আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

মৌলভীবাজার:

মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যের ওপর হামলা, আসামি ছেড়ে দিল পুলিশ।

তিমির বনিক মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর ও তার ছেলের বউয়ের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।

গত রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আলিক মিয়ার দোকানের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে।

এদিকে স্থানীয় সুত্রের বরাতে জানা যায়, গত রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর ও তার ছেলের বউ, বাড়ির পাশে একটা মুদি দোকানে বাজার করতে আসেন। এসময় রিক্সা চালক প্রতিবেশী সুমন শব্দকর তাদের উদ্দেশ্যে করে গালিগালাজ করতে থাকেন। কারণ জানতে চাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর ও তার ছেলের বৌউকে অটোরিক্সার সিটের নিচে থাকা চেইন দিয়ে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করেন সুমন শব্দকর। এসময় স্থানীয়রা সুমনের কবল থেকে রক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর ও তার ছেলের বৌকে। পরে তারা সেখান থেকে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে।

স্থানীয় বাসিন্দা শিমলা, সবিতা ও ব্যবসায়ী আলিক মিয়া জানান, ‘সুমন যেকোনো মানুষের সাথে খুব খারাপ আচরন করেন। তারা আরও বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে যে কারও সাথে ঝগড়া হতে পারে। কিন্তু এভাবে হাত তুলা মোটেও ঠিক হয়নি। সুমনের বড় ভাই সবুজও কিছু দিন আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকরের ওপর হামলা করে।

এ ব্যাপারে সুমন শব্দকর এর বড় ভাই সবুজ শব্দকর বলেন, ‘আমার ভাইটা ছোট মানুষ বুঝেনি, না বুঝে তাদের ওপর হাত তুলেছে। বিচারের মাধ্যমে বিষয়টা শেষ হবে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর বলেন, আমি অসহায় মানুষ। বয়স হয়ে গেছে। কিছু করতে পারি না। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দিয়ে কোনো রকম ছেলের বউসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে জীবন চালাই। কিন্তু সুমন রিক্সার চেইন খুলে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে আমার ও আমার ছেলের বউয়ের ওপড়। তার কিছু দিন আগেও তার বড় ভাই সবুজও আমাকে মেরেছে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, হামলার পর আমি থানায় মৌখিক অভিযোগ করেছি। পুলিশ সাথে সাথে ১জনকে আটক করেছে। পরে রাতে আবার ছেড়েও দিয়েছে। বিষয়টি বুঝলাম না।

কমলগঞ্জ পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনসার শোকরানা মান্না বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে সামাজিক বৈঠকে রাতেই সমাধান করা হবে।

এ সময় কমলগঞ্জ থানার ওসি সাইফুল আলম প্রতিবেদকে জানান, ঘটনাটি শোনার পর আমরা হামলাকারী সুমন শব্দকর’কে আটক করেছি। পরে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিষয়টি বিচারের মাধ্যমে দেখে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। তাই আটককৃতকে ছেড়ে দিয়েছি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় গভীর রাতে স্বর্ণের দোকানে দুর্ধর্ষ ডাকাতি

পাবনা প্রতিনিধিঃ পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমণিষা বাজারে বুধবার গভীর রাতে একদল দুর্ধর্ষ ডাকাত দল চার-পাঁচ টি স্বর্ণের দোকানে ও একটি বাড়িতে ডাকাতি করে।স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, অষ্টমণিষা বাজারের শ্রী রতন কুমার কর্মকার, তপন কুমার কর্মকার, উত্তম কুমার কর্মকার, ইউসুফ আলী ও আত্তাব আলীর স্বর্ণের দোকানগুলোর তালা ভেঙে দুর্বৃত্ত ডাকাত দল প্রায় ৩০/৩২ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে ডাকাত দল রতন কুমার কর্মকারের বাড়ির ভিতর প্রবেশ করে তার স্ত্রী ও ছেলে রঞ্জন কর্মকার কে মারধর করে আরও ১০ ভরি স্বর্ণ ও ১৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাত দল।

শ্রী রঞ্জন কুমার কর্মকার বলেন,একটি ডাকাত দল বাজারে নেমে দুই নৈশপ্রহরীকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে প্রথমেই বেঁধে ফেলেন।রতন কর্মকার বলেন, ‘ডাকাতেরা বাড়িতে ঢুকতেই আমি তিন তলায় উঠে প্রতিবেশীদের ফোন করি। কিন্তু কেউ আসেনি। পরে দীপকে ফোন করলেও বের হতে পারেনি, কারণ তার দরজার সামনে দুইজন অস্ত্রধারী দাঁড়িয়ে ছিল।’

তারপর প্রায় ১০-১২ জনের একটি ডাকাত দল প্রথমে স্বর্ণের দোকানগুলোতে হামলা চালায় এবং কিছুক্ষণ পরে তারা তাদের বাড়িতে প্রবেশ করে সবাইকে অস্ত্রের মুখে স্বর্ণালংকার ও টাকা পয়সা সব লুট করে। তার মা স্বর্ণের গহনা খুলে দিতে দেরি করলে তাকে অনেক মারধর করে। রঞ্জন কর্মকার বাধা দিলে তাকেও বেদম প্রহার করা হয়। দুর্ধর্ষ ডাকাত দলের হাতে দুইটি আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্র সহ সাপল,লোহার রড ছিলো বলে তারা জানান।

স্থানীয়রা আরও জানান,দুর্ধর্ষ ডাকাত দল স্পিডবোট যোগে গভীর রাতে বাজারে এসে স্বর্ণের দোকানগুলোতে ডাকাতি করে গুমানী নদীর ভাটির দিকে চলে যায়।

খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (চাটমোহর,ভাঙ্গুড়া সার্কেল) আবু বকর সিদ্দিক, পাবনা ডিবির ওসি রাশিদুল ইসলাম, ডিবির একটি টিম এবং ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কারা জড়িত, তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

পাবনা ডিবি পুলিশের ওসি রাশিদুল ইসলাম বলেন, ‘এটি সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের কাজ। খুব শিগগিরই ডাকাত চক্রকে গ্রেপ্তার করা হবে।’অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। আইনগত প্রক্রিয়া চলছে। তদন্তে বিস্তারিত জানা যাবে।’

চট্টগ্রামে কাস্টমস কর্মকর্তাদের গাড়িতে হামলার সময় ‘গুলি কর, গুলি কর’ শব্দ

P চট্টগ্রাম মহানগরের কাস্টমসের দুই কর্মকর্তার উপর হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ডবলমুরিংয় থানাধীন সিডিএ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কে চৌধুরী সুপারশপের সামনে এ ঘটনা ঘটে। হামলাকারীরা হঠাৎ প্রাইভেটকার থামিয়ে চাপাতি দিয়ে গাড়ির গ্লাস ভাঙে এবং ‘গুলি কর, গুলি কর’ চিৎকার করে প্রাণনাশের ভয় দেখায়।হামলার শিকার হলেন, চট্টগ্রাম কাস্টমসের রাজস্ব কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান খান ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (এআরও) বদরুল আরেফিন।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে হামলার শিকার রাজস্ব কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, অফিস যাওয়ার পথে হঠাৎ বিপরীত দিক থেকে একটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে আমাদের গাড়ির গতিরোধ করে। তারপর তারা চাপাতি দিয়ে গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলে। এসময় একজন আরেকজনকে বলতে থাকেন, ‘গুলি কর, গুলি কর’। পরে প্রাণ বাঁচাতে গাড়ি থেকে নেমে দৌড়াতে থাকি। তিনি আরও বলেন, হামলাকারীদের তিনজনের মধ্যে দুজন হেলমেট পরিহিত ছিল, আকেরজন হেলমেট পরেনি। হামলার পর তারা মোটরসাইকেল নিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

রাজস্ব কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, গত অক্টোবরে তার মোবাইল ফোনে কল দিয়ে হুমকি দেয়া হয়। পরে বন্দর থানায় নিরাপত্তা চেয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়েছিল। এর একমাস পরেই এই হামলা হয়েছে বলে জানান তিনি।

চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের পশ্চিম বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার হোসাইন মোহাম্মদ কবির ভূঁইয়া বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। ফুটেজ পর্যালোচনা করে হামলাকারীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে। একটি মোটরসাইকেলে তিনজন এসে হামলা চালিয়েছে। প্রাথমিক ধারণা, এটি পূর্ব শত্রুতার জেরে ভয়ভীতি দেখানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। যদিও হামলার সময় ‘গুলি কর, গুলি কর’ চিৎকার করা হয়েছিল, কোনো গুলি করা হয়নি। আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। এই ঘটনায় এখনও মামলা দায়ের হয়নি; কাস্টমস কর্মকর্তারা চাইলে মামলা করতে পারেন, নতুবা পুলিশ মামলার প্রক্রিয়া শুরু করবে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের ডেপুটি কমিশনার এইচ এম কবির বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছি। আমাদের দুজন কর্মকর্তা কাস্টমস গোয়েন্দা অফিস থেকে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে যাওয়ার পথে তাদের উপর হামলা হয়েছে। তাদের গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়েছে। কে বা কারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তা এখনও নিশ্চিত নয়। এ ধরনের হামলা আমাদের জন্য শঙ্কার বিষয়। আমরা আশা করি রাষ্ট্র আমাদের নিরাপত্তা দিবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ