আজঃ শনিবার ৬ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রামে পুলিশের সঙ্গে হকারদের দফায় দফায় সংঘর্ষ ১২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা।

এম মনির চৌধুরী রানা চট্টগ্রাম:

বানিজ্য নগরী:

চট্টগ্রামের নিউমার্কেট এলাকায় হকারদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের পেশকার মো. আবু জাফর চৌধুরী বাদী হয়ে এ মামলা করেন। মামলায় ১১ জনের নাম উল্লেখ করে এক হাজার ২০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে।

এ ছাড়া সংঘর্ষে পুলিশের ৫ সদস্য আহত হওয়ার ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকেও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার আসামিরা হলেন মাসুম (৪৫), মিরন হোসেন মিলন (৫০), শাহ আলম ভুঁইয়া (৪৭), নুরুল আলম লেদু (৫৯), জসিম মিয়া (৫২), শাহীন আহমদ (৪৭), নূর মোহাম্মদ (৪৮), বাবু ঋষি বিশ্বাস (৫১), হারুনুর রশিদ রনি (৪৮), তারেক হায়দার (৩৮) ও সোহেল (৩৫)। এ ছাড়া অজ্ঞাতনামা আরও ১২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলায় ৮ জনকে সাক্ষী করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নগরীর পথচারী ও নাগরিকদের রাস্তায় চলাচলে সৃষ্ট প্রতিবন্ধকতা দূর করার লক্ষ্যে নিউমার্কেট ও স্টেশন রোড এলাকায় অবৈধ ও বেআইনিভাবে রাস্তা ও ফুটপাত দখলকারী বিভিন্ন শ্রেণির ভাসমান হকারদের উচ্ছেদে ৮ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার দিনব্যাপী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়।

চট্টগ্রামের ইতিহাসে বড় এই অভিযানে নিউমার্কেট ও স্টেশন রোডের বিভিন্ন রাস্তা এবং ফুটপাত দখলকারী সকল অবৈধ হকারকে উচ্ছেদ করা হয়। উচ্ছেদের মাধ্যমে খালি হওয়া ফুটপাত ও রাস্তায় যাতে অবৈধ হকারগণ আর কোন ও দোকান বসাতে না পারে এজন্য সিটি করপোরেশনের ম্যাজিস্ট্রেটগণ পুলিশসহ তাদের টিম নিয়ে প্রতিদিন উক্ত স্থানসমূহ তদারকি করে আসছেন।

গতকাল সোমবার (১২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতি সর্ববিদ্যা, মাহরিন ফেরদৌসী, মো. সাব্বির রহমান সানি, রেজাউল করিম রাস্তা, ফুটপাত ও নালা পুনর্দখল ঠেকাতে ঘটনাস্থলে মনিটরিং করতে যান। এ সময় আসামিরা দলবদ্ধ হয়ে বিভিন্ন উসকানিমূলক স্লোগান, চিৎকার চেঁচামেচি ও যানবাহন ভাঙচুর করে। নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটদের ওপর লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক নিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে কর্তব্যকাজে বাধা প্রদান করে। একপর্যায়ে পুলিশ আসামিদের শান্ত করার চেষ্টা করলে ও তারা পুলিশের কথা না শুনে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।

ইটপাটকেলের আঘাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট চৈতি সর্ববিদ্যা পায়ে আঘাত পান। এ ছাড়া হামলায় সিটি করপোরেশনের উচ্ছেদকর্মী রুহুল আমিন (৫০), স্ট্রাইকিং ফোর্সের সদস্য দীলিপ দাশসহ (৪৫) পুলিশের কয়েকজন সদস্য আহত হন। সিটি করপোরেশনের তিনটি মিনিট্রাক ও একটি পেলোডার গাড়ির গ্লাসসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশের ব্যাপক ক্ষতি করে।

কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এসএম ওবায়েদুল হক বলেন, গতকাল ১২ ই ফ্রেরুয়ারী সোমবার বিকালে নিউমার্কেট এলাকায় ফুটপাত থেকে হকার উচ্ছেদে গেলে তারা পুলিশ এবং সিটি করপোরেশনের লোকজনের ওপর হামলা করে। এ ঘটনায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন।

এ ঘটনায় পৃথক দুটি মামলা হয়েছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে ১২০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেছে। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া এবং তাদের সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনায় আরও একটি পৃথক মামলা করা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ