আজঃ সোমবার ৮ ডিসেম্বর, ২০২৫

চট্টগ্রাম সাংবাদিক বৃন্দের সম্মানে চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপি’র সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত।

চট্টগ্রাম ব্যুরো:

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) কখনো বিচারহীনতায় বিশ্বাস করে না। ইতোমধ্যে প্রায় ২০০০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। আধুনিক বাংলাদেশ গঠনে নারীদের সমান অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। যারা নির্বাচন এড়িয়ে অন্য পন্থা অবলম্বন করতে চায়, তারা গণতন্ত্র ও জনগণের অধিকার হরণের পক্ষে অবস্থান করছে।

শনিবার, ২২ মার্চ বিকেল ৪টায় চট্টগ্রামের কাজীর দেউরী সংলগ্ন একটি কমিউনিটি সেন্টারে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মতবিনিময় সভা, দোয়া ও ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সভায় উপস্থিত সাংবাদিকরা দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিএনপির ভবিষ্যৎ কর্মসূচি এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন নিয়ে উন্মুক্ত আলোচনা করেন। তারা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপন করেন এবং বিএনপির অবস্থান সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চান। বিএনপি নেতৃবৃন্দ তাদের প্রশ্নের উত্তর দেন এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, বর্তমান সরকার বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করেছে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলে দেশের অর্থ লুটপাটকারীদের অবশ্যই বিচারের আওতায় আনা হবে। শেখ হাসিনাসহ যারা দেশের সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে, তাদের বিচার করা হবে। যারা অপরাধী, তাদের বিরুদ্ধে সরকারকেই ব্যবস্থা নিতে হবে। বিএনপি সবসময় আইনের শাসনে বিশ্বাস করে এবং যথাযথ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

৫ই আগস্ট পরবর্তী সময়ে দেশের গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, সত্য প্রকাশের মাধ্যমে তারা দেশ ও জাতির সামনে বাস্তব চিত্র তুলে ধরেছেন। এজন্য তিনি সাংবাদিকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সাংবাদিকরা সবসময় সত্য ও ন্যায়বিচারের পক্ষে থাকবেন, এটাই জনগণের প্রত্যাশা।

দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, জনগণ আজ কঠিন সময় পার করছে। গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মৌলিক অধিকার হরণের ফলে দেশ একটি ভয়াবহ সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের দমন-পীড়ন ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে জনগণ রুখে দাঁড়িয়েছে। বিএনপি সবসময় জনগণের পাশে ছিল, আছে এবং থাকবে। এদেশের জনগণ যেভাবে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে সম্পৃক্ত হচ্ছে, তাতে স্পষ্ট যে, জনগণ পরিবর্তন চায়। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ধৈর্য ও সাহস ধরে রাখতে হবে, কারণ এই আন্দোলন শুধু বিএনপির নয়, এটি দেশের জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনার লড়াই।

সভায় সভাপতিত্ব করেন, চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য জনাব আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের মাননীয় মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন এবং কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য শামছুল আলম। এছাড়াও সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়কগণ, সাংগঠনিক সম্পাদকগণ, চট্টগ্রামের বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বগণ। সভাটি সঞ্চালনা করেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব নাজিমুর রহমান।

বক্তারা বলেন, দেশের মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে বিএনপি আপসহীন আন্দোলন চালিয়ে যাবে। দেশের জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।

অনুষ্ঠান শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় দোয়া অনুষ্ঠিত হয় এবং উপস্থিত অতিথিদের জন্য ইফতার পরিবেশন করা হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক গ্রেফতার

পাবনার ভাঙ্গুড়ায় ধর্ষণ মামলায় নবম শ্রেণির এক স্কুল ছাত্রীর কথিত প্রেমিক কে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। কথিত প্রেমিকের নাম বুলবুল (২০)। তিনি উপজেলার দিলপাশার ইউনিয়নের চাচকিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলী ফকিরের ছেলে।রবিবার(৭ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে চাচকিয়া বিলের মধ্য নিয়ে গিয়ে ওই স্কুল ছাত্রী কে তার প্রেমিক বুলবুল সহ বন্ধুরা মিলে দলবদ্ধ ভাবে ধর্ষণ করে।

এ ঘটনায় শনিবার রাতে ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে ভাঙ্গুড়া থানায় ধর্ষণ মামলা রজ্জু করেন। মামলায় তথিত প্রেমিক বুলবুল সহ ৪ জন কে আসামি করা হয়।

ধর্ষণের খবর পেয়ে এএসপি সার্কেল (চাটমোহর) আবু বক্কার সিদ্দিক ও থানার ওসি মোঃ শফিকুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীর সঙ্গে বুলবুল এর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। ঘটনার দিন গত শুক্রবার রাত ১১ টার দিকে ওই স্কুল ছাত্রীকে চাচকিয়া বিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে গিয়ে বুলবুল তার বন্ধু সোহানুজ্জামান ও তাওহিদ মিলে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। এসময় তারা মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে এবং ঘটনাটি কাউ কে জানালে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। পরদিন শনিবার দুপুরে ঘটনা জানার পর ভুক্তভোগী মেয়েটির বাবা থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শফিকুল ইসলাম জানান, গ্রেফতারকৃত বুলবুল কে দুপুরে পাবনা আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে। মেয়েটিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য পাবনা সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। পুলিশ বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রেখেছে।

সাঘাটায় নবযোগদানকৃত ইউএনও আশরাফুল কবীরকে সাংবাদিকদের ফুলেল শুভেচ্ছা

গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলায় নবযোগদানকৃত উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আশরাফুল কবীরকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন উপজেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ইউএনও কার্যালয়ে এ শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।

সাংবাদিকরা ইউএনওকে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য অভিনন্দন জানান এবং সাঘাটার সার্বিক উন্নয়ন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তাঁর সাফল্য কামনা করেন। এসময় ইউএনও আশরাফুল কবীর সাংবাদিকদের শুভেচ্ছা গ্রহণ করে বলেন,
“সাঘাটার উন্নয়ন ও জনসেবার মানোন্নয়নে প্রশাসন ও গণমাধ্যম পরস্পরের পরিপূরক। স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে সংবাদকর্মীদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”তিনি আরও বলেন,সাঘাটা উপজেলার সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে একটি জনবান্ধব প্রশাসন গড়ে তুলতে চাই। এ কাজে গণমাধ্যমের গঠনমূলক ভূমিকা অব্যাহত থাকবে বলে আমি বিশ্বাস করি।”

শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে সাংবাদিকরা নতুন ইউএনওর সঙ্গে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা, প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং স্থানীয় সমস্যাবলি নিয়ে মতবিনিময় করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় মহলে ধারণা করা হচ্ছে, ইউএনও আশরাফুল কবীরের যোগদানে সাঘাটা উপজেলায় প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড আরও গতিশীল হবে এবং উন্নয়ন কার্যক্রমে নতুন দিগন্ত যুক্ত হবে।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ