আজঃ শুক্রবার ৫ ডিসেম্বর, ২০২৫

ডি-লিট উপাধি পাচ্ছেন ড. ইউনূস

চবিতে ৫ম সমাবর্তনের প্রস্তুতি শেষ পর্যায়ে প্যান্ডেলে বসতে পারবে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ।

নিজস্ব প্রতিবেদক

৫ম সমাবর্তনের সব প্রস্তুতি শেষ করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পড়াশোনা সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে সনদ দিতে উক্ত সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার চট্টগ্রাম নগরীর প্রেস ক্লাবের এস রহমান হলে এক সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য মোহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার সমাবর্তন আয়োজনের বিস্তারিত তুলে ধরেন।উপাচার্য বলেন, আগামী বুধবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় ২৩ হাজার স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা এতে অংশগ্রহণ করবেন। এ সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ডি.লিট, ডিগ্রি প্রদান করা হবে। শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অতিথিসহ প্রায় ২৫ হাজার লোকের বসার জন্য মূল প্যান্ডেল রেডি হচ্ছে।

তিনি বলেন, সমাবর্তনের প্রধান বিষয় হচ্ছে সার্টিফিকেট প্রদান বা গ্রহণ। শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট প্রদানের জন্য উপাচার্য এবং পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষরসহ সনদ প্রস্তুতির কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হয়েছে। বিভাগ বা ইনস্টিটিউটগুলোতে সার্টিফিকেট পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। রাত-দিন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীগণ কাজ করে যাচ্ছে। সুচারুরূপে প্রস্তুতি সম্পন্ন: আপ্যায়ন কমিটি তাদের কাজ সুচারুরূপে সম্পন্ন করছে, চট্টগ্রামের স্বনামধন্য এমব্রেসিয়া ও বার কোডের সকল ফ্যাসিলিটিস ক্যাম্পাসে নিয়ে এসে তিনটি স্থানে রত্নার আয়োজন চলছে। অতিথি এবং সমাবর্তীদের উপযুক্ত খাবার পরিবেশনের লক্ষ্যে সামগ্রিক কার্যক্রম অব্যাহত আছে।

চট্টগ্রামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সরাসরি ফ্রুটস ক্যাম্পাসে নিয়ে আসা হয়েছে। ১৪ মে সকাল ১০টার মধ্যে খাবার বিভাগ, ইনস্টিটিউটগুলোতে পৌঁছে যাবে এবং সমাবর্তীদের সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে বিভাগ/ইনস্টিটিউটগুলো থেকে খাবার সংগ্রহ করতে হবে।যাতায়াতে শহর থেকে ১০০ বাস: পুলিশ প্রশাসন এবং আমাদের প্রক্টরিয়াল বডির স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে যাতায়াত অসুবিধা মিনিমাইজ করার চেষ্টা চলছে। ১০০টি বড় বাস শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে সকাল ৬টা থেকে যাতায়াত শুরু করবে। নির্ধারিত শাটল ট্রেনে করেও সমাবর্তীরা যেতে পারবেন। ১ নম্বর মূল গেট থেকে ক্যাম্পাসে সাধারণ কোন যানবাহন, টেক্সি বা কার প্রবেশ করতে পারবে না। ১ নম্বর গেট থেকে শাটল বাসের ব্যবস্থা থাকবে, যাতে সমাবর্তীরা ক্যাম্পাসে যেতে পারেন। ক্যাম্পাসেও শাটল বাসের ব্যবস্থা থাকবে।

সর্বাত্মক নিরাপত্তা জোরদার: নিরাপত্তার বিষয়ে সরকারি বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সাথে আমাদের প্রক্টরিয়াল বডি এবং প্রশাসনের নিয়মিত যোগাযোগ হচ্ছে। তাদের রিকয়ারমেন্ট অনুযায়ী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার রিকয়ারমেন্ট অনুযায়ী সমাবর্তীদের কাছে ফোন যাচ্ছে। এটি অনেকে নেতিবাচকভাবে নিচ্ছে। ফেসবুকে মন্তব্য করছেন। এটি পেনিক হওয়ার মত কিছু নয়। কনভোকেশন কার্ড পেলে সে স্বাভাবিকভাবে অনুষ্ঠানে যেতে পারবেন, যদি না পুলিশ বা সংস্থা থেকে কাউকে বিশেষভাবে নিষেধ করা হবে না।

সমাবর্তীদের জন্য উপহার: সমাবর্তীদের জন্য গিফট আইটেম রেডি হচ্ছে। গিফটের মধ্যে থাকবে ব্যান, স্মরণিকা, কলম, পিন, ওয়ালেট ইত্যাদি। কনভোকেশন টুপি নিরুট হিসেবে বিবেচিত হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে অনুষ্ঠান দেখতে পারেন সেজন্য লাইভে অনুষ্ঠান সম্প্রচারের ব্যবস্থা হচ্ছে এবং ক্যাম্পাসে চারটি পয়েন্টে এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হবে।
৫ম সমাবর্তনে মোট উপস্থিতি: ৫ম সমাবর্তনে ৪২ জন পিএইচডি, এবং ৩৩ জন এম, ফিল, ডিগ্রিসহ মোট ২২ হাজার ৫৮৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হবে। কলা ও মানববিদ্যা ৪ হাজার ৯৮৮ জন, বিজ্ঞান ২ হাজার ৭৬৬ জন, ব্যবসায় প্রশাসন ৪ হাজার ৫৬৩ জন, সমাজ বিজ্ঞান ৪ হাজার ১৫৮ জন, জীববিদ্যা ১ হাজার ৬৮৫ জন, ইঞ্জিনিয়ারিং ৭৯৬ জন, আইন ৭০৩ জন, শিক্ষা ৩১৭ জন, মেরিন সায়েন্স ২৮৪ জন, চিকিৎসা ২ হাজার ২৯৬ জন বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন যারা: শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম, বীর প্রতীক, বিদ্যুৎ ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ উপদেষ্টা নূর জাহান বেগম ও ইউজিসি চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস. এম. এ. ফায়েজ।

অংশগ্রহণকারীদের জন্য নির্দেশনা; কনভোকেশন কার্ড হস্তান্তরযোগ্য নয় এবং এটা প্রদর্শন করে গাউন ও টুপি নিতে হবে। সমাবর্তন অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের জন্য অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটদেরকে বিভাগ/ইনস্টিটিউট/নির্দিষ্ট বুথ থেকে ১৪ মে সকাল ১০টা থেকে ১২টার মধ্যে অবশ্যই প্রবেশ (আইডি) কার্ড সংগ্রহ করতে হবে। আইডি কার্ড ছাড়া নিরাপত্তাবাহিনী কাউকে সমাবর্তন অনুষ্ঠানস্থলে প্রবেশের অনুমতি দিবে না। অংশগ্রহণকারী গ্র্যাজুয়েটরা আজ সোমবার (১২ মে) ও আগামীকাল মঙ্গলবার (১৩ মে) অফিস চলাকালীন (সকাল ৯টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত) গাউন সংগ্রহ করতে পারবেন। ১৪ মে সকাল ৭টা থেকে অবশিষ্ট গাউন বিতরণ করা হবে।

ব্যক্তিগত গাড়ি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না: গ্র্যাজুয়েটদের ব্যক্তিগত কোন গাড়ি ১ নম্বর মূল গেট (হাটহাজারী রোড) থেকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়ার জন্য ১ নম্বর গেট থেকে বাসের ব্যবস্থা থাকবে। গ্র্যাজুয়েটদের যাতায়াতের সুবিধার্থে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন পয়েন্টন্ট যথা- ষোলশহর শপিং কমপ্লেক্স, নিউ মার্কেট, জমিয়াতুল ফালাহ, পলিটেকনিক মোড় (ফ্লাইওভার থেকে নেমে) থেকে বাসের ব্যবস্থা থাকবে। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত বাসগুলো শহর থেকে ক্যাম্পাসে যাতায়াত করবে এবং ক্যাম্পাস থেকে ফিরতি বাসগুলো বিকাল সাড়ে ৪টা থেকে শুরু হয়ে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত চলবে।

শাটল ট্রেনের সময়সূচি: বটতলী স্টেশন থেকে ৭টা ৫ মিনিট ও ৭টা ৪০ মিনিট, ষোলশহর স্টেশন থেকে সাড়ে ৯টা, ১০টা ৫মিনিট, সাড়ে ১১টা এবং ফিরতি ট্রেন ক্যাম্পাস থেকে ৪টা ৪০ মিনিট, ৬টা ২০মিনিট এবং ৯টা ৪৫ মিনিট। সমাবর্তন দিনের বিশ্ববিদ্যালয়ের শাটল ট্রেনের সময়সূচি ও পরিবহন বিষয়ক বিস্তারিত দিকনির্দেশনা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। যে সব গ্র্যাজুয়েট অঙ্গীকারনামা আপলোড করে রেজিস্ট্রেশন করেছেন অথবা যাদের রেজিস্ট্রেশন কার্ড নাই, তারা অবশ্যই রেজিস্ট্রেশন কার্ড অথবা ৩০০ টাকার পে-অর্ডার নিয়ে আসবেন, যা গাউন নেয়ার সময় অবশ্যই জমা দিতে হবে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের অন্যতম উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০টি অনুষদের অধীনে বর্তমানে ৪৮টি বিভাগ, ৬টি ইনস্টিটিউট এবং ৫টি গবেষণা কেন্দ্র রয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৮ হাজার ৫১৫ জন শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। শিক্ষক সংখ্যা ৯৯৬, কর্মকর্তা ৪৪৫, কর্মচারী (৩য় শ্রেণি) ৫৪৫ জন এবং কর্মচারী (৪র্থ শ্রেণি) ৯৮৩ জন। শিক্ষার্থীদের আবাসনের জন্য ১৪টি হল রয়েছে। ছাত্রদের জন্য নয়টি, ছাত্রীদের জন্য পাঁচটি এবং হোস্টেল রয়েছে একটি। স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর (মাস্টার্স) ডিগ্রি ছাড়াও এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম ফিল, পিএইচডি, এম.ডি, এম.এস (মেডিকেল সায়েন্স) উচ্চতর ডিগ্রি প্রদান করা হয়।

শেয়ার করুন-

Share on facebook
Share on whatsapp
Share on twitter
Share on linkedin

আরও খবর

চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান।


চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে গাঙ্গেয় বদ্বীপের সংগীত ব্যক্তিত্ব যোগী স্বপন কুমার দাশ’র রচিত আধ্যাত্মিক ও দেহতত্ত্ব বিষয়ক গান নিয়ে ‘খুঁজি তাঁরে’ শীর্ষক গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় সাংবাদিক কিরন শর্মার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।

প্রদীপ প্রজ্জ্বলক ও প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম এর পরিচালক মো.মাহফুজুল হক। প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের পর প্রখ্যাত সাধক শ্রীমৎ স্বামী সত্যানন্দ ব্রহ্মচারী’জীকে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে ‘খুঁজি তাঁরে’ অনুষ্ঠানটি উৎসর্গ করা হয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বীর মুক্তিযুদ্ধা রাখাল চন্দ্র ঘোষ (যুদ্ধকালিন কমান্ডার), আব্দুর রহিম (লোক ও মরমি শিল্পী), রূপম ভট্টাচার্য (সাংবাদিক), স ম জিয়াউর রহমান(সাংবাদিক), দিদারুল ইসলাম (সংগীত পরিচালক ও কন্ঠ শিল্পী), তন্দ্রা দাশগুপ্তা, সংগীত শিল্পী সঞ্জয় রক্ষিত সহ প্রমুখ। সংবর্ধিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত

ছিলেন পাপিয়া আহমেদ (সংগীত প্রযোজক বাংলাদেশ বেতার চট্টগ্রাম), অপু বর্মন (সংগীত শিল্পী বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন এবং সংগীত শিক্ষক জেলা শিল্পকলা একাডেমি, চট্টগ্রাম), অপু সেনগুপ্ত (বিশিষ্ট গীতিকার বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন), দীপ্ত দত্ত সংগীত শিল্পী (বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশন)।

অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন, খ্যাতনামা মরমি কন্ঠ শিল্পী শিমুল শীল, বাউল শিল্পী বাবুল শীল, অভিষেক দাশ, বাউল জুয়েল দ্বীপ, শিউলী চৌধুরী, আনন্দ প্রকৃতি(মো:তৌহিদুল ইসলাম), আধাত্মিক শিল্পী সুরনাথ, কাওয়ালী শিল্পী মেঘলা। ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি প্রতিযোগিতার সেরা কন্ঠ শিল্পী বাঁধন ঘোষ, ইন্দ্রিলা ঘরজা, মিম দাশ, অধরা চৌধুরী রাত্রি, আরাধ্যা মজুমদার, সৈয়দ রাসতিন, অরূপ কুমার শীল, ঊর্মি নাগ সংগীত পরিবেশন করেন।

যন্ত্র সংগীত শিল্পীতে ছিলেন- কীবোর্ডে রুবেল ঘোষ, অক্টোপ্যাডে পাপন, তবলায় উৎস, বাংলা ঢোলে হৃদয় বাঁশিতে নিলয়। সংগীত তত্বাবধানে যোগী স্বপন কুমার দাশ, অনুষ্ঠান তত্বাবধানে মো: মোহসীন(সাধারণ সম্পাদক, ওস্তাদ মোহনলাল দাশ স্মৃতি সংসদ)। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন মো: সাইফুর রহমান ও ববিতা ইসলাম।

তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে : জামায়াত আমির।

ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। তিনি বলেছেন, ৫ আগস্ট বিপ্লবের পরদিন থেকে একটি গোষ্ঠী প্রভাব বিস্তারের জন্য জনগণের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে। চাঁদাবাজি, দুর্নীতি অব্যাহত রেখেছে। ক্ষমতায় না গিয়েও অনেকে ক্ষমতার দাপট দেখাচ্ছে। প্রশাসনের ওপর প্রভাব বিস্তার করছে।

শুক্রবার দুপুর ২টায় ৮ দলের উদ্যোগে আয়োজিত চট্টগ্রাম বিভাগীয় মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।তিনি আরও বলেন, আমরা ৮ দলের বিজয় চাই না, ১৮ কোটি মানুষের বিজয় চাই। সেই আকাঙ্খার বিজয় হবে কুরআনের মাধ্যমে। চট্টগ্রাম থেকে ইসলামের বিজয়ের বাঁশি বাজানো হবে। আগামীর বাংলাদেশ হবে কুরআনের বাংলাদেশ।

তিনি বলেন, গাড়ি দিয়ে পালানোর সাহস তারা হারিয়ে ফেলেছিল। সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিজিবিকে এই অপকর্মে লাগানোর চেষ্টা করেছিল। দেশের সবকিছু তারা ধ্বংস করেছিল। ফ্যাসিবাদ বিদায় নিলেও দেশ ফ্যাসিবাদমুক্ত হয়নি। ফ্যাসিবাদকে নতুন করে রুখে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না।

জামায়াতের আমির বলেন, তারা নিজেদের উন্নয়ন করেছিল। রাস্তাঘাট তৈরি করেছিল রডের বদলে বাঁশ দিয়ে। বাংলাদেশের টাকা লুট করে সিঙ্গাপুরে গিয়ে তারা ব্যবসা শুরু করে দিয়েছে। শাপলা চত্বরে অসংখ্য মাওলানাকে হত্যা করা হয়েছিল। এরপর কুখ্যাত প্রধানমন্ত্রী বলেছিল রঙ দিয়ে শুয়ে ছিল। তারা রক্তাক্ত হাতে ক্ষমতায় এসেছিল রক্তাক্ত হাতেই বিদায় নিয়েছে।
আন্দোলনরত ৮ দলের ৫ দফা দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত রাজপথের লড়াই অব্যাহত থাকবে ঘোষণা দিয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ইসলামি দলগুলোর মধ্যে যে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ঐক্য আমাদেরকে জাতীয় সংসদ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। প্রয়োজনে আবারও ৫ আগস্ট সংঘটিত হবে বলে হুঁশিয়ার করেন তিনি।

৮ দলের প্রধানদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির আমির অধ্যক্ষ মাওলানা সরওয়ার কামাল আজিজী, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট একেএম আনোয়ারুল ইসলাম চাঁন।

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের ইসলামি শক্তিকে কেউ নিস্তব্ধ করতে পারবে না। আগামীর বাংলাদেশ হবে ইসলামপন্থীদের। এখানে কোনো ষড়যন্ত্র বরদাস্ত করা কবে না।তিনি বলেন, আসুন আমরা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে চট্টগ্রামকে ইসলামের ঘাঁটি বানাই। চট্টগ্রামের মাটি ইসলামের ঘাঁটি। ৮ দলের এই শক্তি ক্ষমতায় গেলে আপনারই দেশ শাসন করবেন। কারও দাদার শক্তিতে এ দেশ আর চলবে না।

এটিএম আজহার বলেন, বাংলাদশ এমন পর্যায়ে দাঁড়াবে বিদেশিরা এখানে পড়ালেখা করতে আসবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সেই দেশ গড়ি।খেলাফতে মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেছেন, আগামীতে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের বিজয়ের মাধ্যমে কোরআনের শাসন শুরু হবে। সোনার বাংলাদেশ দেখা শেষ, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখা শেষ- এবার আল কোরআনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, ইসলামের বাংলাদেশ দেখতে চাই।

তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশে আমাদের অধিকার চাই, মালিকানা কায়েম করতে চাই। গরিব মেহনতী মানুষকে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দিতে চাই। ইসলাম যে বৈষম্যহীনের কথা বলা হয়েছে। পুঁজিবাদর অর্থ ব্যবস্থা করব দিয়ে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করতে হবে।

মামুনুল হক বলেন, বাংলাদেশে কোরআনের অর্থ ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে নিজেদের অধিকার ও মালিকানা কায়েম করতে। পুঁজিবাদী অর্থ ব্যবস্থার কবর তৈরি করে সেই ধ্বংস স্তূপের ওপর আল্লাহর কুরআনের ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করা হবে ইনশাআল্লাহ। আমাদের বিগত দিনগুলো শুধু উন্নয়নের গল্প শুনানো হয়েছে। কিন্তু নিজেরাই হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে।

সাধারণ কেটে খাওয়া মানুষের কোন পরিবর্তন হয়নি। এই তো উন্নয়ন। বাংলার মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ উল্লেখ করে মামুনুল হক বলেন, দলীয় প্রতীকে ভোট দেওয়ার পাশাপাশি হ্যাঁ ভোটের বাক্স ভরতে হবে। নির্বাচন নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা দেখা দিলে সরকারকে তার দায় নিতে হবে। এসময় তিনি বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
সমাবেশে ৮ দলের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির নায়েবে আমির আলহাজ¦ মাওলানা আব্দুর রহমান চৌধুরী, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এএইচএম হামিদুর রহমান আজাদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের যুগ্ম

সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান মুন্সি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের যুগ্ম মহাসচিব আলাউল্লাহ আমিন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব আল্লামা মুফতি মুসা বিন ইজহার, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির মাওলানা আলী উসমান, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, খেলাফত মজসিলের যুগ্ম মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যাপক আহসানুল্লাহ ভূঁইয়া, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য আলহাজ¦ শাহজাহান চৌধুরী, ইসলামী আন্দোলন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মুফতি রেজাউল আববার, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সুলতান মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগরী আমির মুহাম্মদ জান্নাতুল ইসলাম, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি এডভোকেট আব্দুল মোতালেব, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর সভাপতি আবু মুজাফফর মোহাম্মদ আনাছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা এমদাদ উল্লাহ সোহাইল, খেলাফত মজলিস চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি অধ্যাপক খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি চট্টগ্রাম মহানগর আমির মাওলানা জিয়াউল হোসাইন।

আলোচিত খবর

আরব আমিরাতে ভিসা সংকটে বড় হুমকির মুখে বাংলাদেশি শ্রমবাজার।

মধ্যপ্রাচ্যের  অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভিসা জটিলতায় চরম অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বাংলাদেশি কর্মীরা। নতুন ভিসা ইস্যু বন্ধ থাকা এবং অভ্যন্তরীণ ভিসা পরিবর্তনের সুযোগ না থাকায় বিপাকে পড়েছেন প্রবাসীরা। কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালালেও কবে ভিসা উন্মুক্ত হবে— সে বিষয়ে নিশ্চিত কিছু জানাতে পারছে না বাংলাদেশ মিশন। বিষয়টি সম্পূর্ণ নির্ভর করছে আমিরাত সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর।

ভিসা জটিলতা শ্রমবাজারের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রভাব পড়ছে প্রবাসীদের কর্মসংস্থান, আয়-রোজগার এবং দেশের রেমিট্যান্স প্রবাহে। বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশি কর্মীদের বিরুদ্ধে ভিসার মেয়াদ শেষে অবৈধভাবে বসবাস, লিঙ্গ পরিবর্তন, সনদ জালিয়াতিসহ নানা অভিযোগ ওঠায় ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি করেছে আমিরাত সরকার। এতে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়েছেন বাংলাদেশিরা।

এদিকে দুবাইয়ে স্কিল ভিসা চালু থাকলেও সেখানেও কঠোর শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে। গ্র্যাজুয়েশন সনদ ছাড়া বাংলাদেশিদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না। সনদকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সত্যায়ন, পরে দূতাবাস বা কনস্যুলেটের যাচাই এবং শেষে আমিরাতের বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিতে হচ্ছে। দীর্ঘ ও জটিল এ প্রক্রিয়ায় হতাশ কর্মপ্রত্যাশীরা।

বাংলাদেশ মিশনের তথ্যানুসারে, স্কিল ভিসায় সনদ জালিয়াতি ঠেকাতে তিন মাস আগে চালু করা হয়েছিল বারকোড ব্যবস্থা। তবে অল্প সময়ের মধ্যেই সেটিও জাল করে ফেলার অভিযোগ উঠেছে। এ কারণে ইউএই সরকারের পক্ষ থেকে নিয়মিত অভিযোগ আসছে। রাষ্ট্রদূতের মতে, বাংলাদেশিদের মানসিকতা না বদলালে ভিসা সংকট নিরসন সম্ভব নয়।

আবুধাবি বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত তারেক আহমেদ বলেন, “গত সাত মাস ধরে ভিসা ইস্যুতে চেষ্টা চালিয়েও কোনো অগ্রগতি হয়নি।কবে হবে সেটিও অনিশ্চিত। আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি, তবে বিষয়টি পুরোপুরি আমাদের নিয়ন্ত্রণে নেই। ”

 

জনশক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, ভিসা পরিবর্তনের জটিলতা দ্রুত সমাধান না হলে অনেক বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফিরে যেতে হতে পারে। অনেকেই জানেন না, ভিসা বাতিল হলে কী পদক্ষেপ নিতে হবে। এতে প্রবাসীদের মানসিক চাপ বাড়ছে। বিশেষ করে বর্তমানে যারা আমিরাতে অবস্থান করছেন, তারা পড়েছেন চরম অনিশ্চয়তায়।

বাংলাদেশি প্রবাসী সংগঠকরা মনে করেন, এ অচলাবস্থা কাটাতে সরকারের কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশাপাশি প্রবাসীদেরও ভিসা নীতিমালা মেনে চলা জরুরি। নইলে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শ্রমবাজারে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে।

আরও পড়ুন

সর্বশেষ