আজঃ শুক্রবার ১৪ মার্চ, ২০২৫

৭০’র ভয়াল ১২ নভেম্বরেও দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ান বঙ্গবন্ধু

মুক্তিযুদ্ধ ও ইতিহাস ডেস্ক:

আজ ভয়াল ১২ নভেম্বর। দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ স্মৃতি বিজড়িত দিন। ১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর রাতে ঘূর্ণিঝড় ‘হেরিকেন’ আঘাত হেনেছিলো দেশের উপকূলীয় জেলাগুলোতে। সর্বোচ্চ ২৫০ কিলোমিটার বেগে বয়ে যাওয়া ঘূর্ণিঝড়ের বাতাসের তোড়ের সঙ্গে ৩০ ফুট উচ্চতায় বঙ্গোপসাগরের জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নেয় সব কিছুই। এই দুর্যোগে প্রায় ১০লাখ মানুষ মারা গেলেও তৎকালীন পাকিস্তান সরকার এই ঘটনাকে কোন গুরুত্ব দেননি।

১২নভেম্বর ঘনার পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৪ই নভেম্বর দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য ভোলায় যান। সেখানে তিনি ত্রাণ তৎপরতায় অংশ নেন এবং তোফায়েল আহমেদকে নির্দেশ দেন দুর্গত মানুষকে সাহায্যে করার জন্য। দুর্গত এলাকা পরিদর্শন শেষে ঢাকায় হোটেল শাহবাগে এসে বিদেশী সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন শেখ মুজিবুর রহমান। আওয়ামী লীগ নেতা তোফায়েল আহমেদ এক নিবন্ধে লিখেছেন, “বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, দুর্গত এলাকা আমি সফর করে এসেছি। …. পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট এখনো দুর্গত এলাকায় আসেননি। আমরা যে কত অসহায় এই একটা সাইক্লোন তা প্রমাণ করেছে।”

ঝড়ের সময় ভোলায় অবস্থান করছিলেন তোফায়েল আহমেদ, যিনি বর্তমানে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা। ১৯৭০ সালে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তখন তিনি নির্বাচনী প্রচারে ব্যস্ত ছিলেন। ১৯৭০ সালের ভোলা সাইক্লোন নিয়ে স্মৃতিচারণ করে একটি নিবন্ধ লিখেছেন তোফায়েল আহমেদ। ‘১৯৭০-এর ঘূর্ণিঝড় ও ঐতিহাসিক নির্বাচনের স্মৃতিকথা’ শিরোনামের লেখায় মি. আহমেদ বলেন, অসংখ্য মানুষের মৃতদেহ দেখে তিনি দিশেহারা হয়ে যান।

ঘূর্ণিঝড়টি আঘাত হানার কয়েকদিন পরে ব্রিটিশ সংবাদপত্র গার্ডিয়ানের সাংবাদিক হাওয়ার্ড হোয়াইটেন ভোলায় গিয়েছিলেন। তখন তিনি ভোলার মনপুরায় বিস্তীর্ণ এলাকা ঘুরে দেখেন। তার পাঠানো তথ্যের ভিত্তিতে ১৯৭০ সালের ১৮ই নভেম্বর গার্ডিয়ান একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে, যাতে হাওয়ার্ড হোয়াইটেন লেখেন, ভোলার মনপুরায় গিয়ে তিনি মৃতদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতে দেখেছেন। দ্যা গার্ডিয়ানে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, মনপুরা এলাকার ২২ হাজার মানুষের মধ্যে ১৬ হাজার মানুষই মারা গিয়েছিলেন। এলাকায় ২০ হাজার গবাদিপশুর মধ্যে মাত্র কয়েকশো’ টিকে ছিল। প্রত্যক্ষদর্শী চৌধুরী কামালকে উদ্ধৃত করে গার্ডিয়ান লিখেছিল, ঘূর্ণিঝড় যখন আঘাত হানে তখন ছিল মধ্যরাত। রেডিওতে ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস তারা আগেই শুনেছিলেন। সেজন্য সবাই রাতে জেগেই ছিলেন। কিন্তু জলোচ্ছ্বাসের কোন পূর্বাভাস দেয়া হয়নি।

“অন্ধকারের মধ্যে আমরা হঠাৎ দেখলাম একটি আলোর ঝলকানি আমাদের দিকে আসছে। এরপর বজ্রপাতের মতো শব্দ। এরপর পুরো এলাকা পানিতে ভেসে যায়,” গার্ডিয়ানকে বলেছিলেন মি. কামাল। সাংবাদিক হাওয়ার্ড হোয়াইটেনকে মি. কামাল আরও বলেন, “আমরা এখনও পর্যন্ত ১০ হাজার মৃতদেহ মাটি দিয়েছি। আপনি দেখতে পাচ্ছেন এখনও বহু মৃতদেহ পড়ে আছে।”

ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পরবর্তী সময় ছিল আরও মারাত্মক। খাবারের অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অনাহারে দিন কাটাচ্ছিলেন। জলোচ্ছ্বাসের কারণে সেখানে খাবার উপযোগী কোন পানি ছিল না। ফলে বহু মানুষ পনিশুন্যতা এবং পানি-বাহিত রোগে মারা গেছেন। এছাড়া ছড়িয়ে পড়ে রোগব্যাধি।

ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর থেকে পাকিস্তান সরকার দৃশ্যত উদাসীন ছিল। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে সহায়তা করার জন্য প্রথম দিন কার্যত কিছুই করেনি পাকিস্তান সরকার। খোদ প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান উপদ্রুত

এলাকায় যেতেই চাননি। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান ভোলার সাইক্লোনকে মোটেও গুরুত্ব দেননি শুধু প্রেসিডেন্ট নয়, পাকিস্তান সরকারের কোন মন্ত্রী ঘূর্ণিঝড়ের পর উপদ্রুত এলাকায় যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। ঘূর্ণিঝড়ের ১৪ দিন পরে অর্থাৎ ২৬শে নভেম্বর সি প্লেনে করে ভোলায় আসলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট। দুর্গত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান বলেন, ত্রাণ তৎপরতায় তিনি সন্তুষ্ট। অথচ তখন ত্রাণের জন্য মানুষ হাহাকার করছে। একজন বিদেশী সাংবাদিক প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানকে প্রশ্ন করেন, ত্রাণের হাহাকার নিয়ে মানুষ সমালোচনা করছে কেন? এ প্রশ্নের জবাবে প্রেসিডেন্ট বলেন, “মানুষ সমালোচনা করলে আমার কিছু করার নেই। আমার লক্ষ্য হচ্ছে কাজ করা এবং সমালোচনা ভুলে যাওয়া।”

ঘূর্ণিঝড়ের এক মাস পরেও বহু জায়গায় ত্রাণ পৌঁছায়নি পাকিস্তানি শাসক। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের মধ্যে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে। ভোলার সেই সাইক্লোনটি পশ্চিম পাকিস্তানের প্রতি বাঙালির অবিশ্বাসের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিয়েছিল। ঘূর্ণিঝড় যখন আঘাত হানে তখন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান রাষ্ট্রীয় সফরে চীনে অবস্থান করছিলেন। ঝড়ের দুইদিন পরে তিনি চীন থেকে ঢাকায় আসেন। কিন্তু উপদ্রুত এলাকা পরিদর্শনে না গিয়ে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরে যান।

ফারুক চৌধুরী সে সময় পাকিস্তান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরুণ কর্মকর্তা হিসেবে প্রেসিডেন্টের সাথে চীন সফরে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে তিনি পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন। তার আত্মজীবনী ‘জীবনের বালুকাবেলায়’ ফারুক চৌধুরী লিখেছেন, প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান চাইলে চীন থেকে ঝড়ের পরদিন অর্থাৎ ১৩ই নভেম্বর ঢাকায় আসতে পারতেন। সেজন্য বিমান প্রস্তুতও ছিল। কিন্তু সেটা না করে ইয়াহিয়া ১৪ই নভেম্বর পিকিং থেকে ঢাকায় ফিরেন। ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়টি নিয়ে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান যে মোটেই চিন্তিত ছিলেন না, তা তার কর্মকাণ্ডে ফুটে উঠেছিল। ফারুক চৌধুরীর বর্ণনায়, “সবাই ভেবেছিল, ঢাকায় থেকে রাষ্ট্রপতি নিজেই ত্রানকার্য তদারক করবেন। তা না করে পরদিনই তিনি চলে গেলেন ইসলামাবাদে। গিয়ে প্রেসিডেন্ট নিক্সনের কাছে বার্তা পাঠালেন যে সফল হয়েছে তার চীন সফর।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ঐতিহ্যবাহী জামদানি বাংলাদেশের গৌরব: চসিক মেয়র

দেশপ্রেম আমাদের মধ্যে না আসবে ততক্ষণ আমরা উন্নতি করতে পারবো না বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি বলেছেন, বিদেশি পণ্য বর্জন ও দেশিয় পণ্য ব্যবহার করে হৃদয়ে বাংলাদেশকে ধারণ করতে হবে। আমাদের ঐতিহ্যবাহী জামদানি বাংলাদেশের গৌরব। দেশি বস্ত্র ব্যবহারের ফলে আমাদের বস্ত্র ও জামদানি শিল্প প্রাণ ফিরে পাবে এবং দেশিয় শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো লাভবান হবে।

বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মহানগরের জিইসি কনভেনশন সেন্টার মাঠে বাংলাদেশ জামদানি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের আয়োজনে রমজান মাসব্যাপী ঈদ বস্ত্রমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিরি এসব কথা বলেন।
ইয়াসিন আরাফাতের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন মেলার উদ্যোক্তা মো. জহির আলম, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক মো. শাহ আলম, চট্টগ্রাম দায়রা জজ আদালত বিভাগীয় পিপি এড. কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ।

প্রধান অতিথি ফিতা কেটে ও বেলুন উড়িয়ে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন। মেলা প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে চাঁদরাত পর্যন্ত চলবে।অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডেবারপাড় ইউনিট বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন সওদাগর, মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম তুহিন, যুবদল নেতা জিহাদুর রহমান জিহাদ, নুর হোসেন উজ্জ্বল, শফিক আহম্মেদ মুরাদ, নুরুল ইসলাম, ফারুক সিকদার, মোহাম্মদ কামাল, মো. হাসেম, তৈয়ব হাসান, ব্যবসায়ী হান্নান শিকদার, শহীদ আকতার বাবুল, ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন সহ নগর বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।

বিলুপ্তির পথে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হারিকেন

গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী হারিকের স্থান (জায়গা) দখল করে নিয়েছে বিদ্যুৎ ও সোলার লাইট। কালের স্রোতে হারিয়ে যেতে বসেছে এক সময়ের আদরের লালিত হারিকেন। গ্রাম বাংলার ছাত্র-ছাত্রীসহ সকল পরিবারের মাঝেই ছিল হারিকেন, সেই আলোকিত বাতি এখন বিলুপ্তির পথে। সন্ধ্যার পর হতেই রাতের অন্ধকার দূর করতে একটা সময় দেশের প্রতিটি গ্রামের মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন, দোয়াত ও কুপি বাতি।

৯০ দশকের পূর্বে ও কিছুকাল পর দেশে বিদেশি চাকরিসহ নানা পেশায় উচ্চপর্যায়ে কর্মরত থাকাদের মধ্যে অনেকেই পড়ালেখা করেছেন এই হারিকেনের মৃদু আলোয়। গৃহস্থালি এবং ব্যবসার কাজেও হারিকেনের ছিল ব্যাপক চাহিদা। বিয়ে জন্মদিন বা পারিবারিক কোন অনুষ্ঠানে লোকের সমাগম হলে ব্যবহার হতো হ্যাজাক, পাশাপাশি জমা রাখা হতো এই হারিকেন। যুগের পরিবর্তনের পাশাপাশি হারিকেনের স্থান দখল করেছে নানা ধরনের বৈদ্যুতিক, রিচার্জার বাতি। বৈদ্যুতিক ও চায়না বাতির কারণে গ্রাম ও শহরে হারিকেনের ব্যবহার বন্ধ হয়েছে। সেই আলোর প্রদীপ হারিকেন এখন গ্রাম থেকেও প্রায় বিলুপ্ত হচ্ছে।

জানা যায়, হারিকেন জ্বালিয়েই বাড়ির উঠানে বা বারান্দায় পড়াশোনা করত শিক্ষার্থীরা। রাতের বেলায় পথ চলার জন্য ব্যবহার করা হত হারিকেন। হারিকেনের জ্বালানি হিসেবে কেরোসিন তৈল (ডিজেল) আনার জন্য প্রায় বাড়িতেই থাকত কাচের বিশেষ ধরনের বোতল। সেই বোতলে রশি লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখা হতো বাড়ির নিদিষ্ট স্থানে। গ্রাম গঞ্জের হাটের দিনে সেই রশিতে ঝোলানো বোতল হাতে নিয়ে যেতে হতো হাট-বাজারে। এ দৃশ্য বেশি দিন আগের নয়। পল্লী বিদ্যুতায়নের যুগে এখন আর এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য দোয়াত, কুপি ও হারিকেন এখন শুধুই স্মৃতি হিসেবে অনেকের বাড়িতেই দেখা যাচ্ছে। তবে অনাদর আর অবহেলার পাত্র হিসেবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগের লোগোটি এখনএ হাতে হারিকেন ও বস্তাবন্দি চিঠিসহ লাঠি নিয়ে ছুটে চলে তার কর্ম পালনে।
নিত্য নতুন প্রযুক্তি মানুষকে উন্নত করছে তাই হারিকেন ছেড়ে মানুষ এখন সৌর বিদ্যুৎ সহ বিদ্যুতের দিকে ঝুঁকছে। তাপবিদ্যুৎ, জলবিদ্যুত, সৌরবিদ্যুৎসহ জ্বালানি খাতে ব্যাপক উন্নয়নে ঐতিহ্যবাহী হারিকেন বিলুপ্তির পথে। বিজ্ঞানীদের আবিষ্কার , যেমন চার্জলাইট, সৌরবিদ্যুৎসহ বেশ কিছু আলোর জোগান থাকায় এখন আর কেউ-ই ঝুঁকছেন না হারিকেন, দোয়াত, কুপি বাতি বা হ্যাজাকের দিকে। দেশের নতুন প্রজন্ম হয়তো জানবেও না হারিকেন কী ও হারিকেনের ইতিহাস!

পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষার বাসিন্দা নব্বই বছর বয়সী অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক শ্রী নারায়ন চন্দ্র পাল (নারু পাল) জানান, আমাদের বাড়িতে দেশ স্বাধীনের পূর্ব হতেই কেরোসিনের বাতি এবং পরবর্তীতে হারিকেন ব্যবহার করা হতো। দিনদিন প্রযুক্তির উন্নতি ও জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের জন্য এখন আর হারিকেন, দোয়াত, কুপি বাতি বা হ্যাজাকের ব্যবহার না করলেও স্মৃতি হিসেবে রেখে দিয়েছি। কালের বিবর্তনের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন ঘটেছে।

উপজেলার বিভিন্ন বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীরা জানান, আমরা র্দীর্ঘ দিন যাবৎ বাবসা করছি সেই ১৯৯০-৯৫ সালের কথা দোকানে হারিকেন, কুপি, হ্যাজাক, দোয়াত বাতি বিক্রি করতাম। আজ ৩০/৩৫ বছর পর এখন আর হারিকেন, কুপি বেচা কেনা নেই। অনেকেই বলেন বাংলার ঐতিহ্য ও অতীতের চিতি হারিকেন কালের স্বাক্ষী তা স্মৃতি চারণ করে রাখা দরকার। কালের পরিবর্তনে দেশ এগিয়ে চলছে তাই অতীতের চিত্র হারিকেন হারিয়ে যাচ্ছে। বাপ দাদার আমলের স্মৃতি হারিকেনের আলোতে আলোকিত হয়েছি পড়াশোনা করে, সেই আলোর হারিকেন ও কুপী বাতি আজ বিলুপ্তির পথে, অতীতের স্মৃতি হারিকেন নতুন প্রজন্মের জন্য ধরে রাখা দরকার।

অষ্টমনিষা হাসিনা-মোমিন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের অবসর প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক বলেন, হারিকেন আমাদের পরম বন্ধু ছিল, হারিকেন জ্বালিয়ে আমরা লেখাপড়া করেছি। এখনকার ছাত্রছাত্রীদের কাছে হারিকেন এর কথা কাল্পনিক মনে হবে। ঘরে বিদ্যুৎ, সোলার থাকায় আজ হারিকেন এর কোন প্রয়োজন বা কদর নেই, তবে ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য হারিকেন এর বিষয়ে ইতিহাসে স্থান দেওয়া উচিত।

ভাঙ্গুড়ার প্রবীণ সাংবাদিক বিকাশ চন্দ্র চন্দ বলেন, হারিকেন এর ঐতিহ্য বাংলার মানুষের অন্তরে মিশে আছে এবং থাকবে। সরকার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা করেছে। স্থানীয় প্রশাসনের উদ্যোগে হারিকেন ধরে রাখার কোন ব্যবস্থা নেই, এই হারিকেন এর ঐতিহ্য যুগের পর যুগ ধরে রাখার জন্য জাতীয় যাদুঘরে রাখার ব্যবস্থা করতে পারেন সরকার।

আলোচিত খবর

কালিয়াকৈরে ”হোপ ফর চিলড্রেন” এর উদ্যোগে বিনামূল্যে বীজ ও চারা বিতরণ

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর মডেল পাবলিক স্কুল মাঠে সোমবার সকালে
বিলিভার্স ইষ্টার্ন চার্চ কতৃক পরিচালিত হোপফর চিলড্রেনের উদ্যোগে ৭০ জন রেজিস্টার শিশুদের পরিবার ও উপকারভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিভিন্ন প্রকারের বীজ, সার ও চারা বিতরণ করা হয়েছে।
বিলিভার্স ইস্টার্ন চার্চ এর ডিকন জয়দেব বর্মনের সভাপতিত্বে ও হোপ ফর চিলড্রেনের প্রজেক্ট কো-অর্ডিনেটর বাপ্পি খৃষ্টদাস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হোপ ফর চিলড্রেন এর ন্যাশনাল প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর সজীব ত্রিপুরা, বিশেষ অতিথি ছিলেন ন্যাশনাল সিএস কো-অর্ডিনেটর তপানা ত্রিপুরা,উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ শওকত হোসেন,বিশিষ্ট সমাজসেবক শাহ আলম হোসেন।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন হোপফর চিলড্রেন শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পুষ্টি নিয়ে কাজ করছে। কালামপুর গ্রামে রেজিস্ট্রার শিশু ও গরীব শিশুরা যাতে পুষ্টিকর খাবার পায় তার জন্য হোপ ফর চিলড্রেনের মাধ্যমে বাড়ির আঙিনায় শাক-সবজি চাষের জন্য বীজ বিতরন করা হয়েছে।
বীজ বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রশিক্ষণ প্রদান করে

আরও পড়ুন

সর্বশেষ