আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

মরহুম শেখ-চাঁটগাম কাজেম আলী মাষ্টারের ৯৯তম মৃত্যুবার্ষিকী

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামে শিক্ষা, সমাজসেবা ও রাজনৈতিক আন্দোলনে প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। স্বদেশী, অসহযোগ ও খিলাফত আন্দোলন সহ সমাজ সেবামূলক নানা কাজে এগিয়ে আসা চট্টগ্রামের উৎসাহী তরুণদের মধ্যে কাজেম আলী মাস্টার ছিলেন অন্যতম। শিক্ষা বিস্তারে অগ্রণী ভূমিকা এবং জনদরদের কারণে চট্টগ্রামবাসী তাকে শেখ-ই-চাটগাম উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৮৫২ সালের ১১ আগস্ট তিনি চট্টগ্রামের পাঁচলাইশে জন্মগ্রহণ করেন। হুগলি থেকে এন্ট্রান্স পাস করে কাজেম আলী

সাতকানিয়া হাই স্কুলে শিক্ষকতা গ্রহণ করেন। এই জন্য তিনি কাজেম আলী মাস্টার নামে বেশি পরিচিত। তিনি সাতকানিয়া থেকে এসে পরবর্তীতে চাকমা রাজার কাছ থেকে ৬০ টাকায় কেনা জমিতে ১৮৮৫ সালে চিটাগাং মিডল ইংলিশ স্কুল নামে নিজের স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। অচিরেই শিক্ষক হিসেবে চট্টগ্রামে তিনি সুনাম অর্জন করেন। চট্টগ্রামবাসীর উৎসাহ দেখে তিনি পিতার সম্পত্তি বন্ধক দিয়ে ১৮৮৮ সালে চিটাগাং হাই ইংলিশ স্কুল

প্রতিষ্ঠা করেন। তার মৃত্যুর পর ১৯২৮ সালে এই স্কুলের নাম পরিবর্তিত হয়ে কাজেম আলী স্কুল এন্ড কলেজ হয়। কাজেম আলীর দক্ষতা আর অসাধারণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের গুণে অল্প কিছুদিনের মধ্যেই স্কুলটি সাফল্য অর্জন করে, পায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা। পরবর্তীকালে তিনি চট্টগ্রামে বেশ কিছু স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা তৈরি ও পরিচালনার সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। রাজনৈতিক আদর্শে কাজেম আলী ছিলেন আপসহীন।

অনলবর্ষী এই বক্তা চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় চমৎকার বক্তৃতা দিতে পারতেন। তাঁর সুযোগ্য নেতৃত্বে চট্টগ্রামে কংগ্রেস-খেলাফত কমিটির আন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল। এ সময় এক বিশাল জনসভায় তাঁকে ‘শেখ-ই-চাটগাম’ উপাধি দেওয়া হয়। চট্টগ্রামে বঙ্গভঙ্গ বিরোধিতা ও ব্রিটিশ পণ্য বর্জনের আন্দোলনে মূল উদ্যোক্তাদের একজন ছিলেন তিনি। অসহযোগ আন্দোলনে দেশপ্রিয় যতীন্দ্রমোহন সেনগুপ্তের সহকর্মী ও পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করেছেন। কাজেম আলী অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটি, খাদেমুল ইসলাম সোসাইটি, খিলাফত কমিটিসহ নানা প্রতিষ্ঠানের সাথে যুক্ত ছিলেন।

চট্টগ্রাম মিউনিসিপ্যালিটির কমিশনার পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন বহুকাল। দেশের মানুষের মুক্তিই ছিল তাঁর আজীবন লালিত স্বপ্ন। তাই পরাধীনতার শৃঙ্খলে থেকে সরকার প্রদত্ত ‘খান বাহাদুর’ উপাধি বর্জন করেন তিনি।
জনসেবায় নিঃস্বার্থ অবদানের জন্য দু’বার তাঁকে ‘কায়সার-ই-হিন্দ’ স্বর্ণপদক দেওয়া হয়। ১৯২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শেখ-চাঁটগাম কাজেম আলী মাষ্টারের মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চন্দ্রগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেন নবাগত পুলিশ সুপার মো:আবু তারেক

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

লক্ষ্মীপুর জেলার সদ্য যোগদান করা পুলিশ সুপার জেলার বিভিন্ন থানা পরিদর্শন ও থানায় কর্মরত অফিসারদের সাথে সৌজন্যে সাক্ষাৎ করেন।
তারই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় লক্ষ্মীপুর জেলার চন্দ্রগঞ্জ থানা আকস্মিক পরিদর্শন করেন লক্ষ্মীপুর জেলার নবাগত পুলিশ সুপার মোঃ আবু তারেক। এসময় চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ ও কর্মরত সবাই ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান।

থানা পরিদর্শনকালে পুলিশ সুপার ফোর্সদের থাকার ব্যারাক ও বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন এবং সকল পুলিশ সদস্যদের সাথে কুশল বিনিময় করেন। এছাড়াও সকল পুলিশ সদস্যদের আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা প্রদান করেন।

উল্লেখ্য চন্দ্রগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ মোরশেদ আলম চলতি মাসের ৬ তারিখে এ থানায় যোগদান করেন।

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত চবি ছাত্রদল নেতার জানাজা

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলামের জানাজা চবি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। তিনি সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন। বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।আরিফ চবি ইতিহাস বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি হাটহাজারীর শিকদার পাড়ায়। তিনি মোয়াজ্জেম বাড়ির মো. হারুনের ছেলে। আরিফের জানাজার জন্য সকালে তার মরদেহবাহী গাড়ি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন চবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহ্ইয়া আখতার, উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান, উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আল-আমীন, শহীদ জিয়া স্মৃতি সংসদ চবির সভাপতি ও মেরিন সায়েন্সেস অ্যান্ড ফিশারিজ অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. মো. শফিকুল ইসলাম,

জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আল ফোরকান, আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. জাফরুল্লাহ তালুকদার, প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী পরামর্শ ও নির্দেশনা কেন্দ্রের পরিচালক ড. আনোয়ার হোসেন এবং চাকসু কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহিদুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন চবি ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমান, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. ইয়াছিন, সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন হৃদয়সহ সংগঠনের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা। এছাড়া চাকসুর ভিপি ইব্রাহীম হোসেন রনি, জিএস সাঈদ বিন হাবিব, এজিএস আইয়ুবুর রহমান তৌফিকসহ অন্যান্য সম্পাদকবৃন্দ।

এর আগে গত ৬ ডিসেম্বর রাত দেড়টার দিকে হাটহাজারীতে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন চবি ছাত্রদলের এই নেতা। ঘটনাস্থলেই নিহত হন আরিফের চাচা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দল সভাপতি ও ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ এমরান চৌধুরী। গুরুতর আহত আরিফকে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। তিনদিন চিকিৎসাধীন থাকার পর ৯ ডিসেম্বর তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

চবি ছাত্রদলের সভাপতি আলাউদ্দিন মহসিন বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় সাংগঠনিক শূন্যতা তৈরি হলো। তার মৃত্যু আমাদের জন্য গভীর বেদনার। তার মতো একজন যোগ্য নেতাকে হারিয়ে আজ আমরা অসহায়। তার মতো তুখোড় মেধাবী শিক্ষার্থী বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতিতে অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক ছিল। তার রুহের মাগফিরাত কামনা করি।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ