আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

মৌলভীবাজারে সরকারি খাল দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ।

তিমির বনিক মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজার:

মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আজমেরু এলাকায় কৃষিকাজে ব্যবহৃত সরকারি খাল দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নাসরিন চৌধুরী তাৎক্ষণিক সেখানে অভিযান চালিয়ে নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিয়েছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, মোস্তফাপুর ইউনিয়নের আজমেরু এলাকায় রাস্তার পাশের সরকারি খাল বা গোপাট দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন ফখরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি।

খালটির অবস্থান মোকামবাজার অফিস বাজার সড়ক থেকে দক্ষিণ দিক হয়ে আজমেরু এলাকা হয়ে কোদালী ছড়া পর্যন্ত। প্রায় ৪০ বছর আগে গোপাট হিসেবে পরিচিত ছিল। পরে ওই গোপাটের পশ্চিম পাশে খাল খনন করে পূর্ব পাশ দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হয়। ওই খালের বেশ কিছু অংশ দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করছেন ফখরুল ইসলামসহ আরও এক ব্যক্তি।

এ বিষয়ে স্থানীয় উপকারভোগী কয়েকজন কৃষক খাল দখল করে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করায় আপত্তি করেন। ফখরুল ইসলাম গংরা কৃষকদের আপত্তি তোয়াক্কা না করে জোরপূর্বক দ্রুত সীমানা প্রাচীর নির্মাণকাজ শুরু করেন।

পরে এ নিয়ে স্থানীয় এলাকাবাসীর পক্ষে কৃষক রাজু মিয়া গত (৩১ জানুয়ারি) বুধবার দুপুরে মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে ওই দিন বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে একটি টিম সরেজমিন পরিদর্শন করে অবৈধভাবে খাল বা গোপাট দখলের সত্যতা পান। পরে তারা খাল বা গোপাটের ভূমি বাদ দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করে দেন।

উল্লেখ্য, ওই খালের উত্তর পাশে রাজু মিয়ার বাড়ির সীমানা ও দক্ষিণ পাশে শাহীন মিয়ার কৃষি জমির সীমানা রয়েছে। তারা সহ অন্যান্য কৃষি জমির মালিকদের খালের বাইরে তাদের সীমানার অবস্থান। দীর্ঘ দিন থেকে ওই খাল থেকে পানি সেচ দিয়ে কৃষি কাজ করে আসছেন এলাকাবাসী। তবে খালটি ভরাট হওয়ায় স্বেচ্ছাশ্রমে খননের জন্য সম্প্রতি জেলা প্রশাসক বরাবর এলাকাবাসীর পক্ষে একটি আবেদন করা হয়েছে। খালটি খনন হলে কৃষি কাজসহ ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

এ বিষয়ে ইউএনও নাসরিন চৌধুরী জানান, আজমেরু মৌজার গোপাটের সরকারি খাস ভূমিতে অবৈধ সীমানা প্রাচীর নির্মাণ সংক্রান্ত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সরেজমিনে তদন্তক্রমে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, মোকামবাজার অফিসবাজার সড়কের প্রতিবন্ধী পুনর্বাসন কেন্দ্রের উত্তর পাশে সরকারি গাইড ওয়াল ও সড়ক দখল করে রিপন গাজী নামের জনৈক ব্যক্তি সুকৌশলে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করেন। রিপন গাজী প্রথমে কৃষি জমিতে মাটি ভরাট করার সময় গাইড ওয়ালটির ওপর মাটি ফেলে তার দখলে নেন। তার ওপর বাঁশ ও কঞ্চি দিয়ে কিছু সবজি গাছ ও কচু লাগিয়ে আড়াল করেন। এরপর বাঁশের বেড়া দেন। সর্বশেষ তিনি কাঠ ও টিন দিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে পুরো সরকারি গাইড ওয়াল ও রাস্তার ভূমি অবৈধভাবে নিজ দখলে নেন।
এ বিষয়ে গিয়াসনগর ইউপি সদস্য ও চেয়ারম্যানকে মৌখিকভাবে এলাকাবাসী জানালে কোনও পদক্ষেপ এই পর্যন্ত নেওয়া হয়নি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফখরুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি কথা বলতে নারাজ।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

ভোলায় জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত ।

দ্বীপজেলা ভোলার আধুনিক সাহিত্য সংগঠন জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের ১৫ সদস্য বিশিষ্ট কার্যনির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে ।গতকাল ৩ ডিসেম্বর ২০২৫ সন্ধ্যায় ভোলা সদরের গঙ্গাকীর্তি হারুন অর রশিদ স্মৃতি পাঠাগারে অনুষ্ঠিত জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের সাধারণ সভায় সংগঠনের আহ্বায়ক শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম এর সভাপতিত্বে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ রোদসী কৃষ্টিসংসারের চেয়ারম্যান ও জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার প্রতিষ্ঠাতা ও সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র প্রভাষক কবি রিপন শান, জাতীয় সাহিত্য সাংস্কৃতিক ঐক্যজোট ভোলা জেলা শাখার সদস্য সচিব প্রভাষক কবি মিলি বসাক, জলসিঁড়ির সদস্য সচিব কবি মহিউদ্দিন মহিন, জাতীয় কবিতা পরিষদ ভোলার সাংগঠনিক সম্পাদক ও জলসিঁড়ির সংগঠক কবি নীহার মোশারফ, আবৃত্তিশিল্পী সমাজসেবক মীর মোশারেফ অমি প্রমুখ ।

সভায় উপস্থিত সদস্যদের ভোটাভুটির মাধ্যমে শিশুসাহিত্যিক শাহাবউদ্দিন শামীম কে সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সাংবাদিক কবি রিপন শানকে নির্বাহী সভাপতি, সিনিয়র প্রভাষক সংগঠক মহিউদ্দিন মহিনকে সাধারণ সম্পাদক, কবি গবেষক কবি নীহার মোশারফ কে সাংগঠনিক সম্পাদক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট জলসিঁড়ি সাহিত্য আসরের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫- ২০২৭ গঠন করা হয়েছে ।

কমিটির সহ-সভাপতিগণ হচ্ছেন- সিনিয়র প্রভাষক কবি মিলি বসাক, কবি মোঃ জুলফিকার আলী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গণ হচ্ছেন- কবি আল মনির, আবৃত্তিশিল্পী মীর মোশারেফ অমি । অর্থ ও দপ্তর সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি বিলকিস জাহান মুনমুন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন কবি শাহনাজ পারুল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন সাংবাদিক মুহাম্মদ নুরুল্লাহ আরিফ । নির্বাহী সদস্যগণ হচ্ছেন- অধ্যক্ষ কবি এম এস জালাল বিল্লাহ, কবি দিলরুবা জ্যাসমিন, কবি চৌধুরী সাব্বির আলম এবং কবি এরশাদ সোহেল ।

আসছে ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫ শনিবার বিকেল ৪ টায় ভোলা প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিতব্য জলসিঁড়ির মাসিক সাহিত্য সভায় নবনির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠিত হবে ।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ