আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

নাগেশ্বরী হাসপাতালে ইউনিসেফের প্রকল্পে হরিলুট

নুরুন্নবী সরকার কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউনিসেফের অর্থায়নে ওয়াশ ফিট প্রকল্পে ডিএসকের (দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র) উদাসীনতায় হরিলুটের অভিযোগ উঠেছে। ইউনিসেফ বাংলাদেশ সুত্রে জানাযায়,প্রায় ৩০লক্ষ টাকা ব্যয়ে কুড়িগ্রামের তিনটি উপজেলার মধ্যে নাগেশ্বরী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও ওয়াশ ফিট (পয়ঃনিষ্কাশন,বর্জ্য ব্যবস্থাপনা) প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে। এ বিষয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র ডিএসকের মাঠ পর্যায়ের নিষ্কৃয়তায় স্ব-ঘোষিত ঠিকাদার ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দালাল চক্রের মাধ্যমে প্রকল্পের অর্থ হরিলুটের মহোৎসব চলছে।

সরেজমিনে দেখাযায় দরপত্র ছাড়াই গোপনে পছন্দের ঠিকাদার নিয়োগ,মনগড়া ব্যক্তিদের নিয়ে প্রকল্প বাস্থবায়ন কমিটি গঠন,নিম্ন মানের উপকরণ দিয়ে রাতের আধারে তরিঘরি করে প্রকল্পের কাজ সম্পন্নকরণ সহ বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা মিলেছে।
এসব বিষয়ে ইউনিসেফ বাংলাদেশের মিডিয়া স্পেশালিষ্ট ফারিয়া সেলিম ও মিডিয়া উইং অফিসার ফারজানা সুলতানার নিকট জানতে চাইলে তারা জানায়, মাঠ পর্যায়ে প্রকল্প তদারকি করার মতো ইউনিসেফের অতো জনবল নেই। ওয়াশ ফিট প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ডিএসকের কাজে অবহেলার অভিযোগ পেলে বিষয়াটি খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে প্রকল্প বাস্কবায়ন সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকল্প ব্যবস্থাপক ডিএসকের এম এ রব পাটোয়ারী অসংলগ্ন কথাবার্তা বলেন। তিনি জানায়, এটা সরকারি কাজ আপনারা সরকারকেই জিজ্ঞাসা করেন।

অন্যদিকে প্রতিবেদক রাতের আধারে চলা প্রকল্পের কাজ দেখতে চাইলে প্রকল্প সহকারী প্রোকৌশলী নাবিদ ফয়সাল জানায়, কাজ এখনো শুরু হয়নি,কাজ শুরু হলেও সরকারের অনুমতি ছাড়া সাংবাদিকদের কাজ দেখা নিষেধ। তবে জেলা সিভিল সার্জন ডাক্তার মঞ্জুর এ মুর্শেদ বলেন,ইউনিসেফের প্রকল্পটি বাস্তবায়নের বিষয়ে আমাকে তেমন কিছুই জানানো হয়নাই। দুয়েক বার মিটিং করেছে এই যা।
এদিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন গুরুতর অভিযোগ করে বলেন,আমার সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ঠিকাদার নিয়োগ করা হয়েছে। কাজ কবে কিভাবে বাস্তবায়ন করা হবে এসব বিষয়ে আমার জানা নাই এবং হস্তক্ষেপ করার এখতিয়ারও আমার নেই।

অপরদিকে ঠিকাদার পরিচয় দেয়া স্বঘোষিত ছাত্র সমাজের বহিস্কৃত নেতা আব্দুল (ছদ্ম নাম) সংসদ সদ্যসের নাম ভাঙ্গিয়ে বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ইউনিসেফের কাজটা আমি করছি, এমপি সাহেবও বিষয়টি জানেন। কাজের অসংগতির বিষয়ে আপনারা লিখিয়েন না,প্লিজ। আপনাদের সম্মানির বিষয়টা দেখবো। এছাড়াও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ডাক্তার সাহেব আলী ও সদস্য ডাক্তার ফতেখার উল ইসলাম এ বিষয়ে প্রতিবেদককে জানায়, কমিটিতে আমাদের নাম ও স্বাক্ষর থাকলেও আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানিনা।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

কুষ্টিয়ায় হাত-পা বাঁধা অবস্থায় বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় হাত–পা বাঁধা অবস্থায় খাইরুন নেছা (৬০) নামের এক বয়স্ক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার রামচন্দ্রপুর মানিকের বাঁধ এলাকার পাশ থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত নারী হলেন ঐ এলাকার মৃত রজব আলীর মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সকালেই মানিকের বাঁধের পাশে পানিতে ভেসে থাকা একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে তাঁরা পুলিশে খবর দিলে ভেড়ামারা থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।

এ বিষয়ে ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহাম্মদ জাহেদুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, তাঁকে হত্যা করে হাত–পা বেঁধে এখানে ফেলে রাখা হয়েছে।

বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছি। তদন্তে যা বের হবে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

কুষ্টিয়ায় বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় সোহাগ হোসেন নামের এক রাজমিস্ত্রির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে দুটি পিস্তল ও একটি ওয়ান শুটারগান উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে ওসমানপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওসমানপুর কলপাড়া গ্রামে এই অভিযান চালান সেনাসদস্যরা। আজ শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় খোকসা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোশাররফ হোসেন এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ক্যাপ্টেন মেহেদীর নেতৃত্বে কুষ্টিয়া সেনাক্যাম্পের রওশন আরা রেজিমেন্ট আর্টিলারি ইউনিটের একটি দল ওসমানপুর গ্রামের সোহাগ হোসেন নামের এক যুবকের বাড়িতে অভিযান চালায়। এ সময় বাড়ি তল্লাশি করে দুটি পিস্তল, একটি ওয়ান শুটারগান, গুলি, দেশীয় চাকু ও হাঁসুয়া পাওয়া যায়। তবে অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। সোহাগ হোসেন পেশায় একজন রাজমিস্ত্রি। তাঁর বাবার নাম আশরাফ হোসেন।

পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন বলেন, সেনাবাহিনীর অভিযানে উদ্ধার করা অস্ত্র থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে মামলার প্রস্তুতি চলছে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ