আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

মৌলভীবাজার:

মুক্তিযোদ্ধা ও তার পরিবারের সদস্যের ওপর হামলা, আসামি ছেড়ে দিল পুলিশ।

তিমির বনিক মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর ও তার ছেলের বউয়ের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।

গত রোববার (২৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার পৌর এলাকার ৩নং ওয়ার্ডে অবস্থিত আলিক মিয়ার দোকানের সামনে এ ঘটনাটি ঘটে।

এদিকে স্থানীয় সুত্রের বরাতে জানা যায়, গত রোববার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর ও তার ছেলের বউ, বাড়ির পাশে একটা মুদি দোকানে বাজার করতে আসেন। এসময় রিক্সা চালক প্রতিবেশী সুমন শব্দকর তাদের উদ্দেশ্যে করে গালিগালাজ করতে থাকেন। কারণ জানতে চাইলে বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর ও তার ছেলের বৌউকে অটোরিক্সার সিটের নিচে থাকা চেইন দিয়ে কোন কিছু বুঝে ওঠার আগেই এলোপাতাড়ি মারতে শুরু করেন সুমন শব্দকর। এসময় স্থানীয়রা সুমনের কবল থেকে রক্ষা করে মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর ও তার ছেলের বৌকে। পরে তারা সেখান থেকে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা গ্রহণ করে।

স্থানীয় বাসিন্দা শিমলা, সবিতা ও ব্যবসায়ী আলিক মিয়া জানান, ‘সুমন যেকোনো মানুষের সাথে খুব খারাপ আচরন করেন। তারা আরও বলেন, পারিবারিক বিষয় নিয়ে যে কারও সাথে ঝগড়া হতে পারে। কিন্তু এভাবে হাত তুলা মোটেও ঠিক হয়নি। সুমনের বড় ভাই সবুজও কিছু দিন আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকরের ওপর হামলা করে।

এ ব্যাপারে সুমন শব্দকর এর বড় ভাই সবুজ শব্দকর বলেন, ‘আমার ভাইটা ছোট মানুষ বুঝেনি, না বুঝে তাদের ওপর হাত তুলেছে। বিচারের মাধ্যমে বিষয়টা শেষ হবে।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা রাকেশ শব্দকর বলেন, আমি অসহায় মানুষ। বয়স হয়ে গেছে। কিছু করতে পারি না। মুক্তিযোদ্ধা ভাতা দিয়ে কোনো রকম ছেলের বউসহ পরিবারের সবাইকে নিয়ে জীবন চালাই। কিন্তু সুমন রিক্সার চেইন খুলে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে আমার ও আমার ছেলের বউয়ের ওপড়। তার কিছু দিন আগেও তার বড় ভাই সবুজও আমাকে মেরেছে।

এ সময় তিনি আরও বলেন, হামলার পর আমি থানায় মৌখিক অভিযোগ করেছি। পুলিশ সাথে সাথে ১জনকে আটক করেছে। পরে রাতে আবার ছেড়েও দিয়েছে। বিষয়টি বুঝলাম না।

কমলগঞ্জ পৌরসভার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনসার শোকরানা মান্না বলেন, বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে সামাজিক বৈঠকে রাতেই সমাধান করা হবে।

এ সময় কমলগঞ্জ থানার ওসি সাইফুল আলম প্রতিবেদকে জানান, ঘটনাটি শোনার পর আমরা হামলাকারী সুমন শব্দকর’কে আটক করেছি। পরে স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর বিষয়টি বিচারের মাধ্যমে দেখে দিবেন বলে আশ্বস্ত করেন। তাই আটককৃতকে ছেড়ে দিয়েছি।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ