটভাটা।

সংবিধানের ১১২ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, উচ্চ আদালতের রায় বা আদেশ কার্যকর করার দায়িত্ব সরকারের। এ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রীয় সীমানার অন্তর্ভুক্ত সকল নির্বাহী ও বিচারবিভাগীয় কর্তৃপক্ষ সুপ্রিম কোর্টকে সহায়তা করবে।

এছাড়াও আইন অনুযায়ী জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে লাইসেন্স গ্রহণ ছাড়া ইটভাটা স্থাপন, পরিচালনা কিংবা চালু করা যাবে না। তবে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের অধীনে ইস্যু করা পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়া ইটভাটার লাইসেন্সের জন্য কোনো আবেদন করা যাবে না। আবাসিক, সংরক্ষিত ও বাণিজ্যিক এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা বা উপজেলা সদর ও কৃষিজমিতে ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশপাশ ঘুরে বসতবাড়ির খুব কাছে ও কৃষি জমিতে অনেক ইটভাটা দেখা গেছে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, চাঁপাইনবাবগঞ্জের অবৈধ ইটভাটাগুলো প্রশাসন ও প্রভাবশালী মহলকে নিয়মিত মাসোয়ারা দেয়। নামসর্বস্ব কিছু গণমাধ্যমকর্মীরাও নিয়মিত চাঁদা নেন ইটভাটা থেকে।

ইটভাটার মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এতদিন নিয়মিত চাঁদার বাইরেও স্থানীয় প্রশাসনের বিভিন্ন দিবস পালনসহ নানা উদ্যোগের জন্য চাঁদা দিতে হয়েছে তাদের। প্রতিবছর ডিসি ইউএনও’রা ইটভাটা মালিক সমিতির মাধ্যমে এলআর ফান্ড ও জাতীয় দিবসের পালনের নামে চাঁদা নিয়েছে। তবে এবার রাজনৈতিক দলের নেতাদের মাধ্যমে প্রশাসন ম্যানেজের চেষ্টা করছেন ইটভাটা মালিকরা।

সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, বিস্তৃীর্ণ মাঠজুড়ে সবুজ প্রকৃতি ছাপিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে যাচ্ছে ইটভাটার চিমনি। আমবাগানের মধ্যেই গড়ে উঠেছে পরিবেশ বিধ্বংসী ইটভাটা। একটা ইটভাটা পেরুলেই চোখে পড়বে আরেকটি ইটভাটা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শেখ হাসিনা সেতুর উপর দাঁড়িয়ে দক্ষিণ দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে প্রায় ১৪টি ইটভাটা থেকে ধোঁয়া ছড়াচ্ছে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইনে লাইসেন্স ব্যতীত কোনো ইটভাটা স্থাপন ও পরিচালনা করা যায় না এবং জ্বালানি হিসেবে ইটভাটায় কাঠের ব্যবহার নিষিদ্ধেরও বিধান রয়েছে। কিন্তু চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় নিবন্ধনহীন অবৈধ ইটভাটাগুলো কার্যক্রম শুরু করেছে। এমনকি ইটভাটাগুলো জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহার করছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, জেলায় ১৫৮টি ইটাভাটায় কার্যাক্রম শুরু হয়েছে। এর মধ্যে ৬৩টি জিকজ্যাক ও ৯৫টি চলছে খড়ির ভাটা। এই ১৫৮ ইটভাটা মালিকই সমিতির সদস্য। তার দাবি, ৬৩টি জিকজ্যাক ইটভাটা লাইসেন্স প্রক্রিয়াধীন। অন্যগুলোর ব্যাপারে তিনি অবগত নন।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ বলেন, আমরা অবৈধ ইটভাটা বিরোধী অভিযান শুরু করেছি। অবৈধ ইটভাটা বন্ধে আমাদের কার্যক্রম চলমান। হাইকোর্টের নির্দেশনার বিষয়ে অবগত কি-না এমন প্রশ্নে জেলা প্রশাসক বলেন, যেকোন অবৈধ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে আলাদা নির্দেশনার প্রয়োজন পড়েনা, আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিয়ে থাকি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কর্মস্থলে চুরি করা টাকা ফেরত না দেওয়ায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের আলোচিত চোর মেরাজ শ্রীঘরে।

নিজ কর্মস্থলে চুরি করা ৬০ লক্ষ টাকা ফেরত দেওয়ার শর্তে আপস করে ১৫ লক্ষ টাকার চেক ও ১ বছরের মদ্ধে ৪৫ লক্ষ টাকা ফেরত দিবে মর্মে স্ট্যাম্প করেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহরের মেসার্স শাওন ট্রেডার্স এর ম্যানেজার জহির রায়হান মেরাজ (৩৪) নামে এক যুবক।

জানা গেছে, মের্সাস শাওন ট্রেডার্স এর দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ অত্র প্রতিষ্ঠানে যাবতীয় মালামাল বিক্রয়ের নগদ টাকার হিসাব নিকাশ সহ অত্র প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ন কাজ কর্মে কর্মচারী হিসেবে দায়িত্ব পালন করিয়া আসছিলেন মোঃ জহির রায়হান মেরাজ। প্রতিদিন মের্সাস শাওন ট্রেডাস এর কাজ কর্ম শেষে বিভিন্ন কায়দা কৌশলে প্রায় ৫,০০০/-টাকা থেকে ১০,০০০/- টাকা পর্যন্ত চুরি করত, যা সি সি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে ধরা পাড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়।

উক্ত ঘটনায় মেরাজকে জিজ্ঞেসাবাদ করলে উপস্থিত উভয় পক্ষের শালিশদারগনের সামনে মেরাজ চুরির কথা স্বীকার করেন। গত ৩ বছর যাবত সে বিভিন্ন কায়দা কৌশলের মাধ্যমে আনুমানিক ৬০,০০,০০০/- (ষাট লক্ষ) টাকা চুরি করেছে। ৩০/০৯/২০২৩ তারিখে চুরির ঘটনা সত্যতা স্বীকার করিয়া অত্র অঙ্গীকার নামা দলিলে স্বীকার ও অঙ্গীকার করে যে, উক্ত ৬০,০০,০০০/- (ষাট লক্ষ) টাকার মধ্যে আগামী ০৪/১০/২০২৩ ইং তারিখের নগদে ১৫,০০,০০০/- (পনের লক্ষ) টাকা মের্সাস শাওন ট্রেডাস এর নামে ফেরত দেবে এই মর্মে জহির রায়হান মেরাজ এর স্বাক্ষরিত ঢাকা ব্যাংক চাঁপাইনবাবগঞ্জ শাখা যাহার চলতি এ্যাকাউন্ট নং ৩০৫২০০০০০৬৬৫৩, চেক নং ১০৩২৩৭১ একখানা চেক প্রদান করেন এবং অবশিষ্ট ৪৫,০০,০০০/- (পঁয়চল্লিশ লক্ষ) টাকা পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে মের্সাস শাওন ট্রেডাস কে পরিশোধ করিতে বাধ্য থাকিব।

যদি উক্ত ১৫,০০,০০০/- (পনের লক্ষ) টাকা ০৪/১০/২০২৩ ইং তারিখের মধ্যে পরিশোধ করিতে না পারি ও ৪৫,০০,০০০/- (পঁয়চল্লিশ লক্ষ) টাকা আগমী ১ বছরের মধ্যে মের্সাস শাওন ট্রেডাস কে পরিশোধ করিতে না পারে বা পরিশোধে কোন প্রকারে টালবাহানা করে তবে অত্র চেকের বলে ও অঙ্গীকার নামা দলিল বলে মের্সাস শাওন ট্রেডাস এর স্বত্বাধীকারী মেরাজের উপর যে কোন প্রকার আইনগত ব্যবস্থা লইতে পারিবেন। পরবর্তীতে মেরাজ কোন প্রকার টাকা ফেরত না দেওয়ায় মেসার্স শাওন ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী মোঃ সামিরুল আলম (শাওন) বাদী হয়ে আদালতে ২টি মামলা দায়ের করেন উক্ত ৪৫ লক্ষ টাকার স্ট্যাম্পের মামলায় (মামলা নাম্বার সিআর ১১২৪/২০২৪) আদালত গত ৩ নভেম্বর মেরাজের নামে ওয়ারেন্ট জারি করলে সদর মডেল থানার এএসআই মোতালের মেরাজকে গ্রেফতার করেন।

এ বিষয়ে সদর মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার মোঃ রাজু আহমেদ বলেন, ৪৫ লক্ষ টাকার একটি স্ট্যাম্পের মামলায় ওয়ারেন্ট থাকায় আসামি জহির রায়হান মিরাজকে গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিপুল পরিমাণ নেশা জাতীয় ট্যাবলেট জব্দ।

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে বিপুল পরিমাণ নেশা জাতীয় ট্যাবলেট জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (৫৯ বিজিবি)র সদস্যরা।রবিবার (২৩ নভেম্বর) মধ্যরাত ১.২০মিনিটে মহানন্দা ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি) এর অধীনস্থ চাঁনশিকারী বিওপি’র ০১টি বিশেষ টহল দল সীমান্ত পিলার ১৯৬/৫-এস হতে আনুমানিক ২০০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলার ভোলাহাট ইউনিয়নের চামুচা গ্রামস্থ গড়ের মাঠ নামক স্থানে অবস্থিত একটি আখ ক্ষেতে অভিযান পরিচালনা করে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা গিয়েছিল, অভিযানস্থলে বিপুল পরিমাণ নেশাজাতীয় ট্যাবলেট মজুদ রয়েছে এবং চোরাকারবারীরা সুযোগ বুঝে দেশের অভ্যন্তরে পাচার করবে।

সে সুনির্দিষ্ট তথ্যের প্রেক্ষিতেই তাৎক্ষণিকভাবে অভিযানটি পরিচালিত হয় এবং টহলদল আখক্ষেত তল্লাশী করে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় অভিনব কায়দায় মোড়ানো অবস্থায় থাকা ৩,১৯০ পিস ভারতীয় নেশাজাতীয় ট্যাবলেট (TENSIWIN) উদ্ধার করতে সক্ষম হয়। বর্তমানে উদ্ধারকৃত ট্যাবলেটগুলো সাধারণ ডায়েরীর মাধ্যমে ভোলাহাট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানান।

এ ব্যাপারে মহানন্দা ব্যাটালিয়ন (৫৯ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল গোলাম কিবরিয়া, বিজিবিএম, বিজিওএম বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মাদকসহ সকল ধরনের চোরাচালানের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিজিবি’র আভিযানিক কার্যক্রম বেগবান রয়েছে, যা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ