আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

বোয়ালখালীতে আইন শৃঙ্খলা চরম অবনতি, এক মাসে অর্ধ-শতাধিক চুরি,ডাকাতি।

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম

বোয়ালখালীতে চুরির প্রকোপ আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু গত ১ মাসে পুরো উপজেলা ও পৌর এলাকায় অন্তত: অর্ধশতাধিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। এসব চুরি বলে কেউ কেউ দাবী করলেও অনেকেই বলছেন কয়েকটি চুরিতে দূর্ধষতা দেখে মনে হচ্ছে এগুলো ডাকাতিকেও হার মানিয়েছে।

এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ ও এলাকাবাসী আতংকিত, শংকিত এবং হতাশায় দিনাতিপাত করে চললেও ২২ অক্টোবর বোয়ালখালী উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় জনপ্রতিনিধি-সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে এসব নিয়ে চরম অসন্তোষ ও কিছুটা বাকবিতন্ড হয়েছে বলে জানা গেছে।

উপজেলা-পৌরসভার একাধিক এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করে ও চোর আক্রান্ত পরিবারের সাথে সরাসরি কথা বলে জানা যায়- গত ১মাসে বোয়ালখালীর বিভিন্ন এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিকেরও বেশী ছোট-মাঝারী বড় আকারের চুরির ঘটনা ঘটেছে। এতে পাকা দালান গ্রীল দরজা ও আলমারী ভেঙ্গে কেটে লক্ষ লক্ষ টাকার জিনিস লুটে নিয়েছে এবং ভাংচুর করে এ মূল্যবান জিনিস পত্র নষ্ট করেছে চোরের দল।

শুধু উপজেলার চরণদ্বীপ ইউনিয়নের পশ্চিম সৈয়দনগর গ্রামে গত মাস খানেকের মধ্যে অন্তত ২০টিরো বেশী বাড়িতে চুরি হয়েছে। এ এলাকার ক্ষতিগ্রস্তদের সাথে কথা বলে জানা যায় -এ এলাকার আব্দুল শুক্কুর ড্রাইভারের অটোরিকশা থেকে ২টি ব্যাটারি, মনোয়ারা বেগম মানুর বাড়ি থেকে একটি ভ্যানগাড়ী, সোলাইমান কমান্ডারের নির্মাণাধীন ভবন থেকে ২ টন লোহা ও স্টিল শাটার, শাহাদাত হোসেন সুমনের কাঁচারি ঘর থেকে ৪০০ কেজি লোহা ও ২০ ফুট প্লাস্টিক পাইপ, কাজী ওবাইদুল হক হক্কানীর ভবনের ছাদে রাখা ১৮ পিলারের রড, মো. রোকনের একটি গাজী মোটর, ইলিয়াস সওদাগরের ২০০ কেজি লোহা, করিম বক্স বলি ও মো. রিটনের বাড়ি থেকে ২টি টিউবওয়েল, শামসুল আলমের বাড়ি থেকে একটি কম্পেসার চুরি করেছে চোরের দল।

এলাকাবাসী জানান-সর্বশেষ ঘটনায় স্থানীয় বাচা মিস্ত্রির সুপারি বাগানে চুরি করতে গিয়ে হাতেনাতে ধরা পড়েন ‘কাদের ডেকোরেশন’ নামে পরিচিত এক ব্যক্তি। তাঁর সঙ্গে আলমগীর নামে আরও একজন ছিলেন।

এলাকাবাসীর দাবি এসব চুরির সঙ্গে স্থানীয় ৪ তরুণ জড়িত। এলাকাবাসীরা আরো জানান-উল্লেখিত এসব তরুণ মাদকাসক্ত। মাদকের খরচ জোগাতে চুরি-ডাকাতিসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়েছে তারা। ক্ষতিগ্রস্তরা সাংবাদিকদের নিকট অভিযোগ করেন, একের পর এক চুরির ঘটনা ঘটলে তা পুলিশে জানানোর পরও পুলিশের অনেকটা নিরব ভূমিকা পালন করাকে নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

এদিকে গত ১৯ সেপ্টেম্বর শাকপুরা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের লালচাঁদ বাড়ী ঢুকার মুখে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেতার শিল্পী জয়া বড়ুয়ার পাকা ঘরের দরজার লক, আলমিরা ভেঙে কৌশলে লুটে নেয় চোরের দল, এ ঘটনায় থানা পুলিশে ফোন করলেও একটি বারের জন্য পরিদর্শনে আসেনি। ফলে ক্ষতি গ্রস্থসহ এলাকাবাসীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। ১৬ অক্টোবর দিবাগত পোপাদিয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের প্রবাসী নুরুল হুদার নতুন বাড়ীর বেগম নজুমিয়া মঞ্জিলের ঘরের দরজার তালাক -আলমিরার হুক ভেঙে স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান জিনিস পত্র লুটে নেয় এবং নষ্ট করে চোরের দল। গত ৯ অক্টোবর রাতে শাকপুরা ইউনিয়নের ঘোষখীল গ্রামে ইসহাক মাস্টারের বাড়ীর আবদুল কাশেমের ঘরে দূর্ধষ চুরির ঘটনা সংগঠিত হয়।

৮নং শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মোঃ হাসান চৌধুরী বলেন গত ১ মাসে জ্যৈষ্টপুরা-শ্রীপুর খরণদ্বীপ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের মসজিদ স্কুল মন্দির-বাজার ও বসতবাড়ীর প্রায় ৩৫টি টিউবওয়েল চুরি হয়েছে।

এছাড়াও খরণদ্বীপ ৩নং ওয়ার্ড, কমলা বাপের বাড়ীতে চুরি, ১৬ অক্টোবর রাতে ৫ নং ওয়ার্ডের চৌধুরী বাড়ী দৌলত সওদাগর বাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় একাধিক চুরি ঘটনা ঘটেছে। এ জনপ্রতিনিধি আরো জানান- এ ধরনের চুরির ঘটনায় এলাকাবাসী অভিযোগে অতিষ্ঠ হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষেও উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

গত ১৭ অক্টোবর দিন দুপুরে জ্যৈষ্ঠপুরা শাক্যমুনি বিহারের উত্তর-পূর্ব পাশে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ খোকন বড়ুয়ার পাকা ঘরের গ্রীল-একাধিক দরজা ও ৩টি আলমিয়ার হুক ভেঙে স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ১০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল ফিল্মি স্টাইলে লুটে নেয় চোরের দল। এঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগও দায়ের করেছে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার। খোকন বড়ুয়ার ঘরে এহেন দূর্ধষ চুরির ঘটনা স্থল পরিদর্শনে গেলে স্থানীয় প্যানেল চেয়ারম্যান ও বৌদ্ধদের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দদের নিকট এলাকাবাসী অভিযোগ করেন চুরি কবলিত এ ঘরটির পশ্চিম পাশের সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের অদুরে সড়কের বিভিন্ন স্থানে নেশাখোর, উশৃংখল যুবকরা সন্ধ্যা পরবর্তী মহড়া বসিয়ে চলছে দীর্ঘদিন ধরে। এসবে এলাকায় চুরি-ডাকাতির প্রকোপ বেড়ে যাচ্ছে।

চুরি কবলিত পরিবার কর্তা খোকন বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন- ঘটনার দিন দুপুর ১টার দিকে পাশ্ববর্তী শ্রীপুর গ্রামে আমরা একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে যায়, এরপর সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ফিরে দেখি ঘরের গ্রীল কেটে ও ঘরের তালা ভেঙে এ দূর্ধষ চুরি হয়। এ ঘটনায় একই দিন রাতে বোয়ালখালী থানায় আমি বাদী হয়ে একটি লিখিত অভিযোগ করেছি।

পোপাদিয়ার নুরুল হুদার বাড়ী, ঘোষখীল ইসহাক মাষ্টার বাড়ী, জ্যৈষ্ঠপুরা খোকন বড়ুয়ার ঘরে যেভাবে তান্ডব, ভাংচুর করে মুল্যবান সম্পদ লুটে নিয়েছে তা নিয়ে কেউ কেউ চুরির ঘটনা বলে চালিয়ে দিলেও অনেকেই বলছে এ ৩টি ঘটনা দূর্ধষ ডাকাতিকে হার মানিয়েছে।

এদিকে ২২ অক্টোবর বোয়ালখালী উপজেলা পরিষদের মাসিক আইন-শৃঙ্খলা কমিটির এক সভা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রহমত উল্লাহ’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা পরিষদ মিলনায়তন( স্বাধীনতা)’য় অনুষ্ঠিত এ আইনশৃঙ্খলা বিষয়ক সভায় পুরো উপজেলার গত মাস খানেকের চুরিসহ এসব উশৃংখল ঘটনা নিয়ে আলোকপাত করায় কেউ কেউ খুশি আবার কেউ কেউ নিরবে অবস্থান করলেও স্থানীয় কয়েকজন জনপ্রতিনিধি-সাংবাদিক প্রতিনিধি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর মধ্যে এ সব নিয়ে অসন্তোষ ও বাকবিতন্ড হওয়ার খবরও প্রকাশ পেয়েছে। এ আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- সহকারী কমিশনার (ভূমি) কানিজ ফাতেমা, থানার ওসি মুহাম্মদ লুৎফুর রহমানসহ আইন শৃঙ্খলা কমিটির সদস্য বৃন্দ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ