আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে অস্থির চালের বাজার বস্তাপ্রতি বেড়েছে ২-৩শ’ টাকা।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

চট্টগ্রামে সরকারি গুদামে চালের মজুত দ্বিগুণ বেড়েছে।মজুদ থাকা সত্বেও অস্থির হয়ে উঠেছে চালের বাজার। বর্তমানে চালের দাম বেড়েছে বস্তাপ্রতি ২-৩শ’ টাকা।অথচ চাল আমদানি করে মজুত বাড়ানো হয়েছে। খাদ্য কর্মকর্তা ও চাল ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যাপ্ত চাল মজুত থাকার পরও কর্পোরেট গ্রুপগুলো কারসাজি করে চালের দাম বাড়াচ্ছে।

পাইকারি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সপ্তাহের ব্যবধানে জিরাশাইল, নাজিরশাইল, কাটারি আতপসহ চিকন চালের দাম বস্তাপ্রতি ২-৩শ টাকা বেড়েছে। এতে ফের বিপত্তিতে পড়েছে মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। বর্তমানে জিরাশাইল চাল বিক্রি হচ্ছে বস্তাপ্রতি ৪১০০-৪১৫০ টাকা। এর আগে ৩৯০০-৪০০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল।

নাজিরশাইল ৪২০০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাটারি আতপ ৪০০০ টাকা থেকে বেড়ে ৪৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যন্য চালের দাম অনেকটা অপরিবর্তিত রয়েছে।চট্টগ্রাম চলাচল ও সংরক্ষণ নিয়ন্ত্রক জ্ঞানপ্রিয় বিদূষী চাকমা বলেন, সরকার ৯-১০ লাখ টন খাদ্যশস্য আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে। ইতিমধ্যেই লক্ষাধিক টন খাদ্যশস্য দেশে পৌঁছেছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দরে চারটি জাহাজ থেকে আমদানি করা চাল খালাস করা হচ্ছে।

পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এস এম নিজাম উদ্দিন বলেন, চাল আমদানির কিছুটা প্রভাব পড়েছিল। কিন্তু এক সপ্তাহ ধরে চার ধরনের চালের দাম বস্তাপ্রতি ২-৩শ’ টাকা বেড়েছে। তিনি বলেন, বাজারে প্রচুর চাল রয়েছে। কয়েকটি কোম্পানি কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে চালের দাম বাড়াচ্ছে। চালের ওপর সরকারের কোনো নজরদারি না থাকায় বাজার বার বার অস্থির হয়ে উঠছে।

কর্পোরেট কোম্পানি ও উত্তর বঙ্গের বড় চাতাল এবং মোকাম সিন্ডিকেটের কাছে চালের বাজার জিম্মি হয়ে পড়েছে বলে দাবি করেছেন প্রবীণ চাল ব্যবসায়ী নিজাম উদ্দিন। তিনি বলেন, দেশে সরকারি ও বেসরকারি খাতে প্রচুর পরিমাণ চাল মজুত রয়েছে। সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারায় সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। বাজার ও বড় ব্যবসায়ীদের গুদামে মনিটরিং করা হলেই বাজারে স্বস্তি ফিরে আসবে।

খাদ্য অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, চট্টগ্রামে সরকারি খাদ্য গুদামে খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে এক লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৭ মেট্রিক টন। এরমধ্যে চালের মজুত আছে এক লাখ ২৮ হাজার ৫৮৫ মে. টন। গম মজুত রয়েছে ৩৬ হাজার ৫৭৫ টন। গত বছর (২০২৪ সাল) একই সময়ে খাদ্য মজুত ছিল ৮১ হাজার ৩২২ টন। চাল ছিল ৭০ হাজার ৯৮১ টন। গম ছিল ১০ হাজার ২৯৯ টন। এক বছরে চালের মজুত বেড়েছে এক দশমিক ৫৮ গুণ।
চালের দাম বৃদ্ধির জন্য কর্পোরেট কোম্পানিগুলোকে দায়ী করেছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ের খাদ্য পরিদর্শক (কারিগরি) ফখরুল আলম। তিনি বলেন, সরকার চাল আমদানির পর বাজারে চালের দাম কিছুটা কমেছে। কিন্তু কিছু কোম্পানি বস্তা পাল্টিয়ে ব্র্যান্ডের নামে চালের দাম বাড়িয়ে নিচ্ছেন।

ফুডগ্রেন লাইসেন্সের আওতায় খাদ্য অধিদপ্তর ভ্রাম্যমাণ অভিযান পরিচালনা করা হয় বলে জানান খাদ্য কর্মকর্তা ফখরুল আলম। তিনি বলেন, চট্টগ্রাম খাদ্য সংকট এলাকা। এখানে ধানি জমি কমে যাচ্ছে। শিল্প-কারখানা বাড়ছে। তাই প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা থেকে ৬০-৭০ ট্রাক চাল চট্টগ্রামে আসে।

পাইকারি মোকামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অজুহাতে বেড়েছিল চালের দাম। আগস্ট মাসে সরকার পতনের পর আরেক দফা বেড়েছিল। পরিবহন সংকট ও গাড়ি ভাড়া বৃদ্ধির অজুহাতে দুই দফায় বাড়ানো হয়েছিল। জুলাই মাস থেকে ক্ষণে ক্ষণে বেড়েছিল চালের দাম। বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার চাল আমদানির অনুমতি দেয়। সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানির পরও সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

হালদা নদী রক্ষায় গেজেট পরিবর্তন করা হবে : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, গেজেট পরিবর্তন না হওয়ায় হালদা নদীর উন্নয়নমূলক অনেক কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে তাই হালদা নদী রক্ষায় গেজেট পরিবর্তন করা হবে। তিনি বলেন, হালদা নদী রক্ষায় গেজেট সংশোধনের মাধ্যমে তামাক চাষ ও নদী দূষণ বন্ধ করা হবে।

তিনি মঙ্গলবার সকালে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ সম্মেলন কক্ষে প্রাকৃতিক প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে মৎস্য হেরিটেজ বাস্তবায়ন তদারকি কমিটি’র ১৫তম সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, হালদা নদী উন্নয়ন প্রকল্পের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহকে একযোগে ও সমন্বিতভাবে কাজ করার জন্য আজকের সভা থেকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রয়োজনে হালদা নদী রক্ষায় ডিপিপি ও চলমান প্রকল্পের বাইরে থেকেও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করার উপায় নিয়ে গবেষণা করতে হবে।হালদা নদী রক্ষায় সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করে উপদেষ্টা বলেন, প্রকল্প মানে শুধু অর্থ ব্যয় নয়; বরং প্রকল্পের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণে সঠিক পরিকল্পনা, কার্যকর বাস্তবায়ন ও তদারকি অত্যন্ত জরুরি।

তামাক চাষ বন্ধের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে উপদেষ্টা বলেন, তামাক চাষের কারণে হালদা নদীর তীরবর্তী ভূমির উর্বরতা নষ্ট হচ্ছে, যা নদীর পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। তিনি তামাক চাষ বন্ধে কৃষকদের বিকল্প জীবিকার সুযোগ সৃষ্টি করতে কৃষি মন্ত্রণালয়কে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, হালদা নদীকে তামাক চাষমুক্ত করতে হবে; এ লক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, হালদা নদী রক্ষায় গভীরভাবে পর্যালোচনা করে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে যেসব প্রতিবন্ধকতা রয়েছে, তা চিহ্নিত করা হবে। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের সময়ের মধ্যেই হালদা নদী সংরক্ষণ ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় যেসব কাজ করার প্রয়োজন তা করা হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দিন এতে সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস.এম.মনিরুজ্জামান। সভায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার নুসরাত সুলতানা, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম, খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক এবি এম ইফতেখারুল ইসলাম, চট্টগ্রাম বিভাগের পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক জমির উদ্দিন, মৎস্য অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসেন, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা সালমা বেগম-সহ সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।

সভার শুরুতে ‘হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (দ্বিতীয় পর্যায়)’-এর লক্ষ্যমাত্রা ও অগ্রগতি বিষয়ে উপস্থাপনা করেন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। পরবর্তী পর্যায়ে হালদা নদীর সমস্যা, সম্ভাবনা ও সমাধানের উপায় বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপন করেন হালদা রিভার রিসার্চ ল্যাবরেটরির সমন্বয়ক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মোঃ মনজুরুল কিবরীয়া। সভায় সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক বৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরে তিন মাসে ৯ লাখ ২৭ হাজার ৭১৩ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং

চট্টগ্রাম বন্দর চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বমোট ৯ লাখ ২৭ হকজার ৭১৩ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ লাখ ১ হকজার ১৮৫ টিইইউস বেশি হয়েছে বাংলাদেশের অর্থনীতির প্রাণচালিকা চট্টগ্রাম বন্দরে।

এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য টার্মিনাল এনসিটি, যা বাংলাদেশ নৌবাহিনী পরিচালিত প্রতিষ্ঠান চিটাগাং ড্রাই ডক লিমিটেড (সিডিডিএল) পরিচালিত, যেখানে বিগত তিন মাসে মোট ৩ মোট ৪২ লাখ ৬৪৯ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। এটি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪১ লাখ ৭৫৪ টিইইউস বেশি, অর্থাৎ ১ ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। এনসিটিতে এই সময়ে ১৭৮টি জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ২৬টি বেশি এবং প্রবৃদ্ধি ১৭ দশমিক ১১ শতাংশ যা এযাবৎ কালের সর্বোচ্চ রেকর্ড।জানা গেছে, বিশ্বব্যাপী যুদ্ধ, ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, পরিবহন ধর্মঘট ও কাস্টমসের কর্মবিরতি সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বন্দরের কার্যক্রমে তেমন প্রভাব পড়েনি। বরং কর্মকর্তা-কর্মচারী, শ্রমিক ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সমন্বিত প্রচেষ্টায় বন্দরের অপারেশনাল সক্ষমতা আরও বেড়েছে।

চট্টগ্রাম বন্দর চেয়ারম্যান এস এম মনিরুজ্জামান বলেন, বন্দর আধুনিকায়ন, ডিজিটালাইজেশন এবং নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের ধারাবাহিক অগ্রগতির ফলে চট্টগ্রাম বন্দর এখন আন্তর্জাতিক মানের দক্ষ বন্দর হিসেবে আত্মপ্রকাশ করছে।বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই প্রবৃদ্ধি ও রপ্তানি আয়ের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলে চট্টগ্রাম বন্দর আগামীর বাংলাদেশকে আরও শক্তিশালী অর্থনৈতিক অবস্থানে পৌঁছে দেবে।

চট্টগ্রাম বন্দর সূত্রে জানা গেছে, চলতি ২০২৫-২৬ অর্থবছরের তিন মাসে চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বমোট ৯ লাখ ২৭ হকজার ৭১৩ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ১২ দশমিক ২৪ শতাংশ। একই সময়ে কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ৩ কোটি ২৯ লাখ ১৯ হাজার ৯৬৬ মেট্রিক টন এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ হাজার ৩১টি, যা আগের বছরের তুলনায় যথাক্রমে ১৩ দশমিক ৮৮ শতাংশ ও ৯ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।

এছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত (৯ মাসে) চট্টগ্রাম বন্দরে মোট ২৫ লাখ ৬৩ হাজার ৪৫০ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ১ লাখ ২১ হাজার ৬২৫ টিইইউস বেশি। প্রবৃদ্ধির হার ৪ দশমিক ৯৮ শতাংশ। একই সময়ে মোট ১০ কোটি ২৭ লাখ ৪ হাজার ২৫৯ মেট্রিক টন কার্গো এবং ৩ হাজার ১৬১টি জাহাজ হ্যান্ডলিং হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি হয়েছে যথাক্রমে ১১ দশমিক ৭০ এবং ১০ দশমিক ৩৭ শতাংশ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ