আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

দুবাইয়ের মিরাকল গার্ডেনের আদলে গড়া ডিসি পার্ক

মোহাম্মদ আরমান চৌধুরী সংযুক্ত আরব আমিরাত

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে মাদকের রাজ্য হিসেবে পরিচিত স্থানটি দুবাইয়ের মিরাকল গার্ডেনের আদলে গড়া ডিসি পার্ক এখন ফুলের রাজ্যে পরিণত হয়েছে।এই পার্কে আগামী ২৫ জানুয়ারি শুরু হবে মাসব্যাপী ফুল উৎসব। এখানে থাকছে দেশি-বিদেশি ১২৭ প্রজাতিরি গাছের লক্ষাধিক চারায় ফুলের স্বর্গরাজ্য। ডিসি পার্কের বাগানের মাঝখানে বিশালাকার পুকুর। তাতে চলছে কায়াকিং। সন্ধ্যায় চালানো হবে পানির ফোয়ারা।

ডালিয়া, চন্দ্রমল্লিকা, ম্যাগনোলিয়া, শিউলি, হাসনাহেনা, কামিনী, বেলি, চেরিসহ দেশি-বিদেশি ফুলের সুবাসে ম–ম করছে চারপাশ। মাঠজুড়ে নানা নকশায় লাগানো হয়েছে ফুলগাছ। এছাড়াও থাকছে ১৫ প্রজাতির টিউলিপ, নৌকাবাইচ, ১০০ চিত্রশিল্পীর আর্ট প্রদর্শনী, নৌকা প্রদর্শনী, বইমেলা, ভায়োলিন-শো, ঘুড়ি উৎসব, পিঠা উৎসব, পুতুল নাচসহ প্রতি সন্ধ্যায় মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
থাকবে শিশুদের রাইড, ওয়াকওয়ে, সানসেট ভিউ পয়েন্ট, কবুতর শেড, কিডস জোন ও বিশেষ সেলফি কর্নার। ইতোমধ্যে দর্শনার্থীরা ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করেছেন এখানে।

উল্লেখ্য, ১০ বছরের বেশি সময় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলার সাগর উপকূল ঘিরে ফৌজদারহাটের ১৯৪ একর জায়গা অবৈধভাবে দখলে রেখেছিল একটি চক্র। সেখানে গড়ে উঠেছিল মাদকের রাজ্য।দেড় বছর আগে জেলা প্রশাসন জায়গাগুলো উদ্ধার করে তৈরি করে ডিসি পার্ক। উচ্ছেদের এক মাসের মাথায় প্রথমবারের মতো সাত দিনব্যাপী ফুল উৎসবের আয়োজন করেছিল জেলা প্রশাসন। এতে মানুষের সাড়া পড়ে যায়। তাই এ বছর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের সলিমপুর ইউনিয়নের ডিসি পার্কে দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত হতে যাচ্ছে ফুল উৎসব।সরেজমিন সেখানে দেখা যায়, বিস্তৃত পরিসরের ডিসি পার্কের ছায়াঘেরা একটি আঙিনায় চলছে আলো-ছায়ার লুকোচুরি খেলা। এখানে তৈরি করা হয়েছে একটি শেড। সেখানে রয়েছে বিদেশি টিউলিপ। টিউলিপের কলিগুলো দিচ্ছে উঁকি। লাল, হলুদ, গোলাপি, সাদা রঙের টিউলিপ শোভা ছড়াচ্ছে। সঙ্গে আছে লাল-হলুদ রঙের মিলিত টিউলিপ। এমন সব বর্ণিল এবং দৃষ্টিনন্দন ফুল নিয়ে আয়োজন করা হচ্ছে ব্যতিক্রমী এই ফুল উৎসব। এখানে ১২৭ প্রজাতির ফুলের পরিচিতিসহ বর্ণনা থাকবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে মাসব্যাপী শুরু হতে যাওয়া মেলা উদ্বোধন করবেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেন। চট্টগ্রামের দুই মন্ত্রী বিভিন্ন ইভেন্টে থাকবেন। বইমেলায় থাকবেন শিক্ষামন্ত্রী নওফেল। মাসব্যাপী এ উৎসব শেষ হবে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি। এবার প্রত্যেক দর্শনার্থীর পার্কে প্রবেশের জন্য ৩০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, মাসব্যাপী ফুল উৎসব ঘিরে নানা আয়োজন চলছে। ডিসি পার্কটিকে আকর্ষণীয় করে গড়ে তুলতে নানা কাজ করা হয়েছে। এবার নেদারল্যান্ডস থেকে বীজ এনে ফোটানো হয়েছে প্রায় পাঁচ হাজার টিউলিপ ফুল।
উৎসবে প্রদর্শনীর জন্য থাকবে চট্টগ্রামের চিত্রশিল্পীদের প্রায় ২০০টি চিত্রকর্ম। উৎসবে আসা দর্শনার্থীদের নিজেদের ছবির ক্যারিকেচার আঁকার ব্যবস্থাও থাকবে। আয়োজন করা হবে ঘুড়ি উৎসব, আতশবাজি, পুতুলের নাচ ও জাদু প্রদর্শনী। এ ছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন জেলা ও উপজেলার শিল্পীদের পরিবেশনায় থাকবে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কে এম রফিকুল ইসলাম বলেন, ‍‍`মাদকের রাজ্যকে ফুলের রাজ্যে পরিণত করা হয়েছে। গত বছর প্রথমবারের মতো ফুল উৎসবে লক্ষাধিক লোকের সমাগম ঘটে। মানুষের উৎসাহ দেখে এ বছর বৃহৎ পরিসরে মাসব্যাপী ফুল উৎসব শুরু করতে যাচ্ছি আমরা।’পার্কটির প্রকল্প ব্যবস্থাপক ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. আশরাফুল আলম বলেন, ডিসি পার্কে দ্বিতীয়বারের মতো ফুল উৎসবের জোর প্রস্ততি চলছে। আমরা পার্কটিকে সুসজ্জিত করতে কাজ করছি। যারা গতবার এসেছিলেন তারা এবার এলে পার্থক্য স্পষ্টই বুঝতে পারবেন। সব মিলিয়ে এবারের মাসব্যাপী উৎসবটি অনেক বেশি উপভোগ্য হবে।ইফা ল্যান্ড স্কিপ গার্ডেন কোম্পানীর দ্বারা নির্মিত ডিসি পার্ক সম্পর্কে স্বত্বাধিকারী কাউচার আল হোসাইন বলেন, দুবাইয়ের মিরাকল গার্ডেনের আদলে হচ্ছে পার্কটি, গত ২ মাস আগে থেকে ফুল সংগ্রহ করে রাখা হয়েছে।
কেননা হঠাৎ করে এতগুলো ফুল পাওয়া সম্ভব নয়। ফুল উৎসবের জন্য দিনরাত আমাদের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে ডিজাইনের কাজ শেষ হয়েছে। ফুল দিয়ে বানানো হয়েছে বিশেষ ঝর্ণা, গিটার। কাঠের নৌকার নিচে ফুল দিয়ে ডিসি পার্ক লেখা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

সাইফুদ্দিন খালেদ খসরু সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখতেন-শোকসভা।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

সাইফুদ্দিন খালেদ খসরু তাঁর কর্মের মাধ্যমে আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন। প্রগতিশীল আন্দোলনের কর্মী ও বিশিষ্ট পেশাজীবি সাইফুদ্দিন খালেদ খসরুর শোকসভার নগরীর থিয়েটার ইনিস্টিউট মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়। সাইফুদ্দিন খালেদ খসরু এর নাগরিক শোকসভা কমিটির আহবায়ক অধ্যাপক মহীবুল আজিজ এর সভাপতিত্বে এবং আবৃত্তিশিল্পী ও নাগরিক কমিটির সদস্য মো: মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় শোকসভায় বক্তব্য রাখেন, সাইফুদ্দিন খালেদ খসরু এর নাগরিক শোকসভা কমিটির সদস্য সচিব মোঃ আতিক, সাবেক ছাত্রনেতা ও ঢাকা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা. ফজলে এলাহী মিলাদ, কবি ও সাংবাদিক অভীক ওসমান, সমাজ সমীক্ষা সংঘের সভাপতি কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, কবি ও সাংবাদিক নাজিমুদ্দীন শ্যামল, শিক্ষাবিদ আজাদ বুলবুল, খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত বসু, যুব ইউনিয়ন চট্টগ্রাম জেলা কমিটির সভাপতি মোঃ শাহ আলম, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক এড. অসীম কুমার দাশ, সমাজ সমীক্ষা সংঘের নির্বাহী পরিচালক কল্লোল দাশ, নজরুল সংগীত শিল্পী সংস্থার সিনিয়র সহ সভাপতি এবং বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক দীপেন চৌধুরি, সম্মিলিত আবৃত্তি জোটের সহ সভাপতি প্রণব চৌধুরী, চট্টগ্রাম বিশ^বিদ্যালয়ের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইউসুফ হোসেন ভুইঁয়া, বিশিষ্ট ব্যাংকার অশ্রুত কুমার চক্রবর্তী, সমাজ সমীক্ষা সংঘের প্রতিষ্ঠাকালীন পরিচালক সুমন চৌধুরী মনি, ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী জহিরুল আলম, সাইফুদ্দিন খালেদ খসরুর কন্যা যাহবা শবনম আভা প্রমুখ। সভায় বক্তারা সাইফুদ্দিন খালেদ খসরুর স্মৃতিচারণ করে বলেন, আমৃত্যু তিনি ছিলেন একজন অসাম্প্রদায়িক, বিজ্ঞানমনষ্ক, মানবিক মানুষ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তার শৈশব কৈশোর ও ছাত্র জীবনে তিনি বিভিন্ন মননশীল, ঋদ্ধ, গুণী ব্যক্তিদের নিত্য সংস্পর্শে ছিলেন। একটি সুরুচি সম্পন্ন সাংস্কৃতিক আবহে গড়ে ওঠেছে তার প্রাথমিক বেড়ে ওঠার দিনগুলো। আমৃত্যু তিনি প্রগতিশীল আন্দোলনের সাথে যুক্ত ছিলেন। সাইফুদ্দিন খালেদ খসরু বিশ্বাস করতেন মুক্ত মানুষের মুক্ত সমাজে। যুক্তি ও বুদ্ধির মুক্তিতে সাইফুদ্দিন খালেদ খসরুর আশাবাদ ছিল সবসময়।

বক্তারা আরো বলেন, আধুনিকতার নামে ভোগবাদী সমাজ, শোষণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যুক্ত থেকে সাইফুদ্দিন খালেদ খসরু সমাজ বদলের স্বপ্ন দেখতেন। প্রকৃত মানুষের মানবিকতা, উদারতা নিয়ে মানুষের জন্য কাজ করার স্বপ্ন ছিল সাইফুদ্দিন খালেদ খসরুর। তিনি সকলের কাছে একই সাথে আস্থা, ভালোবাসা ও নির্ভরতার মানুষ ছিলেন। স্মরণ সভার শুরুতে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে সাইফুদ্দিন খালেদ খসরুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পন করা হয় এবং তাঁর স্মৃতির স্মরণে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

অভিনেত্রী মাসুকা নাসরিন রাকার জানা অজানা গল্প

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

 

প্রতিটি নারীর সফলতার পিছনে মা বাবার যেমন দায়িত্ব থাকে তেমনি নিজেরও ইচ্ছা শক্তি প্রবল থাকে। যার ফলে একজন নারী যেতে পারে বহুদূর। নিজের ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে আজকের নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে। তেমনি ভাবে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে সফল নারী হিসেবে গড়ে তুলেছেন মাসুকা নাসরিন রাকা। যিনি একাধারে মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্রে অভিনয়ের পাশাপাশি মডেল, গায়িকা, মাইম শিল্পী, টিভি উপস্থাপক, আবৃত্তিকার, সাংবাদিক, উদ্যোক্তা ও একজন সফল ব্যবসায়ি। আজ পাঠকের কাছে তুলে ধরবো সফলতা নিয়ে এগিয়ে যাওয়া অভিনেত্রী মাসুকা নাসরিন রাকা’র জানা অজানা গল্প।

মাসুকা নাসরিন রাকা ১৯৭৭ সালে শিশু শিল্পী হিসেবে ” কচি কাঁচার আসর “এর নাটকে অভিনয় করেন যেখানে তিনি “নতুন কুঁড়ি” (১৯৭৯) নৃত্য পরিবেশনার জন্য পুরষ্কার লাভ করেন। বিটিভির অনেক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে শিশুশিল্পী, আবৃত্তিকার হিসেবেও উপস্থিত ছিলেন রাকা। তিনি ঘাসফুল খেলাঘর আসরের সদস্য ছিলেন, যার মাধ্যমে তিনি নাটক, গান, আবৃত্তি এবং নৃত্যে অংশগ্রহণ

করেছিলেন। কৈশোরে তিনি ঢাকা ইয়ুথ কয়ার এর সদস্য ছিলেন যার মাধ্যমে তিনি অনেক গানের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ১৯৯০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করার সময় একজন থিয়েটার শিল্পী হিসেবে তার যাত্রা শুরু করেন এবং আরামবাগ থিয়েটার গ্রুপের সদস্য ছিলেন রাকা। “সাত ঘাটের কানাকড়ি”, রাক্ষুসি “শেষ রক্ষা ” এবং “রূপবান” এর প্রধান চরিত্রে বিখ্যাত থিয়েটার নাটকে অভিনয় করেছিলেন রাকা। তিনি প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, টিএসসি অডিটোরিয়ামে একজন মাইম শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন, ডি.ইউ.এম.বি. (১৯৯১ সালে নির্মিত) এবং লোসাউকের সদস্য ছিলেন। এই দলগুলির মাধ্যমে তিনি ১৯৯৩ সালে নরওয়ের অসলোতে লোসাউকের অনুষ্ঠানে এবং ১৯৯৪ সালে নরওয়ের ট্রন্ডহাইমে দ্য ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্ট ফেস্টিভ্যালে প্রথম মহিলা একক মাইম শিল্পী হিসেবে অভিনয় করেছিলেন। এখানে ডি.ইউ.এম.বি.-এর সাথে একটি দলগত পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করেছিলেন মাসুকা নাসরিন রাকা।

অভিনেত্রী রাকা তার আরামবাগ থিয়েটার গ্রুপের মাধ্যমে তার প্রথম নাটকে উপস্থিত হয়েছিলেন। ১৯৯১ সালের ঈদুল ফিতরে বিটিভিতে মুক্তি পায় মমতাজ উদ্দিন আহমেদ পরিচালিত “আমরা দুইটি ভাই” নাটক, যেখানে তিনি আসাদুজ্জামান নুরের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন। ১৯৯১ সালে বিটিভিতে আহসান হাবীব পরিচালিত “কোথাও খোরন” নাটকের এর বিশেষ অডিশনের মাধ্যমে প্রধান প্রধান চরিত্রে আত্মপ্রকাশ করেন এবং মনোজ সেনগুপ্তের বিপরীতে অভিনয় করেছিলেন রাকা। ১৯৯৩ সালে বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হন এবং ৩০টি নাটক, ১০টি প্যাকেজ নাটক, ৪টি ধারাবাহিক ও ২টি টেলিফিল্মে অভিনয় করেছিলেন তিনি। তার ধারাবাহিক নাটক “মাটিরমায়া”, “আপন নিবাস”, “অতন্দ্র প্রহর” এবং “তথাপি” এর মাধ্যমে পরিচিতি লাভ করেছিলেন। নাটকে তার উল্লেখযোগ্য কাজগুলি হল: “মন বলে তুমি”,

“ভালোবাসবে না কেন মন”, “সোনারবলই” এবং ” সেই আমরা”। তার দুটি টেলিফিল্ম হল “মা এর জন্য সুইজারল্যান্ড” (২০০৩) এবং “মন পাখি” (২০০৬)। এছাড়া মিস বাংলাদেশ ১৯৯৫-এ রানার-আপ চ্যাম্পিয়ন হন, যার মাধ্যমে তিনি টেলিভিশন এবং সিনেমা জুড়ে প্রচুর পরিচিতি অর্জন লাভ করেছিলেন মাসুকা নাসরিন রাকা।

তিনি ১৯৯৪ সালে শেখ নেয়ামত আলী পরিচালিত “আমি নারী” নামে একটি তথ্যচিত্রে অভিনয় করেন। তবে ১৯৯৭ সালে ইলিয়াস কাঞ্চনের বিপরীতে “সুন্দরী মিস বাংলাদেশ” দিয়ে থিয়েটারে অভিষেক হয়। তিনি ২৫টি ছবিতে অভিনয় করেছেন, তার উল্লেখযোগ্য সিনেমা হলো “সুন্দরী মিস বাংলাদেশ”, “কুংফু নায়ক”, “পেশাদার খুনি”, “ডাইরেক্ট অ্যাকশন”, “বিদ্রোহী মাস্তান”, “ওস্তাদের ওস্তাদ”, “জলন্ত বিশ্বফ্রন”, “লোহার শিকল” এবং “ক্যাপ্টেন মারুফ”। চলচ্চিত্রে আসার পর, বেশিরভাগ অ্যাকশন ছবিতে অভিনয় করার কারণে তিনি ২০০০ সালে ফাইটার কারাতে প্রশিক্ষণ নেন এবং এতে ব্ল্যাকবেল্ট অর্জন করেন। শুধু অভিনয় নয় তার আবৃত্তি ক্যারিয়ারও সাফল্য এবং জনপ্রিয়তায় ভরপুর ছিল। তার অন্যতম উল্লেখযোগ্য প্রকল্প ছিল কামরুল হাসান মঞ্জুর সাথে “দুজোনে মিলে কবিতা” যা “একুশে বই মেলা” (১৯৯৩) এর সেরা বিক্রেতা ছিল।

তিনি ১৯৯০-১৯৯২ সাল পর্যন্ত “সাপ্তাহিক সময় সংলাপ ম্যাগাজিন”, “সাপ্তাহিক দেশ দিশা ম্যাগাজিন” এবং দৈনিক বাংলাবাজার পত্রিকা’র সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে “নৃত্যের তালে তালে” এবং ” আত্নরক্ষায় মার্শাল আর্ট” (২০০৫-২০১০) এ উপস্থিত হন যা বিটিভি, বৈশাখী টিভি এবং মাইটিভিতে প্রচারিত হয়। মডেল এবং প্রথম নাটক ১৯৯২ সালে শুরু করেছিলেন। তিনি “বেঙ্গল ফাইন সিরামিকস”, “আল-আমিন বিস্কুট”, “জিয়া প্রিন্ট শাড়ি” এবং “শ-ওয়ালেস চা” এর জন্য টেলিভিশন বিজ্ঞাপনে উপস্থিত ছিলেন। তিনি ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত “উজ্জলা লিকুইড ব্লু”-এর জন্য একটি পশ্চিমবঙ্গের সহ-প্রযোজনার বিজ্ঞাপনেও উপস্থিত হয়েছিলেন। তিনি শুধু অভিনেত্রী নই তিনি একজন সফল উদ্যোক্তা। কক্সবাজারে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর রিসোর্ট নামের সহ-মালিকাধীন রেস্তোরাঁ এবং স্টোর পরিচালনা করে আসছেন এবং কক্সবাজারের উইমেন্স চেম্বার অব কমার্সের পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। হয়েছেন পরিচালক সমিতির সদস্য এবং আসন্ন প্রকল্প “অন্তোরে বাহিরে” নিয়ে কাজ করছেন মাসুকা নাসরিন রাকা।

ব্যক্তিগত জীবন : মাসুকা নাসরিন রাকা ১৯৭০ সালের ১১ নভেম্বর ঢাকা শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আব্দুল মান্নান মাতা কামরুন্নাহার মন্নান। রাকার পিতা একজন উচ্চ শিক্ষিত ব্যক্তি ছিলেন। অর্জন করেছিলেন গণিত ও রসায়নে ডাবল মার্স্টাস ডিগ্রী। ১৯৫৬-১৯৮৬ সাল পর্যন্ত নবকুমার ইনিস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক ছিলেন এবং ড. শহীদুল্লাহ কলেজের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যক্ষ ছিলেন।

১৯৪৭ সালে বাংলাদেশের চাঁদপুরের উত্তর মতলবের একলাছপুর উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তিনি। বাংলাদেশের স্কুল শিক্ষক সমিতি, কলেজ শিক্ষক সমিতি ও জাতীয় শিক্ষক সমিতির সভাপতিও ছিলেন। ১৯৮৬ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর মেঘনা নদীতে লঞ্চ-নৌকা সংঘর্ষে মারা যান রাকা’র পিতা আব্দুল মান্নান । রাকা’র মাতা কামরুন নাহার মন্নান ” বেগম পত্রিকা’র ” একজন লেখিকা, কবি এবং উইলস লিটল ফ্লাওয়ার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একজন শিক্ষিকা ছিলেন। তিনি ২০১৪ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান।

মাসুকা নাসরিন রাকা “আজিমপুর গার্লস হাই স্কুল” থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা, বেগম বদরুন্নেসা গার্ল কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা এবং স্ট্যামর্ফোড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান ও মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে তিনি স্ট্যামর্ফোড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিল্ম ও মিডিয়ায় ডাবল মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। তিনি ২০০১ সালের ২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মার্শাল আর্টের জনক, প্রযোজক, পরিচালক ও অভিনেতা ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলমকে গোপনে বিয়ে করলেও ২০০২ সালের ২ সেপ্টেম্বর এক সংর্বধনার মধ্যে দিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে তাদের বিয়ের বিষয়টি ঘোষণা দেন। ত্রিশ

বছরের ভালোবাসার বন্ধন আর ২৫ বছর সংসার জীবনে এই দম্পতির তাজ ওয়ার আলম ও রেজ ওয়ার আলম নামের দুই পুত্র সন্তান রয়েছে। চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর কক্সবাজার কলাতলীস্থ ওস্তাদ জাহাঙ্গীর রির্সোটে জমকালো আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালন করলেন ওস্তাদ জাহাঙ্গীর আলম ও মিস সুন্দরী বাংলাদেশ মাসুকা নাসরিন রাকা’র যুগলবন্দী জীবনের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ