আজঃ শনিবার ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

স্মরণ : মুক্ত বেলায়তের দীপ্তিয়মান সূর্য, হযরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ শাহজাহান চৌধুরী মাইজভাণ্ডারী

লেখক: ডা. তছলিম উদ্দীন কর্মপরিকল্পনা সম্পাদক, চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতাল মেডিকেল কলেজ লেকচারার, এনাটমি বিভাগ।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

জন্ম ও বংশ পরিচয়: মাইজভান্ডারী দরবার শরীফের আধ্যাত্মিক শরাফতের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম হযরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী (ক.)-এর নাতি অছিয়ে গাউছুল আজম খাদেমুল ফোকরা মাওলানা সৈয়দ দেলওর হোসাইন মাইজভান্ডারী (ক.)-এর বড় শাহজাদী মহীয়সী রমণী সৈয়দা মুবাশ্বেরা বেগম মাইজভান্ডারী (ক.) ও আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুল মজিদ চৌধুরী মাইজভান্ডারীর (ক.) পবিত্র ওরশে ১৯৫০ সালে ১৩৬৯ হিজরী ১৩৫৬ বাংলা ১৪ই মাঘ ২৮ জানুয়ারী জন্ম গ্রহণ করেন।

বিদ্যার্জন: বাবাজান শাহনগর স্থানীয় স্কুলে ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখার পর নানুপুর সোবহানিয়া স্কুল হতে এসএসসি পাশ করে পরবর্তীতে চট্টগ্রাম সিটি কলেজে ভর্তি হন।

কর্মজীবন: ১৯৭০ সালে বাড়বকুন্ডে অবস্থিত ডিডিটি ইন্ডাষ্ট্রিতে অফিসার পদে নিয়োজিত ছিলেন।
আধ্যাত্মিক জীবনের দীক্ষা: চাকুরিরত অবস্থায় বিবর চিত্তে নিজ বাড়িতে সহকর্মীদের সহযোগিতায় বাবাজানের কাছে চলে আসেন। বাবাজানের আপন মামা হযরত মাওলানা শাহসুফি শাহান শাহ জিয়াউল হক মাইজভান্ডারী বাবাজানের মুর্শিদ। তিনি বাবাজানকে পরম স্নেহে বুকে জড়িয়ে, কোলে তুলে বাবাজানকে আধ্যাত্মিক সাধনায় নিয়োজিত রাখেন। বাবাজান প্রায় সময় রাত্রে পাহাড়ে আধ্যাত্মিক সাধনায় নিয়োজিত থাকতেন। নিজ গৃহে প্রায় সময় উপবাস থাকতেন। নিজ রুমে একা থাকতেন।

কিছুদিনের মধ্যে বাবাজানের কামালিয়তের কথা চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঐশী প্রেম পিপাসু সাধক ও দোয়া প্রত্যাশী ফরিয়াদিদের ভিড়ে এই সাধকের পবিত্র বাসগৃহ বিশ্ব মানবতার কল্যাণধারক এক উচ্চমার্গীয় আধ্যাত্মিক দরবারে পরিণত হয়। গাউছুল আজম শাহান শাহ ফানাফিল্লাহ বাকাবিল্লাহ হযরত মাওলানা শাহসুফি সৈয়দ মুহাম্মদ শাহাজাহান চৌধুরী (ক.)-এর কিছু উল্লেখযোগ্য কামালিয়ত নিম্নে বর্ণনা করা হলো।

(১) ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে বাঁশখালী আসনের বিএনপি থেকে সংসদ প্রার্থী জাফরুল ইসলাম চৌধুরী বাবাজান কেবলার কাছে মেহেরবানীর প্রত্যাশায় চট্টগ্রাম শহর লালখান বাজার হাই লেভেল রোড গাউছিয়া শাহাজান মঞ্জিল দরবার শরীফে আসেন। বাবাজান দয়া করে বললেন, আপনি যান নির্বাচন করলে পাশ করবেন। বিজয় লাভের কয়েকদিনের মধ্যে বাবাজানের কাছে তিনি আসেন। প্রকাশ করেন কৃতজ্ঞতাটুকু এবং বাবাজানকে বাসায় আমন্ত্রণ করেন। পরবর্তীতে এমপি সাহেবের বাসায় গাড়িতে করে পৌঁছান। তখন বাবাজান বলেন, আমি বসেছি মন্ত্রীর গাড়িতে বাসায় খাওয়া কবুল করে

বাবাজান এবার এমপি সাহেবকে ঢাকায় চলে যাওয়ার নির্দেশ দিলেন। তার পরের দিন এমপি সাহেব চলে গেলেন ঢাকায় এবং সরাসরি উঠেন খালেদা জিয়ার বাসভবনে। দেখা গেল তখন মন্ত্রিপরিষদ গঠন প্রক্রিয়া চলছিল। এমপি জাফরুল ইসলামকে দেখে খালেদা জিয়া বললেন, বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া যায়। মন্ত্রিপরিষদের সকলের সঙ্গে এমপি জাফরুল ইসলাম চৌধুরীও প্রতিমন্ত্রী হিসাবে শপথ গ্রহণ করলেন।

(২) জৈনক মহিলা লালখান বাজার বাবাজানের বাসায় বাবাজানকে আর্জি পেশ করলেন, ডাক্তার বলেছেন মহিলার পেটে টিউমার আছে। বাবাজান কালাম করলেন, ঐটা বাচ্চা, টিউমার নয়। মহিলা বললেন, আল্ট্রাসনোগ্রাফিতে টিউমার আছে বলেছেন। বাবাজান আবারো বললেন, ঐটা বাচ্চা, টিউমার নয়। তখন কিছুদিন পর ঐ মহিলা একটি বাচ্চা জন্ম দিলেন।
(৩) হাজী মুহাম্মদ নুরুল আলম সাহেব বাবাজানের কাছে আর্জি পেশ করলেন, আমার হাঁটুতে টিউমার হয়েছে। বাবাজান হাঁটুর টিউমারটিতে হাত মোবারক বুলিয়ে দিলেন। বললেন ভালো হয়ে যাবে। পরবর্তীতে উনি সুস্থ হয়ে গেলেন।

(৪) এক দম্পতি বাবাজানের কাছে আর্জি পেশ করলেন, একটি নেক সন্তানের জন্য বাবাজান যেন তাদের ঔষধ দেয় বাচ্চা হওয়ার জন্য। পরবর্তীতে তাদের একটি পুত্রসন্তান জন্ম লাভ করেন।
(৫) এক ডাক্তার বাবাজানের কাছে এসে ডাক্তারি পেশার উন্নতির জন্য দোয়া চান। বাবাজান কালাম করলেন, তোমাকে প্রফেসর বানিয়ে দিলাম। তিনি বর্তমানে প্রফেসর হিসাবে কর্মরত আছেন।
(৬) ঘটনাটি ২০০১ সালে ২৪ মার্চের সময়। বাবাজান নিজ গ্রামের বাড়ি হতে বাবুনগর ট্যাক্সি দিয়ে রওনা হলেন। বাবাজানের সফরসঙ্গী ছিলেন মুহাম্মদ

মনিরুজ্জামান ও হান্নান। পথিমধ্যে লেলাং খালের স্লুইস গেটের কাছে আসলে ট্যাক্সি বন্ধ হয়ে যায়। চালক অনেক চেষ্টার পর বললেন, তেল শেষ হয়ে গেছে, গাড়ি চলবে না। আমরা পেট্রোল আনতে গাড়ি থেকে নামবো এই সময় বাবাজান দোয়া করে বললেন, লেলাং খাল থেকে পানি ঢুকাও, চালক ইতস্তত করলো। আমরা বললাম, বাবাজান যা বলেছেন তাই করো। চালক খাল হতে তেলের ট্যাংকিতে পানি ঢুকালেন। এইবার বাবাজানের নির্দেশে স্টার্ট-এ চাপ দেওয়ার সাথে সাথে গাড়ি চালু হয়ে যায়। পানি দিয়ে গাড়ি চালানোর এই অলৌকিক ঘটনা মুহূর্তে ছড়িয়ে পরে চতুর্দিকে।

আজও ফরিয়াদিরা উনার মাজারে এসে আপন হাজত মকসুদ পূরণের জন্য নজর-মানতসহ আল্লাহর দরবারে মিনতি করেন। তাদের চাহিদাও পূর্ণ হচ্ছে নিয়মিতভাবে। হযরত দেলাওর হোসেন মাইজভান্ডারী (ক.) কালাম কামেলের মাজার জান সর্ব দুঃখ হারী প্রেমিকের অন্তরে ঢালে শান্তি সুধা বারি।

পরবর্তী রূহানী উত্তরাধিকার নির্ধারণ: বাবাজানের ওফাতের পূর্বে আপন দুই শাহজাদা হযরত মাওলানা মুহাম্মদ ইসকান্দার মির্জা মুকুট (ম.জি.আ) ও হযরত মাওলানা সাকান্দার মির্জা মহান (ম.জি.আ)-কে স্বীয় গদী শরীফের উত্তরাধিকারী হিসাবে নির্ধারণ করে যান।
ওফাত ও ওরশ: গাউছুল আজম শাহান শাহ হযরত মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মদ শাহাজাহান চৌধুরী (ক.) ৭৩

বছর বয়সে ২০২৩ সালে ২৪ জানুয়ারি, বাংলা ১৪৩০, ১০ই মাঘ, দিবাগত রাত ৩টার সময় ইহধাম ত্যাগ করেন। প্রতিবছর ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪ই মাঘ উনার ওফাত ও খোশরোজ শরীফ শাহনগর সন্ন্যাসীর হাট গাউছিয়া শাহাজাহান মঞ্জিলে মহাসমারহে অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ আশেক ভক্তের সমাগম ঘটে।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

বোয়ালখালীতে আহল্লা দরবার শরীফ ৩ দিন ব্যাপী ওরশ আজ শুরু

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রামের বোয়ালখালী আহলা দরবার শরীফের প্রাণসত্তা, হাযত রওয়া মুশকিল ক্বোশা, সুলতানুল মোনাজেরীন হযরতুল আল্লামা শাহসূফি গাজী আবুল মোকারেম মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম আল কাদেরী, আল চিশতি প্রকাশ নুরী বাবা (রহ.)’র ৪৯ তম উরশ শরীফ আহলা দরবার শরীফে মহা সমারোহ ১২ ডিসেম্বর ২৭ অগ্রহায়ণ ৩ দিন ব্যাপী ওরশ আজ শুক্রবার থেকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে ।

ওরশ শরীফ পরিচালনা করবেন পীরে কামেল হযরতুল আল্লামা শাহসুফি মাওলানা আলহাজ্ব সৈয়দ এ, জেড, এম সেহাবউদ্দীন খালেদ আল কাদেরী আল চিশতী (রহ)র সাহেবজাদা আহলা দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীন, রাহবারে তরিকত শাহসূফি সৈয়দ আবরার ইবনে সেহাব আল কাদেরী, আল চিশতি (মা,জ্বি,আ) সাহেব কেবলা।

ইতিমধ্যে ওরশের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। প্রতি বছরই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে দর্শনার্থী, ভক্ত মুরিদানের ব্যাপক সমাগম হয়। তথ্য মতে, সৈয়দ আবুল মোকাররম মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম (নূরী বাবা) আল-কাদেরী আল্-আলচিশতি (রহ:) মাইজভান্ডার শরীফের গোড়া পত্তনকারী গাউসুল আজম হযরত শাহসূফী মাওলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ (ক) প্রকাশ হযরত কেবলার আধ্যাত্মিক শিষ্য আহলা দরবার শরীফের প্রাণ পুরুষ কুতুবে জমান হযরত শাহসূফি মাওলানা কাজী আজাদ আলী (ক) এর জৈষ্ঠ্য পৌত্র।

তিনি আধ্যাত্মিক দরবারে ভক্ত মুরীদের নিকট আল্লাহও বিশ্ব মানবতার মুক্তির দূত, জগতকুূলের জন্য মহানস্রষ্টার সর্বশ্রেষ্ঠ করুনা সৃষ্টিকুলে শিরোমণি, পাপী-তাপির ত্রাণকর্তা ,নবীকুলে শ্রেষ্ঠ প্রিয় হাবিব রাসূল পাক হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রেম আদর্শ শিক্ষা দিয়ে যান। তিনি আল্লাহর দ্বীন ও তরিকতের খেদমতে নিজের পূর্ণ জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। অলি- ইল্লাহ ও মুরশিদের প্রতি ভক্তদেরকে পুনঃ পুনঃ,আদব শিক্ষা দিয়ে গেছেন।

ইতিহাস থেকে জানা যায়, বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের শেষ দিকে একবার তীব্র খরা দেখা দেয় এবং অনাবৃষ্টির কারণে গ্রামে দুর্দশা চরমে পৌঁছে। পানির অভাবে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে। খাল-বিল, নদী-নালা ও পুকুর শুকিয়ে যায় এবং ক্ষেত-খামারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই যুগে গ্রামীণ এলাকায় টিউবওয়েলের ব্যবহার ছিল না, আর তাই খাল-বিল- নদী- নালা-পুকুর শুকিয়ে যাওয়ায় মানুষের জীবন যাপন কঠিন হয়ে পড়ে। কেননা, বহুল প্রচলিত একটি প্রবাদে বলা হয়েছে “পানির অপর নাম জীবন।” ঠিক এমনি এক সংকটকালে একদিন হযরত নূরী বাবা (রহ:) কধুরখীল গ্রামের এক ওয়াজ মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদানের জন্যে সেখানে যান। গ্রামের লোকজন হযরত নূরী বাবা (রহ:)-কে কাছে পেয়ে তাঁকে মহান স্রষ্টার প্রিয় বন্ধু জেনে তাঁর খেদমতে তাঁদের এই দুর্দশার কথা আর্জি হিসেবে পেশ করেন এবং পরম করুণাময় আল্লাহ্তা’লার দরবারে এই দুর্দশা লাঘবের জন্যে তাঁকে অসিলা করেন। হযরত নূরী বাবা (রহ:) গ্রামের জনগণকে এই বলে বোঝান যে সবই আল্লাহ্ পাকের ইচ্ছা; তিনিই মুশকিল তথা সংকট দিতে পারেন, আবার তিনিই তা আসান তথা লাঘব করতে পারেন। কেননা, সবই তাঁর ইচ্ছাধীন।

হযরত নূরী বাবা (রহ:) আরও বলেন, “একদিকে আপনারা যেমন বৃষ্টির জন্যে আল্লাহর দরবারে ফরিয়াদ করছেন, অন্যদিকে ইটের ভাটার মালিকরা অনাবৃষ্টির জন্যে খোদার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছেন। এ বড়ই পরস্পর বিরোধী অবস্থান, পরস্পর বিরোধী স্বার্থের বিষয়।” কিন্তু ওয়াজ মাহফিলে উপস্থিত উলামায়ে কেরাম ও সমবেত শ্রোতামন্ডলীর বারংবার বিনীত অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে হযরত নূরী বাবা (রহ:) তাঁর সারগর্ভ বয়ানসমৃদ্ধ ওয়াজ শেষে মোনাজাতের সময় হযরত রসূলে করীম (দঃ) ও বুযুর্গানে দ্বীনের অসিলায় ওই অঞ্চলে বৃষ্টির জন্যে পরম করুণাময় আল্লাহতা’লার দরবারে কাতরভাবে ফরিয়াদ করেন।

আর অমনি মোনাজাত শেষ না হতেই ঝুপ ঝুপ করে মুষল ধারে বৃষ্টি নেমে এলো। উপস্থিত সবাই প্রার্থনারত অবস্থায় তাঁদের প্রাণের আকুতি পূরণ হতে দেখে চরম বিস্ময়ে বৃষ্টিতে ভিজে যাবার কথা বিস্মৃত হলেন এবং ভাবাবেগে আপ্লুত হলেন। অতঃপর মোনাজাত শেষে হযরত নূরী বাবা (রহ:) সাহেবে দাওয়াত, অর্থাৎ, যিনি তাঁকে এখানে আনার এন্তেজাম করেছিলেন, তাঁর বাড়িতে তাশরিফ নিলে ওয়াজ মাহফিলে উপস্থিত সবাই কৃতজ্ঞ চিত্তে এই মহান ওলির কাছে বায়াত হন। ইমাম যুরকানী মালেকী (রহ:) তাঁর প্রণীত বিখ্যাত আল্ মাওয়াহিবুল লাদুন্নিয়া গ্রন্থে অসংখ্য হাদীস উদ্ধৃত করেছেন, যেগুলোতে আমরা জানতে পারি যে গাউস, আবদাল, আকতাব, নুজাবা, নুকাবা প্রমুখ ওলি-আউলিয়ার মাধ্যমে
আল্লাহ্তা’লা একটি আধ্যাত্মিক প্রশাসন জারি রেখেছেন। এই ওলি-আউলিয়ার মাধ্যমেই দুনিয়াতে বৃষ্টিপাত হয়, ফলে ফসলে মাঠ-প্রান্তর ভরে যায়, উট হৃষ্টপুষ্ট হয়, মাছ হৃষ্টপুষ্ট হয় এবং দুনিয়া থেকে বালা মসীবত দূর হয়। হযরত নূরী বাবা (রহ:)-এর এই কারামত মহানবী (দ:) এর ওই শাশ্বত বাণীর এক বাস্তব রূপ, জ্বলন্ত নজির।

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের দোয়া মাহফিল খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায়

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ক্লাবের সদস্য সচিব জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রেস ক্লাবের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা, সিনিয়র সাংবাদিক এবং বিভিন্ন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

দোয়া মাহফিলে বক্তারা বলেন, দেশের গণমাধ্যমের উন্নয়ন, সাংবাদিক সমাজের কল্যাণ এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে বেগম খালেদা জিয়া ও শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের অবদান চট্টগ্রামের সাংবাদিক সমাজ চিরদিন স্মরণ করবে। বক্তারা ঐতিহাসিক অবদান স্মরণ করতে গিয়ে উল্লেখ করে বলেন, ১৯৭৮ সালে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের উন্নয়নে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ২ লাখ টাকা অনুদান দিয়েছিলেন।

১৯৮০ সালে বায়েজিদের শেরশাহ এলাকায় সাংবাদিকদের আবাসনের জন্য সাংবাদিক হাউজিং সোসাইটি-তে ১৬ একর জমি বরাদ্দ দেন, যা ১৯৮১ সালে বিচারপতি আব্দুস সাত্তার সরকারের আমলে তা রেজিস্ট্রি করা হয়। ১৯৯৪ সালে প্রেস ক্লাবের আর্থিক সংকট মোকাবিলায় তৎকালীন মন্ত্রী আবদুল্লাহ আল নোমানের অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ১৫ লাখ টাকা অনুদান প্রদান করেছিলেন।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের শৃঙ্খলা ও ব্যবস্থাপনা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা মইনুদ্দীন কাদেরী শওকত বলেন, বেগম খালেদা জিয়া প্রেস ক্লাবের জন্য অসামান্য অবদান রেখেছেন। আমি অতীতে তাকে আজীবন সদস্যপদ দেওয়ার প্রস্তাব করেছিলাম, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। এখন আবারও অনুরোধ জানাই—বেগম খালেদা জিয়াকে প্রেস ক্লাবের আজীবন সদস্যপদ প্রদান করা হোক।

দোয়া মাহফিলে দেশ ও জাতির শান্তি, কল্যাণ ও স্থিতিশীলতার পাশাপাশি বেগম খালেদা জিয়ার সুস্বাস্থ্য কামনা করে মোনাজাত পরিচালনা করেন শাহ আনিস জামে মসজিদের খতিব মাওলানা মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন প্রেস ক্লাবের অন্তবর্তী কমিটির সদস্য মুস্তফা নঈম, চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, প্রেস ক্লাবের সাবেক লাইব্রেরি সম্পাদক মোহাম্মদ শহীদুল ইসলামসহ অন্য সদস্যরা।মাহফিল শেষে বেগম খালেদা জিয়ার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতার জন্য বিশেষ দোয়া করা হয়।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

সোশ্যাল শেয়ার কার্ড

এই কার্ডটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ