আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

জনগণ নির্বাচন ঠেকাতে চাওয়া শক্তিকে ক্ষমা করবে না:আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী

নিজস্ব প্রতিবেদক

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, যারা জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনতে আন্দোলনে ছিল না, এখন তারাই বলছেন, নির্বাচন না হলেই ভালো। তারা একধরনের সুবিধা নিচ্ছে। কিন্তু জনগণ তাদের এ সুযোগ বেশি দিন দেবে না। বাংলাদেশের মানুষ নির্বাচন ছাড়া কাউকে ক্ষমতা গ্রহণের বৈধতা দেবে না। যারা নির্বাচন ঠেকাতে চায়, তাদের প্রতি দেশের মানুষের বার্তা স্পষ্ট। তাদের জনগণ ক্ষমা করবে না, এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের মাটিতে তাদের কোনো ইচ্ছাও পূরণ হবে না। জনগণ নির্বাচন ঠেকাতে চাওয়া শক্তিকে ক্ষমা করবে না।

তিনি বৃহস্পতিবার (১ মে) বিকেলে নগরীর কাজীর দেউরী নাসিমন ভবনস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে নুর আহম্মদ সড়কে মহান মে দিবস উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের শ্রমিক মহা সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় শ্রমিক দলের সভাপতি এ এম নাজিম উদ্দীনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শেখ নুরুল্লাহ বাহারের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা গোলাম আকবর খোন্দকার, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাবেক সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল হাশেম বক্কর, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহবায়ক আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহবায়ক ইদ্রিস মিয়া।

আমীর খসরু বলেন, বিএনপির ৩১ দফা রোডম্যাপে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার, সামাজিক নিরাপত্তা এবং তাদের পরিবারের জন্য দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণমূলক পদক্ষেপের প্রতিশ্রুতি রয়েছে। বর্তমান সরকারের সময় যেভাবে শ্রমিক স্বার্থ উপেক্ষিত হচ্ছে, তা মেনে নেওয়া যায় না।
তিনি বলেন, দেশে এখন নির্বাচিত সরকার নেই। ফলে শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা, পারিশ্রমিক ও চাকরির নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কেউ নিচ্ছে না। মালিক ও প্রশাসনের একচেটিয়া অবস্থানে শ্রমিকেরা নানাভাবে নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। তাই সবাইকে এগিয়ে এসে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবিতে সহায়তা করতে হবে। ন্যায্য পাওনা আদায়ের লড়াইয়ে শ্রমিকদের পাশে আছে বিএনপি।

সম্প্রতি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সম্ভাব্য ‘মানবিক করিডোর’ নিয়ে জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সরকারের কথাবার্তা প্রসঙ্গে আমির খসরু বলেন, যদি দেশে একটি নির্বাচিত সরকার থাকত, তাহলে এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট ইস্যুতে সংসদে আলোচনা হতো, জনগণের মতামত বিবেচনা করা হতো। অথচ এখন এমন সিদ্ধান্ত কে নিচ্ছে, কাদের সঙ্গে বসে নিচ্ছে, তা জাতি জানে না।তিনি প্রশ্ন তুলে বলেন, জাতিসংঘের একজন প্রতিনিধি বলেছেন, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সম্মতিতেই কেবল এই করিডোর সম্ভব, তাও নিরাপত্তা পরিষদের অনুমোদনের শর্তে। তাহলে এখন যারা বাইরে বসে এসব দিচ্ছেন, তারা কীভাবে এত সাহস পাচ্ছেন?
তিনি বলেন, শ্রমিকদের আন্দোলন হতে হবে শান্তিপূর্ণ এবং শৃঙ্খলাপূর্ণ। যাতে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক না ছড়ায়, এবং দেশের বিনিয়োগ পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। কারণ, দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারে বিদেশি বিনিয়োগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

তিনি বলেন, শ্রমিকদের অবদান ছাড়া বাংলাদেশের উন্নয়ন ও রাজনীতি কোনোটিই সম্ভব নয়। যারা এ দেশের শিল্প কারখানা, অবকাঠামো, পরিবহন খাতকে সচল রাখেন, তাদের বাদ দিয়ে দেশের কোনো অগ্রগতি সম্ভব না।
তিনি বলেন, আমরা গত ১৬ বছর ধরে লড়াই করছি একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য। গণতন্ত্রের বাহনই হচ্ছে নির্বাচন। নির্বাচন ছাড়া জনগণের ক্ষমতায়ন ও জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন সম্ভব নয়। নির্বাচন ছাড়া জনগণের মালিকানা ফেরানো সম্ভব নয়।
আমীর খসরু বলেন, যারা নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছেন, তারা নিজেরাই অনির্বাচিত সরকারের সুবিধাভোগী। তারা এখন নানা শর্ত দিচ্ছে, এই না হলে নির্বাচন হবে না, ওই না হলে নির্বাচন হবে না। এসব বলে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করছে। কারণ, তারা জানে, সুষ্ঠু নির্বাচনে গেলে তাদের রাজনৈতিক অবস্থান মুখ থুবড়ে পড়বে।

প্রধান বক্তার বক্তব্যে ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, শ্রমিকরা বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ বাচবে। শহীদ জিয়া একজন শ্রমিকের বেশেই খাল খনন করেছিলেন। বেগম খালেদা জিয়া শ্রমিকদের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। শিকাগো শহরে শ্রমিকরা ৮ ঘন্টার শ্রমের দাবিতে আত্বহুতি দিয়েছিল। কিন্তু এখনো শ্রমিকরা অসহায় অবস্থায় দিনাতিপাত করছে। আমি চট্টগ্রামের একজন সেবক হিসেবে সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে চট্টগ্রামের ৪১ টি ওয়ার্ডের শ্রমিকের জন্য ২০ হাজার টিসিবি কার্ডের ব্যবস্থা করার ঘোষণা দিচ্ছি। তারা বয়স্ক ভাতা পাবেন। শ্রমিকরা মৃত্যুবরণ করলে তাদের স্ত্রী বিধবা ভাতা পাবেন। আমি শ্রমিকদের জন্য নাগরিক কার্ডের ব্যবস্থা করবো। দুর্ঘটনায় কেউ আহত হলে তারা নাগরিক কার্ডের আওতায় ভাতা পাবেন। আমরা শ্রমিকদের পক্ষে আছি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে গোলাম আকবর খোন্দকার বলেন, দেশ থেকে ফ্যাসিবাদী শাসনের অবসান ঘটেছে, এখন নতুন বাংলাদেশের সূচনা হয়েছে। শ্রমিকদের মুক্তি ও ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এ নতুন যাত্রাপথে শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা অপরিহার্য। মে দিবসের সংগ্রামী চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই জনগণের প্রত্যাশা পূরণ করতে হবে, যাতে পরিবর্তনের সুফল শ্রমিক মেহনতি মানুষ প্রকৃত অর্থে ভোগ করতে পারে।আবুল হাশেম বক্কর বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বাংলাদেশের শ্রমিক সমাজের ভাগ্যোন্নয়নে যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলো। সাবেক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম ছিলেন একজন যথার্থ শ্রমিক। তিনি নিজেকে সবসময় একজন শ্রমিক হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করতেন। শ্রমিকদের দুটো হাতকে তিনি উন্নয়নের চাবিকাঠি বলতেন। এদেশের শ্রমিকের কল্যাণে তিনি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন।

আলহাজ্ব এরশাদ উল্লাহ বলেন, আওয়ামী দুঃশাসনের প্রকোপে শ্রমিক শ্রেনী ছিল সবচেয়ে নির্যাতিত। গতবছর গণঅভ্যূত্থানে ছাত্রদের সাথে শ্রমিকদের আত্মদানের মাধ্যমে আওয়ামী ফ্যাসীবাদের পতন হয়। এখন শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার বাস্তবায়নের জন্য কোন প্রতিবন্ধকতা থাকার কথা না। তারপরও শ্রমিকরা অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে শ্রমিকের অধিকার বিষয়ে একটি দফা আছে। দেশে গণতান্ত্রিক সরকার আসলেই শ্রমজীবী মানুষের মর্যাদা ও অধিকার প্রতিষ্ঠা পাবে।

আলহাজ্ব ইদ্রিছ মিয়া বলেন, মে দিবস শ্রমিকদের আত্মত্যাগের ইতিহাস। আজ আমরা নতুন বাংলাদেশের পথে হাঁটছি। একটি গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা প্রবর্তণ, ভোটাধিকার প্রয়োগ, শোষণ ও বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা শ্রমিকের আজন্ম স্বপ্ন। ১ মে বাংলাদেশের শ্রমিক সমাজের দৃপ্ত শপথের দিন। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
এ এম নাজিম উদ্দীন বলেন, এদেশে শ্রম আইন সংস্কার ও আধুনিকীকরণ, বেতন ও মুজুরী কমিশন গঠন, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠনের মাধ্যমে বাংলাদেশের শ্রমিক সমাজের ভাগ্যোন্নয়নে যথাযথ কর্মসূচি গ্রহণ করেছিলো বিএনপি। পোশাক শিল্পে শহীদ জিয়ার অবদান অবিস্মরণীয়। আগামীতে বিএনপি ক্ষমতাসীন হলে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কল্যান ও অগ্রগতি অব্যাহত থাকবে।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উত্তর জেলা বিএনপির সি. যুগ্ম আহবায়ক এম এ হালিম, মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক আলহাজ্ব এম এ আজিজ, এড. আবদুস সাত্তার, এস এম সাইফুল আলম, কাজী বেলাল উদ্দিন, শফিকুর রহমান স্বপন, শাহ আলম, ইয়াছিন চৌধুরী লিটন, আহমেদুল আলম চৌধুরী রাসেল, মঞ্জুর আলম চৌধুরী মন্জু, কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শ. ম. জামাল উদ্দিন, রেলওয়ে শ্রমিক দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এম আর মঞ্জুর, উত্তর জেলা শ্রমিক দলের সভাপতি আবদুল মোতালেব চৌধুরী, বিভাগীয় শ্রমিক দলের প্রচার সম্পাদক আবু বক্কর সিদ্দিকী, দপ্তর সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, শিক্ষা সম্পাদক এড. ইকবাল হোসেন প্রমূখ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

দেশ বদলাতে থ্রি জিরো থিওরি আদর্শ মডেল: চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার

চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার ড. মোঃ জিয়াউদ্দীন বলেছেন, দেশ বদলাতে তথা পৃথিবী বদলাতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস এর থ্রি জিরো থিওরি একটি আদর্শ মডেল। এ মডেল অনুসরণ করে আমাদের তরুণ সমাজ কাজ করলে দেশে যেমন ক্ষুধা এবং বেকারত্ব দূর হবে, তেমনি মানবজাতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে বেঁচে থাকবে।
কমিশনার রোববার চট্টগ্রামের জেলা তথ্য অফিস

আয়োজনে চট্টগ্রাম যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অডিটোরিয়ামে ‘এসো দেশ বদলাই, পৃথিবী বদলাই’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এই সব কথা বলেন।বিভাগীয় কমিশনার বলেন, আজকের বিশ্বে তরুণদের জন্য সম্ভাবনা ও সুযোগের ক্ষেত্র দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। বর্তমানে শুধু চাকরির পিছনে ছুটে সীমাবদ্ধ না থেকে নিজেদের যোগ্যতা, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উদ্যোক্তা হতে হবে।

সভপতির বক্তব্যে মোঃ বোরহান উদ্দীন বলেন, যুবক-যুবতীদের নিজেরা ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দেওয়ার এবং পরিবারের লোকদেরকে ভোট দিতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে নির্বাচন উৎসব হবে। এই উৎসবে সকল প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আশা করে সরকার। এজন্য নির্বাচনী পরিবেশকে অবাধ, সুষ্ঠু ও ভয়হীন করার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

জেলা তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোঃ বোরহান উদ্দীন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোঃ আবুল বাশার, আঞ্চলিক তথ্য অফিস, চট্টগ্রামের সিনিয়র তথ্য অফিসার বাপ্পী চক্রবর্তী, সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজের অধ্যক্ষ এস এম গিয়াসউদ্দিন বাবর, আব্দুল বারী প্রমূখ বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন । যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণরত প্রায় ১৫০ জন প্রশিক্ষণার্থী এবং প্রিন্ট ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপারের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা

ঠাকুরগাঁওয়ে নবাগত পুলিশ সুপার বেলাল হোসেনের সাথে স্থানীয় সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৭ ডিসেম্বর রবিবার দুপুর ১২টায় জেলা পুলিশ সুপারের কনফারেন্স রুমে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।এসময় পুলিশ সুপার বেলাল হোসেন বলেন, মিডিয়ার গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বাকস্বাধীনতা একমাত্র মিডিয়ার মাধ্যমেই রক্ষা করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ের মানুষের সেবা করাই আমার প্রথম কাজ। মাদক সব অপরাধের মূল উৎস। তাই যেকোনো মূল্যে সমাজকে মাদকমুক্ত করতে হবে। এসময় যানজট, মাদকমুক্ত করতে ও বিদ্যমান বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা কামনা করেন পুলিশ সুপার।


এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) খোদাদাদ হোসেন,সহকারী পুলিশ সুপার রাণীশংকৈল সার্কেল স্নেহাশীষ কুমার দাস, ঠাকুরগাঁও প্রেসক্লাবের সভাপতি মনসুর আলী, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি লুৎফর রহমান মিঠু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান তানু সহ জেলার বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।উল্লেখ্য,গত ২৯ নভেম্বর বেলাল হোসেন ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশ সুপার হিসেবে যোগদান করেন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ