আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ডিমলায় স্মার্ট ভূমিসেবা সপ্তাহের উদ্বোধন

আনোয়ার হোসেন ডিমলা নিলফামারী:

নিলফামারী:

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় স্মার্ট ভূমিসেবা সপ্তাহ-২০২৪ এর উদ্বোধন করা হয়েছে। শনিবার (৮-জুন) সকালে উপজেলা ভূমি অফিস কার্যালয়ের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে ফেস্টুন যুক্ত বেলুন উড়িয়ে ফিতা কেটে সপ্তাহব্যাপী স্মার্ট ভূমিসেবা সপ্তাহের শুভ উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার রাব্বিল আল-আমীন তারেক, উপজেলার পশ্চিম ছাতনাই ও টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের (তহশিলদার) সামছুল ইসলাম, বালাপাড়া ও খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা তহিদুল ইসলাম, ডিমলা সদর ও নাউতারা ইউনিয়নের ভূমি কর্মকর্তা আবুল হোসেন, খালিশা চাপানী ও গয়াবাড়ী ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা দুলাল চন্দ্র রায়, ঝুনাগাছ চাপানী দায়িত্বরত ভূমি কর্মকর্তা গোলাম রাব্বানী, পূর্বছাতনাই ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মুজিবর রহমান ও কম্পিউটার অপারেটর মোঃ লাভলু ইসলাম।

ভূমি সপ্তাহের উদ্বোধন শেষে স্টল ঘুরে-ঘুরে দেখান সংশ্লিষ্টরা, এসময় ইউএনও উম্মে সালমা বলেন, ৩টি স্টলের মাধ্যমে প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এখান থেকে ভূমি সেবা প্রত্যাশিরা অনলাইনের মাধ্যমে ভূমি উন্নয়ন কর, ই-নামজারি, খতিয়ান, জমির ম্যাপ, জলমহলের আবেদন, ভূমি বিষয়ক অভিযোগসহ সকল ধরনের সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।

পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা (ইউএনও) এর সভাপতিত্বে ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা আখতার এর সঞ্চালনায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে গণসচেতনতামূলক এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন, ডিমলা সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ মোকলেছুর রহমান, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মোছাঃ আয়শা সিদ্দীকা, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেজবাহুর রহমান, উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের উপ-সহকারী প্রকৌশলী তুহিন হাসান বিশ্বাস, উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা খোরশেদ আলম।

আলোচনার শেষ প্রান্তে অনুষ্ঠানের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে সালমা তাঁর বক্তব্যে বলেন, ঘরে বসে সেবা নিতে সরকার সবকিছু অনলাইন করে দিয়েছে। কিন্তু এখনো অনেকে অনলাইন সেবা নিতে অন্যের দারস্থ হচ্ছেন। আর সে সুযোগে একটি চক্র সেবা গৃহীতাদের ধোকা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ থেকে পরিত্রানের জন্য সবাইকে ই-সেবা গ্রহণ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে হবে। সেই সাথে তিনি আরও বলেন, আমরা আশা করছি সময়ের ব্যবধানে স্ব-শরীরে উপস্থিত না হয়েও অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারবে। এতে করে সময় সাশ্রয়ের পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের অর্থ ব্যয়ও অনেক কমে আসবে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

একাত্তরের জননী – রমা চৌধুরী স্বাধীনতা যুদ্ধে নির্যাতিত একজন বীরাঙ্গনা।

 

১৯৭১ সালের ১৩ মে ভোরে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে নিজ বাড়িতে নির্যাতনের শিকার হন। সম্ভ্রম হারানোর পর পাকিস্তানি দোসরদের হাত থেকে পালিয়ে পুকুরে নেমে আত্মরক্ষা করেছিলেন। হানাদাররা গানপাউডার লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয় তাঁর ঘরবাড়িসহ যাবতীয় সহায়-সম্পদ। তিনি তার উপর নির্যাতনের ঘটনা “একাত্তরের জননী” নামক গ্রন্থে প্রকাশ করেন।
১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদাররা তাঁর একমাত্র ভিটেটুকু পুড়িয়ে ছারখার করে দেয়। সেই পোড়া ভিটা, সেই পোড়া মাটির ঘর আজও তাঁর বাসগৃহ, যা এখন ‘দীপঙ্কর স্মৃতি অনাথালয়’ নামে একটি অনাথ আশ্রম হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় রত রমা চৌধুরী নিজেই।
রমা চৌধুরী ১৯৪১ সালের ১৪ অক্টোবর চট্টগ্রামের বোয়ালখালী থানার পোপাদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। বলা হয়ে থাকে তিনি দক্ষিণ চট্টগ্রামের প্রথম নারী স্নাতকোত্তর (এমএ)। তিনি ১৯৬১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। রমা চৌধুরী ১৯৬২ সালে কক্সবাজার বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে পূর্ণাঙ্গ কর্মজীবন শুরু করেন। পরে দীর্ঘ ১৬ বছর তিনি বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন করেন। বিজয়লাভের পর ২০ ডিসেম্বর তাঁর বড় ছেলে সাগর নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এর ১ মাস ২৮ দিন পর মারা যায় আরেক ছেলে টগর। এরপর তিনি জুতা পরা বাদ দেন। পরে অনিয়মিতভাবে জুতা পরতেন তিনি। ১৯৯৮ সালের ১৬ ডিসেম্বর আরেক ছেলে মারা গেলে পুত্রশোকে তিনি আর জুতা পায়ে দেননি। খালি পায়ে হেঁটে নিজের লেখা বই বিক্রি করে চলতেন এই নারী।
স্বাধীনতার পরে ২০ বছর তিনি লেখ্যবৃত্তিকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। প্রথমে তিনি একটি পাক্ষিক পত্রিকায় লিখতেন। বিনিময়ে সম্মানীর বদলে পত্রিকার ৫০টি কপি পেতেন। সেই পত্রিকা বিক্রি করেই চলত তাঁর জীবন-জীবিকা। পরে নিজেই নিজের লেখা বই প্রকাশ করে বই ফেরি করতে শুরু করেন। প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা মিলিয়ে তিনি নিজে ১৮টি গ্রন্থ প্রকাশ করেছেন।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ:-
একাত্তরের জননী।
১০০১ দিন যাপনের পদ্য।
আগুন রাঙা আগুন ঝরা অশ্রু ভেজা একটি দিন।
ভাব বৈচিত্রে রবীন্দ্রনাথ।
অপ্রিয় বচন।
লাখ টাকা।
হীরকাঙ্গুরীয়
একাত্তরের জননী’সহ ১৮টি গ্রন্থের লেখক, মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতনের শিকার নারী রমা চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাড়ের ব্যথাসহ নানা রোগে ভুগছিলেন। চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় ২০১৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সোমবার ভোররাত ৪টা ৪০ মিনিটে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

অভিনেত্রী মাসুকা নাসরিন রাকার জানা অজানা গল্প

 

প্রতিটি নারীর সফলতার পিছনে মা বাবার যেমন দায়িত্ব থাকে তেমনি নিজেরও ইচ্ছা শক্তি প্রবল থাকে। যার ফলে একজন নারী যেতে পারে বহুদূর। নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজকের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। তেমনি ভাবে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে সফল নারী হিসেবে গড়ে তুলেছেন মাসুকা নাসরিন রাকা। যিনি একাধারে মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি মডেল, গায়িকা, মাইম শিল্পী, টিভি উপস্থাপক, আবৃত্তিকার, সাংবাদিক, উদ্যোক্তা ও একজন সফল ব্যবসায়ি। আজ পাঠকের কাছে তুলে ধরবো সফলতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া অভিনেত্রী মাসুকা নাসরিন রাকা’র জানা অজানা গল্প।

মাসুকা নাসরিন রাকা ১৯৭৭ সালে শিশু শিল্পী হিসেবে ” কচি কাঁচার আসর “এর নাটকে অভিনয় করেন যেখানে তিনি “নতুন কুঁড়ি” (১৯৭৯) নৃত্য পরিবেশনার জন্য পুরষ্কার লাভ করেন। বিটিভির অনেক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে শিশুশিল্পী, আবৃত্তিকার হিসেবেও উপস্থিত ছিলেন রাকা। তিনি ঘাসফুল খেলাঘর আসরের সদস্য ছিলেন, যার মাধ্যমে তিনি নাটক, গান, আবৃত্তি এবং নৃত্যে অংশগ্রহণ

করেছিলেন। কৈশোরে তিনি ঢাকা ইয়ুথ কয়ার এর সদস্য ছিলেন যার মাধ্যমে তিনি অনেক গানের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করার সময় একজন থিয়েটার শিল্পী হিসেবে তার যাত্রা শুরু করেন এবং আরামবাগ থিয়েটার গ্রুপের সদস্য ছিলেন রাকা। “সাত ঘাটের কানাকড়ি”, রাক্ষুসি “শেষ রক্ষা ” এবং “রূপবান” এর প্রধান চরিত্রে বিখ্যাত থিয়েটার নাটকে অভিনয় করেছিলেন রাকা। তিনি প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি অডিটোরিয়ামে একজন মাইম শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন, ডি.ইউ.এম.বি. (১৯৯১ সালে নির্মিত) এবং লোসাউকের সদস্য ছিলেন। এই দলগুলির মাধ্যমে তিনি ১৯৯৩ সালে নরওয়ের অসলোতে লোসাউকের অনুষ্ঠানে এবং ১৯৯৪ সালে নরওয়ের ট্রন্ডহাইমে দ্য ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যালে প্রথম মহিলা একক মাইম শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। এখানে ডি.ইউ.এম.বি.-এর সাথে একটি দলগত পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেছিলেন মাসুকা নাসরিন রাকা।

অভিনেত্রী রাকা তার আরামবাগ থিয়েটার গ্রুপের মাধ্যমে তার প্রথম নাটকে উপস্থিত হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালের ঈদুল ফিতরে বিটিভিতে মুক্তি পায় মমতাজ উদ্দিন আহমেদ পরিচালিত “আমরা দুইটি ভাই” নাটক, যেখানে তিনি আসাদুজ্জামান নুরের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৯১ সালে বিটিভিতে আহসান হাবীব পরিচালিত “কোথাও খোরন” নাটকের এর বিশেষ অডিশনের মাধ্যমে প্রধান প্রধান চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন এবং মনোজ সেনগুপ্তের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন রাকা। ১৯৯৩ সালে বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হন এবং ৩০টি নাটক, ১০টি প্যাকেজ নাটক, ৪টি ধারাবাহিক ও ২টি টেলিফিল্মে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তার ধারাবাহিক নাটক “মাটিরমায়া”, “আপন নিবাস”, “অতন্দ্র প্রহর” এবং “তথাপি” এর মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। নাটকে তার উল্লেখযোগ্য কাজগুলি হল: “মন বলে তুমি”,

“ভালোবাসবে না কেন মন”, “সোনারবলই” এবং ” সেই আমরা”। তার দুটি টেলিফিল্ম হল “মা এর জন্য সুইজারল্যান্ড” (২০০৩) এবং “মন পাখি” (২০০৬)। এছাড়া মিস বাংলাদেশ ১৯৯৫-এ রানার-আপ চ্যাম্পিয়ন হন, যার মাধ্যমে তিনি টেলিভিশন এবং সিনেমা জুড়ে প্রচুর পরিচিতি অর্জন লাভ করেছিলেন মাসুকা নাসরিন রাকা।

তিনি ১৯৯৪ সালে শেখ নেয়ামত আলী পরিচালিত “আমি নারী” নামে একটি তথ্যচিত্রে অভিনয় করেন। তবে ১৯৯৭ সালে ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে “সুন্দরী মিস বাংলাদেশ” দিয়ে থিয়েটারে অভিষেক হয়। তিনি ২৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন, তার উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো “সুন্দরী মিস বাংলাদেশ”, “কুংফু নায়ক”, “পেশাদার খুনি”, “ডাইরেক্ট অ্যাকশন”, “বিদ্রোহী মাস্তান”, “ওস্তাদের ওস্তাদ”, “জলন্ত বিশ্বফ্রন”, “লোহার শিকল” এবং “ক্যাপ্টেন মারুফ”। চলচ্চিত্রে আসার পর, বেশিরভাগ অ্যাকশন ছবিতে অভিনয় করার কারণে তিনি ২০০০ সালে ফাইটার কারাতে প্রশিক্ষণ নেন এবং এতে ব্ল্যাকবেল্ট অর্জন করেন। শুধু অভিনয় নয় তার আবৃত্তি ক্যারিয়ারও সাফল্য এবং জনপ্রিয়তায় ভরপুর ছিল। তার অন্যতম উল্লেখযোগ্য প্রকল্প ছিল কামরুল হাসান মঞ্জুর সাথে “দুজোনে মিলে কবিতা” যা “একুশে বই মেলা” (১৯৯৩) এর সেরা বিক্রেতা ছিল।

তিনি ১৯৯০-১৯৯২ সাল পর্যন্ত “সাপ্তাহিক সময় সংলাপ ম্যাগাজিন”, “সাপ্তাহিক দেশ দিশা ম্যাগাজিন” এবং দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা’র সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে “নৃত্যের তালে তালে” এবং ” আত্নরক্ষায় মার্শাল আর্ট” (২০০৫-২০১০) এ উপস্থিত হন যা বিটিভি, বৈশাখী টিভি এবং মাইটিভিতে প্রচারিত হয়। মডেল এবং প্রথম নাটক ১৯৯২ সালে শুরু করেছিলেন। তিনি “বেঙ্গল ফাইন সিরামিকস”, “আল-আমিন বিস্কুট”, “জিয়া প্রিন্ট শাড়ি” এবং “শ-ওয়ালেস চা” এর জন্য টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত “উজ্জলা লিকুইড ব্লু”-এর জন্য একটি পশ্চিমবঙ্গের সহ-প্রযোজনার বিজ্ঞাপনেও উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি শুধু অভিনেত্রী নই তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। কক্সবাজারে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর রিসোর্ট নামের সহ-মালিকাধীন রেস্তোরাঁ এবং স্টোর পরিচালনা করে আসছেন এবং কক্সবাজারের উইমেন্স চেম্বার অব কমার্সের পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। হয়েছেন পরিচালক সমিতির সদস্য এবং আসন্ন প্রকল্প “অন্তোরে বাহিরে” নিয়ে কাজ করছেন মাসুকা নাসরিন রাকা।

ব্যক্তিগত জীবন : মাসুকা নাসরিন রাকা ১৯৭০ সালের ১১ নভেম্বর ঢাকা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আব্দুল মান্নান মাতা কামরুন্নাহার মন্নান। রাকার পিতা একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি ছিলেন। অর্জন করেছিলেন গণিত ও রসায়নে ডাবল মার্স্টাস ডিগ্রী। ১৯৫৬-১৯৮৬ সাল পর্যন্ত নবকুমার ইনিস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং ড. শহীদুল্লাহ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন।

১৯৪৭ সালে বাংলাদেশের চাঁদপুরের উত্তর মতলবের একলাছপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের স্কুল শিক্ষক সমিতি, কলেজ শিক্ষক সমিতি ও জাতীয় শিক্ষক সমিতির সভাপতিও ছিলেন। ১৯৮৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মেঘনা নদীতে লঞ্চ-নৌকা সংঘর্ষে মারা যান রাকা’র পিতা আব্দুল মান্নান । রাকা’র মাতা কামরুন নাহার মন্নান ” বেগম পত্রিকা’র ” একজন লেখিকা, কবি এবং উইলস লিটল ফ্লাওয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

মাসুকা নাসরিন রাকা “আজিমপুর গার্লস হাই স্কুল” থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা, বেগম বদরুন্নেসা গার্ল কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা এবং স্ট্যামর্ফোড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি স্ট্যামর্ফোড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম ও মিডিয়ায় ডাবল মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনি ২০০১ সালের ২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মার্শাল আর্টের জনক, প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমকে গোপনে বিয়ে করলেও ২০০২ সালের ২ সেপ্টেম্বর এক সংর্বধনার মধ্যে দিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা দেন। ত্রিশ

বছরের ভালোবাসার বন্ধন আর ২৫ বছর সংসার জীবনে এই দম্পতির তাজ ওয়ার আলম ও রেজ ওয়ার আলম নামের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার কলাতলীস্থ ওস্তাদ জাহাঙ্গীর রির্সোটে জমকালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালন করলেন ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম ও মিস সুন্দরী বাংলাদেশ মাসুকা নাসরিন রাকা’র যুগলবন্দী জীবনের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ