আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে চসিক প্রকৌশলীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে কর্মশালা অনুষ্ঠিত

:

সড়ক দুর্ঘটনা কোনো দৈব বিষয় নয়। এর পিছনে নানান কারণ কাজ করে যেগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। সড়ক ডিজাইনে ত্রæটি, ফিটনেসবিহীন যান চলাচল, চালকের অদক্ষতাসহ বিভিন্ন কারণেই রোড ক্র্যাশ হতে পারে।
সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) প্রকৌশলীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত কর্মশালায় একথা বলেন প্রধান প্রকৌশলী শাহিন-উল ইসলাম চৌধুরী। কর্মশালার উদ্বোধনী অন্ষ্ঠুানে তিনি বলেন, নগরীর সড়কগুলোকে নিরাপদ করতে চসিক, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), পুলিশ সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি আশা করেন, এই কর্মশালা চসিক প্রকৌশলীদের ভবিষ্যতে নিরাপদ সড়ক নির্মাণে সহায়তা করবে।আজ বৃহস্পতিবার নগরীর লালদিঘীতে চসিক লাইব্রেরি ভবনের হলরুমে চসিক প্রকৌশলীদের জন্য ‘কোলাবোরেটিভ ডিজাইন লার্নিং-অন গ্রাউন্ড টেস্ট’ শীর্ষক দিনব্যাপী কর্মশালার আয়োজন করে ওয়ার্ল্ড রিসোর্সেস ইনস্টিটিউট (ডব্লিউআরআই)। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রকৌশলীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আয়োজিত কর্মশালা সিরিজের এটা তৃতীয় কর্মশালা।

সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিতে বৈশ্বিক মানদণ্ড অনুসরণ করে স¤প্রতি নগরীর ‘কাপ্তাই রাস্তার মাথা’ ইন্টারসেকশনের ডিজাইন করেছে ডব্লিউআরআই। ডিজাইনটির কার্যকারিতা যাচাই করার জন্য আগামী সাতদিন তা অস্থায়ীভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পর্কে চসিক প্রকৌশলীদের সার্বিক ধারণা প্রদান করতে কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়।

চট্টগ্রাম নগরীতে রোড ক্র্যাশে মৃত্যু প্রতিরোধে ব্লæমবার্গ ফিলানথ্রপিস ইনিশিয়েটিভ ফর গ্লোবাল রোড সেফটি’র (বিআইজিআরএস) সাথে কাজ শুরু করেছে চসিক। বিআইজিআরএসের অংশীদার হিসাবে, প্রতিষ্ঠানটি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ভৌগলিক এবং স্থানীয় প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে নিরাপদ সড়ক ডিজাইন ও নির্মাণে শহরগুলিকে সহায়তা করে থাকে।

এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম শহরে ইন্টারসেকশন ও সড়ক ডিজাইনের বিষয়ে চসিক প্রকৌশলীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে এর আগে ‘ক্রিয়েটিং স্রি বটস ফর অল’ এবং ‘কোলাবোরেটিভ ডিজাইন লার্নিং-ইন্টারসেকশন ডিজাইন’ শীর্ষক কর্মশালা আয়োজন করা হয়।

অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মাসুদ আহমেদ ও ডেপুটি কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) জয়নুল আবেদীন বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। কর্মশালার শুরুতে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন মাস্টারপ্ল্যান প্রস্তুতি প্রকল্পের উপ-দলনেতা ড. মোহাম্মদ নুরুল হাসান চট্টগ্রাম নগরীতে নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থা নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

কর্মশালায় ডব্লিউআরআই-এর পরামর্শক স্থপতি ফারজানা ইসলাম তমা অংশগ্রহণকারী প্রকৌশলীদের সামনে ‘কাপ্তাই রাস্তার মাথা’ ইন্টারসেকশনের ডিজাইন প্রক্রিয়া তুলে করেন। তিনি বলেন, ‘সড়কের যেকোনো ডিজাইন স্থায়ীভাবে বাস্তবায়নের পূর্বে পরীক্ষামূলকভাবে এর কার্যকারিতা যাচাই করা উচিৎ। এর ফলে ডিজাইনের কোনো ত্রæটি থাকলে তা সমাধান করা যায়। ‘কাপ্তাই রাস্তার মাথা’র ক্ষেত্রেও আগে পরীক্ষামূলকভাবে সাতদিন ডিজাইনটি যাচাই করা হবে। এটি সফল হলে চসিক তা স্থায়ীভাবে বাস্তবায়ন করবে।’
এরপর অংশগ্রহণকারী প্রকৌশলীরা কর্মশালার আলোচনার ভিত্তিতে একটি ইন্টারসেকশন ডিজাইন করেন। পরে তারা সরেজমিনে ‘কাপ্তাই রাস্তার মাথা’ ইন্টারসেকশনটি পরিদর্শন করেন। এসময় তারা সেখানে ইন্টারসেকশনের নতুন ডিজাইনের ট্রায়াল উদ্বোধন করেন। কর্মশালায় চসিকের ২৬ জন, সিডিএ’র ২ জন ও সড়ক বিভাগের একজন প্রকৌশলী এবং সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের ১০ জন কর্মকর্তা অংশগ্রহণ করেন।

————
প্রান্ত/বাবুল, ১০.১০ টা ঘন্টা, ২০২৪।।

 

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রামে স্কুল ও দোকানে আগুন

চট্টগ্রাম মহানগরীর ইপিজেড থানাধীন কলসি দিঘির পাড় উত্তর রেল গেট এলাকায় একটি কেজি স্কুল ও পাশের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার ভোরে হযরত শাহ আলী কেজি স্কুল ও দোকানে আগুন লাগে।

সিইপিজেড ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার শাহাদাত হোসেন জানান, ভোরে খবর পেয়ে সোয়া ৬টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে। প্রায় ৪০ মিনিটের চেষ্টায় সকাল পৌনে ৭ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। তবে দ্রুত পদক্ষেপে প্রায় ৫ লাখ টাকার মালামাল উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা জানা যায়নি।

মশা নিধনে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহার শুরু চসিকের।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন প্রথমবারের মতো মশা নিয়ন্ত্রণে আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড বিটিআই ব্যবহারের কার্যক্রম শুরু করেছে। সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশক্রমে সোমবার সকাল সাড়ে ৯টায় ৩৯ নং দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি শুরু হয়। কার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মোঃ শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী এবং অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক) মশা নিয়ন্ত্রণে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অবলম্বন করে নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর ১৭ নম্বর বাকলিয়া ওয়ার্ডের সৈয়দ শাহ রোডের সামনের খালে পরীক্ষামূলকভাবে বিটিআই লার্ভিসাইড প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন। অর্জিত অভিজ্ঞতার আলোকে আজ থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ে বিটিআই প্রয়োগ শুরু করল চসিক।

চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত ফগিং, লার্ভিসাইড ছিটানো, নালা–নর্দমা পরিষ্কার, আবর্জনা অপসারণ এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম আরও জোরদার করা হয়েছে। নতুন প্রজন্মের আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে আরও কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন।

বিটিআই হলো একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড, যা বিশেষভাবে মশা, ব্ল্যাক ফ্লাই ও ফাঙ্গাস গ্ন্যাটের লার্ভা দমনে ব্যবহৃত হয়। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, বিটিআই মানুষের শরীর, গৃহপালিত প্রাণী, মাছসহ অন্যান্য পরিবেশবান্ধব প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর নয়; এমনকি উদ্ভিদ ও জলজ বাস্তুতন্ত্রেও কোনো বিষাক্ত প্রভাব ফেলে না। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো বাহক–বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি একটি নিরাপদ ও বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ