আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

এ পি জে আবদুল কালামের স্বপ্নের অসাধারণ কথামালা ————

ড. মুহম্মদ মাসুম চৌধুরী ———

ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এ পি জে আবদুল কালাম একজন স্বপ্নের ফেরীওয়ালা। ভালোবাসতেন নিজকে শিক্ষক হিসেবে পরিচয় দিতে। দক্ষিণ ভারতের মাদ্রাজে রামনাথ স্বামী জেলার রামেশ্বরমে ছিল তাঁর বসবাস। বাবা ছিল নৌকার মাঝি। তিনি বাবাকে দেখতেন নৌকা নিয়ে এ দ্বীপ থেকে অন্য দীপে প্রতিদিন যাত্রী পারাপার করতে। এ পেশার আয়ে তাদের জীবন চলতো না বলে রেলস্টেশন থেকে খবরের কাগজের যে সব বান্ডিল চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দেয়া হতো সেগুলো কুড়িয়ে শহরে পৌঁছে দেয়ার কাজ করেছেন বহুদিন। এ কাজে তেমন অর্থ উপাজন না হওয়ায় তিনি ভাবলেন,বাবা যে নৌকা চালান তাতে যদি একটি যন্ত্র সংযোজন করে দেওয়া যায় তবে উপার্জন বৃদ্ধি হবে। এই যন্ত্র সংযোজন করতে গিয়ে গতিবৃদ্ধির স্বপ্ন পেয়ে বসে। সে স্বপ্নের অনুশীলনের মাধ্যমে বিমান প্রযুক্তির ভাবনা পেয়ে বসে। গতিবৃদ্ধি করতে গিয়ে একদিন হয়ে উঠেন মিসাইলম্যান। নৌকা তৈরীর মিস্ত্রীরা নৌকাই তৈরী করে সারা জীবন। কিন্তু ব্যতিক্রম হয় আবদুল কালাম। কারণ

আবদুল কালাম স্বপ্ন দেখেন এগিয়ে যাওয়ার। মাঝির ছেলে মাঝি হতে চাননি, স্বপ্ন দেখলেন বিজ্ঞানী হবেন। শুধু বড় বিজ্ঞানীই হলেন না, রাষ্ট্রপতিও হয়েছিলেন। কারণ তিনি দেখেছিলেন বড় হওয়ার স্বপ্ন। তিনি বিশ্ববাসীকে জানালেন, ‘আমরা যা ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে দেখি তা স্বপ্ন নয়, যে স্বপ্ন ঘুমাতে দেয় না তাই স্বপ্ন।’
মানুষ কত বড়? প্রতিটি মানুষ তার স্বপ্নের চেয়ে অনেক বড়। ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি ১৮ অক্টোবর ২০১৪ সালে ঢাকার বুকে দাঁড়িয়ে ঘোষণা করলেন, ‘বড় স্বপ্ন দেখ, ছোট স্বপ্ন দেখা অপরাধ’। বড় স্বপ্ন মানুষকে বড় করে।স্কুল জীবনে বারাক ওবামার শিক্ষক জানতে চেয়েছিলেন, বড় হলে কী হতে চাও? তিনি বলেছিলেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এ কথা শুনে সবাই হেসেছিলেন। কী ভাবে সম্ভব ! একজন বিদেশি, বিধর্মী, কৃষ্ণাঙ্গ সাদা ঘরে (হোয়াইট হাউস) প্রবেশ করবে! তিনি তাঁর বড় স্বপ্ন পুরণের জিদ ধরেন।প্রমাণ করলেন, চেষ্টা করলে আমেরিকার প্রেসিডেন্টও হওয়া যায়।

আবদুল কালাম বলেছেন, ‘স্বপ্নের একটি বাধা আছে, শত্রু আছে। সে শত্রুকে চিনতে পারলে পরাজিত করতে পারবে। তার পরাজয় মানে জীবনের জয়। সে শত্রুটি হলো ‘হতাশা’। স্বপ্ন মানে আশা তার বিপরীত হতাশা’।
আমরা জানি আশা আর ভালোবাসা চলেগেলে মানুষ বেঁচে থাকতে পারে না। আত্মহত্যা করে। বেঁচে থেকেও অনেক মানুষ মৃত। যাদের স্বপ্নের মৃত্যু হয়েছে তারা মৃত।স্বপ্নের মৃত্যুর চেয়ে মানুষের জীবনে বড় ট্রাজেডী নেই। প্রিয়জনের মৃত্যুও ট্রাজেডী। কিন্তু এই ঘটনায় মানুষের ভূমিকা গৌণ। স্বপ্নের মৃত্যুর জন্য মানুষই দায়ী। রাষ্ট্রপতি বিজ্ঞানী আবদুল কালামের স্বপ্ন দেখাই ছিল তার বড় মহত্ব এবং বিশালত্ব। জীবন ব্যাপী সমগ্র জাতিকে স্বপ্ন দেখিয়েছেন। তাঁর স্বপ্ন আত্মজয়ের, ভারতের বিশ্বজয়ের, মহাকাশ জয়ের। স্বপ্ন দেখতেন মানুষের অসীম শক্তির বিকাশ সাধনের।

বাংলাদেশ সফরকালে বিজ্ঞানী আবদুল কালাম ঢাকায় মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে ১৭ অক্টোবর ২০১৪ সালে এক অনুষ্ঠানে বললেন, ‘তোমাদের স্বপ্ন বাংলাদেশের স্বপ্ন। তোমাদের চিন্তা বাংলাদেশের চিন্তা। আজ আমি সত্যিই আনন্দিত কারণ তোমাদের মত মেধাবী তরুণ আমার মত ৮৩ বছরের একজন বৃদ্ধের কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতে এসেছো। এই রুমে আলো জ্বলছে, আলোর ঝলকে বর্ণিল হয়ে উঠেছে সব জায়গা।

এই বাতি আবিষ্কার করেছিল থমাস আলভা এডিসন। এই বাতি যতদিন জ্বলবে ততদিন আমরা তাঁকে মনে রাখবো। আমাদের পকেটে সেলফোন আছে, এটি আবিষ্কার করেছিল আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল। তাঁকে সবাই ভালোভাবে মনে রেখেছে। জীবনে তোমরা এমন কিছু করবে যাতে সবাই স্মরণ করে। স্বপ্ন দেখ, বড় স্বপ্ন দেখ। স্বপ্ন দেখতে হলে আলেকজান্ডার গ্রাহামবেল, থমাস আলভা এডিসন, জগদ্বীশ চন্দ্র বসুর মতই দেখ।… ব্যর্থগুলো প্রতিহত করার যোগ্যতাই প্রকৃত নেতৃত্ব।
বাংলাদেশে এসে তিনি সফলতার গল্প শুনালেন। তিনি পি এইচ ডি ডিগ্রীধারী, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, দার্শনিক বা বিজ্ঞানীর কথা আমাদের শুনালেন না, শুনালেন একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের কথা। সফলতার শিক্ষা যে প্রাথমিক শিক্ষক হতে পেয়েছেন তা তিনি নির্দ্বিধায় স্বীকার করেছেন এবং শ্রদ্ধা জানিয়েছেন যে শিক্ষককে।

সফলতার পাহাড় শৃঙ্গে যিনি উঠেছেন তার পক্ষে ৭৫ বছর পূর্বের এক অখ্যাত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে স্মরণ করার কী প্রয়োজন ছিল? তিনি আমাদের শিখিয়ে গেলেন, যিনি স্বপ্ন দেখান, ভিতরে ভিতরে নির্মাণ করেন,তাঁকে ভুলে যাওয়া অন্যায়।
আবদুল কালাম মনে করতেন, মানুষের মধ্যে আছে অসাধারণ শক্তি। যে শক্তি বিকাশের কথা বলতেন গুরুত্বের সাথে। তিনি বলেছেন, ‘প্রত্যেক মানুষই কিছু না কিছু আগুন নিয়ে জন্মায়, মানুষের উচিৎ সে আগুন বিকশিত করে ছড়িয়ে দেয়া’। তাই তিনি তাঁর বিখ্যাত বইয়ের নাম দিয়েছেন, ‘উয়িংস অব ফায়ার’। আগুনের ডানা। যে ডানা আপনাকে পুড়তে হবে’। সে ডানা প্রসার করতে পারলে অনেক ওপরে উঠতে পারে, উড়তে পারে আকাশে, মহাকাশে। তিনি আরো বলেছেন, ‘সূর্য্যের ন্যায় উজ্জ্বল আলো ছড়াতে চাইলে সূর্য্যের ন্যায় আপনাকে পুড়তে হবে’।

জীবনে তিনি হতে চেয়েছিলেন বিমান চালক। ক্লাসের আট জন নির্বাচিত হয়েছিলেন বিমান চালক। আবদুল কালাম হয়েছিলেন নবম। বিমান চালক হতে পারেনি তাতে কি। একটি পথ বন্ধ হলেও কত পথ খোলা আছে তা তিনি জানতেন। নিজের অদম্য চেষ্টায় হয়ে উঠেন ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ও পরমাণু বিজ্ঞানের প্রাণ পুরুষ এবং রাষ্ট্রপতি। তিনি কর্মজীবনে শুধু মাত্র দুইদিন ছুটি নিয়েছিলেন। মায়ের আর বাবার মৃত্যুদিনে। মৃত্যুর পূর্বে বলে গিয়েছিলেন, ‘আমার মৃত্যুতে ছুটি ঘোষণা করো না। আমাকে যদি ভালোবাস, মন দিয়ে কাজ করো সেদিন। আমার মৃত‍্যুর কারণে যেন ভারত একদিন পিছিয়ে না যায। আসলে এটি ছিল দেশপ্রেম। মহামতি প্লেটোর কাছে জানতে চেয়েছিলেন, দেশপ্রেম কি? তিনি জানিয়েছিলেন, ‘প্রত্যেকই নিজের দায়িত্বটাকে সুচারুরূপে পালন করাই সর্বোচ্চ দেশপ্রেম।

এ পি জে আবদুল কালাম রাষ্ট্রপতি হয়েও ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সময় কাটাতেন বেশি। তার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলতেন, ‘যেখানে বসে আছে আগামী দিনের ভারত শাসক, দার্শনিক, বিজ্ঞানী, সাহিত্যিকগণ সেখানে সময় কাটানোর চেয়ে রাষ্ট্রপতির চেয়ারে বসে সময় কাটানোর আমার কাছে গুরুত্ব অধিক নয়’। তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের বলতেন ‘চাকুরীপ্রার্থী নয় চাকুরীদাতা হও’।
তাঁর বড় হওয়ার পিছনে তাঁর বাবার একটি কথা জীবনে রেখাপাত করেছিল। তাঁর বাবা বলতেন, ‘তোমার সন্তান তোমার নয়, তারা প্রবাহমান জীবনের অংশ। তারা তোমাদের মাধ্যমে জন্ম নিয়েছে মাত্র’।
এ পি জে আবদুল কালামের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সাড়া জাগানোর উক্তি উল্লেখ করার লোভ সংবরণ করতে পারলাম।

(১) যে অন্যকে জানে সে শিক্ষিত কিন্তু জ্ঞানি হলো সেই ব্যক্তি যে নিজকে জানে। জ্ঞান ছাড়া শিক্ষা কোন কাজে আসে না।
(২) স্বপ্ন দেখ, কারণ স্বপ্ন চিন্তায় পরিণত হয়। চিন্তা মানুষকে কর্মে অনুপ্রাণিত করে।
(৩) একটি ভালো বই একশত বন্ধুর সমান আর একজন ভালো বন্ধু একটি লাইব্রেরীর
সমতুল্য।
(৪) হাসতে হবে প্রাণখুলে। জীবনে হাসতে পারাটা খুব দরকার। হাসি জীবনকে সহজ করে। কঠিন সময় পার করতে সহায়তা করে।
(৫) প্রেসিডেন্ট হিসেবে আমার কাছে সবচেয়ে কঠিন কাজ আদালতের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সম্মতি দেওয়া। আমি মনে করি পারিবাশ্বিক অবস্থার কারণে মানুষ অপরাধ করে। অপরাধের জন্য দায়ী সমাজ বা অর্থনৈতিক অবস্থা। কিন্তু সে ব্যবস্থাকে
আমরা শাস্তি দিতে পারি না। শাস্তি দিই ব্যবস্থার স্বীকার মানুষদের।
(৬) যুব সমাজের প্রজ্বলিত মন পৃথিবীর ওপর গভীর শক্তিশালী মূলধন।
(৭) তুমি সমস্যার অধিনায়ক হও, সমস্যাকে পরাজিত কর।
(৮) তোমাদের প্রশ্ন করতে চাই কী জন্য মানুষ তোমাকে মনে রাখলে খুশি হবে।
(৯) ফুলকে দেখ, কী অকৃপণ ভাবে সুগন্ধ আর মধুদান করে। কিন্তু যখন তার কাজ শেষ হয়ে যায়, নিঃশব্দে ঝরে পড়ে।

আবদুল কালাম মেঘালয়ের তরুণ ছাত্র-ছাত্রীদের এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতারত অবস্থায় অসুস্থ হয়ে নিচে পড়ে যান। হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানেই হয় তাঁর মহাপ্রয়াণ। সারা জীবন ছাত্রদের মাঝে আলো বিতরণ করতে করতে ছাত্রদের কোলাহলেই বিদায় নিলেন। অসাধারণ কর্মের মাধ্যমে তিনি মৃত্যুকে আলিঙ্গন করলেন। সামরিক বাহিনীতে কর্মের মধ্যে মৃত্যুবরণ করলে বলা হয়, To die with boots on. ইউনিফর্ম পরিহিত অবস্থায় সৈনিকের মৃত্যু। আবদুল কালামের মৃত্যু যেন আলোকিত মানুষের আলো বিতরণরত মহান এক সৈনিকের মহাপ্রয়াণ।মহান আল্লাহ পাক তাঁকে জান্নাত নসিম করুন।
লেখক: কলাম লেখক, রাজনীতিক

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

আজ বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি নাসির আহমেদ এর ৭৩ তম জন্মদিন ।। 💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️💚♦️


আজ (৫ ডিসেম্বর ২০২৫) একাত্তরের পদাবলী, তোমার জন্য অনিন্দিতা, বৃক্ষমঙ্গলের কবি নাসির আহমেদ এর ৭৩ তম জন্মদিন। কবির জন্মভূমি দ্বীপজেলা ভোলায় আজ যথাযথ আয়োজনে দিনটি উদযাপন করবে – জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলা এবং জলসিঁড়ি সাহিত্য আসর ।


ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি গ্রামের হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে আজ বিকেল ৪ টায় “কবি নাসির আহমেদের জীবন ও সাহিত্য” শীর্ষক এক মূল্যবান আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ ও কবিতার গান অনুষ্ঠিত হবে ।

অনন্য এই আয়োজনটিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন- ভোলা জেলা কালচারাল অফিসার জনাব হাসানুর রশিদ মাসুদ । কবি নাসির আহমেদ এর জীবন ও সাহিত্য শীর্ষক মূল বক্তব্য উপস্থাপন করবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাধারণ সম্পাদক ও জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের নির্বাহী সভাপতি সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান । স্বাগত বক্তব্য রাখবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সহ-সভাপতি কবি মিলি বসাক ।


সভাপতিত্ব করবেন- জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সভাপতি ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সিনিয়র সহ-সভাপতি শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করবেন- জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক কবি মহিউদ্দিন মহিন । কবি নাসির আহমেদ কে নিয়ে কথা বলবেন ও কবিতা পাঠ করবেন- জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি আল মনির, কবি গবেষক নীহার মোশারফ, জলসিড়ির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি, জলসিঁড়ির কোষাধ্যক্ষ কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ, নির্বাহী সদস্য কবি চৌধুরী সাব্বির আলম , কবি কামরুন্নাহার , কবি মাহে আলম আখন প্রমুখ ।

❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙❤️💙

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ